PALACE ON WHEELS: ভ্রমণের আনন্দ নিন আপনিও, খরচ এখন আপনার সাধ্যের মধ্যেই-বেড়িয়ে পড়ুন আজই

Main দেশ ভ্রমণ রাজ্য
শেয়ার করুন

  • আরটিডিসি সব থেকে বেশি জোর দিচ্ছে ‘প্যালেস অন হুইলস’-এর উপর।
  • প্যালেস অন হুইলস 26 জানুয়ারি 1982 সালে তার যাত্রা শুরু করেছিল।
  • রাজস্থান পর্যটন বিকাশ নিগমের এক্সিকিউটিভ ডিরেক্টর (ফিনান্স) ড. হোসিয়ার সিং পুনিয়া জানান- ভারতীয়দের জন্য তারা এই বিলাসবহুল ট্রেনে চাপার বিশেষ সুযোগ করে দিয়েছেন।
  • হিঙ্গলাজ দন রত্নু বলেন-“ইদানীংকালে যেভাবে রাজস্থান ভ্রমণে কলকাতার মানুষের উপস্থিতি বাড়ছে তাতে খুব শীঘ্রই এই ‘প্যালেস অন হুইলস’-এ যাত্রার জন্য কলকাতা থেকেই হয়তো মানুষ ছুটবে।

Reporter: Aniruddh Pal

Published on: ফেব্রু ২৪, ২০২০ @ ১৮:৩৬

এসপিটি নিউজ, কলকাতা, ২৪ ফেব্রুয়ারি: রাজকীয় ভাবনা, রাজকীয় স্বাচ্ছ্যন্দ, রাজকীয় ঘরানায় থাকার সুযোগ কে না পেতে চায় বলুন তো! আর সেটা যদি রেলযাত্রার মধ্যে দিয়ে হয় তা হলে তো কথাই নেই। রাজস্থান পর্যটন বিভাগ ও রেল দফতর যৌথভাবে সেই ব্যবস্থাই করে দিয়েছে বহুদিন হয়েছে। তার নামও তারা রেখেছে ‘প্যালেস অন হুইলস’। বিলাসবহুল সেই ট্রেনে চাপার সুযোগ সকলেই পেতে চায়- কিন্তু এতদিন তা ছিল আমজনতার সাধ্যের বাইরে। তবে ভারতবাসীর কথা ভেবে এখন তা সাধ্যের মধ্যেই করেছে রাজস্থান পর্যটন বিভাগ। তাই এখন আর দেরী নয়, লাগেজ গুছিয়ে রাজস্থান ভ্রমণের স্বাদ নিতে আজই বেড়িয়ে পড়ুন প্যালেস অন হুইলস-এ। যাত্রা করুন নিশ্চিন্তে-নিরাপদে এই বিলাসবহুল ট্রেনে।

এক্সিকিউটিভ ডিরেক্টর (ফিনান্স) ড. হোসিয়ার সিং পুনিয়া দিলেন এই বার্তা

সম্প্রতি কলকাতা ঘুরে গিয়েছেন রাজস্থান পর্যটন বিকাশ নিগমের এক্সিকিউটিভ ডিরেক্টর (ফিনান্স) ড. হোসিয়ার সিং পুনিয়া। কলকাতায় তাদের কার্যালয়ের প্রধান আধিকারিক হিঙ্গলাজ দন রত্নুর নেতৃত্বে কাজকর্মের প্রসার দেখেছেন। তা দেখে রীতিমতো উৎসাহিত রাজস্থান পর্যটন বিভাগের এই উচ্চ আধিকারিক একান্ত সাক্ষাৎ কারে রাজস্থানের পর্যটন বিষয়ের নানা দিক তুলে ধরেন। তবে এই মুহূর্তে তারা সব থেকে বেশি জোর দিচ্ছেন ‘প্যালেস অন হুইলস’-এর উপর। এতদিন যেখানে বিদেশিদের সংখ্যা বেশি ছিল। এখন সেখানে ভারতীয়দের উপভোগ করার সুযোগ দিতে তারা তৎপর হয়ে উঠেছেন। আর তাই ড. হোসিয়ার সিং পুনিয়া এই বিষয়ে সংবাদ মাধ্যমের কাছে আবেদন রেখেছেন ভারতীয় সংবাদ মাধ্যম যেন এই বিষয়টি দেশবাসীর কাছে পৌঁছে দেন, যাতে এখন থেকে অনেক বেশি পরিমানে ভারতীয় নাগ্রিক ‘প্যালেস অন হুইলস’-এ যাত্রা করার সুযোগ পেতে পারেন। তার জন্য রাজস্থান পর্যটন বিকাশ নিগম খরচও কমিয়ে দিয়েছে বলে জানিয়ে দেন তিনি।

