একটি পঞ্চায়েতে ১০টির বেশি ভোট পেয়ে দেখাক বিজেপি। আরে, বুথ কমিটি করতেই আপনাদের ১০০ বছর লেগে যাবে।
অভিষেকের চ্যালেঞ্জ চাটনিবাবুকেও-পঞ্চায়েত নির্বাচনে বাংলার ৪৮ হাজার আসনের মধ্যে যে কোনও একটি আসনে দাঁড়িয়ে জিতে দেখান, তাহলে আমি রাজনীতির আঙিনায় পা দেব না।
বিজেপি, কংগ্রেস, সিপিএম উন্নয়ন চোখে দেখতে পায় না। কারণ, তাদের চোখে ছানি পড়েছে। তাই এবার তাদের জন্য ছানিশ্রী প্রকল্প চালু করা হবে।
সিবিআই, ইডি দিয়ে তৃণমূল কংগ্রেসকে ধমকে-চমকে কোনও লাভ হবে না। তৃণমূল কংগ্রেস বিশুদ্ধ লোহার মতো।
সংবাদদাতা-বাপ্পা মণ্ডল ছবি-রামপ্রসাদ সাউ
Published on: জানু ১০, ২০১৮ @ ২১:৫২
এসপিটি নিউজ, গোপীবল্লভপুর, ১০ জানুয়ারিঃ বিজেপির রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষের খাস তালুকে দাঁড়িয়ে বিশাল জনসভা করে গেলেন তৃণমূল যুব কংগ্রেসের সভাপতি অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। আজকের জনসভায় জনজোয়ার ছিল চোখে পড়ার মতো। সেখানে দাঁড়িয়ে দিলীপ ঘোষকে চ্যালেঞ্জ ছুঁড়ে অভিষেক বলেন-এক মাসের মধ্যে এরকম সভা করে দেখান তবেই বুঝব আপনাদের কত ক্ষমতা। একই সঙ্গে বিজেপিকে এদিন কটাক্ষ করে বলেন, একটি পঞ্চায়েতে জেতার ক্ষমতা নেই, শুধু বড় বড় কথা। আরে, বিজেপি যদি একটি পঞ্চায়েতে ১০টিরও বেশি ভোট পায় তবে বুঝব তাদের নেতারা কতবড় দক্ষ সংগঠক। কয়েকদিন আগে বিনপুরে বিজেপির এক সভায় দাঁড়িয়ে বিজেপি নেতা-নেত্রীরা তৃণমূল কংগ্রেস ও মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের বিরুদ্ধে তীব্র আক্রমন করেছিলেন, এদিবের সভায় দাঁড়িয়ে তারই পাল্টা জবাব ফিরিয়ে দিলেন তৃণমূল যুব কংগ্রেস সভাপতি অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়।
এদিনের সভায় অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় তার বক্তৃতাকে কয়েকটি ভাগে ভাগ করে নিয়ে একদিকে যেমন রাজ্যের উন্নয়নের গতিপ্রকৃতি, মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের রাজ্যের মানুষের জন্য কর্মযজ্ঞের খতিয়ান তুলে ধরেন ঠিক তেমনি বিরোধী সিপিএম, কংগ্রেস, বিশেষ করে বিজেপিকে কয়েকটি যুক্তি খাড়া করে আক্রমন করেন।
বুধবার গোপীবল্লভপুরের জনসমাবেশে অভিষেকের আক্রমনের মূল লক্ষ্য ছিল বিজেপি। যেখানে তিনি বেছে নিয়েছিলেন তাদের দুই নেতা দিলীপ ঘোষ ও মুকুল রায়কে। তিনি বলেন, একটি পঞ্চায়েতে ১০টির বেশি ভোট পেয়ে দেখাক বিজেপি। আরে, বুথ কমিটি করতেই আপনাদের ১০০ বছর লেগে যাবে।তারা আবার বড় বড় কথা বলে।মুকুল রায়ের নাম না করে তিনি বলেন, বিজেপিতে এক নতুন জঞ্জাল যোগ দিয়েছে। ওকে বিশ্বাস করবেন না। পুলিশকে ধমকানো, চমকানো এখন জঞ্জালবাবুর স্বভাব হয়ে দাঁড়িয়েছে। এরপরই তিনি দিলীপ ঘোষকে লক্ষ্য করে চ্যালেঞ্জ ছুঁড়ে বলেন, ক্ষমতা থাকলে এক মাসের মধ্যে এরকম সভা করে দেখান, তবেই বুঝব আপনাদের ক্ষমতা।