- “মেদিনীপুরে এসে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় যখন বলছেন-নরেন্দ্র মোদি ভারত ছাড়ো, তখন বন্যার কবলে ঘাটালের মানুষের তখন ঘাটাল ছাড়ো অবস্থা।”
- “দেবকে সিনেমায় ও টাকা দিলে দেখতে পাওয়া যায়। কিন্তু ঘাটালের সাংসদ হিসেবে পাঁচবছরে পাঁচবারও দেখতে পাওয়া যায়নি তাঁকে।”
- “দু’টাকা কিলো চাল, ছাত্র-ছাত্রীদের একটা সাইকেল দিলে কি উন্নয়ন হয়?
সংবাদদাতা-বাপ্পা মন্ডল
ছবি-বাপন ঘোষ
Published on: মার্চ ২৬, ২০১৯ @ ২২:৩১
এসপিটি নিউজ, ঘাটাল, ২৬ মার্চঃ তাঁর বিরুদ্ধে রাজ্য সরকার মামলা করেছে। সিআইডি তাঁকে গ্রেফতার করবে বলে বেশ কয়েকবার চেষ্টা চালিয়েছে। কিন্তু তাদের সেই চেষ্টা সফল হয়নি। এরই মধ্যে তিনি বিজেপিতে শুধু যোগ দেননি পদ্মফুল প্রতীকে বিজেপির হয়ে ঘাটালে প্রার্থী হয়ে ফের লড়াইয়ের ময়দানে ফিরে এসেছেন এক সময়ের পশ্চিম মেদিনীপুর জেলার দোর্দন্ডপ্রতাপ পুলিশ সুপার ভারতী ঘোষ। প্রথম নির্বাচনী কর্মীসভায় দাঁড়িয়ে তাই এবার সরাসরি রাজ্যের বিরুদ্ধে সরবই হলেন না বিঁধলেন একের পর এক বাক্যবানে।
“রাজ্যের বর্তমান সরকার পুলিশের জন্য কিছুই করবে না”-তোপ ভারতী ঘোষের
১) এক সময় তিনি নিজেই ছিলেন জেলা পুলিশের সর্বোচ্চ পদে। মাওবাদী দমনে তাঁর ভূমিকার কথা এখনও আলোচিত হয় জেলার নানা প্রান্তে। পুলিশকে তিনি সেইসময় এমনভাবে নিয়ন্ত্রিত করেছিলেন যার জন্য মাওবাদী দমনের কাজ জঙ্গলমহলে অনেক সহজ হয়ে গেছিল। সেই ভারতী ঘোষ যেদিন রাজ্য সরকারের বিরুদ্ধে কথা বলেলন সেদিন থেকে তিনি হয়ে গেলেন অপরাধী। এমনটাই অভিযোগ করেছেন ঘাটালের বিজেপি প্রার্থী ভারতী ঘোষ। তিনি বলেন-“রাজ্যের বর্তমান সরকার পুলিশের জন্য কিছুই করবে না। এ রাজ্যের পুলিশ শুধু মিথ্যা প্রতিশ্রুতি ছাড়া আর কিছুই পায় না।” এরপরই তিনি পুলিশকে নিরপেক্ষভাবে কাজ করার নির্দেশ দেন। এরপর তিনি বলেন-“পুলিশ একদিন থানা বন্ধ করে সরে যাক, দেখবেন রাজ্য সরকার ও সরকারের লোকেরা ইমরান খানের পাকিস্তানে গিয়ে আশ্রয় নিয়েছে।”
মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নাম করে তীব্র কটাক্ষ ঘাটালের বিজেপি প্রার্থীর
২) “মানুষ প্রতিবাদ করলেই তাকে মাওবাদী আখ্যা দিয়ে জেলে আটকে রাখা হল রাজ্য সরকারের কাজ। কামদুনিতে যারা প্রতিবাদ আন্দোলন করল তাদের মাওবাদী বলে আখ্যা দেওয়া হল। বেলপাহাড়িতে শিলাদিত্য চৌধুরীকেও মাওবাদী আখ্যা দিয়ে জেলে রাখা হয়েছিল।” বলেন ভারতী ঘোষ।এরপর একের পর এক তোপ দাগা শুরু করেন।
৩) “সারদা-নারদার টাকা মেরেও ওদের শিক্ষা হয়নি। তাই কন্যাশ্রী, রূপশ্রী, যুবশ্রী সহ বিভিন্ন প্রকল্পের টাকা মেরে তৃণমূলের নেতারা ফুলে-ফেঁপে উঠেছে।”
৪) “মেদিনীপুরে এসে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় যখন বলছেন-নরেন্দ্র মোদি ভারত ছাড়ো, তখন বন্যার কবলে ঘাটাল। আর সেই ঘাটালের মানুষের তখন ঘাটাল ছাড়ো অবস্থা। মুখ্যমন্ত্রী ঘাটালের দিকে তাকায়নি। বন্যাকবলিত ঘাটালের দিকে তাকায়নি। বন্যা কবলিত ঘাটালে তিনি যাওয়ার সাহস দেখাতে পারেননি। সেইসময় আমি ঘাটালের মানুষের পাশে গিয়ে দাঁড়িয়েছিলাম।”
এর নাম কি উন্নয়ন-তুললেন প্রশ্ন
৫) “দু’টাকা কিলো চাল, ছাত্র-ছাত্রীদের একটা সাইকেল দিলে কি উন্নয়ন হয়? এর নাম কি উন্নয়ন? মানুষের সাথে মিশে সমস্যা সমাধানের নাম হল উন্নয়ন।”
ঘাটাল মাস্টার প্ল্যান কেন রূপায়ন হয়নি- দিলেন তাঁর মতো করে জবাব
৬) “ঘাটাল মাস্টার প্ল্যান রূপায়ন হবে কি করে? ঘাটালের সাংসদ দেব পাঁচ বছরে পাঁচ বার ঘাটালে আসেননি ও সংসদেও যাননি। ঘাটাল মাস্টার প্ল্যান নিয়ে কেউ সংসদে কথাও বলেননি। তাই কেউ শোনেননি, তাই সংসদে ঘাটাল মাস্টার প্ল্যান পাশ হয়নি। দেবকে সিনেমায় ও টাকা দিলে দেখতে পাওয়া যায়। কিন্তু ঘাটালের সাংসদ হিসেবে পাঁচবছরে পাঁচবারও দেখতে পাওয়া যায়নি।” এভাবেই প্রতিপক্ষকে বিঁধলেন ভারতী ঘোষ।
সবশেষে তিনি ঘাটালের উন্নয়নের জন্য বিজেপি প্রার্থী হিসেবে তাঁকে ভোট দিয়ে আশীর্বাদ করার জন্য সকলের কাছে আবেদন জানান। এদিনের কর্মীসভায় বক্তব্য রাখেন ত্রিপুরার উপমুখ্যমন্ত্রী জিষ্ণুদেব বর্মন, ঘাটাল জেলা বিজেপির সাংগঠনিক সভাপতি অন্তরা ভট্টাচার্য সহ অন্যান্যরা।
Published on: মার্চ ২৬, ২০১৯ @ ২২:৩১