- বঙ্গবন্ধু দমদম এয়ারপোর্টে আসার পর ব্রিটিশের রয়্যাল এয়ারফোর্স-এর বিমান থেকে বলেন, ‘আমার পরিকল্পনা ছিল কলকাতায় নামব কিন্তু এখন আমার প্রবল ইচ্ছা, আগে আমার দেশের মানুষের সাথে দেখা করব।
- বঙ্গবন্ধু তাঁর কথা রেখেছিলেন ১৯৭২ সালের ৬ ফেব্রুয়ারি গড়ের মাঠে ১০ লক্ষ মানুষের উপস্থিতিতে ঐতিহাসিক বক্তব্য দিয়ে।
- ১৯৭১-এর ১৬ ডিসেম্বর বাংলাদেশ হানাদার মুক্ত হয়।
- ১০ জানুয়ারি বঙ্গবন্ধুর স্বাধীন বাংলাদেশের ফিরে আসার মধ্যেই নিহিত ছিল স্বাধীনতার পরিপূর্ণতা।
সংবাদদাতা- অনিরুদ্ধ পাল
Published on: জানু ১৮, ২০২০ @ ২১:০৭
এসপিটি নিউজ, কলকাতা, ১৮ জানুয়ারি: সম্প্রতি উদযাপিত হয়ে গেল সর্বকালের বাঙালি, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মশতবার্ষিকী পালনের (১৭ মার্চ ২০২০ খ্রিঃ) ক্ষণগণনা। একই সঙ্গে বঙ্গবন্ধুর স্বদেশ প্রত্যাবর্তনের ৪৮ বছর পূর্তি উপলক্ষ্যে কলকাতায় বাংলাদেশের উপ-দূতাবাসে এই ক্ষণগণনা উদযাপনে বিশিষ্ট ব্যক্তিরা করলেন স্মৃতিচারণ।১০ জানুয়ারি এই অনুষ্ঠান ঘিরে ছিল দারুন উৎসাহ।
বাংলাদেশ মুক্তিযুদ্ধ সম্মাননা পদকপ্রাপ্ত তৎকালীন আকাশবাণীর সংবাদকর্মী পঙ্কজ সাহার স্মৃতিচারণ
কলকাতায় উপ-দূতাবাসের অনুষ্ঠানে প্রধান বক্তা হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ মুক্তিযুদ্ধ সম্মাননা পদকপ্রাপ্ত তৎকালীন আকাশবাণীর সংবাদকর্মী পঙ্কজ সাহা। নিজের স্মৃতিচারণে তিনি বলেন, “১৯৭২ সালের ১০ জানুয়ারি বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান দিল্লি হয়ে কলকাতার জনগণের সাথে দেখা করার জন্য দমদম এয়ারপোর্টে নামবেন। কিন্তু বঙ্গবন্ধু দমদম এয়ারপোর্টে আসার পর ব্রিটিশের রয়্যাল এয়ারফোর্স-এর বিমান থেকে বলেন, ‘আমার পরিকল্পনা ছিল কলকাতায় নামব কিন্তু এখন আমার প্রবল ইচ্ছা, আগে আমার দেশের মানুষের সাথে দেখা করব। তবে খুব তাড়াতাড়ি আমি কলকাতায় আসব।”’ এরপর পঙ্কজবাবু বলেন, বঙ্গবন্ধু তাঁর কথা রেখেছিলেন ১৯৭২ সালের ৬ ফেব্রুয়ারি গড়ের মাঠে ১০ লক্ষ মানুষের উপস্থিতিতে ঐতিহাসিক বক্তব্য দিয়ে।”
বঙ্গবন্ধুর স্বদেশ প্রর্ত্যাবর্তনের দিবসটি বাংলাদেশের ইতিহাসে খুবই তাৎপর্যপূর্ণ
