
সংবাদদাতা-বাপ্পা মণ্ডল ছবি-রামপ্রসাদ সাউ
Published on: ফেব্রু ২৭, ২০১৮ @ ২৩:১০
এসপিটি নিউজ, লালগড়, ২৭ ফেব্রুয়ারিঃ টানা প্রায় দু’মাস ধরে চলতে থাকা বাঘের আতংক থেকে এখনও মুক্ত হতে পারেনি লালগড়বাসী। প্রথমে বিষয়টিকে খুব বেশি গুরুত্ব দিতে না চাইলেও পরবর্তীকালে বন দফতর গোটা ঘটনার উপর কড়া নজরদারি চালাতে বাধ্য হয়েছে। যেভাবে গত এক মাসে এলাকায় গবাদি পশু থেকে শুরু করে গৃহপালিত বেশ কিছু প্রাণী আক্রান্ত হয়ে চলেছে তা নিয়ে রীতিমতো উদ্বিগ্ন বন দফতর। এর আগে জেলা বনাধিকারিক রবীন্দ্রনাথ সাহার নেতৃত্বে এক প্রতিনিধি দল জঙ্গলে গিয়েও কিছুই বের করতে পারেনি। অবশেষে তারা এবার বিশেষ দল এনে ঐ জঙ্গলে ফাঁদ ক্যামেরা বসানোর প্রক্রিয়া শুরু করল। মনে করা হচ্ছে এই ফাঁদ ক্যামেরাতেই এবার ধরা পড়বে সেই হিংস্র প্রাণীটির ছবি। পাশাপাশি এলাকাবাসীকে সতর্ক থাকতেও নির্দেশ দিয়েছে বন দফতর।
স্থানীয় মেলখেড়িয়া গ্রামের বাসিন্দা গোপীনাথ মুরমু জানান, রবিবার গ্রাম সংলগ্ন মধুপুরের জঙ্গলে গরু চড়ানোর সময় হিংস্র প্রাণীটিকে সে দেখতে পায়। তিনি দাবি করেন, প্রাণীটি বাঘ। ঐ প্রাণীটি নিয়মিত গ্রামের গরু-বাছুরের উপর হামলা চালাচ্ছে। কয়েকদিন আগে লালগড়ের আমলিয়ার জঙ্গলে কয়েকটি গরুকে আক্রমণ করে প্রাণীটি। এখনও গ্রামের বেশ কয়েকটি গরু নিখোঁজ হয়ে আছে। একটি বাছুরকে মেরে উর্দ্ধেক খেয়ে ফেলেছে। এই খবর চাউর হতেই সোমবার সকাল হতেই লালগড়ের জঙ্গল লাগোয়া গ্রামগুলিতে আতংক ছড়িয়ে পড়ে।
আজ পর্যন্ত লালগড়ের জঙ্গলে বাঘের উপদ্রবের খবর পাওয়া যায়নি।প্রাণী বিশেষজ্ঞদের কেউ কেউ মনে করছে প্রানীটি লেপার্ড জাতীয় অর্থাৎ আমাদের উত্তরবঙ্গের জঙ্গলে যে ধরনের চিতা বাঘ দেখা যায় সেরকম কিছু হলেও হতে পারে। এখন প্রশ্ন, এই চিতা বাঘ এখানে আসবে কিভাবে? বিশেষজ্ঞদের মতে ঝাড়খণ্ড লাগোয়া জঙ্গল লাগোয়া এই লালগড়ের জঙ্গল। হয়তো সেদিক থেকে আসতে পারে। তাতেও প্রশ্ন থাকছে, ঝাড়খণ্ডের জঞগলেও কি আদৌ চিতা বাঘের কোনও অস্তিত্ব আছে? সবটাই প্রশ্ন চিহ্ন।
এরি মধ্যে বন দফতরের উদ্যোগে মঙ্গলবার অতিরিক্ত জেলা বনাধিকারিক পূরবী মাহাত্র নেতৃত্বে চারজন বন্যপ্রাণ বিশেষজ্ঞ লালগড়ের ঐ গ্রামগুলিতে যায়। আমুলিয়া গ্রাম লাগোয়া জলাশয়ের কাছে পৌঁছে তারা প্রাণীটির পায়ের ছাপ সংগ্রহ করেন।
বন দফতরের একাংশ অবশ্য এদিন মনে করছেন, প্রাণীটি চিতা বাঘ। তাই তারা লালগড়ের জঙ্গলে ট্র্যা অর্থাৎ ফাঁদ ক্যামেরা লাগানোর নির্দেশ দেন। সেই নির্দেশ মেনেই এদিন জঙ্গলের বিভিন্ন প্রান্তে মোট পাঁচটি ফাঁদ ক্যামেরা লাগানো হয়েছে।
জেলা বনাধিকারিক রবীন্দ্রনাথ সাহা ফাঁদ ক্যামেরা বসানোর কথা জানিয়ে জঙ্গল লাগোয়া গ্রামের মানুষদের আতংকিত না হয়ে সতর্ক থাকার নির্দেশ দিয়েছেন। সেই সঙ্গে গ্রামবাসীদের রাতের দিকে খুব প্রয়োজন না হলে বাড়ির বাইরে বেরোতে নিষেধ করেছেন।
Published on: ফেব্রু ২৭, ২০১৮ @ ২৩:১০