
Published on: জানু ২৩, ২০২৫ at ২৩:৫৮
এসপিটি নিউজ, রিষড়া, ২৩ জানুয়ারি: আজ থেকে শুরু হল রিষড়ায় বাবা লোকনাথ ব্রহ্মচারী মিলন মেলা। এই মেলা দ্বিতীয় বর্ষে পড়ল। রিষড়ায় লোকনাথ মন্দিরে এই মিলন মেলাকে কেন্দ্র করে এদিন একাধিক সাধু-সন্তদের উপস্থিতিতে মন্দির প্রাঙ্গন হয়ে উঠেছিল এক ছোট মাপের কুম্ভ ক্ষেত্র। এই অনুষ্ঠানে রিষড়া লোকনাথ সেবাশ্রম সঙ্ঘের পক্ষ থেকে চাকলাধামের প্রধান উপদেষ্টা নবকুমার দাসকে সন্মাননা জ্ঞাপন করা হয়। সেখানে নবকুমার দাসকে ‘বাবাজি’ উপাধিতে ভূষিত করা হয়। বলা হয় যে এখন থেকে বাবা লোকনাথের মহানাম প্রচারক নবকুমার দাস বাবাজ নামে পরিচিত হবেন সকলের কাছে।
এদিন চাকলাধামের প্রধান উপদেষ্টা ও বাবা লোকনাথের মহানাম প্রচারক নবকুমার দাসকে সন্মাননা জ্ঞাপন করার আগে রিষড়া লোকনাথ সেবাশ্রম সঙ্ঘের পক্ষে অভিজিৎ দাস বলেন- “নিষ্ঠা, একাগ্রতা সব কিছু এই মন্দিরে ঢেলে দিয়েছেন। আমি বছরে চার বার করে চাকলা ধাম যাই। তখন উনি আমাকে বলেছিলেন যে অভিজিৎদা, রিষড়ায় তোমাকে একটা বড় করে মন্দির করতে হবে। আমি বলেছিলাম দাদা, এটা তো আমারও অনেক দিনের স্বপ্ন কিন্তু পেরে উঠছি না। কে বলেছে পেরে উঠবে না! আমরা অনেক জমি দেখেছি। আমরা দিল্লি রোড পর্যন্ত ঘুরে এসেছি। আমাদের শৈলেনবাবু মহাশয় এখানে আছেন। উনিও জমি দেবেন বলেছিলেন। কিন্তু সেই দিল্লি রোডে। আর এক জায়গায় আমরা পয়সাও অগ্রিম দিয়েছি বাবার জন্য জমি নেব বলে। কিন্তু জানি না বাবা এখানেই বসেছিলেন সেই জন্য এখানেই বাবাকে প্রতিষ্ঠিত করতে পেরেছি। যার সম্পূর্ণ উৎসাহ আমার এই নবকুমারদা। এই নবকুমারদা না থাকলে চাকলা ধামের প্রধান উপদেষ্টা না থাকলে আমি এই মন্দির গঠন করতে পারতাম না। ওনার উৎসাহ আর সহযোগিতা আজ এই জায়গায় নিয়ে এসেছে। সবাইকে বলব জোড়ে হাততালি দিয়ে ওনাকে সম্মান জানাতে।“
অভিজিৎ দাসের কথার রেশ টেনে নদিয়া জেলার শিমুরালি লোকনাথ ব্রহ্মচারী আশ্রমের মধুবাবা বলেন- “সেই মহান ব্যক্তিত্ব ওই যে ওখানে দাঁড়িয়ে আছেন নেতাজী সুভাষ চন্দ্র বোস তিনি কর্মের মধ্য দিয়ে মহান হয়েছেন। সেই কর্মের মধ্য দিয়েই নবকুমার দাস মহশয় আমাদের কাছে মহান হয়েছেন। তাই আজ রিষড়া লোকনাথ মন্দিরের পক্ষ থেকে ওনাকে সম্বর্ধনা দিতে চাই। তাই অভিজৎদাকে বলব, এখনই যদি নবদাকে এই সন্মাননা প্রদান করা হয়ে তাহলে এখানে উপস্থিত সমস্ত সাধু-সন্তরা খুব খুশি হব।“