‘প্যালেস অন হুইলস’এ ভারতীয় পর্যটকদের জন্য মিলবে এই সুযোগ

ড হোসিয়ার সিং ‘প্যালেস অন হুইলস’ প্রসঙ্গে বলতে গিয়ে এই প্রজেক্ট নিয়ে নানা বিষয় তুলে ধরেন।তিনি জানান, “এটি রাজস্থান সরকার ও কেন্দ্রীয় সরকারের যৌথ প্রকল্প। ভারতের সম্মানজনক প্রকল্প। যা সাত রাতের ট্যুর। দিল্লি থেকে জয়পুর, জয়পুর থেকে সোয়াই মাধোপুর- চিতোরগড়-উদয়পুর-যোধপুর-জয়শলমীর এবং সেখান থেকে জয়পুর ফিরে আগ্রা হয়ে দিল্লি। এই হল ‘প্যালেস অন হুইলস’। এটা রেলের সাথে রাজস্থান পর্যটন বিকাশ নিগমের যৌথ উদ্যোগ।এটা সম্পূর্ণভাবেই এক ইন্ডিয়ান প্রজেক্ট। এ থেকে বিদেশি রাজস্ব ও ডলারও আসছে। এটা খুবই ভালো প্যাকেজ। এর চাহিদা জাতীয় ও আন্তর্জাতিক স্তরে ব্যাপকভাবে আছে।”

ভারতীয়দের জন্য প্যালেস অন হিলস-এ রয়েছে বিশেষ ছাড়

এরপরই তিনি ‘প্যালেস অন হুইলস’-এ ভারতীয়দের যাত্রা করার সুযোগ করে দেওয়ার বিষয়টি নিয়ে সবিস্তারে জানান। কিন্তু এই বিলাসবহুল ট্রেনে চাপার যা বিপুল পরিমান খরচ তা কি ভারতের আম-নাগরিক বহন করতে সক্ষম? এই প্রশ্ন উঠতেই রাজস্থান পর্যটন বিকাশ নিগমের এক্সিকিউটিভ ডিরেক্টর (ফিনান্স) ড. হোসিয়ার সিং পুনিয়া জানান- “আমরা তো সেটাই করতে চলেছি, যাতে করে এখন থেকে ভারতীয়রাও অনায়াসে এই বিলাসবহুল ট্রেনে যাত্রা করার আনন্দ নিতে পারে। তাই আমরা ঠিক করেছি যেসব ভারতীয় পর্যটক যারা এতদিন এই ট্রেনে চাপার কোনও সুযোগ-সুবিধা পাচ্ছিল না তাদের আমরা ডিসকাউন্ট দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছি। এমনকী তাদের সময়ের সঙ্গেও বোঝাপড়া করেছি। যাতে তারা সাত রাতের জায়গায় তিন রাত করতে পারে। এতে খরচ অনেকটাই কমে আসবে আবার তাদের ভ্রমণের স্বাদও পূরণ হবে। আমরা তাদের উপর সেই ভরসা রেখেছি। যাতে তারা জয়পুর থেকে জয়শলমীর পর্যন্ত যেতে পারে।এর ফলে অনেক বিপুল সংখ্যক মানুষ এই ট্রেনে যাত্রা করার আগ্রহ দেখাবে। তবে বাকি তিনদিন আমরা যেমন করেই হোক পূরণ করে নিতে পারবো।”

