TAAB বাংলার পর্যটন শিল্পের প্রসারে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা নেওয়ার শপথ নিল

Main দেশ বিনোদন ভ্রমণ রাজ্য
শেয়ার করুন

TAAB বাংলায় একটি গঠনমূলক পর্যটন শিল্পের মহড়া ও পুনর্নির্মাণের চেষ্টা করবে

 Published on: এপ্রি ১৬, ২০২৪ at ১১:৫১
Reporter: Aniruddha Pal

এসপিটি নিউজ, কলকাতা, ১৬ এপ্রিল: ট্রাভেল এজেন্টস অ্যাসোসিয়েশন অব বেঙ্গল (TAAB) তাদের বর্ষবরণ উৎসবকে স্মরণীয় করে রাখল বিশেষ একটি শপথ গ্রহণের মধ্য দিয়ে। তারা সিদ্ধান্ত নিয়েছে যে বাংলায় একটি গঠনমূলক পর্যটন শিল্পের মহড়া ও পুনর্নির্মাণের চেষ্টা করবে। বাংলার পর্যটন শিল্পের প্রসারে এক উল্লেখযোগ্য ভূমিকা নিতে চলেছে তারা। তাদের ভাবনায় উঠে এসেছে গোটা বাংলার পর্যটন শিল্প। সেই ভাবনার নাম দিয়েছে- “দেখো আমার বাংলা”। আর তার জন্য এই অ্যসোসিয়েশন অঙ্গীকার করল। আর এই কাজে ভ্রমণ ও পর্যটনের সঙ্গে যুক্ত অন্যান্য  সমস্ত অ্যাসোসিয়েশনগুলিকেও এই দায়িত্ব ভাগ করে নেওয়ার আবেদন জানাল, যা বাংলার পর্যটনের ক্ষেত্রে নিঃসন্দেহে তাৎপর্যপূর্ণ।

 কি কি দায়িত্ব তারা নিতে চলেছে একবার দেখে নেওয়া যাক-
  • TAAB সদস্যরা প্রচার করবে এবং সেইসঙ্গে সুন্দরবন থেকে সান্দাকফু পর্যন্ত সমস্ত পর্যটন গন্তব্যে আলোকিত করার অঙ্গীকার করবে।
  • TAAB হোটেল, হোমস্টে এবং রিসর্টগুলিকে জল সংরক্ষণের গতিতে বৃষ্টির জল পুনর্ব্যবহারে স্যুইচ করতে উৎসাহিত করবে এবং প্রভাবিত করবে৷
  • TAAB হোটেল, হোমস্টে, রিসর্টকে অগ্রাধিকার দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দেয় যারা টেকসই পর্যটন এবং আবর্জনা সাইকেল চালায় পরিবেশ বাঁচাতে। আর এ লক্ষ্যে TAAB সারা বছর তাদের অভিযান অব্যাহত রাখবে।
  • TAAB সদস্যরা তাদের ব্রোশিওরে বাংলার গন্তব্যের উপর আলোকপাত করবে এবং অন্যান্য গন্তব্যের সাথে ভারতে এবং বিদেশে দেখো আমার বাংলার জন্য প্রচার করবে।
  • TAAB তাদের সবচেয়ে দক্ষ সদস্যদের সাহায্যে গন্তব্য হাইলাইট করার সাথে সাথে একটি স্থানের মৃত সাংস্কৃতিক ঐতিহ্য প্রদর্শন করার চেষ্টা করবে।
  • প্যাকেজের সাথে একটি স্থানের স্থানীয় শিল্প ও নৈপুণ্যকে একত্রিত করা TAAB এর আরেকটি লক্ষ্য।
  • TAAB সদস্যরা স্থিতিস্থাপকতা বজায় রাখার জন্য বাংলার বিভিন্ন অঞ্চলে এবং এর আশেপাশে সরকার, স্টেকহোল্ডার এবং পর্যটন পরিষেবা প্রদানকারীদের মধ্যে একটি বন্ধন তৈরি করতে সহায়তা করবে।
  • TAAB বাংলার মৃতপ্রায় সাংস্কৃতিক ঐতিহ্য যেমন গম্ভীরা, চাদর বোদর, ভাওয়াইয়া, ভাটিয়ালি ইত্যাদি পুনরুজ্জীবিত করার জন্য কাজ করবে, আমাদের অমরগ্রাম-দেবতে বীরভূমের উত্তরাধিকার রায়বেশের প্রায় বিলুপ্ত মার্শাল আর্ট ড্যান্স প্রদর্শন করবে।
  • এইভাবে Connect-Create-Coexist-এর আমাদের নীতিবাক্যটি সারা বাংলা জুড়ে সমস্ত পর্যটন প্রদানকারীদের সাথে “সংযোগ” করতে এবং রাজ্যের মৃত সাংস্কৃতিক ঐতিহ্য (আইসিএইচ) পুনরুজ্জীবিত করতে সাহায্য করবে, গ্রামীণ এলাকার সকল স্টেকহোল্ডারদের মধ্যে একটি বন্ধন তৈরি করবে। এবং সবচেয়ে টেকসই উপায়ে “সহাবস্থান”।

