
- অসুস্থ মায়ের সঙ্গে দেখা করতে এসেছিলেন হিজবুল মুজাহিদিনের কম্যান্ডার রিয়াজ নায়কু।
- তার উপর 12 লক্ষ টারা পুরস্কার ঘোষণা করেছিল সেনা।
- বেগপোরায় গ্রমের বাড়ি শক্তিশালী বিস্ফোরক দিয়ে উড়িয়ে দেওয়া হয়। সেখানেই নিহিওত হয় মোস্ট ওয়ান্টেড জঙ্গি নায়কু।
- কাশ্মীরে সতর্কতা হিসাবে মোবাইল ইন্টারনেট বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। বিএসএনএল ছাড়াও অন্যান্য সমস্ত ফোন নেটওয়ার্কও বন্ধ হয়ে গেছে।
Published on: মে ৬, ২০২০ @ ১৯:৩০
এসপিটি নিউজ ডেস্ক: দীর্ঘদিন ধরে তাকে ধরার জন্য প্র্যাস চালিয়ে গিয়েছে নিরাপত্তা বাহিনী। অবশেষে বুধবার তাদের প্রয়াস সফল হয়েছে। পুলওয়ামায় তার নিজের গ্রাম বেগপোরায় ঢোকার খবর পেয়েই তারা গোটা গ্রাম ঘিরে ফেলে। তখন নিরাপত্তা বাহিনীকে উদ্দেশ্য করে গুলি ছুঁড়তে শুরু করে হিজবুল মুজাহিদিনের শীর্ষ কম্যান্ডার রিয়াজ নায়কু। সেইসময় এনকাউন্টারে খতম করা হয় ওই জঙ্গিকে।যিনি একসময় অঙ্কের শিক্ষক থেকে জঙ্গিদের খাতায় নিজের নাম লেখান। হয়ে ওঠেন কাশ্মীরের মোস্ট ওয়ান্টেড জঙ্গি। হিজবুল মুজাহিদিনের শীর্ষ কম্যান্ডার।
কখন জঙ্গিদের দলে যোগ দেন
35 বছর বয়সী নায়কু ছিলেন অঙ্কের শিক্ষক। তিনি কাশ্মীরের পুলওয়ামার বাসিন্দা। 2010 সালে কাশ্মীরে অশান্তি শুরু হয়।সেইসময় টিয়ার শেল থেকে শিশু তুফাইল মট্টুর মৃত্যুর পর এই উপদ্রব শুরু হয়েছিল।কয়েক মাস ধরে কাশ্মীরে পাথর ছোঁড়া ও কারফিউ অব্যাহত ছিল।আর তখনই নায়কু শিক্ষকতার পেশা ছেড়ে হাতে তুলে নেন আগ্নেয়াস্ত্র। যোগ দেন জঙ্গি সংগঠনে। শুরু হয় তার অন্ধকার জগতের জীবন।
বুরহান ওয়ানি এবং ইত্তু নিহত হওয়ার পরে রিয়াজ কম্যান্ডার হন
2016 সালে বুরহান ওয়ানির এনকাউন্টারে মৃত্যুর পর ইয়াসিন ইত্তু ওরফে মাহমুদ গজনভী হিজবুল কম্যান্ডার হন। 2017 সালে আগস্ট মাসে সোফিয়ানে টানা 18 ঘন্টা সংঘর্ষের পর নিরাপত্তা বাহিনীর হাতে নিহত ইত্তু নিহত হয়। এরপরে রিয়াজ নায়কু কাশ্মীরে হিজবুল মুজাহিদিনের কম্যান্ডার হন। নায়কু মহম্মদ বিন কা্সেম কোড নাম নিয়ে কাজ করছিলেন। তিনি বুরহান ওয়ানির ঘনিষ্ঠ ছিলেন। 2017 সালে, তিনি উপত্যকার 12 শীর্ষ জঙ্গির তালিকায় অন্তর্ভুক্ত ছিলেন। 2018 সালে সেনাবাহিনীর হিট লিস্টে অন্তর্ভুক্ত 17 জন জঙ্গির মধ্যে নায়কুও ছিলেন।
