CORONAVIRUS FREE: স্বাভাবিক THAILAND-এ ভ্রমণ করতে পারেন নিরাপদে, পর্যটকদের জন্য সরকার আরও উদার

Main অর্থ ও বাণিজ্য এসপিটি এক্সক্লুসিভ দেশ বিদেশ ভ্রমণ
শেয়ার করুন

  • সংবাদ প্রভাকর টাইমস ঘুরে দেখে এলো বর্তমান থাইল্যান্ড। সেখানে ঘুরে  স্বচক্ষে দেখেছে করোনা ভাইরাস নিয়ে অযথা আতঙ্ক ছড়ালেও কার্যত দেশটিতে ভ্রমণ করতে কিংবা ঘুরতে কোনও বাধা নেই। অন্য দেশ যা পারেনি সেই অসম্ভবকেই সম্ভব করে দেখানোর হিম্মত দেখিয়েছে থাইল্যান্ড পর্যটন বিভাগ।
  • ট্যুরিজম অথোরিটি অব থাইল্যান্ড-এর এশিয়া ও সাউথ প্যাসিফিক-এর আন্তর্জাতিক বাণিজ্যিকরনের ডেপুটি গর্ভনর ছাত্তান কুঞ্জরান আয়ুধ্যা সাংবাদিক সম্মেলনে পরিষ্কার করে দিয়েছেন যে থাইল্যান্ড এখন নিরাপদ ভ্রমণের জন্য।
  • নেওয়া হয়েছে বিশেষ কিছু পদক্ষেপ।
  • নেওয়া হয়েছে কয়েকটি চ্যালেঞ্জও।
  • খোলা হয়েছে কনট্যাক্ট সেন্টারও। ঘুরতে গেলে প্রয়োজনে যোগাযোগ করতে পারেন ১৬৭২। থাইল্যান্ড সরকার সর্বদা পর্যটকদের পাশে এবং সাথে আছে।

Published on: মার্চ ৭, ২০২০ @ ২৩:৫১

থাইল্যান্ড ঘুরে এসে সংবাদ প্রভাকর টাইমস-এর

প্রধান সম্পাদকের বিশেষ প্রতিবেদন

Reporter: Aniruddha Pal

এসপিটি নিউজ, ৭ মার্চ: গোটা বিশ্বে যখন নভেল করোনাভাইরাস নিয়ে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়েছে তখন একেবারে ব্যতিক্রমী এবং সাহসী ভূমিকায় দেখা গেল থাইল্যান্ডকে।পর্যটনের বিপুল সম্ভারে পূর্ণ দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার এই দেশটি যে কেন এশিয়ার প্রথম সারির দেশগুলির মধ্যে পড়ে তা আরও একবার তারা বুঝিয়ে দিল সাম্প্রতিককালের এই ভাইরাস ঘটিত সম্যার মধ্যে। সংবাদ প্রভাকর টাইমস সেই গুরুত্বপূর্ণ মুহূর্তে থাইল্যান্ডে থাকতে পেরে স্বচক্ষে দেখেছে করোনা ভাইরাস নিয়ে অযথা আতঙ্ক ছড়ালেও কার্যত দেশটিতে ভ্রমণ করতে কিংবা ঘুরতে কোনও বাধা নেই। অন্য দেশ যা পারেনি সেই অসম্ভবকেই সম্ভব করে দেখানোর হিম্মত দেখাতে পারলো থাইল্যান্ড পর্যটন বিভাগ। ট্যুরিজম অথোরিটি অব থাইল্যান্ড-এর এশিয়া ও সাউথ প্যাসিফিক-এর আন্তর্জাতিক বাণিজ্যিকরনের ডেপুটি গর্ভনর ছাত্তান কুঞ্জরান আয়ুধ্যা সাংবাদিক সম্মেলন করে সেকথাই পরিষ্কার করে দিলেন এবং সারা বিশ্বের পর্যটনপ্রমীদের আহ্বান করলেন থাইল্যান্ড ভ্রমণে। জানালেন কিছু লোভনীয় সুযোগের কথাও।

