পার্ক সার্কাস এলাকার প্রতিবাদে মমতা আওয়াজ তুললেন-নো ‘ ‘ ক্যাব ‘, নো ‘ ক্যা ‘

Main দেশ রাজ্য
শেয়ার করুন

  • মমতা বললেন- “আমরা হয়তো আপনাদের ভোট দেয়নি কিন্তু অনেকে তো দিয়েছে। তাদের বলছেন তারা দেশের নাগরিক নয়, তাদের এখন সিটিজেনশিপের প্রমাণ দিতে হবে।”
  • মমতা বিজেপিকে উদ্দেশ্য করে বলেন- “শুনে রাখো তোমরা, আমরা বাংলার লোক- আমরা যেমন খোদাকে সম্মান করি। পাঞ্জাবিকে সম্মান করি, খ্রিস্টানকে সম্মান করি, হিন্দু, বৌদ্ধ, শিখ, জৈন, পার্সি, মুসলমানও খ্রিস্টানিকেও করি।”

Published on: ডিসে ২০, ২০১৯ @ ২২:১৮ 

এসপিটি নিউজ, কলকাতা, ২০ ডিসেম্বর: কলকাতায় পার্ক সার্কাস এলাকায় এক প্রতিবাদ সভায় দাঁড়িয়ে পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এদিন পরিষ্কারভাবে জানিয়ে দেন এটা শুধু কলকাতা কিংবা বাংলার লড়াই নয় এটা সারা দেশের মানুষের স্বার্থের তাদের অস্তিত্ব রক্ষার লড়াই। এই লড়াইতে দেশের সমস্ত প্রান্তের সমস্ত এলাকার সমস্ত রাজ্যের মানুষকে এক জোট হয়ে লড়াই করতে হবে। আর এই লড়াইতে সফল হতে হবে। তিনি একই সঙ্গে প্রতিবাদ সভায় উপস্থিত ইমামদের উদ্দেশ্যে বলেন- আমি আপনাদের কাছে কৃতজ্ঞ যে আপনারা শান্তির জন্য আলোচনা করেছেন। আমি এখানে উপস্থিত সমস্ত ধর্মের মানুষকে ধন্যবাদ জানাতে চাই তারা একত্রিত হয়ে এই লড়াইতে শামিল হয়েছেন।

প্রতিবাদে সরব হয়ে বিজেপির বিরুদ্ধে মমতা যে কথাগুলি বললেন

1.  মমতা বলেন- এই লড়াই তো আমরা বাংলা থেকেই শুরু করেছি। কেউ তো এই সম্পর্কে কিছু জানতেই পারেনি। চুপিচুপি কি করছে। চুপিচুপি তারা এ ধরনের বিল বানিয়ে ফেলেছে। আবার মধ্যরাতে চুপিচুপি এমন কিছু করে যা দেশবাসী কিছু জানতেই পারে না। আপনারা প্রথমে মহারাষ্ট্রে দেখেছেন না সেখানে মধ্যরাতে সরকার করে ফেলল। এই বিলে কাউকে পক্ষ নিতে দেওয়া হয়নি। এমনকি ভাবারও সময় দেওয়া হয়নি। মধ্যরাতে পাশ করে দেওয়া হয়। আমি বলতে চাই, প্রধানমন্ত্রী জি আপনি কেন ভোট দেননি? আমার তো মনে হয়ে আপনি সেদিন লোকসভায় থাকা সত্ত্বেও ভোট যখন দেননি তাহলে আপনিও এই বিলকে সমর্থন করেন না। যদি সমর্থন না করেন তাহলে এটা বাতিল করে দিন।

2.  মমতার তোপ-“পেঁয়াজ ২০০ টাকা, বেকারত্ব বেড়েই চলেছে। শিল্প-কলকারখানে বন্ধ হয়ে যাচ্ছে। রুপির পরিমান কমে আসছে। তবু কোনও কাজ নেই শুধু সব কিছু লুকিয়ে রাখতে ছুপার রুস্তমের মালিক এক বিল নিয়ে আসলো। আর যারা এর বিরুদ্ধে সরব হচ্ছে তাদের দেশ বিরোধী আখ্যা দেওয়া হচ্ছে। আমি এদেশের একজন নাগরিক। আমি দেশকে মেনে চলি। আপনারা দেশের মানুষের ভোটে ক্ষমতায় এসেছেন। আমরা হয়তো আপনাদের ভোট দেয়নি কিন্তু অনেকে তো দিয়েছে। তাদের বলছেন তারা দেশের নাগরিক নয়, তাদের এখন সিটিজেনশিপের প্রমাণ দিতে হবে। আপনি কে আগে বলুন? আজ আমার মা-বাবার জন্মের শংসাপত্র দিতে হলে আপনিও দেবেন তো? আপনি গুজরাটে এসব করবেন তো? সারা ভারত জ্বলছে।”