এইভাবে TAAB বাংলার প্রাচীনতম ট্যুরিজম অ্যাসোসিয়েশন হিসাবে, সম্ভাব্য সবচেয়ে কার্যকর এবং দায়িত্বশীল উপায়ে বেঙ্গল ট্যুরিজমকে পরিবেশন করার অঙ্গীকার এবং নিমগ্ন।

 TAAB এর বর্ষবরণ অন্যান্যদের ছাপিয়ে গিয়েছে

সোমবার কলকাতা প্রেস ক্লাবে TAAB কলকাতায় এক অনবদ্য অনুষ্ঠান পরিবেশন করল। এযাবৎ কালে কলকাতায় যতগুলি পর্যটনের সঙ্গে যুক্ত অ্যাসোসিয়েশনগুলি অনুষ্ঠান করেছে এদিনের অনুষ্ঠান সবকটিকেই ছাপিয়ে গিয়েছে নি;সন্দেহে। ইদানীং একটা প্রবণতা দেখা গিয়েছে, একাধিক ট্রাভেল অ্যাসোসিয়েশন কলকাতায় থেকে কাজ করলেও বাংলার পর্যটনএর বিষয়ে সেভাবে তাদের ভাবতে দেখা যায়নি। এই প্রথম কোনও একটি অ্যাসোসিয়েশনকে সেই দায়িত্ব নিজেদের কাঁধে তুলে নেওয়ার ভূমিকা পালন করতে দেখা গেল, যা খুবই তাৎপর্যপূর্ণ।

TAAB –এর অঙ্গীকার

TAAB –এর বর্তমান সভাপতি প্রশান্ত মাঝি-র নেতৃত্বে অ্যাসোসিয়েশনের সকল সদস্যরা সেই দায়িত্ব নেওয়ার অঙ্গীকারও করলেন এদিন। অ্যাসোসিয়েশনের সহ-সভাপতি শমীক ভট্টাচার্য “দেখো আমার বাংলা” ভাবনাকে কিভাবে ছড়িয়ে দেওয়া দেশে ও বিদেশের পর্যটকদের মধ্যে, তা নিয়ে এদিন তিনি আলোকপাতও করেন। অ্যাসোসিয়েশিনের সাধারণ সম্পাদক কৌশিক কর তুলে ধরেন পর্যটন শিল্পের সঙ্গে যুক্ত মানুষরা প্রতি মুহূর্তে যেভাবে নানা প্রতিবন্ধকতার মধ্যে পড়েন সেই বিষয়টি। একই সঙ্গে তিনি তাদের স্মরণ করিয়ে দেন, অসুবিধা আসবে এবং তা কাটিয়েও উঠতে হবে আমাদের সকলকে।

যারা সম্বর্ধিত হলেন

এদিনের অনুষ্ঠানে ইন্ডিয়া ট্যুরিজমের জ্যোতির্ময় বিশ্বাস, মধ্যপ্রদেশ ট্যুরিজমের অভিজিৎ  ধর, ছত্তিশগড় ট্যুরিজমের চিন্ময় দাশগুপ্ত, অন্ধ্রপ্রদেশ ট্যুরিজমের অসিত কুমার রানা,  IATO-র ইস্টার্ন চ্যাপ্টারের চেয়ারম্যান দেবজিৎ  দত্ত, TAAI-এর মানব সোনি, ETAA-র কৌশিক ব্যানার্জি ও সৌরভ আগরওয়াল, এন এসএইচএম ইনস্টিটিউট অব হোটেল এন্ড ট্যুরিজম ম্যানেজমেন্ট, কলকাতার অ্যাসিস্ট্যান্ট প্রফেসার ড. সুপ্রিয়া শিকারি, HHTDN এর পার্থ প্রতিম রায়, ADTOI এর নীলাঞ্জন বসু, EHTTOA এর অনিরুদ্ধ বসু এবং TOWA-র পূবালী ব্যানার্জি ও সুপর্ণাদেবীকে সম্বর্ধিত করা হয়।

বিখ্যাত “রায়বেশে” মার্শাল আর্ট প্রদর্শন

এদিনের অনুষ্ঠানে অন্যতম আকর্ষণ ছিল বীরভূম জেলার বিখ্যাত “রায়বেশে” মার্শাল আর্ট প্রদর্শন, যা বাংলার পর্যটনের এক উল্লেখযোগ্য ভূমিকা নিতে পারে।  TAAB সেই কথা মাথায় রেখে বাংলার এই প্রাচীন লোকশিল্পকে তুলে ধরার প্রয়াস নিয়েছে, যার মাধ্যমে এই লোকশিল্পের কথা আরও বেশি করে দেশ-বিদেশের পর্যটকদের কাছে পৌঁছে যায়।

এছাড়াও অনুষ্ঠানে কলা রসিকা ফাউন্ডেশনে শিল্পীরা রবীন্দ্র নৃত্য পরিবেশন করে স্কলের নজর কারেন। এই অনুষ্ঠানে পারমিতা সরকার বিশ্বাসের সঞ্চালনায় নৃত্যানুষ্ঠানটি এক অসাধারণ মাত্রা পায়। অনুষ্ঠানটি পরিচালনার দায়িত্বে ছিলেন অ্যাসোসিয়েশনের যুগ্ম-সম্পাদক স্বর্ণাভ পাল।

Published on: এপ্রি ১৬, ২০২৪ at ১১:৫১


শেয়ার করুন