Published on: জুলা ১৭, ২০১৮ @ ০৮:১৪
এসপিটি নিউজ ডেস্কঃ একজন সিভিল ইঞ্জিনিয়ার থেকে কর্মজীবন শুরু করে পরবর্তীকালে নিজেকে একজন বিশ্বখ্যাত বিশ্বতত্ববিদ ও জ্যোতির্বিজ্ঞানী হিসেবে সারা বিশ্বে তুলে ধরেছিলেন।তিনি হলেন জর্জ এদুয়ার ল্যমেত্র।১৯২৭ সালে তিনি প্রস্তাব করেন যে মহাবিশ্বের সম্প্রসারণ এক আদি অবস্থা থেকে আরম্ভ হয়েছিল। আর সেই আদি অবস্থা হল একটি আদি পরমানু। যা থেকে এই মহাবিশ্বের সম্প্রসারণের শুরু। ২০১৮ সালের ১৮ জুলাই জর্জ ল্যমেত্রকে তাঁর বিগ ব্যং থিওরির জন্য শ্রদ্ধা জানাল গুগল ডুডল।
১৮৯৪ সালের ১৭জুলাই বেলজিয়ামের শার্লরোয়া এলাকায় জন্মগ্রহণ করেন। প্রথম জীবনে একজন ক্রিস্টান ধর্মযাজক হিসেবে প্রশিক্ষন নিয়েছিলেন। তার আগে তিনি ব্রিটেনের কেমব্রিজ বিশ্ববিদ্যালয় ও আমেরিকার ম্যাসাচুসেটস ইন্সটিটিউট অফ টেকনোলজিতে জ্যোতির্পদার্থ বিজ্ঞান নিয়ে পড়াশুনা করেন। এই সময় তিনি মার্কিন জ্যোতির্বিজ্ঞানী এডউইন হাবল ও হার্ভার্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের বিজ্ঞানী হার্লো শ্যাপলির দ্বারা প্রভাবিত হন। এঁরা দু’জনেই মহাবিশ্বের সম্প্রসারণের বিষয়ে বেশ কিছু ধারণা উপলব্ধি করেছিলেন।
১৯১৪ সালে মাত্র ১৪ বছর বয়সে বেলজিয়ামের লুভেনে ক্যাথলিক ইউনির্ভাসিটিতে সিভিল ইঞ্জিনিয়ারিং নিয়ে পড়াশুনো শুরু করেন। কিন্তু প্রথম বিশ্বযুদ্ধের কারণে তাঁর পড়াশুনোয় ব্যাঘাত ঘটে। যুদ্ধের পর তিনি পদার্থ বিজ্ঞান ও গণিত নিয়ে অধ্যয়ন শুরু করেন। ১৯২০ সালে তিনি ডক্টরেট হন। ১৯২৭ সালে বেলজিয়ামের লিউভেন বিশ্ববিদ্যালয়ে জ্যোতির্পদার্থ বিজ্ঞান নিয়ে অধ্যাপনা করেন। এই সময় তিনি মহাবিশ্বের সম্পরসারণের বিষয়টি নিয়ে গবেষণা শুরু করেন। আর তখনই তিনি জানতে পারেন এই মহাবিশ্বের সম্পরসারণের পিছনে রয়েছে এক আদি পরমাণু। এ কথা জানার পর তাকেঁ অস্থির করে তোলে। আদি পরময়াণুর বিষয়ে আরও বিশদে জানতে তিনি তখন আইন্সটাইনের আপেক্ষিকতার সাধারণ তত্ত্ব নিয়ে গবেষণা শুরু করে দেন। ১৯৩১ সালে এই বিষয়ে লেখা তাঁর প্রবন্ধ ইংরাজিতে অনুবাদ করেন আর্থার এডিংটন।
আর তারপরই তার সামনে ভেসে থাকা অনেক ধোঁয়াশা কাটতে শুরু করে। সেই তত্ত্বের অনেক সূত্রের অনায়াসে সমাধান করে ফেলেন জর্জ। তিনি তখন জানতে পারেন এই আদি পরমাণুর সম্পর্কে অনেক অজানা তথ্য। এটি ছিল সূর্যের চেয়ে প্রায় ৩০ গুন বড়। আকারে দেখতে ছিল ডিমের মতো।আধুনিক কাল থেকে ২০-৬০ বিলিয়ন বছর পূর্বে এই আদি পরমাণুর অস্তিত্ব ছিল। এসবের উপর ভিত্তি করেই আধুনিককালে মহা বিস্ফোরণের মতবাদ গড়ে উঠেছে।
এসবের উপর ভিত্তি করেই তিনি লেখেন-“ডিসকাসন অন দ্য ইভোলিউশন অফ দ্য ইউনিভার্স”(১৯৩৩) ও “হাইপোথেসিস অফ দ্য প্রাইমাল অ্যাটম”(১৯৪৬।
১৯৩৬ সালে পন্টিফিক্যাল অ্যাকাডেমি অফ সায়েন্সে-র সদস্য নির্বাচিত হন। ১৯৪১ সালে তিনি রয়্যাল অ্যাকাডেমি অফ সায়েন্স এন্ড আর্টস অফ বেলজিয়ামের সদস্য নির্বাচিত হন।
১৯৩৪ সালে ১৭ই মার্চ রাজা লিওপল্ড তৃতীয়-র কাছ থেকে ‘হাইয়েস্ট বেলজিয়ান সায়েন্টিফিক ডিস্টিংশন’ ফ্র্যাঙ্কুই পুরস্কার গ্রহণ করেন। এই পুরস্কারের জন্য তাঁর নাম প্রস্তাব করেছিলেন অ্যালবার্ট আইন্সটাইন।১৯৩৬ সালে ফ্রেঞ্চ অ্যাস্ট্রোনমিক্যাল সোসাইটি তাদের সর্বোচ্চ পুরস্কার ‘সোসাইটি অ্যাস্ট্রনমিক ডে ফ্রান্স’-এ সম্মানিত হন।
২০০৫ সালে ফ্লেমিশ টেলিভিশন প্রগ্রামে “দ্য গ্রেটেস্ট বেলজিয়াম” ভোটে ল্যমত্রে ৬১তম স্থান পান। সেই বছরই আরও এক টেলিভিশনে তিনি ৭৮তম স্থান পান।
Published on: জুলা ১৭, ২০১৮ @ ০৮:১৪