“কি করে আমাদের ফ্লেক্স, সমস্ত পতাকা ছিঁড়ে দিয়ে চলে গেল, তারা কারা? যেখান থেকে হোক খুঁজে বের করবেন তিনদিনের ভিতর অ্যারেস্ট করবেন, আপনাদের আমি নির্দেশ দিয়ে যাচ্ছি।”
“আমি চাই না বাঙালি-বিহারি হোক। তাই এসব বন্ধ করে দিতে হবে। এই জঘন্য খেলাটাকে বন্ধ করতে হবে।”
“এত বড় ক্ষমতা বাংলায় থেকে বাঙালি হঠাও। সবাই ভাল থাকুন । আমি চাই।”
Published on: জুন ১৪, ২০১৯ @ ২২:৫২
এসপিটি নিউজ, কাঁচরাপাড়া, ১৪ জুন: বারাকপুর লোকসভা কেন্দ্রে বিজেপি প্রার্থী অর্জুন সিং জয়ী হওয়ার পর থেকে তৃণমূল কর্মীরারা আক্রান্ত হওয়ার ঘটনা ঘটেছে। বহু তৃণমূল কর্মী ঘর ছাড়া হয়েছে। আর তা নিয়ে প্রথমে নৈহাটি ও তারপর আজ শুক্রবার কাঁচরাপাড়ায় কর্মীসভা করলেন মুখ্যমন্ত্রী তৃণমূল কংগ্রেস সুপ্রিমো মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। এই কেন্দ্রে যেভাবে একের পর এক বাঙালি আক্রান্ত হয়ে চলেছে তা নিয়ে আগের সভার মতো কাঁচরাপাড়াতেও নাম না করে বিজেপি সাংসদ অর্জুন সিং-এর বিরুদ্ধে তোপ দাগেন তৃণমূল সুপ্রিমো। হামলার দায় পরোক্ষে তার উপর চাপিয়ে দিয়ে মমতার হুঁশিয়ারি- ” বাংলায় থাকবে আবার বাইক নিয়ে এসে গুন্ডামি করে ক্রিমিনালগিরি করে চলে যাবে এসব আমি বরদাস্ত করব না। আমি চাই না বাঙালি-বিহারি হোক। রাজ্যবাসী যদি একত্রিত হয় সেটা আমি কখনোই চাই না। আমি চাই সবাই ভাল থাকুন।অন্য কম্যিউনিটিকে বিপদে ফেলতে গিয়ে আপনার কম্যিউনিটিকে বিপদে ফেলবেন না।”
পুলিশের ভূমিকায় ক্ষোভ, দিইয়ে গেলেন গ্রেফতার করার নির্দেশও
“বাংলায় থাকতে হলে বাংলা ভাষাও বলতে হবে। আপনি হিন্দি, উর্দু, ইংরাজি সব ভাষায় বলুন। কিন্তু বাংলাটাও তো বলতে হবে।বাংলায় থাকব আর বাইকে করে এসে গুন্ডামি করে ভয় দেখিয়ে চলে যাব এই ক্রিমিনালগিরি আমি কিন্তু বরদাস্ত করব না। কাল রাতে কয়েকটা ক্রিমিনাল এসে তান্ডব করে গেছে। পুলিশ যে কেন করে না আমি জানি না। পুলিশ যদি কাজ না করে তবে মানুষ গিয়ে কোথায় দাঁড়াবে? কি করে ফ্লেক্স ছিঁড়ে দিয়ে চলে গেল, সমস্ত পতাকা ছিঁড়ে দিয়ে চলে গেল, তারা কারা। যেখান থেকে হোক খুঁজে বের করবেন তিনদিনের ভিতর অ্যারেস্ট করবেন, আপনাদের আমি নির্দেশ দিয়ে যাচ্ছি। কত বড় গদ্দার আর কত বড় গুন্ডা সর্দার আমি একটু দেখতে চাই। যারা প্রকৃত সর্দার হয় না তারা সামনে দাঁড়িয়ে লড়াই করে। লুকিয়ে লড়াই করেন কেন?” প্রশ্ন মমতার।
বাঙালি, সংখ্যালঘুদের উপর অত্যাচারের বিরুদ্ধে সরব মমতা
“রাত্রিবেলা বাঙালিদের বাড়িতে গিয়ে ভয় দেখিয়েছেন আমি শুনেছি। কই আমি তো হিন্দিভাষীদের বাড়িতে গিয়ে ভয় দেখাতে যাইনি। কখনও সংখ্যালঘুদের উপর অত্যাচার হচ্ছে, কেন হচ্ছে? কেন বাঙালিদের বাড়িতে অত্যাচার হচ্ছে আমি জানতে চাই? কেন সংখ্যালঘুদের বাড়িতে অত্যাচার হচ্ছে আমি জানতে চাই। যদি মনে করে থাকেন আমাদের ভাইবোনেদের বাড়িতে অত্যাচার করে ভয় দেখিয়ে নিজেরা ভালো থাকবেন নিজেরাও কিন্তু ভাল থাকবেন না। মানুষ কিন্তু ছেড়ে কথা বলবে না।একটা-দুটো সিটে জিতেই এত বড় বাঘ হয়ে গেলেন- বাপ রে বাপ!” ক্ষোভ উগরে দেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।
বিভাজনের রাজনীতির বিরুদ্ধে সরব হলেন তৃণমূল নেত্রী
বারাকপুরে বাঙালি-বিহারি বিভাজন করা হয়েছে এমন অভিযোগের ইঙ্গিত দিয়ে মমতা বলেন- “এরা বুঝিয়েছে। হাম হিন্দিভাষী আপ হিন্দিভাষী হো যাও। জাতপাতের রাজনীতি করেছে। শুনুন আমরা বাংলায় যারা থাকি সবাইকে নিয়ে থাকি। মহারাষ্ট্রে বিহারিদের তাড়িয়েছে, গুজরাট থেকে তাড়িয়েছে, কি তাড়ায়নি? বাংলা কিন্তু কোনওদিনও করে নি। এই ক্রিমিনালদের বলবেন আপনাদের স্বার্থে তার যেন বেশি বাড়াবাড়ি না করে। আমি চাই না বাঙালি-বিহারি হোক। তাই এসব বন্ধ করে দিতে হবে। এই জঘন্য খেলাটাকে বন্ধ করতে হবে। তা না হলে মনে রাখবেন রাজ্যের লোকজন যদি একত্রিত হয়ে যায় তাহলে কিন্তু আবার দুটো ভাগ হোক তা আমি চাই না।”
মমতার হুঁশিয়ারি
“আপনি যদি মনে করে থাকেন- অন্য কম্যিউনিটিকে বিপদে ফেলবেন তাহলে বলব আপনার কম্যিউনিটিকে বিপদে ফেলবেন না। ওরা ভালো থাকুক। এত বড় ক্ষমতা বাংলায় থেকে বাঙালি হঠাও! সবাই ভাল থাকুন, আমি চাই। আমাকে দুর্বল ভাববেন না। এটা ভাববেন না আমি হাতে একটা চুড়ি পরে আছি। যখন চুল বাঁধে হাতে চিরুনি থাকে। আবার যখন রান্না করে তখন হাতে হাতা-খুন্তি থাকে। গরিব লোকদের সাহায্য করব। বাংলায় গুন্ডাদের স্থান নয়।” হুঁশিয়ারি মমতার।
Published on: জুন ১৪, ২০১৯ @ ২২:৫২