থাইল্যান্ড ট্যুরিজম ভরসা রেখেছে ভারতের উপর

থাইল্যান্ড ট্যুরিজমের ডেপুটি গর্ভনর ছাত্তান কুঞ্জরান আয়ুধ্যা ভারত থেকে থাইল্যান্ডে বেড়াতে আসা মানুষের সংখ্যার একটা পরিসংখ্যান তুলে ধরেন। তিনি বলেন- “আমি চার বছর ভারতে ছিলাম। সেইসময় ২০০৭ সালে ভারত থেকে থাইল্যান্ডে এসেছিল ৩ লক্ষ মানুষ।গত বছর এসেছে ২০ লক্ষ মানুষ। তবে এই বছর আমাদের কাছে একটা চ্যালেঞ্জ।যে কোনও বাজার পাওয়ার জন্য। এখন ভাইরাস নিয়ে গোটা বিশ্বে শোরগোল পড়ে গেছে।তবে আমরা আমাদের কাজ করে চলেছি।”

থাইল্যান্ড ট্যুরিজম বিশেষ করে থাইল্যান্ড সরকার যে নিজেদের কতটা এগিয়ে রেখেছে এবং কোভিড-১৯ নিয়ে তারাযে হাত গুটিয়ে বসে নেই আর তাদের দেশ যে স্বাভাবিক আছে সেটা জানাতেই গত বৃহস্পতিবার ব্যাঙ্ককের হায়াত রিজেন্সি সুকুমভিটে এক সাংবাদিক সম্মেলনের আয়োজন করেছিল। সেখানে দাঁড়িয়ে থাইল্যান্ডের বর্তমান পরিস্থিত যে একেবারে স্বাভাবিক এবং সেখানে যে পর্যটকদের ঘুরতে যেতে কোনও বাধাই নেই সেকথাই জানান ডেপুটি গভর্নর আয়ুধ্যা। তিনি বলেন-“আমরা এটাকে BV এবং AV অর্থাৎ বিফোর ভাইরাস এবং আফটার ভাইরাস দেখছি। ২৪ জানুয়ারি চিনে এই ভাইরাসের প্রকোপ-এর ফলে পর্যটনের উপর সারা বিশ্বে এর বিরাট প্রভাব পড়ে। কিন্তু এখন দেখা যাচ্ছে প্রচুর পাসপোর্ট ড্রপ করে নেওয়া হচ্ছে। ইউরোপ, এশিয়া অবশ্যই ভারতও। কিন্তু ভারত পজিটিভ ভাবনা প্রকাশ করছে। যেখানে একটা বড় ধরনের বাজার রয়েছে। ভারতীয়রা তাদের ভ্রমণ এখনও বন্ধ করেনি। দেখা যাচ্ছে সেখান থেকে বহু মানুষ আসছে। তারা এসে এখানে শপিং মলে যাচ্ছে।”

পরিসংখ্যান যা বলছে

“২০১৮ সালে দেখা যাচ্ছে ১.২ মিলিয়ন, ২০ শতাংশ বৃদ্ধি হয়েছিল পর্যটন ব্যবসায়। সেক্ষেত্রে ২০১৮ সাল আমাদের অন্যতম ভালো বছর ছিলো। আমি এটাও বলতে চাই-ভারতীয়রা এখানে সর্বত্র যান। এখানে সব দিকের সঙ্গে তাদের যোগাযোগ রয়েছে। সেক্ষেত্রে আমাদের ভাবনা একেবারে পজিটিভ।আমাদের এখানে ভাইরাস নিয়ে মানুষের মধ্যে বেশি আতঙ্ক নেই। আমরা খুশি যে এখানে পরিস্থিতি এখন স্বাভাবিক হয়েছে। এখানে বৃদ্ধি শুধু ভালো নয় নয় অত্যন্ত ভালো হয়েছে। যা এখন ২ মিলিয়নে পৌঁছেছে।” বলেন ছাত্তান।

