সিএএ নিয়ে চিন্তা করবেন না, এই মাটিতে লিঞ্চিং করতে দেব না- হুঁশিয়ারি মমতার

দেশ রাজ্য
শেয়ার করুন

  • “আমরা সবাই নাগরিক। এটা আমাদের সবচেয়ে বড় অধিকার।আমরা সবাই ঐক্যবদ্ধ ভারতকে ভালোবাসি।”
  • “মনে রাখবেন ভোটের সময় আমরা পাহারাদার হিসেবে আসি না। ৩৬৫ দিন ২৪X৭ আমি আপনাদের পাহারাদার। ভোটের পাহারাদার নই।”
  • “আমি আবারও সবাইকে বলছি ভেবে দেখার জন্য- এমনকি উত্তর-পূর্বের রাজ্যগুলিকে।”
  • “যে যা মানে মানুক আমি কিন্তু মানছি না।ওখানে আইন অনুযায়ী শর্ত লিখে দেওয়া আছে। কাজেই যতক্ষণ পর্যন্ত ওই আইন প্রত্যাহার করা হচ্ছে ততক্ষণ পর্যন্ত কিন্তু সেটা আইন অনুযায়ী থেকেই যাচ্ছে।”

Published on: জানু ২০, ২০২০ @ ২৩:৫১ 

এসপিটি নিউজ, শিলিগুড়ি, ২০  জানুয়ারি:  নাগরিকত্ব সংশোধনী আইন নিয়ে ফের নিজের অবস্থান পরিষ্কার করে দিলেন আরও একবার বাংলার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। উত্তরবঙ্গ উৎসবের উদ্বোধন করতে গিয়ে সাফ জানিয়ে দিলেন তিনি এখানে এই আইন কার্যকর করতে দেবেন না।

মুখ্যমন্ত্রীর গলায় ঐক্যের সুর

  • মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন- “মনে রাখবেন এই মাটি আমার সোনার মাটি এই মাটিতে হামলা করতে দেব না। এই মাটিতে সন্ত্রাস করতে দেব না। এই মাটিতে লিঞ্চিং করতে দেব না। এই মাটিতে মানুষে মানুষে ভাগাভাগি করতে দেব না। এই মাটিতে কারও অধিকার কেড়ে নিতে দেব না। এই মাটিতে আমরা সবাই সমান। আমরা সবাই নাগরিক। এটা আমাদের সবচেয়ে বড় অধিকার। আমরা সবাই এদেশের মানুষ। আমরা সবাই ঐক্যবদ্ধ ভারতকে ভালোবাসি।”
  • আমাকে যদি বলেন- একটাকে বাদ দিয়ে আর একটাকে ধরুন। আমি বলবো- পারবো না। আমার দুটো হাতের দরকার আছে। আমার দুটো পায়ের দরকার আছে। সেই রকম মনে রাখবেন আমার বাঙালিও দরকার আছে আমার নন-বেঙ্গলিও দরকার আছে। আমার রাজবংশীও দরকার আছে আমার কামতাপুরীও দরকার আছে। আমি মনে করি হিন্দু-মুসলিম-শিখ-ইশাই/ আপস মে রহেনা ভাই ভাই।

ভাগাভাগির রাজনীতির বিরুদ্ধে তীব্র ক্ষোভ প্রকাশ

ভাগাভাগির রাজনীতির বিরুদ্ধে তীব্র ক্ষোভ প্রকাশ করে মমতা বলেন- “এই দেশকে কেন ভাগাভাগি করবো। কারও বাড়ি শিলিওগুড়িতে তো কারও বাড়ি দার্জিলিং-এ। সুতরাং সবটাই কিন্তু আমাদের নিজেদের। এটা মাথায় রাখতে হবে। কারও ইটাহারে আবার কারও বাড়ি ইসলামপুরে। মানুষ কিন্তু সবাই এক। সবাইকে ভালো থাকতে হবে। এক থাকতে হবে। আমি আপনাদের নিশ্চিন্ত করতে চাই- বঙ্গ সংস্কৃতি যেমন গর্বের উত্তরের সংস্কৃতিও গর্বের। দক্ষিণ-উত্তরের কোনও ভেদাভেদ নেই। সবটাই আমাদের সকলকে নিয়ে। বাংলায় যারা থাকবেন তাদের কাছে একটা বার্তা যাওয়া দরকার- আমরা প্রত্যেকেই প্রত্যেকের জন্য। আমরা কোনও ভাগাভাগিতে মদত দেব না। একটা বাঙালির রক্ত যেমন লাল একটা বিহারি ভাইবোনের রক্ত লাল।’

