
টুর্নামেন্টের সেরা খেলোয়াড় অভিরাজ জহুরী জিতে নিল সবচেয়ে আকর্ষনীয় ‘ ট্রিপেনকেয়ার প্লেয়ার অব দ্য সিরিজ’ পুরস্কার
চ্যাম্পিয়ন ও রানার্স দলের খেলোয়াড়দের হাতে পুরস্কার তুলে দিলেন ট্রিপেনকেয়ার কোম্পানির সিইও এম এ ফজল
Published on: ফেব্রু ১০, ২০২৫ at ২৩:৪৫
Reporter: Aniruddha Pal
এসপিটি নিউজ, কলকাতা, ১০ ফেব্রুয়ারি: প্রথম বছরেই সকলের নজর কেড়ে নিল ট্রিপেনকেয়ার ট্রাভেল কোম্পানির স্পনসারে আয়োজিত “দ্যা ফিফটিজ লীগ”। গতকালই শেষ হয়েছে স্থানীয় খেলোয়াড়দের নিয়ে আয়জইত এই টুর্নামেন্ট। ছ’টি দলের এই টুর্নামেন্টে চ্যাম্পিয়ন হয়ে ট্রিপেনকেয়ার ট্রফি জিতেছে আরবানা স্টার্স টিম। রানার্স ট্রফি জিতেছে হানজালা স্ট্রাইকার্স। উভয় দলের খেলোয়াড়দের হাতে পুরস্কার তুলে দিয়েছেন ট্রিপেনকেয়ার –এর সিইও এম এ ফজল। এদিন তিনি টুর্নামেন্টের সেরা খেলোয়াড় আরবানা স্টার্সের ক্যাপ্টেন অভিরাজ জহুরীর হাতে ট্রিপেনকেয়ার কোম্পানির পক্ষ থেকে প্লেয়ার অব দ্য ম্যাচ-এর ট্রফি এবং সেই সঙ্গে বিশেষ পুরস্কার হিসাবে তিন রাত চার দিনের ভ্রমণের পুরস্কার তুলে দেন।
৭ ফেব্রুয়ারি ২০২৫ কলকাতায় ট্যাংরা এলাকায় হার্ভার্ড স্পোর্টস অ্যাকাডেমির মাঠে জাতীয় সঙ্গীতের মাধ্যমে ‘দ্য ফিফটিজ লিগ’ টুর্নামেন্ট শুরু হয়। তিনদিনের এই প্রতিযোগিতায় অংশ নিয়েছিল- আরবানা স্টার্স, আরবান ওয়ারিয়র্স, পাঠান ব্রাদার্স, হানজালা স্ট্রাইকার্স, মুর্শিদাবাদ কিংস এবং থ্রিএম প্রিডেটর্স। আরবানা স্টার্স এবং আরবান ওয়ারিয়র্স দুটি দলই শুরুটা দারুন শুরু করে। দুটি ম্যাচ বাকি থাকতেই তারা সেমিফাইনালে পৌঁছে গিয়েছিল। একেবারে শেষ দিনে তিনটি দল- হানজালা স্ট্রাইকার্স , পাঠান ব্রাদার্স এবং মুর্শিদাবাদ কিংস-এর জোর টক্কর শুরু হয়। কোন দুটি দল সেমিফাইনালে খেলবে তা নিয়ে। অবশেষে সেমিফাইনালে পৌঁছয় পাঠান ব্রাদার্স এবং হানজালা স্ট্রাইকার্স।
টুর্নামেন্টে সিব চেয়ে আকর্ষণীয় ম্যাচ হয় সেমিফাইনাল থেকে। প্রথম সেমিফাইনালে মুখোমুখি হয় হানজালা স্ট্রাইকার্স এবং আরবান ওয়ারিয়র্স। গ্রুপ লিগের ম্যাচে আরবান ওয়ারিয়র্সের কাছে খারাপভাবে হেরেছিল হানজালা স্ট্রাইকার্স। সেই দলের বিরুদ্ধেই তাদের মুখোমুখি হতে হয় সেমিফাইনালে। টসে জিতে আরবানা ওয়ারিয়র্সকে ব্যাট করতে পাঠায়। তার আগে হানজালার ক্যাপ্টেন আসিফ আহমেদ জানান- আগের ম্যাচে কিছু আমাদের ভুল্ভ্রান্তি হয়েছিল। সেগুলি শুধরে নতুনভাবে শুরু করতে চাই। আমাদের লক্ষ্য এই ম্যাচ জিতে ফাইনালে ওঠা। শক্তিশালী আরবান ওয়ারিয়র্স প্রথমে ব্যাট করতে নেমে ৫০ বলে আট উইকেট হারিয়ে তোলে ৮৩ রান। ৮৪ রানের লক্ষ্য নিয়ে ব্যাট করতে নামে হানজালা স্ট্রাইকার্স। শুরুটা খারাপভাবে শুরু হলেও ম্যাচ যত গড়াতে থাকে ততই রাশ নিজেদের হাতে নিতে থাকে হানাজালা স্ট্রাইকার্স। এরপর পাঁচটা ওভার বাউন্ডারি আর পাঁচটা বাউন্ডারির সাহায্যে মাত্র ২৩ বলে ৫৬ রানের এক ঝোড়ো ইনিংস খেলে তিন বল বাকি থাকতেই শক্তিশালী আরবান ওয়ারিয়র্সকে দুই উইকেটে হারিয়ে ফাইনালে পৌঁছে যায় হানজালা স্টাইকার্স। প্লেয়ার অফ দ্যা ম্যাচ হয় আবরার আলি।
