
Published on: সেপ্টে ২৩, ২০২৫ at ২০:২৩
Reporter: Aniruddha Pal

এসপিটি নিউজ, কলকাতা, ২৩ সেপ্টেম্বর : দেবীপক্ষ শুরু হয়ে গিয়েছে। কুমোরটুলিতে এখন চলছে শেষ মুহূর্তের প্রস্তুতি। এরই মধ্যে বিশ্ব পর্যটন দিবস উপলক্ষে ট্রাভেল এজেন্টস অ্যাসোসিয়েশন অব বেঙ্গল কুমোরটুলি এলাকায় গিয়ে কয়েকজন মৃৎশিল্পীকে সম্বর্ধিত করেছেন। তাদের পাশে থাকার প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন। স্থানীয় পুরমাতা মিতালী সাহা তাদের এই উদ্যোগকে স্বাগত জানিয়েছেন। মৃৎশিল্পীরাও জানিয়েছেন তাদের কথা। এবার বৃষ্টি যে সবচেয়ে বড় বাধা হয়ে দাঁড়িয়েছে সেকথাও জানিয়েছেন তারা।
কুমোরটুলি এলাকার স্থানীয় পুরমাতা মিতালী সাহা বলেন- “ আমাদের শ্রদ্ধেয় দিদি পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় আসার পর আমরা আপ্রাণ চেষ্টা করছি কুমোরটুলির উন্নয়ন যত বেশি করা যায়। ওদের ভালোভাবে রাখা যায়। আমি ইতিমধ্যেই সরকারের কাছে প্রস্তাব দিয়েছি যাতে এই স্থাওনকে কালাচারাল হাব করা যায় তাহলে এখানকার শিল্পীদের জন্য দারুন ব্যাপার হবে। কুমোরটুলি হল আমার প্রাণের জায়গা। এখান থেকে নানা ধরনের মূর্তি , প্রতিমা দেশ-বিদেশ যায়। তিনমাস আগে এখান থেকে মা দুর্গা কানাডা, আমেরিকা পাড়ি দিয়েছে। তাই এই জায়গাকে যদি আরও বেশি উন্নত করা যায় সেই দিকে তাকিয়ে রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী ও কলকাতার মেয়রের কাছে আবেদনব জানিয়েছি। আমি আশা কর, তারা নিশ্চয়ই এটা নিয়ে চিন্তাভাবনা করবেন।“
একই সঙ্গে এদিন পুরমাতা মিতালী সাহা বলেন- “আমি আপনাদের মাধ্যেমে একটা আবেদন রাখতে চাই – প্রায় চারশো বছরের পুরনো এই কুমোরটুলি। বংশ পরম্পরায় এরা কাজ করে চলেছে। অনেক মহিলা শিল্পী তারা কিন্তু লড়াই করছে। পশ্চিমবঙ্গ পুরুষতারন্ত্রিক সমাজ নয় অন্তত দিদি যেদিন থেকে মুখ্যমন্ত্রী হয়েছেন। তিনি আপ্রাণ চেষ্টা করছেন। এত অসুবিধার মধ্যেও এরা কিন্তু কাজ করে যায়। কলকাতায় যতই থিম পুজো হোক না কেন সারা পশ্চিমবঙ্গের ঠাকুর এখান থেকেই যান। মানুষের একটা সেন্টিমেন্ট যে কুমোরটুলির ঠাকুর। কুমোরটুলি মানে মা একেদম মানুষের কাছে পৌঁছে যাচ্ছেন। তাই আমার আবেদন- আমার দিদি, আমাদের মহানাগরিক বা আপনাদের মাধ্যমে যদি কিছু করা যায় এদের জন্য তাহলে আমি আন্তরিক কৃতজ্ঞতা জানাব। সকলের কাছে আমি এই প্রার্থণা রাখলাম।“
কুমোরটুলির বাজার সম্পর্কে এক মৃৎশিল্পী বলেন- “আমাদের বাজার খুব ভাল আছে। বাধা হয়ে দাঁড়িয়েছে এই আকাশ। অবিরাম বৃষ্টি চলছে। অলরেডি চালু হয়ে গিয়েছে বৃষ্টি। ঠাকুর মোটামুটি শুকনো। কিছু বাকি আছে- রঙ,শাড়ি পরানো এসব কাদার মধ্যে করা খুবই মুশকিল। এখন তো আর সময় নেই। পার্টি যখন খুশি আসছে। প্লাস্টিক ঢেকে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে। বিদেশিরা এলে তাদের জন্য তো প্লাস্টিক খুলে দেওয়া হয়। কিন্তু ফটো শ্যুট একটা সমস্যা। কারণ, ঠাকুর এখন বের করতে হচ্ছে। তা নিয়ে ট্রাম লাইনে নিয়ে গিয়ে গাড়িতে তুলে দিতে হচ্ছে।“
অসাধারণ প্রতিমা গড়েন রাজা পাল। এই মৃৎশিল্পী বলেন- “পশ্চিমবঙ্গে যে কত রকমের শিল্প আছে সেই শিল্পকে সর্বসমক্ষে তুলে ধরা যায়। আমার ঘর থেকে কিছুদিন আগে অক্সফোর্ডে বিশ্ব হিন্দু পরিষদের জন্য একটি দুর্গা প্রতিমা নিয়ে যাওয়া হয়েছে। এখন একটি ফাইবারের দুর্গা কাশিপুর উদ্যানবাটির পাশে যাওয়ার কথা আছে। এছাড়াও অস্ট্রেলিয়ার সিডনিতে গিয়েছে প্রতিমা। ছোট একটা সাড়ে ছয় ফুটের দুর্গা সাজ দিয়ে করা হয়েছে। সেটি সিডনিতে গিয়েছে। এছাড়া নিউটাউনে হলিডে ইন-এ একটা ক্যাডবেরির শেরাওয়ালি দুর্গা গিয়েছে। এটা নতুন ধরনের কাজ। এটা জগদ্ধাত্রী পুজো পর্যন্ত থাকবে।“
কুমোরটুলিতে দীর্ঘ ৪২ বছর ধরে কাজ করে চলেছেন মৃৎশিল্পী মন্টি পাল। কেমন চলছে কুমোরটুলি। সেই প্রসঙ্গে তিনি বলেন- “কুমোরটুলি একটা স্বীকৃতি পেয়েছে। বিগত সময়ের থেকে এখন কুমোরটুলির প্রচার যেভাবে বেড়েছে সারা বিশ্বজুড়ে ছড়িয়ে পড়েছে এর খ্যাতি। এখানে শুধু বিদেশিরা আসছেন তাই নয় আমাদের ভারতীয়রাও আসছেন অনেক বেশি। এত ভিড় ছোটবেলায় দেখিনি। দিনের পর দিন এটা ক্রমশ বাড়ছে। আমার ঘর থেকে লস এঞ্জেলস, বোস্টন , সাউথ পোর্ট, নানা জায়গায় প্রতিমা গিয়েছে গিয়েছে এই বছর। “




Published on: সেপ্টে ২৩, ২০২৫ at ২০:২৩



