গোপালের বনভোজনে আনন্দ সংবাদ –কল্যানীতে হবে জগন্নাথ মহাপ্রভু ও লোকনাথ বাবার মন্দির

Main দেশ ধর্ম ভ্রমণ রাজ্য
শেয়ার করুন

মুখ্যমন্ত্রীর চাকলাধামে আগমন বিশ্বের দরবারে চাকলাকে প্রচারের আলোয় নিয়ে এসেছে-চাকলাধামের প্রধান উপদেষ্টা নবকুমার দাস

Published on: জানু ১৯, ২০২৫ at ১৯:৪০

Reporter: Aniruddha Pal

এসপিটি নিউজ, কলকাতা, ১৯ জানুয়ারি : আজ গোপালের বনভোজনের আয়োজন করেছিল বেলঘরিয়া রথতলার জগন্নাথ মহাপ্রভুর মন্দির কমিটি। আমরা সকলে রাস উৎসব দেখেছি কিন্তু গোপালের বনভোজন উৎসবও কিন্তু কোনও অংশে কম যায় না। সত্যি এ এক দেখার মতো উৎসব। এলাকার যাদের বাড়িতে গোপাল আছে তারা সকলেই নিয়ে এসেছিলেন তাদের প্রিয় গোপালকে বনভোজনে সামিল করতে। আর এদিন এই উৎসবের মাঝেই মন্দির কমিটির প্রধান সোমনাথ রায়চৌধুরী শোনান এক আনন্দের সংবাদ। বাবা লোকনাথের মহানাম প্রচারক নবকুমার দাসকে পাশে নিয়ে তিনি বলেন- কল্যানীর ঘোষপাড়ায় এক বড় মাপের জগন্নাথ মহাপ্রভুর মন্দির নির্মাণ করা হবে। পাশেই হবে বাবা লোকনাথ ব্রহ্মচারীর মন্দিরও।

বেলঘরিয়া রথতলা জগন্নাথ মন্দির কমিটির প্রধান আহ্বায়ক সোমনাথ রায়চৌধুরী জানান, “আজকে সকলের বাড়ি থেকে গোপালকে নিয়ে এসে য়ায়োজন করা হয়েছে গোপালের বনভোজন উৎসব। জগন্নাথ মহাপ্রভুর মন্দিরে গোপাল ভগবান আসবে। এই মন্দিরে বসবে। ভোগ আরতি হবে। নাম সংকীর্তন হবে। সন্ধ্যা-আরতির পর সবাই সবার গোপাল নিয়ে বাড়ি ফিরে যাবে। আজ থেকে ন’বছর আগে তৎকালীন বিধায়ক মদন মিত্রের উদ্যোগে এবং আমাদের চেয়ারম্যান গোপাল সাহার উদ্যোগেই এই মন্দির নির্মাণ করা হয়। প্রতি বছরই এই উৎসব হয়ে থাকে। সেই সময় থেকেই আমাদের রথযাত্রা উৎসব হয়। প্রায় ৮০০ বছর পর পর শ্রীরথ তৈরি হয়েছে। আর সেই শ্রীরথ পুরীর থেকেই লোক আসে, তারাই তৈরি করে। যে কাঠ দিয়ে পুরীর রথ তৈরি হয় সেই কাঠ দিয়েই এখানেও রথ তৈরি হয়। পুরীর রথের নিয়ম আমরা মেনে চলার চেষ্টা করি। সেই রথযাত্রা, রাস পূর্ণিমা উৎসব, গোপালের বনভোজন উৎসব এগুলি নিয়েই মন্দির প্রাঙ্গন মেতে ওঠে। “

চাকলাধামের প্রধান উপদেষ্টা নবকুমার দাসের প্রতি সম্মান জানিয়ে সোমনাথ রায়চৌধুরী বলেন- “আমার খুব ছোটবেলার পরিচয়। আমার বাবার বিশেষ বন্ধু। সেখান থেকে আমাদের পরিচয় শুধু নয় আমাদের আত্মীয়তা। চাকলা মন্দির উনি করেছেন। আমার ছোটবেলা উনি দেখেছেন। আমার প্রচুর খারাপ সময় ওনার কাছে কেটেছে। যার কাছে জীবনের খারাপ সময় কাটে তার সঙ্গে ভাল সময় ভাগ করে নিতে কত আনন্দ সেটা তখন বোঝা যায় যখন দু’জনের আবার পরে দেখা হয়। নদিয়ার কল্যানী ঘোষপাড়ায় চড়শরাতিতে গঙ্গার পারে সতীমায়ের মন্দিরের পিছনে জগন্নাথ মহাপ্রভুর মন্দির গড়ে উঠবে। এইটা বড় করে আমরা করব। যা সারা বাংলা দেখবে। নিষ্ঠা, একাগ্রতা, আবার সেই রথ দৌড়বে সেই প্রাঙ্গনে। পাশেই হবে বাবা লোকনাথের মন্দিরও।“

