আলিপুর চিড়িয়াখানায় নাতির নামে ‘মলুকান কাকাতুয়া’ দত্তক নিলেন অনিল পাঞ্জাবি

Main দেশ বন্যপ্রাণ ভ্রমণ রাজ্য
শেয়ার করুন

Published on: জানু ১৬, ২০২৪ at ১৭:০২
Reporter: Aniruddha Pal

এসপিটি নিউজ, কলকাতা, ১৬ জানুয়ারি: ইচ্ছে ছিল অনেকদিনের। অবশেষে পূরণ হল ২০২৪ সালে। বাংলার সুপরিচিত ট্রাভেল ব্যবসায়ী ট্রাভেল এজেন্টস ফেডারশন অব ইন্ডিয়া বা টাফি’র ন্যাশনাল কমিটির মেম্বার গত রবিবার ১৪ জানুয়ারি ২০২৪ তারিখে আলিপুর চিড়িয়াখানায় গেছিলেন সপরিবারে। সেখানে তিনি তাঁর নাতি মিভান চৈথ্রমনির নামে একটি ‘মলুকান কাকাতুয়া’ দত্তক নিয়েছেন এক বছরের জন্য। এদিন তাদের হাতে সার্টিফিকেট তুলে দেন আলিপুর চিড়িয়াখানার ডাইরেক্টর শুভঙ্কর সেনগুপ্ত।তিনি বলেন- “আমরা আলিপুর চিড়িয়াখানায় একটি ‘অ্যানিম্যাল অ্যাডপশন প্যাকেজ’ চালু করেছি। সবাইকে উৎসাহ দিচ্ছি যে আপনারা আসুন- অ্যাডপট অব ওয়াইল্ড চাইল্ড। আসলে এটা বন্যপ্রাণী সংরক্ষণের কাজে এটা একটা পদক্ষেপ। মানুষের ভিতর এই বিষয়ে সচেতনতা বাড়ানোই আমাদের লক্ষ্য।

এওটি ‘মলুকান কাকাতুয়া’ এক বছরের জন্য মিভানের নামে দত্তক

গত ১৪ জানুয়ারি অনিল পাঞ্জাবি সপরিবারে গিয়েছিলেন আলিপুর চিড়িয়াখানায়। সঙ্গে ছিলেন- স্ত্রী নীতা পাঞ্জাবি, কন্যা শরণা চৈথ্রমণি, পুত্র শাবাদ পাঞ্জাবি এবং নাতি মিভান চৈথ্রমণি। নাতি মিভানের জন্মদিনে অনিল পাঞ্জাবি এই সুন্দর উপহার তুলে দেন নাতির হাতে। এক বছরের জন্য এই ‘মলুকান কাকাতুয়া’ নাতির নামেই থাকবে চিড়িয়াখানায়। যেখানে অর্থাৎ যে এনক্লোজারে পাখিটি আছে সেই এনক্লোজারে ঝুলিয়ে দেওয়া হয়েছে নাতির ছবি সহ নাম। উল্লেখ করা হয়েছে সেখানে সময়সীমা। ২০২৩ সালের ১ ডিসেম্বর থেকে ২০২৪ সালের ৩০ নভেম্বর পর্যন্ত এই পাখিটি নাতি মিভানের নামেই থাকবে।

‘মলুতান কাকাতুয়া’ সম্পর্কে জানুন

‘মলুতান কাকাতুয়া’। এটি ইন্দোনেশিয়ায় পাওয়া যায়। সমুদ্রতীরবর্তী অঞ্চলে এবং কৃষি জমিতে এই ধরনের কাকাতুয়া দেখতে পাওয়া যায়। এরা বিভিন্ন ধরনের বাদাম, ফল এবং শাকসবজি খায়। এরা দুটি ডিম পাড়ে। ২৮ দিন ডিমে তা দেয়। সব সাদা কাকাতুয়ার মধ্যে মলুকান কাকাতুয়ার আকার সবচেয়ে বড়। তারা সাধারণত 20 ইঞ্চি (51 সেন্টিমিটার) উচ্চতা পর্যন্ত বৃদ্ধি পায় এবং প্রায় দুই পাউন্ড (0.9 কিলোগ্রাম) ওজনের হয়, সাধারণত পুরুষদের তুলনায় মহিলারা বড় হয়। এদের গড় ডানা প্রায় 2 ফুট। মলুকান কাকাতুয়ার জীবনকাল মানুষের মতোই, অনেক পাখি 65 বছর বা তার বেশি পর্যন্ত বেঁচে থাকে।