মানুষের সহযোগী হয়ে দাঁড়িয়েছে থাইল্যান্ড ট্যুরিজম

থাইল্যান্ডে খুবই সতর্কতার সঙ্গে প্রতিটি মানুষের পিছনে সরকার পাশে থেকে তাদের সহযোগিতা করে চলেছে। এখানকার মানুষের মধ্যে যে এখন ভাইরাসের আতঙ্ক নেই তা কিন্তু আমরা প্রতিটি কর্নারে গিয়ে দেখতে ও বুজগিতে পেরেছেই। ছাত্তান বলেন-“আমি আমার অভিজ্ঞতা থেকে অনেক কিছু শিখেছি। আমি জানি আমাদের পদক্ষেপ খুব ভালো। আমরা এখানে দেখতে পাচ্ছি প্রাইভেট সংস্থাগুলিতে স্ক্রিনিং, শরীরের তাপমাত্রা পরীক্ষা করে দেখছে। আমি এই হোটেলের লবিতে ঘোরার সময় দেখেছি যে এখানে শরীরের তাপমাত্রা একটি যন্ত্রের সাহায্যে দেখা হচ্ছে। যেখানে সেই ব্যক্তির শরীরের তাপমাত্রা প্রকাশ পাচ্ছে। এমনকী প্রতিটি স্থানেই স্যানিটাইজিং জেল রাখা থাকছে। এখানে সমস্ত বেসরাকারি সংস্থা খুবই সচেতন। তারা তাদের কাজ করে চলেছে।”

স্বাভাবিক থাইল্যান্ডে এখনই সবই খোলা

থাইল্যান্ড ট্যুরিজম তাদের চিরাচরিত প্রথা মতোই চলছে। এখানে কোনও অস্বাভাবিক কিছু নেই। সব কিছুই স্বাভাবিক মতোই চলছে। কিছু ক্ষেত্রে কিছু জিনিস বাতিল হয়েছে। আমাদের এখানে সমস্ত ব্যবসা-বাণিজ্য স্বাভাবিকভাবেই চলছে। সব ট্রেনই চলছে। আমাদের এখানে উড়ান পরিষেবা স্বাভাবিক। বিমানবন্দর খোলাই আছে। তবে যেটা আমাদের কাছে সবচেয়ে বেশি গুরুত্বপূর্ণ তা হলে আমরা যে কোনও দেশের যে কোনও মানুষকে এখানে আসতে নিষেধ করছি না বা তাকে বাধা দিচ্ছি না।” “আপনারা আমাদের কন্ট্যাক্ট নাম্বারে যোগাযোগ করতে পারেন ১৬৭২ নম্বরে। ২৪ ঘণ্টাই আমাদের এই পরিষেবা চালু আছে। আপনাদের প্রয়োজন হলেই সেখানে ফোন করতে পারেন। আপনাদের পাশে ট্যুরিস্ট পুলিশ সর্বদা আছে।”

থাইল্যান্ড ট্যুরিজমের কাছে এটা একটা চ্যালেঞ্জ

ছাত্তান জানালেন তাদের চ্যালেঞ্জের কথা। বলেন- “ভাইরাস নিয়ে আমরা চুপ করে বসে নেই। গোটা দেশে আমরা অবিরাম সচেতনতার সঙ্গে কাজ করে চলেছি। এখানে ভাইরাসের কোনও প্রকোপ নেই। এজন্য আমরা কিছু কাজ করছি। প্রথমতঃ আমরা মানুষের মধ্যে আত্মবিশ্বাস তৈরি করছি। এটা মোটেও সহজ কাজ নয়। তাই আমরা এটাই মানুষকে জানাতে চাইছি- থাইল্যান্ড এখন একেবারে স্বাভাবিক আছে। ভ্রমণ হচ্ছে। তাই এটা আমাদের কাছে প্রথম চ্যালেঞ্জ। দ্বিতীয় যে চ্যালেঞ্জ তা খুবই কঠিন। কারণ গত বছর ১০.৫ মিলিয়ন চাইনিজ এখানে এসেছিল। যা এশিয়ার মধ্যে প্রথম। দ্বিতীয় ছিল মালয়েশিয়া- যেখান থেকে থাইল্যান্ডে এসেছিল ৪ মিলিয়ন মানুষ।”

থাইল্যান্ডের সামনে এখন উন্মুক্ত বাজার

“সেই দিক থেকে দেখলে দেখা যাবে থাইল্যান্ড ট্যুরিজম এবং থাই অর্থনীতি এখন এই মুহূর্তে কিছুটা বসে গেছে। সেক্ষেত্রে আমাদের মানুষের মধ্যে আত্মবিশ্বাস জাগাতে হবে। তবে এই পরিস্থিতে চাইনিজ মার্কেট বসে গেছে। আমাদের কাছে এই মুহূর্তে বড় মার্কেট হল ইন্ডিয়া। আছে কোরিয়া। জাপান একইভাবে দাঁড়িয়ে আছে। ভালো নয়। আমরা তৈরি আছি। তাইওয়ান একইরকম ভালো নয়। হংকং ভালো নয়। তবে ইন্ডিয়া আছে। সিঙ্গাপুরের বাজার শেষ। ইউরোপের দিকে তাকান দেখবেন সেখানে ইতালি, ফ্রান্স, জার্মানি। দুই সপ্তাহ আগের কথাই ভাবুন- দুই সপ্তাহ আগেও ইউরোপ বলেছিল আমরা ঠিক আছি। কিন্তু এখন তাদের কি অবস্থা দেখুন। এখন সেখানে মানুষ যেতে ভরসা পাচ্ছে না। সেক্ষেত্রে ভারত কিন্তু ঠিক আছে।”

