নির্বাচনী সভা বাতিল করে এভাবেই দুর্যোগ মোকাবিলায় মন দিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়

আবহাওয়া রাজ্য
শেয়ার করুন

ফণী ‘ মোকাবিলায় রাজনীতি নয় , মানবিক দৃষ্টিভঙ্গি থেকে সকলকে একহয়ে কাজ করার আবেদন জানালেন রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।

সংবাদদাতা– বাপ্পা মন্ডল

Published on: মে ৩, ২০১৯ @ ২০:৫৫

এসপিটি নিউজ, মেদিনীপুর, ৩ মে:  আগে থেকেই ঠিক ছিল দলের দুই প্রার্থীর সমর্থনে এদিন এক নির্বাচনী সভা করবেন। কিনতি ‘ফণী’র তান্ডবে সব বাতিল হয়ে যায়। যুদ্ধকালীন তৎপরতায় শুক্রবার খড়গপুর শহরের একটি হোটেলে বসেই অস্থায়ী কন্ট্রোল রুম খুলে সেখান থেকেই ভত্যাবহ ঘূর্ণীঝড় ‘ফণী’র মোকাবিলায় মন দিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। একদিকে তিনি যেমন নবান্নে মুখ্যসচিবের সঙ্গে যোগাযোগ রেখে গেছেন ঠিক তেমনই আর এক দিকে প্রতি মুহূর্তে কলকাতার মেয়র ববি হাকিমের সঙ্গে ফোন করে জেনেছে পরিস্থিতির নানা খবর। ঠিক সেভাবেই তিনি পশ্চিম মেদিনীপুর, পূর্ব মেদিনীপুর ও ঝাড়গ্রাম জেলার জেলাশাসক ও পুলিশ সুপারদের প্রতি মুহূর্তে ফোন করে নির্দেশ দিয়ে গেছেন দুর্যোগ মোকাবিলায় যেন কোন ফাঁক না থাকে।

খড়্গপুরেই মুখ্যমন্ত্রীর অস্থায়ী কন্ট্রোল রুম

1) ‘ ফণী ‘ মোকাবিলায় রাজনীতি নয় , মানবিক দৃষ্টিভঙ্গি থেকে সকলকে একহয়ে কাজ করার আবেদন জানালেন রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। দলীয় সভা বাতিল করে মুখ্যমন্ত্রী বৃহস্পতিবার রাত থেকেই খড়্গপুরের গ্রিন ল্যান্ড হোটেলেই অস্থায়ী কন্ট্রোল রুম খুলে বসেন। এই জায়গাটিকে বেছে নেওয়ার কারণ , এখান থেকে পূর্ব মেদিনীপুর, পশ্চিম মেদিনীপুর ও ঝাড়গ্রাম- এই তিন জেলার পরিস্থিতির ওপর নজর রাখা সহজ হবে।

শুক্রবার সকাল থেকেই মুখ্যমন্ত্রীর চোখ ছিল টিভির পর্দায়। সারাক্ষনই তিনি আধিকারিকদের সঙ্গে দুর্যোগ মোকাবিলায় মন দিয়েছন। হোটেলের বারান্দায় পায়চারি করেছেন। আকাশের ঘন কালো মেঘ দেখে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন।রাস্তার দিকে মুখ বাড়িয়ে দেখেছেন মানুষজন ঠিক আছেন কিনা,  যানবাহন চলাচল করছে কিনা।  যদিও এদিন সকাল থেকেই রাস্তায় মানুষজনের ও যানবাহনের সংখ্যা ছিল বেশ কম।

কে কখন কিভাবে কাজ করবে তাও বুঝিয়ে দিতে থাকেন মুখ্যমন্ত্রী

2) টেলিফোনে পূর্ব মেদিনীপুর , পশ্চিম মেদিনীপুর , ঝাড়গ্রামের জেলা শাসক , পুলিশ সুপার ও জেলা পরিষদের সভাধিপতিদের সঙ্গে যোগাযোগ রেখে চলেন। তাঁদের প্রয়োজনীয় নির্দেশ দিয়ে বলেন , ‘সবসময় পরিস্থিতির দিকে সজাগ দৃষ্টি রাখবেন।  যেকোনো মুহূর্তে যা কিছু ঘটতে পারে। এনডিআরএফ টিম কোথায় , তাঁরা মানুষজনকে বিপদসঙ্কুল স্থান , উপকূল থেকে সরিয়ে নিরাপদ আশ্রয়ে নিয়ে গিয়েছে তো!  বিপজ্জনক বাড়ি থেকে মানুষজনেক সরানো হয়েছে তো , বিদ্যুৎ খুঁটির সামনে যাতে কেউ না থাকেন , যাঁদের বাড়ির ওপর গাছ রয়েছে তাঁদের যদি মাটির বাড়ি হয় তাঁদের যেন সেখান থেকে দ্রুত নিরাপদ আশ্রয়ে সরিয়ে নিয়ে যাওয়া হয় । ঝড়ে যাঁদের বাড়ি ভেঙেছে তাঁদের যাতে অবিলম্বে ত্রাণ দেওয়া হয় এবং পুনর্বাসনের ব্যবস্থা করা হয়, তাও দেখার নির্দেশ দেন জেলাশাসক ও সভাধিপতিদের।

পশ্চিম মেদিনীপুর জেলায় ক্ষতির পরিমাণ

3) পশ্চিম মেদিনীপুর  জেলাপরিষদের কাছে বিকেল পর্যন্ত পাওয়া হিসেবে ধরা পড়েছে – জেলার দাঁতন -২ ব্লকে ২৫ টি বাড়ি ভেঙেছে, খড়্গপুর- ২ ব্লকে ভেঙেছে ৪৭ টি বাড়ি,খড়্গপুর- ১ ব্লকে ১৪ টি,মেদিনীপুর শহরে ৫১ টি,মেদিনীপুর সদর ব্লকে ১৪ টি ,নারায়নগড়ে ৫টি,শালবনীতে ৯টি, গড়বেতা -৩ ব্লকে তথা চন্দ্রকোনা রোডে ২০ টি  বাড়ি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে ৷ মোট ১৮৫ টি বাড়ি ভেঙেছে ফণী ঝড়েই ৷

Published on: মে ৩, ২০১৯ @ ২০:৫৫


শেয়ার করুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

80 − = 79