চাকলাধামের প্রতিষ্ঠাতা সদস্য ও প্রধান উপদেষ্টা নবকুমার দাসও সোমনাথ চৌধুরীর কথায় সায় দিয়ে জানিয়ে দিলেন – “ওই দিন সারা পৃথিবীর লোক আসবে কল্যানী ঘোষপাড়ায় নবনির্মিত জগন্নাথ মহাপ্রভুর মন্দির উদ্বোধনে। লোকনাথ মন্দিরও থাকবে। জগন্নাথ মন্দিরও থাকবে। কারণ, সবাই পুরী যেতে পারে না। সেই পুরীর আনন্দই পাবে ওই চড়শরাতিতে জগন্নাথ মন্দির দর্শনে। আমি সোমনাথের কাছে বলেছিলাম যে জগন্নাথ মন্দিরের পাশে যদি একটা লোকনাথ বাবার মন্দির হয় , তা ও আমার কথা মেনে নিয়ে বলেছে যে ওখানে লোকনাথ মন্দিরও হবে। আর দুটি মন্দিরও চলবে একসাথে। এর চেয়ে বড় কথা আর হয় না। “

এদিন নবকুমার দাস দীঘায় লোকনাথ মন্দির নির্মাণ বিষয়ে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যয়কে করা মেইলের উল্লেখ করে বলেন- “আমাদের ভরসা আছে আমাদের মুখ্যমন্ত্রীর উপর। কোটি কোটি লোকনাথ ভক্তদের কথা মাথায় রেখে আমাদের প্রিয় মুখ্যমন্ত্রী সেই আশাও অচিরেই পুরণ করবেন। ইতিমধ্যে চাকলাধামের ৫০ বছর পূর্তি অনুষ্ঠানে এসে মুখ্যমন্ত্রী যেভাবে বাবা লোকনাথের জন্মস্থান চাকলাধামের উন্নয়নে ১৭ কোটি টাকা দিয়ে সাহয্য করেছেন তা আমাদের কাছে অত্যন্ত গর্বের ও আনন্দের। মুখ্যমন্ত্রীর চাকলাধামে আগমন বিশ্বের দরবারে চাকলাকে প্রচারের আলোয় নিয়ে এসেছে। এখন সারা বিশ্ব থেকে চাকলাধাম দর্শন করতে ভক্তরা আসছেন। এটা আমাদের কাছে বিরাট আনন্দের। তবে আজকের পর দিদিকে আর একতা মেইল করব- উনি যেন আমাদের দুটি জায়গায় মন্দির উদ্বোধন করেন।“

এভাবে নবকুমার দাস অবিরাম বাবা লোকনাথের মহানাম প্রচার করে চলেছেন। তিনি এদিন আরও দুটি আনন্দের খবর শোনালেন। জানালেন- “আগামী ২২ জানুয়ারি উত্তরবঙ্গে বাবা লোকনাথের সুদৃশ্য এক মন্দিরের উদ্বোধন হতে চলেছে। জলপাইগুড়ি জেলার শিরিষতলা কলেজপাড়ায় বাবা লোকনাথের এই নবনির্মিত মন্দিরের উদ্বোধন হবে। প্রতিষ্ঠিত হবে বাবা লোকনাথের পূর্নাবয়ব পাথরের প্রতিমা। এই মন্দিরের নাম দেওয়া হয়েছে উত্তরায়ণ বাবা লোকনাথ ধাম। “

এখানেই থেমে নেই নবকুমার দাস। তিনি এদিন আরও এক আনন্দের সংবাদ দিয়েছেন। জানিয়েছেন, “আগামী ২৩ জানুয়ারিহুগলি জেলার রিষড়ায় লোকনাথ ব্রহ্মচারী সেবক সঙ্ঘের পরিচালনায় বাবার নবনির্মিত মন্দির প্রাঙ্গণে বাবা লোকনাথ ব্রহ্মচারী মিলন মেলা ও সকলের মংগলের জন্য প্রদীপ প্রজ্জ্বলন অনুষ্ঠিত হবে। ২৩ থে ৩১ জানুয়ারি পর্যন্ত চলবে বাবা লোকনাথের এই মিলনমেলা। সেখানে দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে প্রচুর সাধু সমাগমও হবে।“

নবকুমার দাস জানিয়েছেন- “আমার প্রথম লক্ষ্য ছিল বাবা লোকনাথের জন্মস্থান চাকলাধানকে বিশ্বের দরবারের তুলে ধরা এবং প্রতিষ্ঠিত করা। বাবার আশীর্বাদ নিয়ে সেই কাজে করতে পেরেছি। চাকলাধামের নাম আজ সবার মুখে মুখে প্রচারিত হচ্ছে। এখন আমার দ্বিতীয় লক্ষ্য- বাবার মহানাম প্রচার করা এর সমস্ত ঘরে বাবার নামগান আর সংকীর্তন বেশি করে হওয়া । একই সঙ্গে দেশের সব প্রন্তে যেন বাবা লোকনাথের মন্দির গড়ে ওঠে। এখন তা হতেও শুরু করেছে। সবই হচ্ছে বাবা লোকনাথের ইচ্ছায়। আমি কেউ নই। বাবা আমাকে দিয়ে করিয়ে নিচ্ছেন। যেমনভাবে বাবা আমাকে নির্দেশ দিয়ে যাবেন আমি সেইভাবেই কাজ করে যাব। জগন্নাথ মহাপ্রভুর জয় হোক। বাবা লোকনাথের জয় হোক। চাকলাধামের জয় হোক।“

Published on: জানু ১৯, ২০২৫ at ১৯:৪০


শেয়ার করুন