নায়কুর উপর 12 লক্ষ টাকার পুরস্কার ছিল
রিয়াজ নায়কু ছিলেন কাশ্মীরের সর্বাধিক সক্রিয় জঙ্গি। তিনি হিজবুল মুজাহিদিনের হয়ে কাজ করতেন। তাকে মোস্ট ওয়ান্টেড জঙ্গিদের এ ++ বিভাগে রাখা হয়েছিল। তার উপর 12 লক্ষ টাকার পুরস্কারও ঘোষণা করেছিল ভারতীয় সেনা। তিনি বেশ কয়েকজন পুলিশ কর্মীকে অপহরণ ও তাদের হত্যার কাজে যুক্ত ছিলেন।
এনউন্টারের সময় নায়কু কয়েকবার পালিয়ে যায়
একাধিকবার নায়কুকে মৃত জঙ্গিদের প্রতি গান স্যালুট করতেও দেখা গেছে।তিনি সোশ্যাল মিডিয়ায় দীর্ঘ অডিও এবং ভিডিও বার্তা পোস্ট করেছেন। এটা প্রথম নয় যখন নায়কুকে সেনাবাহিনী ঘেরাও করে রেখেছিল।এর আগেও বেশ কয়েকবার ঘেরাও অবস্থা থেকে পালিয়েছিলেন তিনি। 2018-19 এর মধ্যে, তিনি বেশ কয়েকবার এনকাউন্টার থেকে পালিয়ে গিয়েছিলেন।
নাইকু বাড়ির ছাদে লুকিয়ে ছিল
মঙ্গলবার রাতে গোয়েন্দাদের কাছে নির্ভরযোগ্য সূত্রে খবর ছিল। সেইমতো এলাকায় ক্ষেত এবং রেলপথগুলির আশপাশের জায়গাগুলিকে খনন করে ফেলা হয়। এর ফলে জানা যায় যে সেখানে কোনও সুড়ঙ্গে কেউ আত্মগোপন করে আছে কিনা। তারপরেই বুধবার সকাল হতেই পুলওয়ামার বেগাপুরা গ্রামটি চারপাশ দিয়ে ঘিরে ফেলে। কারণ, খবর ছিল যে গ্রামে নায়কু আছে। সে নিরাপত্তা রক্ষীর অভিযানের খবর পেয়ে বাড়ির ছাদে লুকিয়ে পড়ে। কিছু সময় অপেক্ষার পর সে নিরাপত্তা রক্ষীকে লক্ষ্য করে গুলি চালাতে থাকে। নিরাপত্তা রক্ষীও পালটা গুলি চালায়।
নাইকু যেখান থেকে গুলি চালাচ্ছিল নিরাপত্তা বাহিনী সেই জায়গাটিকে বেছে নেয়।এরপর তারা 40 কেজি আইইডি দিয়ে বাড়িটি উড়িয়ে দেয়। এতে নিহত হন নায়কু ও তার সহযোগী আদিল। এই লড়াইয়ের পরে পুরো কাশ্মীরে সতর্কতা হিসাবে মোবাইল ইন্টারনেট বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। বিএসএনএল ছাড়াও অন্যান্য সমস্ত ফোন নেটওয়ার্কও বন্ধ হয়ে গেছে।
নায়কু এসেছিল অসুস্থ মায়ের সঙ্গে দেখা করতে
নায়কু এসেছিল তার অসুস্থ মায়ের সঙ্গে দেখা করতে। তিনি তাঁর বেছে নেওয়া নিকটতম ব্যক্তি ছাড়া আর কারও উপর নির্ভর করতেন না। সম্ভবত সে কারণেই তিনি এতদিন রক্ষা পেয়ে এসেছেন। তিনি স্থানীয় বহু মানুষকে জঙ্গি করেছিলেন। কাশ্মীরে 35 টি জঙ্গি সংগঠন সক্রিয় রয়েছে। এ বছর দশ শতাধিক জঙ্গি হিজবুল মুজাহিদিনে যোগদান করেছেন।
Published on: মে ৬, ২০২০ @ ১৯:৩০