তিনি আরও বলেন, সিপিএম আমলে হাত কাটা, কান কাটা দিলীপের নাম ছিল, আর এখন বিজেপির জিভ কাটা দিলীপের ভাষার উপর কোনও নিয়ন্ত্রণ নেই। মুকুল রায়ের নাম না করে বলেন, চাটনিবাবু নির্বাচনে দাঁড়ালে তার জামানত জব্দ হবে, তাই বাংলা থেকে পালিয়ে দিল্লিতে ভোটার তালিকায় নাম তুলেছে। অভিষেকের চ্যালেঞ্জ চাটনিবাবুকেও-পঞ্চায়েত নির্বাচনে বাংলার ৪৮ হাজার আসনের মধ্যে যে কোনও একটি আসনে দাঁড়িয়ে জিতে দেখান, তাহলে আমি রাজনীতির আঙিনায় পা দেব না। তিনি পঞ্চায়েত নির্বাচনে ঝাড়গ্রাম জেলা থেকে বিজেপি, সিপিএম, কংগ্রেসকে নিশ্চিহ্ন করার আহ্বান জানান।
মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের উন্নয়নের খতিয়ান তুলে ধরে যুব তৃণমূল কংগ্রেস সভাপতি অভষেক বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় অশান্ত জঙ্গলমহলে দাঁড়িয়ে বলেছিলেন, মানুষ খুনের জন্য যারা বন্দুক ধরবে আমি তাদের বিরুদ্ধে, আর যারা দেশ রক্ষার জন্য বন্দুক ধরবে আমি তাদের পক্ষে। তাই জঙ্গলমহলের বহু মাওবাদী অস্ত্র ছেড়ে সমাজের মূল স্রোতে ফেরার জন্য প্রশাসনের কাছে আত্মসমর্পন করেছে। মুখ্যমন্ত্রী হওয়ার পর তিনি জঙ্গলমহলে শান্তি প্রতিষ্ঠা করেছেন। সেই শান্তিকে চিরস্থায়ী শান্তি হিসেবে রক্ষা করার দায়িত্ব আপনাদের। ৩৪ বছর ক্ষমতায় থাকা সত্ত্বেও নয়াগ্রামের ভসরা ঘাটে সেতু নির্মান করতে পারেনি বামেরা। জঙ্গলকন্যা সেতু তৈরি হওয়ায় নয়াগ্রাম ও কেশিয়াড়ির মধ্যে যোগাযোগ ব্যবস্থার উন্নতি হয়েছে। নয়াগ্রাম, লালগড়ের মতো জায়গায় কলেজ তৈরি হয়েছে।অথচ বিজেপি, কংগ্রেস, সিপিএম উন্নয়ন চোখে দেখতে পায় না। কারণ, তাদের চোখে ছানি পড়েছে। তাই এবার তাদের জন্য ছানিশ্রী প্রকল্প চালু করা হবে।
অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, কেন্দ্র যদি ৪৫ হাজার কোটি টাকা কেটে না নিত তাহলে ২ টাকার বদলে রাজ্যের মা-মাটি-মানুষের সরকার বিনামূল্যে গরিব মানুষকে চাল দিত। তিনি বলেন, কন্যাশ্রী বিশ্বের দরবারে পৌঁছে দিয়েছে রাজ্য সরকার অথচ কেন্দ্র সরকার কিছুই করতে পারেনি। সারদা কাণ্ডে সুদীপ্ত সেনকে রাজ্য সরকার গ্রেফতার করে প্রমাণ করে দিয়েছে দুর্নীতির সঙ্গে তারা কোনও আপোষ করবে না। সিবিআই, ইডি দিয়ে তৃণমূল কংগ্রেসকে ধমকে-চমকে কোনও লাভ হবে না। তৃণমূল কংগ্রেস বিশুদ্ধ লোহার মতো।তাই এই সভায় মানুষের এত সমাগম।
এদিনের সভায় অন্যান্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন রাজ্যের মন্ত্রী সৌমেন মহাপাত্র ও চূড়ামণি মাহাত, সাংসদ মানস ভুঁইয়া, জেলা সভাপতি, অজিত মাইতি, জেলা যুব সভাপতি রমাপ্রসাদ গিরি, উমা সোরেন, বিধায়ক শ্রীকান্ত মাহাত, দুলাল মুরমু, সুকুমার হাঁসদা প্রমুখ।
Published on: জানু ১০, ২০১৮ @ ২১:৫২