“ইন্দিরা ফিরে এসেছে” লিখছে রয়টারঃ প্রিয়াঙ্কা গান্ধী ভাডরার রোড-শো এ বাঁধ ভাঙা উচ্ছ্বাস সমর্থকদের

Main দেশ
শেয়ার করুন

Published on: ফেব্রু ১১, ২০১৯ @ ২০:৪১

এসপিটি নিউজ ডেস্কঃ ইতিমধ্যে তাঁকে কংগ্রেসের সাধারণ সম্পাদক করা হয়েছে। আর তারপর সোমবারই ছিল উত্তরপ্রদেশের রাজধানী লখনউ-তে লোকসভা নির্বাচনের আগে তাঁর প্রথম রোড-শো। নেহেরু-গান্ধী পরিবারের এই কন্যাকে নিয়ে যে ধরনের উচ্ছ্বাস উত্তরপ্রদেশের মানুষের মধ্যে দেখা গেল তা নিয়ে রাজনৈতিক মহল কিন্তু এখন থেকেই হিসেব কষতে শুরু করে দিয়েছে। তারা বলতে শুরু করেছেন-এই কংগ্রেস কিন্তু ২০১৪ সালের কংগ্রেস নয় এ একেবারে সেই ইন্দিরা জমানার মতো টগবগে কংগ্রেস। আর এসব দেখে রয়টার তো শিরোনামই করেছে “ইন্দিরা ফিরে এসেছে”র মতো ব্যাপার।

কংগ্রেস সভাপতি রাহুল গান্ধী গত মাসে তার ছোট বোনকে দলের সাধারণ সম্পাদক নিয়োগ করে চমক  দিয়েছিলেন। তিনি উত্তরপ্রদেশেও মুখ হবেন,  যে রাজ্য থেকে সংসদের নিম্ন কক্ষে সবচেয়ে বেশি সংখ্যক সদস্য পাঠিয়েছে এবং যেখানে এখন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির নেতৃত্বে বিজেপির শাসন চলছে।

কিন্তু গত বছরের শেষদিকে হিন্দি বলয়ের তিনটি রাজ্যে বিধানসভা নির্বাচনে বিজেপির পরাজয় এবং দুর্বল কৃষি অর্থনীতি এবং বেকারদের চাকরির ভাবের উপর অসন্তোষের কারণে মোদির অবস্থানকে দুর্বল করে দিয়েছিল, যা কংগ্রেসকে আরও আক্রমনাত্মক করে তুলেছে।

রয়টার লিখেছে- “৪৭ বছর বয়সী প্রিয়াঙ্কাকে তাঁর প্রথম নাম দ্বারা উল্লেখ করা হয় – তার দাদী, সাবেক প্রধানমন্ত্রী ইন্দিরা গান্ধী-এর সঙ্গে একটি আকর্ষণীয় অনুরূপতা বহন করে এবং একজন বক্তা হিসাবে ভোটারদের সাথে সংযোগ রক্ষা করতে এ যেন এক উপহারের মতো।কংগ্রেস আশা করে যে তিনি যেখানে দৃষ্টি দেবেন সেগুলি ভোটে পরিণত হবে।

৪৫ বছর বয়সী কংগ্রেস সমর্থক ফুজাইল আহমেদ খান বলেন, “এ যেন ইন্দিরা গান্ধী ফিরে এসেছে”। রাজ্যের কৃষক রাহুল গান্ধীকে প্রধানমন্ত্রী দেখতে চান, প্রিয়াঙ্কাকে রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী। ”

ইন্দিরা গান্ধী, ভারতের একমাত্র প্রধানমন্ত্রী এবং “আয়রন লেডি” নামে পরিচিত, ইন্দিরা গান্ধীকে ১৯৭৫সালের শুরু থেকে প্রায় দুই বছর ধরে নাগরিক অধিকার স্থগিত করার জন্য সমালোচনা করা হয়েছিল। হিন্দু জাতীয়তাবাদী বিজেপি প্রিয়াঙ্কার নিয়োগকে কংগ্রেস এর “বংশগত রাজনীতি” এর প্রসার বলে জানিয়েছে।

প্রিয়াঙ্কার পোস্টারে রাজধানী লখনউ ছেয়ে গেছে এবং রাস্তায় কংগ্রেস সমর্থকদের উচ্ছ্বাস, ড্রামারদের দাপাদাপি সব যেন পুরনো ইন্দিরা যুগকে ফিরিয়ে আনে।তিনি যখন তার ভাইয়ের সাথে বিমানবন্দর থেকে বেরিয়ে আসছিলেন তখন সমর্থকরা সমানে তাঁর নাম উচ্চারণ করে স্লোগান দিতে থাকেন। ভাইবোনদের একটি বাসের উপরে থেকে এবং পরে এসইভিতে বিমানবন্দর থেকে রাজ্য অফিস পর্যন্ত গোটা রোড-শো-তে মানুষের ভিড় কংগ্রেস বিরোধীদের অস্বস্তিতে ফেলে দিয়েছে।

রাহুল গান্ধী একটি মাইক্রোফোন হাতে তুলে নেন, বলে্ন- প্রিয়াঙ্কা ও সাংসদ জ্যোতিরাদিত্য সিন্ধিয়া রাজ্য দলের নেতা হিসাবে সাধারণ নির্বাচনের দিকে নজর দেবেন এবং উত্তরপ্রদেশে কংগ্রেসকে ক্ষমতায় প্রতিষ্ঠিত করবে।”দেশের কেন্দ্রস্থল হল উত্তরপ্রদেশ,” তিনি জোরে চিৎকার করে বলেন, তখন প্রিয়াঙ্কা তাঁর পাশে দাঁড়িয়ে আছেন। “তারা স্পষ্টভাবে সংসদীয় নির্বাচনে মনোনিবেশ করছেন তবে লক্ষ্য হচ্ছে দেশের একটি সরকার গঠন করা। আমরা যুবক, দরিদ্র ও কৃষকদের সরকার আনব।”

রয়টার লিখছে- কিন্তু উত্তরপ্রদেশে ভাই-বোনের সংহতির পক্ষে জেতা এত সহজ হবে না, ২২0 মিলিয়ন লোকের একটি দরিদ্র রাজ্য যেখানে আঞ্চলিক জাতি-ভিত্তিক দুই দল এখন বিজেপির বিরুদ্ধে ক্ষমতার জন্য প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছে সেখানে কংগ্রেস কেবলই একটি মার্জিনাল প্লেয়ার।

বিগত সাধারণ নির্বাচনে বিজেপি এই রাজ্যে ৮০টি আসনের মধ্যে ৭৩টি আসন জিতেছিল। গত সপ্তাহে বিজেপি সভাপতি অমিত শাহ বলেন,  এবার তাদের এখানে ৭৪টি আসনে জয়ী হবে।সোমবার টুইটারে যোগ দেওয়ার পরে এবং একটা টুইট পাঠানোর আগেই ৭৮,০০০ জন প্রিয়াঙ্কার অনুসারী হয়েছেন, লখনউতে ৪০টিরও বেশি আসনে দলীয় কর্মীদের সাথে বৈঠকে তিন দিন কাটবেন।

২০০৯ সালের লোকসভা নির্বাচনে উত্তরপ্রদেশে ২১টি আসনে জয়ী হলেও ২০১৪ সালের নির্বাচনে মাত্র দুটি আসন নিয়েই সন্তুষ্ট থাকতে হয়েছিল কংগ্রেসকে।ছবি সৌজন্যে রয়টার

Published on: ফেব্রু ১১, ২০১৯ @ ২০:৪১


শেয়ার করুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

83 + = 87