দ্বিতীয় সেমিফাইনালে মুখোমুখি হয় পাঠান ব্রাদার্স এবং আরবানা স্টার্স। টুর্নামেন্টের ডিফেন্ডিং চ্যাম্পিয়ন আরবানা স্টার্সকে নিয়ে অনেকেই আশাবাদী ছিলেন। দলের ক্যাপ্টেন অলরাউন্ডার অভিরাজ জহুরীর উপর সকলেরই নজর ছিল। প্রথম দিনে থেকেই অভিরাজ জহুরী তার জহর দেখাতে শুরু করেছিলেন। অভিরাজের ব্যাটিং আর বোলিং-এ বিপক্ষকে একেবারে ছাড়খাড় হয়ে যাচ্ছিল বিপক্ষ দলগুলি। দ্বিতীয় সেমিফাইনালেও সেই ধারা বজায় রাখেন আরবানা স্টার্সের ক্যাপ্টেন অভিরাজ। প্রথমে ব্যাট করতে নেমে ৩২ বলে টুর্নামেন্টের একমাত্র সেঞ্চুরি হাকান তিনি। ১১টি ছয় এবং সাতটি চারের সাহায্যে অপরাজিত ১০৮ রানের দুর্ধর্ষ ইনিংসের সাহায্যে ১৩৯ রান তোলে তার দল। পাঠান ব্রাদার্স ১৪০ রানের এক কঠিন টার্গেট নিয়ে ব্যাট করতে নামে। ক্যাপ্টেন মহম্মদ ওয়াসিমের নেতৃত্বে পাঠান ব্রাদার্স এগোতে থাকে। কিন্তু তিন উইকেট হারিয়ে ১০১ রানে গিয়ে তাদের ইনিংস থেমে যায়। জয়ী হয় আরবানা স্টার্স।
ফাইনালে মুখোমুখি হয় হানজালা স্ট্রাইকার্স ও আরবানা স্টার্স। প্রথমে ব্যাট করতে নেমে হানজালা স্ট্রাইকার্স ছয় উইকেট হারিয়ে তোলে ৯৩ রান। যদিও এই রান আরবানা স্টার্সের কাছে খুব কঠিন নয় বলেই দর্শকরা ধরে নেয়। কারণ, আগের ম্যাচেই তারা সেমিফাইনালে তুলেছিল ১৩৯ রান। কাজেই ৯৪ রানের লক্ষ্য তাদের কাছে খুব যে কঠিন নয় তা কারও অজানা ছিল না। হলও তাই। মাত্র পাঁচ উইকেট হারিয়ে তারা জয়ের লক্ষ্যে পৌঁছে যায়। পাঁচ উইকেটে অনায়াসেই হারিয়ে জিতে নেয় “দ্য ফিফটিজ লিগ” চ্যামিপিয়নস ‘ট্রিপেনকেয়ার’ ট্রফি। সেমিফাইনালের মতো ফাইনালেও সেরা খেলোয়ার নির্বাচিত হন আরবানা স্টার্সের ক্যাপ্টেন অভিরাজ জহুরী।
এদিন মাঠে অন্যান্যদের মধ্যে উল্লেখযোগ্যভাবে উপস্থিত ছিলেন বিশেষ অতিথি হিসাবে টিপেনকেয়ার-এর সিইও এম এ ফজল। চ্যাম্পিয়নস ও রানার্স দলের হাতে ট্রিপেনকেয়ার ট্রফি তুলে দেন তিনি। একই সঙ্গে টুর্নামেন্টের সেরা খেলোয়াড় অভিরাজ জহুরীর হাতে সবচেয়ে আকর্ষণীয় পুরস্কার হিসাবে তিন রাত চারদিনের এক অসাধারণ ভ্রমণ প্যাকেজের উপহার তুলে দেন, যা পাওয়ার জন্য টুর্নামেন্টের শুরু থেকেই প্রতিটি প্লেয়ারই নিজেদের সেরাটা দিয়েছিলেন। কিন্তু শেষ পর্যন্ত তাও জিতে নিল আরবানা স্টার্সের ক্যাপ্টেন অভিরাজ জহুরী।
টুর্নামেন্টের প্রতিষ্ঠাতা আয়োজক মহম্মদ ওয়াসিম জানান, এদিন চ্যাম্পিয়ন টিম আরবানা ওয়ারিয়র্সকে ৫০ হাজার টাকা এবং রানার্স টিম হানজালা স্ট্রাইকার্সকে ৩০ হাজার টাকা পুরস্কার মূল্য হিসাবে দেওয়া হয়। এছাড়াও টুর্নামেন্টে একাধিক বিভাগে সেরা খেলোয়াড়রা হলেন-
- সিরিজের সেরা খেলোয়াড়: অধিরাজ জোহরি (আরবানা স্টার্স)
- সর্বোচ্চ উইকেট শিকারী: মোঃ ইমরান (হানজালা স্ট্রিকার্স)
- উদীয়মান খেলোয়াড়: আরুশ ভোহরা) (আরবানা স্টার্স)
- সেরা অধিনায়ক: আসিফ আহমেদ ( হানজালা স্ট্রাইকার্স )
- সেরা ক্যাচ: মানহাজ আহমেদ (3M প্রিডেটার্স)
এদিন পুরস্কার দেওয়ার আগে ট্রিপেনকেয়ারের সিইও এম এ ফজল জানান, ওয়াসিম ভাইয়ের জন্য আমাদের ট্রিপেনকেয়ার প্রথম ক্রীড়াক্ষেত্রে প্রবেশ করার সুযোগ পেল। প্রথমবার এই টুর্নামেন্ট সকলের নজর কেড়েছে। আশা করব, আগামী বছর এই টুর্নামেন্ট আরও ভাল হবে।
Published on: ফেব্রু ১০, ২০২৫ at ২৩:৪৫