১০ জানুয়ারির অনুষ্ঠানে সভাপতির বক্তব্যে ডেপুটি হাইকমিশনার তৌফিক হাসান বলেন, “আজকের বঙ্গবন্ধুর স্বদেশ প্রর্ত্যাবর্তনের দিবসটি বাংলাদেশের ইতিহাসে খুবই তাৎপর্যপূর্ণ। ১৯৭২-এর এই দিনে বঙ্গবন্ধুর স্বদেশ প্রর্ত্যাবর্তনের মধ্য দিয়ে বাংলাদেশের মানুষ বিজয়ের পরিপূর্ণতা অর্জন করে। যদিও ১৯৭১-এর ১৬ ডিসেম্বর বাংলাদেশ হানাদার মুক্ত হয়। কিন্তু যার নেতৃত্বে অর্জিত হয়েছিল স্বাধীন সর্বভৌম বাংলাদেশ সেই জাতির পিতা তখনও পাকিস্তানের কারাগারে বন্দি। কাজেই ১০ জানুয়ারি বঙ্গবন্ধুর স্বাধীন বাংলাদেশের ফিরে আসার মধ্যেই নিহিত ছিল স্বাধীনতার পরিপূর্ণতা।”
বঙ্গবন্ধু্র দেশে ফেরার সেই ঐতিহাসিক ক্ষণটি
জনাব হাসান আরও বলেন, “পাকিস্তানের তৎকালীন রাষ্ট্রপতি জুলফিকার আলী ভুট্টো ৮ জানুয়ারি ১৯৭২ বঙ্গবন্ধুকে মুক্তি দিতে বাধ্য হন এবং বঙ্গবন্ধু পি.আই-এর একটি বিশেষ বিমানে করে লন্ডনে পৌঁছন। ১০ জানুয়ারি ঢাকায় পৌঁছনোর আগে বঙ্গবন্ধু দিল্লিতে সংক্ষিপ্ত যাত্রাবিরতি করেন। এর উদ্দেশ্য ছিল ভারতের তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী শ্রীমতি ইন্দিরা গান্ধী তথা ভারতবাসীর প্রতি গভীর কৃতজ্ঞতা প্রর্দশন, যাদের ঐকান্তিক সহযোগিতায় বাংলাদেশ স্বাধীনতা লাভ করে। এরপর দুপুর ১টা ৫১ মিনিটে ঢাকা বিমানবন্দরে বঙ্গবন্ধুকে বহনকারী বৃটিশ রাজকীয় বাহিনীর কমেট বিমানটি অবতরন করে। সেখানে বাংলাদেশের ভারপ্রাপ্ত রাষ্ট্রপতি সৈয়দ নজরুল ইসলাম, প্রধানমন্ত্রী তাজুদ্দিন আহমেদসহ অন্যান্য নেতা কর্মীরা বঙ্গবন্ধুকে সাদরে অভ্যর্থনা জানান।”
কলকাতায় অবস্থিত বাংলাদেশ উপ-দূতাবাসে উদযাপিত সেই ক্ষণগননা
এর আগে কলকাতায় অবস্থিত বাংলাদেশ উপ-দূতাবাসে এদিন জাতীয় প্যারেড গ্রাউন্ডে বঙ্গবন্ধুর স্বদেশ প্রত্যাবর্তন দিবসের প্রতীকী বিমান অবতরণের মাধ্যমে শুরু হওয়া জন্মবার্ষিকীর ক্ষণগননা অনুষ্ঠান অনুসরণের মাধ্যমে কার্যক্রম শুরু হয়। উপ-হাইকমিশনের ‘বাংলাদেশ গ্যালারি’-তে মাল্টিমিডিয়ার মাধ্যমে ‘মুজিববর্ষের ক্ষণগণনা’ উদ্বোধন জাতীয় প্যারেড গ্রাউন্ড থেকে বিটিভি কর্তৃক সরাসরি সম্প্রচারিত অনুষ্ঠান উপস্থিত দর্শকরা উপভোগ করে।এরপর ডেপুটি হাইকমিশনার তৌফিক হাসানের সভাপতিত্বে বঙ্গবন্ধুর জন্মশতবার্ষিকীর ক্ষণগননা অনুষ্ঠানের কার্যক্রম শুরু হয়। বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের স্বদেশ প্রত্যাবর্তন উপলক্ষে মহামান্য রাষ্ট্রপতি ও মাননীয় প্রধানমন্ত্রী প্রেরিত বাণী পাঠ করেন এ উপ-হাইকমিশনের প্রথম সচিব (প্রেস) মোঃ মোফাকখারুল ইকবাল ও প্রথম সচিব (রাজনৈতিক) শামীমা ইয়াসমীন স্মৃতি।
Published on: জানু ১৮, ২০২০ @ ২১:০৭