সুখবর! মমতার হাত ধরে কর্ণগড় সহ পশ্চিম মেদিনীপুর জেলার তিনটি স্থান পর্যটন মানচিত্রে জায়গা করে নিতে চলছে

ভ্রমণ রাজ্য
শেয়ার করুন

সংবাদদাতা-বাপ্পা মণ্ডল                                                    ছবি-রামপ্রসাদ সাউ

Published on: মার্চ ২২, ২০১৮ @ ২৩:৩২

এসপিটি নিউজ, মেদিনীপুর, ২২ মার্চঃ পর্যটপ্রেমীদের কাছে সুখবর। এবার তাদের জন্য পর্যটনের দরজা খুলে যাচ্ছে পশ্চিম মেদিনীপুর জেলার তিনটি স্থানে। স্থানগুলি হল কেশিয়াড়ীর গগনেশ্বর সংলগ্ন কড়ুমবেড়া, শালবনীর কর্ণগড় ও গড়বেতার গণগণি। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের ইচ্ছে প্রকাশ করেছেন যে এই জায়গাগুলিকে পর্যটন কেন্দ্র হিসেবে গড়ে তোলার কাজ যেন অবিলম্বে শুরু হয়। মুখ্যমন্ত্রীর এই ঘোষণার পর এইসব এলাকায় বাসিন্দাদের মধ্যে খুশির আমেজ দেখা গেছে।

এতদিন রাজ্যের পর্যটন কেন্দ্র বলতে লোকে বুঝত দিঘা, বকখালি, সুন্দরবন, বাঁকুড়া, পুরুলিয়ার কিছু স্থান আর পুরোটাই উত্তরবঙ্গ জুড়ে। এককথায় পর্যটনের পুরোটাই জুড়ে থাকত উত্তরবঙ্গের নাম। যেখানে একটা বড় অংশ নিয়ে আছে শৈল রানি দার্জিলিং। এবার সেই পর্যটনের মানচিত্রে স্থান করে নিতে চলেছে রাজ্যের ঐতিহাসিক পশ্চিম মেদিনীপুর জেলা।যে জেলার সঙ্গে জড়িয়ে অনেক ইতিহাস।

ক্ষমতায় আসার পর থেকে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় রাজ্যের উন্নয়নে জোর দিয়েছেন। অনেক প্রতিকূলতা সত্ত্বেও তিনি একের পর এক কাজ করে চলেছেন। আর তাঁর সেই কাজে অন্যতম সংযোজন পর্যটন। ইতিমধ্যে তিনি উত্তরবঙ্গের একাধিক স্থানকে পর্যটন কেন্দ্র হিসেবে গড়ে তোলার প্রয়াস নিয়েছেন। এবার সেই তালিকায় যুক্ত হল পশ্চিম মেদিনীপুর জেলাও। অনেকদিন ধরেই এই জেলার মানুষের ইচ্ছে ছিল যে এখাঙ্কার বহু স্থান আছে যা পর্যটন কেন্দ্র হিসেবে গড়ে উঠতে পারে। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বৃহস্পতিবারের প্রশাসনিক বৈঠকে সেই ইচ্ছাকেই গুরুত্ব দিয়ে ঘোষণা করলেন যে এখানকার কুড়ুমবেড়া, কর্ণগড় ও গণগনিতে গড়ে তোলা হবে পর্যটন কেন্দ্র। একই সঙ্গে মমতা জানান, সুবর্ণরেখা নদীর উপর তৈরি জঙ্গলকন্যা সেতুটিকে আলো দিয়ে সাজানো হবে। বেলদায় তৈরি করা হবে উন্নতমানের বাসস্ট্যান্ড।

মুখ্যমন্ত্রীর এই ঘোশণায় খুশির হাওয়া গোটা কর্ণগড় সহ পার্শ্ববর্তী গ্রামগুলিতে। মেদিনীপুর শহর থেকে মাত্র ১২ কিলোমিটার দূরে অবস্থিত রানী শিরোমণির স্মৃতি বিজড়িত শালবনীর কর্ণগড়। এখানকার সুপ্রসিদ্ধ মহামায়ার মন্দিরে প্রতিদিনই লেগে থাকে অসংখ্য ভক্তদের ভিড়। মেদিনীপুর শহর থেকে সাত কিলোমিটার দূরে অবস্থিত শালবনীর ভাদুতলা। এই ভাদুতলা থেকে মাত্র ৫ কিমি দূরে দেবী মহামায়ার মন্দির।

স্থানীয় বাসিন্দাদের কথায়, কর্ণগড় পর্যটনকেন্দ্র হিসেবে গড়ে ওঠার উপযুক্ত পরিবেশ রয়েছে। ভাদুতলা থেকে কর্ণগড় পর্যন্ত রাস্তাটি পূর্ত দফতর নতুন করে আলোকিত করে গড়ে তোলার কাজ শুরু করেছে।মেদিনীপুরের প্রবীন বিধায়ক মৃগেন মাইতি রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে লিখিতভাবে শালবনীর কর্ণগড়কে পর্যটন কেন্দ্র গড়ে তোলার জন্য আবেদন জানিয়েছিলেন। তাঁর সেই আবেদনকেই মুখ্যমন্ত্রী কার্যত শীলমোহর দিলেন। আসলে মুখ্যমন্ত্রীর অনেক দিনের ইচ্ছে ছিল এই স্থানগুলিকে পর্যটন কেন্দ্র হিসেবে গড়ে তোলার।

কর্ণগড়ের বাসিন্দা স্থাঈয় শিক্ষক তাপস সাউ জানালেন, মুখ্যমন্ত্রীর এমন ঘোষণায় আমরা খুশি। ের ফলে এই এলাকার আর্থ-সামাজিক ব্যবস্থার উন্নয়ন হবে। এর আগে বহুবার এই এলাকাকে পর্যটন কেন্দ্র হিসেবে গড়ে তোলার দাবি জানিয়ে আসা হয়েছে। কিন্তু তা আমল দেওয়া হয়নি। অবশেষে রাজ্যের বর্তমান মুখ্যমন্ত্রী মানুষের সেই দাবিকে মান্যতা দিলেন। এই শিক্ষক আরও একটি বিষয়ের উপর মুখ্যমন্ত্রীর দৃষ্টি আকর্ষণ করার চেষ্টা করেছেন। তিনি বলেন, কর্ণগড় থেকে মোহনপুর পর্যন্ত এক কিলোমিটার মোরাম রাস্তাটিকে যদি পিচের করে দেওয়া যায় তবে খুব কম সময়ে আনন্দপুর পৌঁছনো সম্ভব হবে।

অনেকেই মনে করছেন, বাম আমলে রাজ্যে যে পর্যটনের খড়া ছিল সেটা এবার কাটতে চলেছে। উত্তরবঙ্গের পাশাপাশি এবার দক্ষিণবঙ্গেও পর্যটনের উপ্র জোড় দিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। বর্তমানে গোটা রাজ্যে এমন কোনও জায়গা নেই যেখানে অশান্ত পরিবেশ আছে, এটাই পর্যটন কেন্দ্র গড়ে তোলার পক্ষে উপযুক্ত সময়। সেই লক্ষ্যেই এগিয়ে চলেছে বাংলা।

Published on: মার্চ ২২, ২০১৮ @ ২৩:৩২


শেয়ার করুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

6 + 2 =