আরটিডিসি-র কলকাতার আধিকারিক হিঙ্গলাজ দন রত্নুও আশাবাদী

হিঙ্গলাজ দন রত্নু বলেন-“ইদানীংকালে যেভাবে রাজস্থান ভ্রমণে কলকাতার মানুষের উপস্থিতি বাড়ছে তাতে খুব শীঘ্রই এই ‘প্যালেস অন হুইলস’-এ যাত্রার জন্য কলকাতা থেকেই হয়তো মানুষ ছুটবে। সেই দিন আর বেশি দূরে নেই। আমার বিশ্বাস- কলকাতার মানুষ ভ্রমণপ্রিয়। তারা ভ্রমণ আর পর্যটককে দারুনভাবে উপলব্ধি করে। যা সারা ভারতে আর কোথায় নেই। এটা পশ্চিমবঙ্গের মানুষের একটা বড় দিক। তারা শুধু ভ্রমণ কিংবা পর্যটনকে বেড়ানোর মজা হিসেবে নেয় না তারা জ্ঞান অর্জন, গবেষণা, ভবিষ্যতের জন্য তথ্য সংগ্রহের দিক হিসেবে দেখে থাকে। আর তাই ‘প্যালেস অন হুইলস’-এ এবার কলকাতার মানুষই ছুটবে। খরচ যে সাধ্যের মধ্যে এসে গেছে বিশেষ করে আমরা যে ছাড়ের ব্যবস্থা করেছি এটা জানাটা জরুরী। এটা যত তাড়াতাড়ি মানুষের কাছে পৌঁছবে মানুষ তত দ্রুত ‘প্যালেস অন হুইলস’ ধরতে ছুটবে।

তবে এই বিলাসবহুল ট্রেনে চাপার আগে জেনে নিন প্যালেস অন হুইলস-এর ইতিহাস সহ নানা খুঁটিনাটি বিষয়।

ইতিহাস

প্যালেস অন হুইলস 26 জানুয়ারি 1982 সালে তার যাত্রা শুরু করেছিল। প্যালেস অন হুইলসের ধারণাটি কোচের রাজকীয় পটভূমি থেকে উদ্ভূত হয়েছিল, যা মূলত রাজপুতানা, বরোদা, হায়দরাবাদের নিজাম এবং মূলত ব্রিটিশ ভাইসরয়ের রাজপুত্রের পূর্ববর্তী শাসকদের ব্যক্তিগত রেল কোচ ছিল ভারতে।

অভ্যন্তরীণ কাজ

প্রতিটি সেলুন কারে রাজ্যের সাংস্কৃতিক নীতিগুলি তুলে ধরে, যা আসবাব, হস্তশিল্প, চিত্রকলা এবং আসবাবের ব্যবহারের মাধ্যমে প্রতিনিধিত্ব জানান দিয়ে থাকে। দিল্লির ইন্টিরিওর ডেকরেটর পায়েল কাপুর ট্রেনটির অভ্যন্তরীণ কাজ করেছিলেন।

সু্যোগ- সুবিধা

ট্রেনে 23টি কোচ রয়েছে। ১০৪ জন পর্যটক ট্রেনে ভ্রমণ করতে পারবেন। প্রতিটি কোচের নাম রাজপুত রাজ্যগুলির নাম অনুসারে এবং রাজকীয় অতীতের নান্দনিকতা এবং অভ্যন্তরগুলির সাথে মেলে: আলওয়ার, ভরতপুর, বিকানীর, বুন্দি, ধোলপুর, ডুঙ্গারগড়, জয়শল্মীর, জয়পুর, ঝালাওয়ার, যোধপুর, কিশনগড়, কোটা, সিরোহি এবং উদয়পুর। প্রতিটি কোচে চারটি কেবিন রয়েছে (সংস্থার নামযুক্ত চেম্বার বা সেলুন) বিলাসিতা সুযোগসুবিধা এবং ওয়াই-ফাই ইন্টারনেট সহ। ট্রেনটিতে দুটি রেস্তোঁরা রয়েছে, মহারাজা এবং দ্য মহারাণী, রাজস্থানী পরিবেশের সাথে মহাদেশীয়, চাইনিজ খাবার, একটি বার কাম লাউঞ্জ, ১৪ টি সেলুন এবং একটি স্পা পরিবেশন করা হচ্ছে।

বিলাসবহুল এই ট্রেনের রুট

ট্রেনটি ভ্রমণপথটি এইরকম- প্রথমদিন নয়াদিল্লি (1 দিন) থেকে রওনা হয়ে যাবে এবং দ্বিতীয়দিন জয়পুর হয়ে তৃতীয়দিন  সোয়াই মাধোপুর এবং চিত্তৌড়গড় হয়ে  উদয়পুরে চতুর্থদিন পৌঁছবে।পঞ্চমদিন  জয়শলমীর হয়ে ষষ্ঠদিন যোধপুরে ভরতপুর এবং আগ্রা সপ্তমদিনে পৌঁছবে ফের ট্রেনটি নয়াদিল্লি ফিরে আসবে।তবে ভারতীয়রা যদি তিনদিনের জন্য বুকিং করেন তাহলে বুকিং-এর সময় রাজস্থান পর্যটন বিকাশ নিগম তাদের রুট করে দেবে।

Published on: ফেব্রু ২৪, ২০২০ @ ১৮:৩৬


শেয়ার করুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

− 2 = 7