এরপরই সেই সন্মাননা প্রদান করা হয়। যেখানে উল্লেখিত লেখাটি পরে শোনান অভিজিৎ দাস। “ হে ঈশ্বরের সৃষ্ট নবকুমার দাস মহাশয়- মানুষ রূপে জন্ম নিয়েছেন। কর্ম করেন ঈশ্বরের নির্দেশ মতোন। আপনি আমাদের চোখে মহান। কারণ কর্ম সৃষ্টি যুগ যুগ বেঁচে থাকবে। বাবা লোকনাথের ভক্ত সন্তানদের মধ্যে। আপনি সংসার থেকে কিভাবে সাধন করতে হয় তা দেখিয়েছেন। বিশ্ব সংসার থেকে আমরা সেটা অনুভব করেছি। আপনি আদর্শবান। আপনাকে আজ থেকে নবকুমার দাস বাবাজি নামে সম্মান দিলাম। আপনি সকল লোকনাথ ভক্তের হৃদয়ে নবকুমার দাস বাবাজি রূপে পরিচিত হবেন। আমাদের সকলের ইচ্ছা বিশ্ব ব্যাপী ঈশ্বর লোকনাথ নাম ঘরে ঘরে পৌঁছে যাক। আমরা ঈশ্বরের কাছে প্রার্থণা করি, আপনার নাম দিগন্তে ছড়িয়ে পড়ুক। আমাদের রিষড়ায় আপনার নাম যুগ যুগ বেঁচে থাকুক। আপনিও বেঁচে থাকুন। আপনাকে লোকনাথ ব্রহ্মচারী সেবক সঙ্ঘ থেকে ধন্যবাদ দেব না আপনাকে শত কোটি প্রণাম করি। নমস্কার। “
এরপর উপস্থিত মা-বোনেদের উলুধ্বনির মধ্য দিয়ে নবকুমার দাসের হাতে সম্মান স্মারক তুলে দেওয়া হয়।
এ সন্মাননা প্রদান বিষয়ে কলকাতায় মহানির্বান মঠের অবধূত শঙ্করানন্দ মহারাজ বলেন- “এটা তার কর্মের ফল। এ যে কর্মের ফল যে পেয়েছে এটা বাবা দিয়েছে তাকে। কারণ বাবা প্রত্যেকের মধ্যে আছে। যেমন বলা হয়, কংকর মে শঙ্কর হ্যায়। ভারতে যত কাঁকড় আছে তার মধ্যে শঙ্কর আছে। রূপ-রং তারা। যেমন স্বামীজী বলছে- যত জীব তত শিব। শিব রূপে তাদের পুজো করো। এখানে সকলের মধ্যে শিব বাস করছে। কেউ অশিব নয়। যখন কেউ শিব পুজো করে তখন তাকে বলা হয়- ‘শিব অহম শিব অহম’। তুমি নিজেকে শিব রূপে না আনতে পারো তুমি শিবের পুজো করতে পারো না। এখানে সক্ল শিব বসে আছে। তাকে এই সম্মান প্রদান করা হয়েছে মানে বাবা তাকে নিজেই দিচ্ছেন মানপত্র। এটা তার কর্মের ফল। এটা তাকে আরও উৎসাহ করছে এবং তাকে আরও এগিয়ে নিয়ে যেতে হবে। ওনাকে দেখে আরও অনেকে অনুসরন করছে। বাবা কিভবে এগোচ্ছে। ওনাকে দেখে নতুন প্রজন্ম এই ধারাতেই যাবে। গঙ্গা কিন্তু আমাদের ভারতবর্ষেই বয় অন্য কোথাও নয়। সেই গঙ্গার স্রোত নবকুমার দাস বাবাজির মধ্যে যখন রয়েছে সেই গঙ্গাকে উনি যখন নিয়ে এসেছেন বাবা লোকনাথের কৃপায় দেশ-বিদেশে বাবার প্রচার করছেন কত মহৎ কাজ – সেই জন্য বাবা ওনাকে মানপত্র দিয়ে বলল, তুমি আরও এগোয়। আমি তোমার সাথে আছি। রণে, বনে , জলে, জঙ্গলে যেখানে তুমি যাবে সেখানে আমি তোমার সাথে আছি। সেই কারণে ওনাকে এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার জন্য একটু চাষ করা হল। হর হর মহাদেব। বাবা লোকনাথের জয়।“
চাকলাধানের প্রধান উপদেষ্টা ও বাবা লোকনাথের মহানাম প্রচারক নবকুমার দাস নিজের অভিব্যাক্তি প্রকাশ করতে গিয়ে বলেন- সারা জীবন এই সাধু-সন্তদের নিয়ে যেন চলতে পারি।
এদিন বারাসত লোকনাথ মন্দিরের পক্ষ থেকে রিষড়া লোকনাম্থ মন্দিরকে একটি সুদৃশ্য দান বাক্স দান করা হয়। অন্যদিকে রিষোড়া লোকনাথ মন্দিরের পক্ষ থেকে সাধু-সন্তদের হাতে কম্বল তুলে দেওয়া হয়। সন্মান প্রদান করা হয়ে তদের। একই সঙ্গে স্থানীয় বিশিষ্টজনদেরও দেওয়া হয় সম্মান।
Published on: জানু ২৩, ২০২৫ at ২৩:৫৮