পথ দেখাবেন তিনি- আমাদের জাতির জনক

উত্তর সম্পাদকীয় রাজ্য
শেয়ার করুন

লেখক- সম্রাট তপাদার

Published on: অক্টো ১, ২০১৮ @ ২৩:৪৩

এ লড়াইয়ে আমাদের নেতা মহাত্মা গান্ধী

মহাত্মা গান্ধীর মূল্যায়ন করছে কে? অমিত শাহ। আমরা অমিত শাহ এর শব্দ চয়ন,তার দৃষ্টিভঙ্গী–এসবে অবাক হই না। অমিত শাহ, মোদী কিম্বা দিলীপ ঘোষদের শিক্ষা-রুচি-অপরিণত ইতিহাস বোধ তাদের কথা বার্তায় প্রতিফলিত হবে, সেটাই স্বাভাবিক।

লড়াইটা আর প্রচ্ছন্ন নেই।একেবারে সামনে এসে গেছে।

একদিকে ওরা। ওরা মানে ধর্ম -জাত দিয়ে সবটাকে ভাঙতে চাইছে; মন্দিরের ঘন্টাধ্বনি, মসজিদের আজান, গির্জার ঘন্টাধ্বনিকে চাপা দিচ্ছে নারকীয় পৈশাচিক উল্লাসে: “গর্জনে মিশে পূজা মন্ত্রের স্বর”…

আর একদিকে আমরা যারা আলোকপথযাত্রী হওয়ার পণ করেছি। “সবার উপরে মানুষ সত্য”এই আপ্তবাক্যই কেবল সম্বল আমাদের।

একদিকে ওরা। গরিব-খেটে খাওয়া মানুষগুলোর খিদের জ্বালার চিৎকার-কে লুকিয়ে রাখতে ধর্মের আফিম খাইয়ে তাদের স্লো-পয়জেন করে তিলে তিলে মারার লক্ষ্য ওদের।

ওরা। ডিগ্রির ভাঁড়ারে অনেক মণিমুক্ত ওদের। তা ভাঙিয়ে ট্রেনে বাসে পথে, ফেবুকে সর্বত্র ‘হিন্দু রাস্ট্র’ গঠনের জন্য কানে-কানে বিষ ঢালছে ওরা।

আমরা…বলছি এ দেশের সবার। এ মাটি সহনশীল। সংবেদন এ দেশের মজ্জায় মজ্জায়।

আমরা বলছি, ক্রসেড দিয়ে পৃথিবীর মানুষকে ঘুম পাড়ানো যায়নি। খিদে আর অধিকার রক্ষার লড়াইয়ে সব হারানো মানুষগুলো চিৎকার করবেই। ধম্ম-ধম্ম করে তাদের চিরকাল ঘুম পাড়িয়ে রাখা যাবে না।

আটহাতি ধুতি পরে খালি পায়ে নোয়াখালির পথে পথে হেঁটে দাঙ্গার আগুনে জল ঢালছিলেন যিনি, বেলেঘাটায় অনশনে বসে আছেন–আর উভয় সম্প্রদায়ের দাঙ্গাবাজরা দলে দলে অস্ত্রসমর্পণ করে যাচ্ছেন তাঁর পদতলে, ১৯৪৭ এর ১৫ অগাস্ট সারা দেশের সাথে সাথে বাংলাতেও যখন আনন্দের সাথে সাথে দাঙ্গার বীভৎসতা চরম রূপ নিয়েছে, তখন কলকাতার অলিতে-গলিতে সোরাবর্দীকে সাথে নিয়ে দাঙ্গা থামাচ্ছেন তিনি

…তাঁর নাম মহাত্মা গান্ধী

ওরা উস্কানি দিচ্ছে, গুজব ছড়াচ্ছে। ওদের কোনও ধর্ম নেই। ফজরের আজানের সময় যারা ইসলামের নাম নিয়ে মানুষ মারে, রামের নাম নিয়ে যারা মানবতাকে হত্যা করে তারা কোনও ধর্মের নয়। তাদের একটাই পরিচয়- তারা দাঙ্গাবাজ।

এবার ওদের সাথে আমাদের লড়াই। এ লড়াই এ পথ দ্যাখাবেন সেই গান্ধী।

  • ওরা অস্ত্র নিয়ে আসবে আমরা ভালোবাসা দিয়ে প্রতিরোধ করবো।
  • ওরা তলোয়ার নিয়ে মিছিল করবে, আমরা ফুল দিয়ে সম্প্রীতি রাখব।
  • ওরা গডসের মন্দির বানাবে, আমরা হৃদয় মন্দিরে গান্ধী-কে রাখবো।
  • ওরা ধর্মের নামে বদনাম করে মানুষ মারবে, আমরা সংস্কৃতি দিয়ে মানবতাকে বাঁচাবো।
  • ওরা রাম নাম বদনাম করে বুকে বুলেট ছুঁড়বে, আর আমরা হে রাম বলে প্রাণ দেব।

তবু দাঙ্গা হতে দেব না।

আর হ্যাঁ, অর্ধশিক্ষিত অমিত শাহ আপনার এবং আপনি যে মধ্যযুগীয় বর্বতায় বিশ্বাসী আর.এস.এস দর্শনে বিশ্বাসী তাদের উদ্দেশে বলছি–” ঠিক বলেছেন আপনারা “গান্ধী চতুর বনিয়া” কারণ গান্ধী তো ছিলেন ভালবাসা আর অহিংসার ফেরিওয়ালা। হিংসায় উন্মত্ত পৃথিবীতে আজ আবার মহাত্মা গান্ধী-র মতোই ভালবাসার ফেরিওয়ালার দরকার।যিনি চতুর বনিয়ার মতোই ঘরে ঘরে,হৃদয়ে- মজ্জায় অহিংসার প্রোডাক্ট পৌঁছে দেবেন।

আর তাই তো মানুষ মেরেও দেবতা হতে পারেনা গডসেরা।

আর মরেও বেঁচে থাকেন গান্ধী।

Published on: অক্টো ১, ২০১৮ @ ২৩:৪৩


শেয়ার করুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

+ 13 = 15