৪৩ বছর পর এধরনের ভয়াবহ ঝড় আসতে চলেছে, রাজ্যের স্কুলগুলিকে ছুটি ঘোষণা, ICSC-CBSC বোর্ডের কাছে আবেদন

Main আবহাওয়া দেশ রাজ্য
শেয়ার করুন

রাজ্যের সমসস্ত সরকারি ও সরকার অনুমোদিত স্কুলগুলির গরমের ছুটি কাল থেকে দেওয়ার নির্দেশ জারি হয়েছে।

আইসিএসসি ও সিবিএসসি বোর্ডের কাছেও কাল থেকে দু’দিন স্কুলগুলিকে বন্ধ রাখার আবেদন জানিয়েছে রাজ্য সরকার।

এর আগে ১৯৯৯ সালে উড়িশ্যায় সুপার সাইক্লোনে প্রায় ১০ হাজার মানুষের মৃত্যু হয়েছিল।

Published on: মে ২, ২০১৯ @ ১৬:০৭

এসপিটি নিউজ ডেস্ক: তীব্র গতিতে ধেয়ে আসছে ভয়াবহ এক ঘূর্ণিঝড় ‘ফণী’। এখন থেকেই সতর্কতা নিয়েছে পশ্চিমবঙ্গ। ইতিমধ্যে নবান্নে জরুরী বৈঠক ডেকে এ নিয়ে সতর্কতা মূলক ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য উপদ্রুত এলাকার প্রশাসনকে নির্দেশ জারি করেছে। একই সঙ্গে রাজ্যের সমসস্ত সরাকারি ও সরকার অনুমোদিত স্কুলগুলির গরমের ছুটি কাল থেকে দেওয়ার নির্দেশ জারি হয়েছে। প্রয়োজনে ছুটির মেয়াদ শেষের দিকে কমিয়ে দেওয়ার কথা বলা হয়েছে। পাশাপাশি আইসিএসসি ও সিবিএসসি বোর্ডের কাছেও কাল থেকে দু’দিন স্কুলগুলিকে বন্ধ রাখার আবেদন জানিয়েছে রাজ্য সরকার। ছাত্র-ছাত্রীদের নিরাপত্তার কথা ভেবেই এমন সিদ্ধান্ত নিয়েছে রাজ্য সরকার।ইতিমধ্যে ইস্টকোস্ট রেল বহু ট্রেন বাতিল করেছে।

প্রাকৃতিক দুর্যোগ মোকাবিলায় ইতিমধ্যেই রাজ্যে এসে পৌঁছেছেন জাতীয় বিপর্যয় মোকাবিলা বাহিনীর সেকেন্ড ব্যাটেলিয়ন। গতকাল থেকেই দীঘায় সমুদ্র সৈকতে এনডিআরএফ-এর একটি দল পর্যটকদের নিরাপদ স্থানে চলে যাওয়ার ও তাদের সতর্ক করার কাজ শুরু করেছে। কলকাতা কর্পোরেশনও তাদের মতো করে সব রকমের সতর্কতা অবলম্বন করেছে বলে জানিয়েছেন মেয়র ববি হাকিম।

এখনও পর্যন্ত সবচেয়ে ভয়াবহ ঘূর্ণিঝড় হতে চলেছে

এই মুহূর্তে রাজ্যে বিভিন্ন স্থানে পৌঁছে গিয়েছে এনডিআরএফ-এর ছ’টি দল। বলা হচ্ছে ৪৩ বছর পর এমন ভয়াবহ ঘূর্ণিঝড় ধেয়ে আস্তে চলেছে সমুদ্র উপকূলবর্তী এলাকায়। ইতিমধ্যে ফণির প্রভাবে অন্ধ্রপ্রদেশ উপকূলে প্রছন্ড বৃষ্টি শুরু হয়ে গিয়েছে। এর ফলে হাওয়ার গতি প্রতি ঘণ্টায় ১৭৫ থেকে ২০৫ কিমি হতে পারে। উড়িশ্যায় এর ভয়াবহ প্রভাব পড়তে চলেছে। ব্যাপক ক্ষতির সম্ভাবনা রয়েছে। আট লক্ষ মানুষকে সুরক্ষিত স্থানে নিয়ে যাওয়া হয়েছে। ৮৮০টি ত্রাণ শিবির খোলা হয়েছে। সব শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধ রাখার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। গঞ্জাম, পুরী, খুর্দা, জগতসিংহপুর এলাকায় ভারী বৃষ্টিপাতের সম্ভাবনা আছে।