আলিপুর চিড়িয়াকাহান্র উদ্যোগ খুবই প্রশংসনীয়

অনিল পাঞ্জাবি এসপিটি-কে বলেন- আলিপুর জুওলজিক্যাল গার্ডেন কর্তৃপক্ষ বন্যপ্রাণ সংরক্ষণের জন্য সাধারণ মানুষের ভিতর সচেতনতা বৃদ্ধির লক্ষ্যে ‘অ্যানিম্যাল অ্যাডপশন প্যাকেজ’ চালু করেছে। এটি আমার খুবই ভাল লেগেছে।আমি ভেবেছিলাম যে এখান থেকে যদি কোনও বন্যপ্রাণ দত্তক নেওয়া যায় তাহলে সেটি আমার একমাত্র নাতি মিভানের নামেই নেব এবং তাকে তার জন্মদিনে উপহার দেব। সেই ভেবেই আমাদের এই উদ্যোগ। আলিপুর চিড়িয়াখানায় ডাইরেক্টর শুভংকর সেনগুপ্ত-র সঙ্গে এই বিষয়ে একটি চুক্তি হয়েছে। তিনি আমাদের হাতে নাতি মিভানের নামে একটি সার্টিফিকেট তুলে দেন।

এই প্রতিবেদক সোমবার ১৫ জানুয়ারি আলিপুর চিড়িয়াখানায় গিয়ে ‘মলুকান কাকাতুয়া’র এনক্লোজারটি পরিদর্শন করেন। সেখানে দেখা যায় অনিল পাঞ্জাবির নাতি মিভান চৈথ্রমণির ছবি সহ একটি বোর্ড ঝুলছে। আর সেখানে উল্লেখ করা হয়েছে ২০২৩ সালের ১ ডিসেম্বর থেকে ২০২৪ সালের ৩০ নভেম্বর পর্যন্ত একটি ‘মলুকান কাকাতুয়া’র দত্তক গ্রহীতার নাম মিভান।

আলিপুর চিড়িয়াখানার ডাইরেক্টর শুভঙ্কর সেনগুপ্ত

দত্তক বিষয়ে জানানলেন ডাইরেক্টর শুভঙ্কর সেনগুপ্ত

এই বিষয়ে আলিপুর চিড়িয়াখানার ডাইরেক্টর শুভঙ্কর সেনগুপ্ত এসপিটি-কে জানান- “আমরা আলিপুর চিড়িয়াখানায় একটি অ্যানিম্যাল অ্যাডপশন প্যাকেজ চালু করেছি। আমরা সবাইকে উৎসাহ দিচ্ছি- আপনারা আসুন, অ্যাডপট অব ওয়াইল্ড চাইল্ড। এখানে অ্যাডপশন মানে বেসিক্যালি লোকের মধ্যে অ্যাওয়ারনেস বাড়ানো। অবশ্যই অ্যাডপশনের মাধ্যমে যে টাকাটা পাওয়া যায় সেটা তাদের রক্ষণাবেক্ষণের কাজে ব্যবহৃত হয়। কিন্তু সেই টাকাটা দিয়েই যে পুরোপুরি রক্ষনাবেক্ষণ করে ফেলা যায় তা নয়, এটা একটা অংশ। একটা ছোট বাচ্চা, মাঝবয়সী কিংবা বয়স্ক লোক তাদের যে একটা নিজস্বতা গড়ে ওঠে।, সেইটা খুব ভাল জিনিস। তাদের মাধ্যমে অন্য লোকেরাও জানতে পারে। জেনে তারাও আগ্রহী হন। এটা বন্যপ্রাণ সংরক্ষণের কাজে একটা পদক্ষেপ। পরিবেশকে বাঁচিয়ে রাখতে হবে। বন্যজীবজন্তু তাদের থাকার জায়গা তাদের খাবার এবং বাসস্থান সেইগুলো ঠিকঠাক থাকবে। এটা ঠিক থাকলে তাহলে সেই জন্তুটাও বাঁচবে। না হলে তাদের আমরা বাঁচিয়ে রাখতে পারব না।”

এই পকল্পে সাড়া দিয়ে এখন অনেকেই দত্তক নিচ্ছেন

অনিল পাঞ্জাবির নাতির নামে দত্তক নেওয়ার প্রসঙ্গে শুভঙ্করবাবু বলেন যে এই পকল্পে সাড়া দিয়ে এখন অনেকেই দত্তক নিচ্ছেন। সেই তালিকায় আরও একটি নাম সংযোজিত হল। এক বছরের জন্য যারা দত্তক নেন তাদের নামে আমরা একটি সার্টিফিকেট দি। সেইসঙ্গে যিনি দত্তক নেন তাস সঙ্গে ডাইরেক্টরের একটি চুক্তি হয়। একই সঙ্গে তাকে একটি স্পেশাল পাস দেওয়া হয়। সেই পাস নিয়ে তারা চারজন প্রতি মাসে চিড়িয়াখানা ভিজিট করতে পারবেন। এটি এক বছরের মেয়াদ কালের জন্য কার্যকর থাকে।

 

Published on: জানু ১৬, ২০২৪ at ১৭:০২


শেয়ার করুন