‘ফণী’র তান্ডব চলার সময় এদিন গড়বেতা-২ নম্বর ব্লকের পিয়াসালা গ্রাম পঞ্চায়েতের ভৈরব সাউয়ের মৃত্যু হয়েছে বজ্রপাতে।
ইতিমধ্যেই ৬৮টি ত্রাণ শিবিরে ৩১৩০জন মানুষকে সরিয়ে নিয়ে যাওয়া হয়েছে।
সংবাদদাতা– বাপ্পা মন্ডল
ছবি-বাপন ঘোষ
Published on: মে ৩, ২০১৯ @ ১৯:৫৯
এসপিটি নিউজ, মেদিনীপুর, ৩ মে: পুরীতে যখন ‘ফণী’ তান্ডব চালাচ্ছে ঠিক তখন উড়িষ্যা লাগোয়া পশ্চিম মেদিনীপুর জেলায় শুরু হয়ে গেল ধ্বংসলীলা। মেদিনীপুর, খড়্গপুর সহ বিস্তীর্ণ এলাকায় বহু বাড়ি ভেঙে পড়েছে। বহু বাড়ির ছাদ উড়ে গেছে। পাঁচিল ভেঙে পড়েছে। ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে বহু এলাকা। খড়্গপুরে মাথায় গাছ পড়ে আহত হয়েছেন এক মহিলা। গড়বেতায় একজনের মৃত্যু হয়েছে।এদিন সকাল থেকেই শুরু হয়েছে প্রবল বৃষ্টি।
প্রশাসনিক তৎপরতা শুরু
1) শুক্রবার ঝড়ে মেদিনীপুর ও খড়্গপুরে ৮৬টি মাটির বাড়ি ভেঙে গেছে। অনেক বাড়ির টিনের ও খড়ের চলা উড়ে গেছে। ফনীর তান্ডব চলার সময় এদিন গড়বেতা-২ নম্বর ব্লকের পিয়াসালা গ্রাম পঞ্চায়েতের ভৈরব সাউয়ের মৃত্যু হয়েছে বজ্রপাতে। ইতিমধ্যেই ৬৮টি ত্রাণ শিবিরে ৩১৩০জন মানুষকে সরিয়ে নিয়ে যাওয়া হয়েছে। এ পর্যন্ত পাওয়া খবে ৩৩৯টি বাড়ি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। খোলা হয়েছে কন্ট্রোল রুম।
সবচেয়ে ক্ষতিগ্রস্ত গোপীবল্লভপুর
2) সবচেয়ে বেশি ক্ষতির সম্মুখীন হয়েছে গোপীবল্লভপুর ১ ও ২ নম্বর ব্লকের ৫০টি গ্রাম।এর মধ্যে ১ নম্বর ব্লকের চুনঘাটি গ্রামে শতাধিক বাড়ি ভেঙে পড়েছে। আহত হয়েছে পাঁচজন। গ্রামবাসীদের নিরাপদ স্থানে সরিয়ে নিয়ে যাওয়া হয়েছে। এছাড়াও নয়াগ্রাম, সাঁকরাইল, বেলিয়াবেড়া, ঝাড়গ্রাম, জামবনি সহ ঝাড়গ্রাম জেলার প্রতিটি এলাকাতেও ঝড় আঁছড়ে পড়েছে। সাঁকারাইলেও খোলা হয়েছে ত্রাণশিবির।
ধ্বংসের ছবি গোটা এলাকাজুড়ে
3) নয়াগ্রাম, সাঁকরাইল ও গোপীবল্লভপুরে সমস্ত দোকানপাট বন্ধ রয়েছে। চলাচল করছে না যানবাহনও। বেশ কিছু বাড়ির ক্ষতি হয়েছে ঝাড়গ্রামে। ঝড়ের দাপটে বহু এলাকাতেই বিদ্যুতের খুঁটি উপড়ে পড়ে বিদ্যুৎ সংযোগ বিচ্ছিন্ন হয়েছে। অন্ধকারে ডুবে রয়েছে বহু এলাকা।
ক্ষতিগ্রস্ত মেদিনীপুর
4) ঝড়ে মেদিনীপুরের বিধাননগর এলাকায় কয়েকটি গাছ পড়ে যায়। পুলিশের ট্রাফিক পোস্ট উল্টে যায়। বটতলাচক , বেহারাপাড়া , তালপুকুর , পাথরঘাটা , কাৰ্গিলবস্তি , স্টেশন এলাকায় ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়। মেদিনীপুর স্টেশনের মরছে ধরা ছাউনি উড়ে যায়। গাছ ভেঙে যায়। জিআরপি আউটপোস্টের কিছুটা ক্ষয়ক্ষতি হয়। মাটির বাড়ির পাশাপাশি টিনের ও অ্যাসবেস্টসের ছাউনি উড়ে যাওয়ার ফলে অনেক পাকা বাড়ির ক্ষতি হয়েছ। ঝড়ের দাপটে খাট থেকে আসবাব সব তছনছ হয়ে গেছে। কোথাও বাড়ির ওপর নারকেল গাছ ভেঙে পড়ে। কোথাও রাস্তার ওপর পুরাতন গাছ ভেঙে পড়ে।এরফলে যাতায়াতের রাস্তা বন্ধ হয়ে যায়।
ক্ষতির মুখে খড়্গপুরও
5) খড়্গপুর আইআইটি ক্যাম্পাসে রয়েছে প্রচুর গাছ। এদিনের ঝড়ে অনেক গাছ ভেঙে পড়ে। খড়্গপুরের তালবাগিচা , আইমা , ট্যাংরা এলাকায় ৪৭ টি মাটির বাড়ি ভেঙে পড়েছে। পাকা বাড়ির টিনের চালা উড়ে গেছে। এসব এলাকায় থাকা বহু গাছ পড়ে গেছে। গাছ বিদ্যুৎ খুঁটির ওপর পড়ায় বিদ্যুৎ সংযোগ বিচ্ছিন্ন রাখা হয়েছে।
ঝাড়গ্রামের জেলাশাসক ও সভাধিপতি যা জানালেন
6) ঝাড়গ্রামের জেলাশাসক আয়েষা রানি বলেন- “প্রাকৃতিক বিপর্যয় মোকাবিলার জন্য প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে। পরিস্থিতির উপর নজর রাখা হচ্ছে।” জেলাসভাধিপতি মাধবী বিশ্বাস বলেন-“দুর্গত মানুষদের ত্রাণ দেওয়ার কাজ শুরু হয়েছে। ত্রাণশিবিরগুলিতে থাকা-খাওয়ার ব্যস্থা করা হয়েছে। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নির্দেশে ঝাড়গ্রাম জেলা পরিষদ দুর্গত মানুষদের সেবায় নিযুক্ত রয়েছে।”
Published on: মে ৩, ২০১৯ @ ১৯:৫৯