বিশেষ ব্যক্তিদের এনে পর্যটকদের বিশ্বাস-ভরসা বাড়ানো

“তবে এই মুহূর্তে এটা একটা চ্যালেঞ্জিং টাইম। সেক্ষেত্রে আমরা কোনও বিজ্ঞাপন দিতে পারছি না। নেই আমাদের মার্কেটিং বাজেটও। সেক্ষেত্রে আমরা সোশ্যাল মিডিয়াকে ব্যবহার করছি।এমনকী আমরা বলিউডের কয়েকজন সেলিব্রিটিকে নিয়ে আসছি। আনার চেষ্টা করছি কিছু ভারতীয় ক্রিকেটারকেও।” বলেন ডেপুটি গভর্নর ছাত্তান।

প্রকাশ করা হয়েছে একটি ভিডিও

ছাত্তান বলেন- “আমরা প্রতি মুহূর্তের খবর জানাচ্ছি। যা হচ্ছে তা তুলে ধরার চেষ্টা করছি। সমস্ত তথ্য মাওরা জানাছি। আমরা একটি ভিডিও প্রকাশ করেছি যেখানে আমরা দেখাতে চেয়েছি এখানে সব কিছুই স্বাভাবিক আছে। বিচ খোলা আছে। অ্যামিউজমেন্ট পার্কে মানুষের যেতে বাধা নেই। পরিবহনে স্বাভাবিক।আমরা প্রতিদিনের পরিস্থিতি জানাচ্ছি। তবে ভাইরাস নিয়ে আমরা আমাদের মার্কেটিং কাজকর্ম জারি রেখেছি ভারতে। যেখানে আমরা যোগাযোগ রাখছি ট্রাভেল এজেন্টস, সংবাদ মাধ্যমের সঙ্গে। রেখেছি হোটেল অ্যাসোসিয়েশন অব থাইল্যান্ড এবং এয়ারলাইনের সঙ্গেও।”

যে গুরুত্বপূর্ণ তিন পদক্ষেপ নিয়েছে

  • “তবে আমরা কিছু প্রজেক্ট কার্যকর করতে প্রস্তুত হয়ে আছি। আমরা গতবছর ব্যাগেজের ওজন পাঁচ কেজি অতিরিক্ত করেছিলাম। তবে বর্তমান সময়ে আমরা তা আরও কিছুটা বাড়িয়ে ১০ কেজি করেছি। অর্থাৎ থাইল্যান্ড থেকে ভারতে যাওয়ার সময় যাত্রী অতিরিক্ত ১০ কেজি পন্য বহন করতে পারবে। আমরা দেখেছি এখান থেকে অনেকে টিভি সেট নিয়ে যান। কেউ আবার বাচ্চার জন্য খেলনা কেনেন। অনেকে আবার খাবার নেনে। তাদের কথা ভেবেই আমাদের এই পদক্ষেপ।”
  • “এমনকি আমরা ভিসা অন অ্যারাইভাল এখন এই মুহূর্তে ফ্রি করে দিয়েছি। আগে যেখানে কারেন্সি দিয়ে করাতে হতো সেটা আমরা এখন ফ্রি করেছি গত ফেব্রুয়ারি মাস থেকে।আমরা চাই আরও বেশি মানুষ ভারত থেকে এখানে ঘুরতে আসুক।”

একই সঙ্গে আরও একটা ভালো পদক্ষেপ নিয়েছে থাইল্যান্ড সরকার। যেখানে তারা তাদের এয়ারলাইন বাসকে প্রতিদিন স্যানিটাইজিং ওয়াটার দিয়ে পরিষ্কার করছে। যাতে মানুষ নির্ভাবনায় থাই এয়ালাইনের উড়ানে চেপে যাত্রা করতে পারে।

Published on: মার্চ ৭, ২০২০ @ ২৩:৫১


শেয়ার করুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

83 + = 89