ভারতীয় আবহাওয়া দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে- ফণী প্রতি ঘণ্টায় ৬ কিলোমিটার গতিতে উড়িশার দিকে ধেয়ে আসছে। যত সময় এগোচ্ছে এর গতি ক্রমে বাড়ছে। যত এগিয়ে আসবে ততই গতি প্রবল আকার নেবে। জায়েন্ট টাইফুন ওয়ার্নিং সেন্টার-এর সূত্র অনুযায়ী- ফণী ঘুর্ণিঝড় এ পর্যন্ত ভারতে হওয়া সবচেয়ে ভয়াবহ ঘূর্ণিঝড় হতে চলেছে। এর আগে ১৯৯৯ সালে উড়িশ্যায় সুপার সাইক্লোনে প্রায় ১০ হাজার মানুষের মৃত্যু হয়েছিল।

এর আগেও উড়িশ্যায় আছড়ে পড়েছে ভয়াবহ ঝড়

ক্ষেত্রীয় আবহাওয়া বিভাগের প্রাক্তন ডিরেক্টর শরত সাহু কথা অনুযায়ী – উড়িশ্যায় ১৮৯৩, ১৯১৪, ১৯১৭, ১৯৮২ এবং ১৯৮৯ সালে গরমেও ঘূর্ণিঝড় আছড়ে পড়েছিল। কিন্তু বাংলার উপকূলে গরমের ফলে এমন ঘূর্ণিঝড়ের সৃষ্টি হয়েছে। আশঙ্কাকরা হচ্ছে যে এবারের এই ঘূর্ণিঝড়ে আগের সব রেকর্ড ভেঙে দেবে।

বাতিল বহু ট্রেন

ভারতীয় রেল ফণী’র কারণে কমবেশি ৮১টি ট্রেন বাতিলের খবর মিলেছে। এই ফণী উড়িশ্যা, অন্ধ্রপ্রদেশ এবং পশ্চিমবঙ্গের ১৫টি জেলায় প্রভাব ফেলবে। রেল জানিয়ে দিয়েছে তারা টিকিটের পরো পয়সাই যাত্রীদের ফেরত দিয়ে দেবে। যারা নির্ধারিত সময়ের অনেক আগে টিকিট কেটেছিলেন। যেওসব ট্রেন বাতিল করা হয়েছে সেগুলির মধ্যে- হাওড়া-চেন্নাই সেন্ট্রাল করমন্ডল এক্সপ্রেস, পাটনা-এরনাকুলাম এক্সপ্রেস, নয়াদিল্লি-ভুবনেশ্বর রাজধানী এক্সপ্রেস, হাওড়া-হায়দরাবাদ ইস্টকোস্ট এক্সপ্রেস, ভুবনেশ্বর-রামেশ্বরম এক্সপ্রেস আছে। সস্মত স্টেশঙ্গুলিতে পর্যাপ্ত খাবার, জলের বোতল মজুত রাখা হয়েছে।

আবহাওয়া দফতর যা বলছে

আজ ২রা মে উত্তরপ্রদেশে ৫০-৬০ কিলোমিটার প্রতিঘণ্টায়, বিহারে ৪০-৫০ কিমি প্রতি ঘন্টায় ঠিক তেমনই উত্তরাখণ্ড, ঝাড়খণ্ড, পশ্চিমবঙ্গ, সিকিম, তামিলনাড়ু এবং পুডুচেরীতে হাওয়ার গতিবেগ থাকবে ৩০ থেকে ৪০কিমি প্রতি ঘণ্টায়।এইসব রাজ্যগুলিতে বজ্রবিদ্যুত সহ বৃষ্টীপাতের সম্ভাবনা আছে। মনে করা হচ্ছে, আগামিকাল ৩রা মে মে উড়িশ্যার জগন্নাথধাম পুরীতে এই ঝড় ফনী আছড়ে পড়তে চলেছে। এই সময় সেখানে ঝড়ের গতিবেগ থাকবে ঘণ্টায় ১৭৫কিলোমিটার প্রতি ঘণ্টায়। আজ দুপুএর পুরী থেকে ৬৬০ কিলোমিটার দূরে এই ফণী প্রতিঘণ্টায় ১৪ কিলোমিটার বেগে ধেয়ে আসছে।

Published on: মে ২, ২০১৯ @ ১৬:০৭

 

 

 

 


শেয়ার করুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

+ 3 = 12