3. “বিজেপি বলছে আমরা খেল দেখাবো! সব বড় বড় খেলা দেখাবো। কি খেলা দেখাবেন বলুন তো! শুধু বিজেপি দেশে থাকবে আর কেউ থাকতে পারবে না, এসব চলবে না।” একথা বলেই বিজেপিকে হুঁশিয়ারি মমতার- “দেশের সব মানুষ যদি এক কাট্টা হয়ে যায় তোমরা কত খেলা দেখাবে? কত গুলি করবে? তোমার কাছে কত গুলি আছে? দেশের সমস্ত ছাত্র-ছাত্রী আপনাদের সঙ্গে আছে? আপনারা দেশে আগুন জ্বলাচ্ছেন। আপনি কত লোককে গুলি করবেন?”

4. এরপর মমতা সম্প্রীতির কথা বলেন- “এক সাথে এখানে মানুষ দুর্গাপুজোয় যায়, এক সাথে মানুষ ঈদে যায়, এক সাথে মানুষ বড়দিন পালন করে, এক সাথে মানুষ উৎসব পালন করে। আমি তো তাই বলি- কুছ করকে তো দেখো খুদি কো কোন বুলান্দ ইতনা/ কি হর তকদির সে পয়লে খুদি কো কোন বুলন্দ ইতনা/ কি হর তকদির সে পয়লে খোদ বন্দে সে খুদ পুছে বাতা তেরী রাজা কেয়া হ্যায়।” রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর বলেছিলেন আমি বাংলা ভাগ হতে দেব না। তখন তিন লিখেছিলেন- বাংলা মাটি, বাংলার জল, বাংলার বায়ু, বাংলার ফল/ পুন্য হউ্‌ পুন্য হউক হে ভগবান।”

5.  ক্ষুব্ধ মমতা বিজেপিকে পুরনো ইতিহাস স্মরণ করিয়ে বলেন-“নেতাজি সুভাষচন্দ্র বোস দেশের জন্য লড়াই করেছেন। তার ডান হাত কে ছিলেন- শাহনওয়াজ খান। গান্ধী বেলিয়াঘাটায় বসেছিলেন। হিন্দু-মুসলমানের মধ্যে একতা রক্ষা করেছিলেন। আর এখন এরা কারা- যারা মানুষকে ভয় দেখাচ্ছে। দেশকে জ্বালিয়ে দিচ্ছে। দেশের বদনাম করছে। বিজেপি তোমরা কিছু করতে পারবে না। আমরা এক সাথে খাব। একসাথে লড়ব। এক সাথে লড়ব। এক সাথে জিতব।এক সাথে সফলও হব। আপনাদের কাছে থেকে দেশের নাগরিকত্বের শংসাপত্র নিতে হবে। আগে আপনারা বলুন আপনারা দেশের নাগরিক হওয়ার যোগ্য কিনা।” এরপরই মমতা বিজেপিকে উদ্দেশ্য করে বলেন- শুনে রাখো তোমরা, আমরা বাংলার লোক- আমরা যেমন খোদাকে সম্মান করি। পাঞ্জাবিকে সম্মান করি, খ্রিস্টানকে সম্মান করি, হিন্দু, বৌদ্ধ, শিখ, জৈন, পার্সি, মুসলমানও খ্রিস্টানিকেও করি। আমরাও মা দুর্গাকে ডাকি। তাই বলি- জাগো মা দুর্গা দশপ্রহরিনী- সব ধর্ম, সব বর্ণ মিলিত হয়ে বলি -নো ক্যাব, নো ক্যা।নো এনআরসি।

Published on: ডিসে ২০, ২০১৯ @ ২২:১৮


শেয়ার করুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

18 − = 14