
Published on: মার্চ ২০, ২০২৫ at ১৭:৩১
এসপিটি নিউজ, মায়াপুর (নদিয়া), ২০ মার্চ : ইসকনের প্রধান কেন্দ্র শ্রীধাম মায়াপুরে নবম বর্ষ Tribal Convention ( জনজাতির সন্মেলন) আগামী ২১,২২ ও ২৩ শে মার্চ ২০২৫ অনুষ্ঠিত হবে। ভারতবর্ষের ১০ টি রাজ্য থেকে প্রায় ২,৫০০ জনজাতি (আদিবাসী, পিছিয়ে পরা মানুষ) এই অনুষ্ঠানে উপস্থিত থাকবেন। তাদের থাকা, খাওয়া ও নিরাপত্তার দিকে বিশেষ নজর দেওয়া হবে। তাদের নিজস্ব সংস্কৃতি, শিক্ষা, চিরাচরিত ভাবধারার বিভিন্ন সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান অনুষ্ঠিত হবে এই ৩ দিন ধরে। তাদের সহজ সরল জীবন যাপন বিভিন্ন সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের মাধ্যমে মঞ্চে ফুটিয়ে তোলা হবে।
শ্রীচৈতন্য মহাপ্রভু সর্বজীবের প্রতি যে করুনা প্রদর্শন করেছিলেন তার আদর্শে অনুপ্রাণিত হয়ে তারাও যেন বর্তমান সমাজের মূল স্রোতের সঙ্গে একাত্ম ভাবে চলতে পারে, তারা কেউই পর নন, সকলেই তারা সমাজের একান্ত আপনজন সেটি যাতে তারা অনুভব করতে পারে, সেটিই ফুটিয়ে তোলা এই সন্মেলনের আসল উদ্দেশ্য। বিভিন্ন রাজ্যে জনজাতির উন্নতি কল্পে যে সমস্ত অভিজ্ঞ ব্যক্তিবর্গ স্বয়ং ফিল্ডে কাজ করছেন তারা তাদের অভিজ্ঞতালব্ধ মনোজ্ঞ ভাষন দেবেন, বিভিন্ন বিষয়ের উপর সেমিনার হবে।
ভারতবর্ষের ১০টি রাজ্যের যেমন পশ্চিমবঙ্গ,গুজরাট,মহারাষ্ট্র,ঝাড়খণ্ড,মনিপুর,অন্ধ্রপ্রদেশ,ওড়িশা, ত্রিপুরা,নাগাল্যান্ড ও মিজোরাম)প্রভৃতি পিছিয়ে পরা জনজাতি আদিবাসীদের সামাজিক,অর্থনৈতিক,শিক্ষা, স্বাস্থ্য ও কৃষ্ণভাবনায় গড়ে তুলতে ইসকন সারাবছর ধরে বিভিন্ন কর্মসূচি পালন করে থাকে। এই সকল রাজ্যগুলির জনজাতি আদিবাসী শিশুদের শিক্ষাদানের উদ্দেশ্যে মোট ১২১ টি পাঠশালা ও ৮ টি স্কুল চলছে যেখানে প্রায় ৫,৫০০ জন ছাত্রছাত্রীদের ২৮০ জন শিক্ষক- শিক্ষিকা শিক্ষা দান করে থাকে।পশ্চিমবঙ্গের জনজাতি অধ্যুষিত পিছিয়ে পরা জেলাগুলি যেমন- পুরুলিয়া, বাঁকুড়া, ঝাড়গ্রাম, প্রভৃতি জেলায় আদিবাসী শিশুদের শিক্ষাদানের উদ্দেশ্যে নিমাই পাঠশালা নির্মাণ করা হয়েছে, মোট ১২৩ টি পাঠশালায় ১৫২ জন শিক্ষক শিক্ষিকা প্রায় ৩০০০ জন ছাত্র ছাত্রীদের শিক্ষাদান করেন, এবং তাদের এই পাঠশালায় থাকা ও খাওয়ার সুব্যবস্থা রয়েছে।
ইসকনের উদ্যোগে এই আদিবাসী এলাকায় সারাবছর ব্যাপি চলে মেডিক্যাল ক্যাম্প, স্বাস্থ্য সচেতনতা ক্যাম্প, সামাজিক সুরক্ষা ও পরিস্রুত পানীয় জলের ব্যবস্থা।গত বছর ৬০০০ জন সম্পূর্ণ বিনামূল্যে স্বাস্থ্য পরিষেবা পেয়েছেন। এছাড়া প্রতিবছর শীতের সময় জনজাতি আদিবাসী এলাকার মানুষদের ইসকনের উদ্যোগে শীতবস্ত্র বিতরণ করা হয়ে থাকে। পিছিয়ে পরা এই মানুষদের স্বাস্থ্যের দিকে নজর দিতে স্বাস্থ্য -পরিকাঠামো গড়ে তোলা হয়েছে, এবং মেডিকেল -কীড বিতরণ করা হচ্ছে।গত বছর আসামের বন্যায় ১২ দিন ব্যাপী আশ্রয় হস্ত ট্রাস্ট এর সহযোগিতায় ৩৬০০০ মানুষের মধ্যে খাদ্য বিতরণ করা হয়েছে। এছাড়াও দ্রুত চিকিৎসা পরিষেবা পৌঁছে দিতে অ্যাম্বুলেন্সের ব্যবস্থা রাখা হয়েছে। সমগ্র ভারতবর্ষ ব্যাপী এই পিছিয়ে পরা জনজাতি আদিবাসীদের স্বাস্থ্য-সম্মত শিক্ষা, তাদের সাংস্কৃতিক মূল্যবোধের যথোপযুক্ত সংরক্ষণ এবং তাদের মধ্যে শ্রীচৈতন্য মহাপ্রভুর ভক্তিভাব ও সাম্যবাদ গড়ে তোলার আদর্শ ও লক্ষ্য নিয়ে ইসকন এগিয়ে চলেছে, আপনারাও এই মহান উদ্যোগে সামিল হোন।
Published on: মার্চ ২০, ২০২৫ at ১৭:৩১