আমি উত্তরবঙ্গে কেন বারবার আসি জানেন- উত্তরবঙ্গকে আমি ভালোবাসি। দক্ষিণবঙ্গকে যেমন ভালোবাসি আমি উত্তরবঙ্গকে সমানভাবে ভালোবাসি। উত্তরবঙ্গ আমার স্বজন যেমন দক্ষিণবঙ্গ আমার স্বজন। নিজ ভূমিতে নিজের বাড়িতে প্রত্যককেই সুন্দরভাবে থাকতে হবে।

এনআরসির নিয়ে নিজের অনড় অবস্থানের কথা জানালেন মুখ্যমন্ত্রী

এনআরসির নিয়ে নিজের অনড় অবস্থানের কথা এদিনও সাফ জানিয়ে দেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তিনি বলেন- “এনআরসি নিয়ে চিন্তা করবেন না। আমি আছি। কেউ গায়ে হাত দিতে পারবে না। কেউ অধিকার কাড়তে পারবে না। সিএএ নিয়ে চিন্তা করবেন না। আমি আপনাদের সাথে পুরোপুরি আছি। আমি আছি মানে বাংলার একশো শতাংশ মানুষ আপনাদের সঙ্গে আছে। কে একটা কি বলল তাতে কিছু যায় আসে না। এই রাজ্য আমাদের। এই মাটি আমাদের। আর একটা কথা বলে যাই- চিন্তা করবেন না। নিজেরা ভালো করে কাজ করুন। মনে রাখবেন ভোটের সময় আমরা পাহারাদার হিসেবে আসি না। ৩৬৫ দিন ২৪X৭ আমি আপনাদের পাহারাদার। ভোটের পাহারাদার নই। কিন্তু মানুষকে দেখবার পাহারাদার। মানুষের বিরুদ্ধে কোনও কাজ হোক এটা আমি কোনওদিন করতে দেব না। এটা আমার অভিরুচী নয়, এটা আমার সংস্কৃতি নয়। এটা আমার বাবা-মা আমাকে শেখায়নি।”

কিসের এনপিআর? ভেবে দেখুন

  • “আজকে কি বলছে- এনপিআর করতে হবে। কিসের এনপিআর? যখন দেখলাম কলম করেছে- বাবা-মায়ের জন্মস্থান দিতে হবে, বাবা-মায়ের জন্ম তারিখ দিতে হবে। ভাবলাম এ তো আমিও দিতে পারবো না। আমি দেখলাম অনেকে অনেক কথা বল্ল কিন্তু সবাই মিটিং-এ চলে গেল। আমি গেলাম না। আমি আবারও সবাইকে বলছি ভেবে দেখার জন্য- এমনকি উত্তর-পূর্বের রাজ্যগুলি ত্রিপুরা-আসাম, অরুণাচল, মেঘালয়, সিকিম থেকে শুরু করে সেখানকার সব কটি রাজ্যকে অনুরোধ করবো। আপনারা মিটিং-এ গেছিলেন। আপনাদের ভালো কথায় বুঝিয়ে দিয়েছে চালাকি করে।”
  • “যে বাবা-মায়ের জন্ম তারিখ দিতে হবে এটা বাধ্যতামূলক নয়- তাই কি?আপনি ধরুন পরীক্ষায় বসলেন। আপনি একটি বিষয়ে পরীক্ষা দিলেন না। উত্তর দিলেন না। তাহলে কি আপনার নম্বর হবে? গোটা পরীক্ষায় পাস করবেন? তাহলে যে বাবা-মায়ের জন্ম তারিখ জানালো না কিংবা দিল না। সে তো অসম্পূর্ণ থেকে গেল। স্বাবাবিকভাবেই তো তাকে আসল সময় বাদ করে দেবে। যে যা মানে মানুক আমি কিন্তু মানছি না।ওখানে আইন অনুযায়ী শর্ত লিখে দেওয়া আছে। কাজেই যতক্ষণ পর্যন্ত ওই আইন প্রত্যাহার করা হচ্ছে ততক্ষণ পর্যন্ত কিন্তু সেটা আইন অনুযায়ী থেকেই যাচ্ছে।”

Published on: জানু ২০, ২০২০ @ ২৩:৫১


শেয়ার করুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

18 − = 11