সঠিক তথ্য-প্রমাণ সহযোগে প্রধানমন্ত্রীর দফতরে চিঠি পাঠাচ্ছে নৈহাটির বঙ্কিম-ভবন গবেষণা কেন্দ্র

Main দেশ রাজ্য
শেয়ার করুন

Published on: ফেব্রু ২৩, ২০২১ @ ২৩:৩৬
Reporter: Aniruddha Pal

এসপিটি নিউজ, নৈহাটি, ২৩ ফেব্রুয়ারি:  কেমন অবস্থায় আছে নৈহাটিতে কাঁটালপাড়ায় অবস্থিত সাহিত্যসম্রাট বঙ্কিমচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়ের জন্মস্থান বঙ্কিম-ভবন গবেষণা কেন্দ্র। সেখানকার অধ্যক্ষ ড. রতন নন্দী ভবনের বর্তমান অবস্থা তুলে ধরে জানালেন-গতকাল হুগলির জনসভা থেকে সম্মানীয় প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি বঙ্কিম ভবন সম্পর্কে ভুল তথ্য পরিবেশন করেছেন,আর তাই এ সম্পর্কে সঠিক তথ্য-প্রমাণ সহযোগে বঙ্কিম ভবন গবেষণা কেন্দ্রের পক্ষ থেকে প্রধানন্ত্রীর দফতরে চিঠি পাঠানো হবে।

এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে নৈহাটি বঙ্কিম-ভবন গবেষণা কেন্দ্রের অধ্যক্ষ ড. রতন নন্দী জানিয়েছেন- “গতকাল হুগলির একটি সভা থেকে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র দামোদরদাস মোদি বন্দেমাতরম সঙ্গীতের রচনাস্থল সম্পর্কে কিছু মন্তব্যের পরিপ্রেক্ষিতে বিভিন্ন মহল থকে বিশেষ করে আমার কাছে অনেক প্রশ্ন এসেছে, যা থেকে অনুভব করেছি যে বাংলার বঙ্কিম-প্রেমী মানুষের কাছে একটি ভুল বার্তা পৌঁছেছে, যা যথাযথ নয়। বিশেষ করে বঙ্কিম-ভবন গবেষণা কেন্দ্র সংশ্লিষ্ট এবং নৈহাটিবাসী মানুষের কাছে সর্বভারতীয় স্তরে প্রচারিত সম্মানীয় প্রধানমন্ত্রীর ভাষণ বেদানাদায়ক বলে মনে হয়েছে।”

“বঙ্কিমচন্দ্রের পবিত্র জন্মস্থান নৈহাটির কাঁটালপাড়ায় অবস্থিত । এখানেই গড়ে উঠেছে পশ্চিমবঙ্গ সরকার পোষিত উচ্চশিক্ষা দফতর (সোশ্যাল ব্রাঞ্চ) অধীনস্ত বঙ্কিম-ভবন গবেষণা কেন্দ্র। ১৯৩৮ খ্রি. বঙ্কিমচন্দ্রের জন্মশতবার্ষিকীর সময় বঙ্গীয় সাহিত্য পরিষদ এবং স্থানীয় কিছু উৎসাহী ব্যক্তির উদ্যোগে বঙ্কিমচন্দ্রের বসতবাড়ির অংশ বিশেষ তাঁর উত্তরাধিকারীদের কাছ থেকে গ্রহণ করা হয়। এর কিছু অংশ দান হিসাবে পাওয়া, কিছু অংশ ক্রয় করা। সাহিত্য পরিষদ এই সম্পত্তি জমি ঋষি বঙ্কিম গ্রন্থাগার ও সংগ্রহশালা প্রতিষ্ঠার জন্য নৈহাটিতে অবস্থিত সাহিত্য পরিষদের শাখাকে দান করে। ১৯৫২ সালে এই অংশটি পশ্চিমবঙ্গ রাজ্য সরকারের হাতে তুলে দেওয়া হয়। এর নিয়ন্ত্রণ ক্ষমতা ছিল পশ্চিমবঙ্গ সরকারের উচ্চ শিক্ষা দফতরের।”

“বঙ্কিমচন্দ্রের পরিবারের ব্যবহৃত অন্য এলাকাগুলি তখনও অধিগৃহীত হয়নি। সেই বাসস্থান অযত্নে ভগ্নস্তূপে পরিণত হয়। ১৯৮৮ খ্রিস্টাব্দে পশ্চিমবঙ্গ সরকার এই ভগ্ন বাড়িটি অধিগ্রহণ করে। পরে ১৯৯৯ খ্রিস্টাব্দে এই সংস্কার করা ভবনে বঙ্কিম-ভবন গবেষণা কেন্দ্র প্রতিষ্ঠা করে। তখন থেকে পশ্চিমবঙ্গ সরকারের সম্পূর্ণ অর্থানুকূল্যে এই গবেষণাকেন্দ্র চলছে। এই ভবনকে পুরনো গঠনশৈলীর উপর নতুন করে সাজানো হয়েছে। বঙ্কিমচন্দ্রের ব্যক্তিগত এবং তাঁর পরিবারের অন্যান্য সদস্যদের স্মৃতিবিজড়িত দ্রব্যসামগ্রী এবং ব্যবহৃত গ্রন্থ ও চিঠিপত্রের সংগ্রহ সহ গড়ে উঠেছে লেখ্যাগার, প্রদর্শনশালা, পুথিভাণ্ডার। এখান থেকেই নতুন করে প্রকাশিত হচ্ছে বঙ্গদর্শন পত্রিকা। বঙ্কিমভবন গবেষণাকেন্দ্রের প্রকাশনাবিভাগ বাংলার প্রকাশনা জগতে উজ্জ্বল স্থান অধিকার করে আছে। পশ্চিমবঙ্গের অর্থানুকূল্যে এই বঙ্গদর্শন ও অন্যান্য গবেষণাকৃত গ্রন্থ নিয়মিত প্রকাশিত হচ্ছে। কর্মীদের বেতন ও রক্ষাণেবেক্ষনের সম্পূর্ণ ব্যয়ভার গ্রহণ করেছে রাজ্য সরকার।”

“বঙ্কিমভবন গবেষণাকেন্দ্রের বর্তমান অবস্থা আপনারা একটু ঘুরে দেখলেই প্রত্যক্ষ ক্রতে পারবেন। যত্নসহকারে সংরক্ষিত এই ভবন, বঙ্কিমচন্দ্রের জন্মস্থান বা সূতিকাগৃহ, স্মৃতি সম্বলিত সংগ্রহশালা দেখার জন্য প্রত্যহ দেশ-বিদেশের বহু মানুষ এখানে আসেন। রাজ্য সরকারের ঔদাসীন্যে এই ঐতিহাসিক ভবনটি ভেঙে পড়েছে, এই তথ্য সত্য নয়।” বলেন রতনবাবু।

Published on: ফেব্রু ২৩, ২০২১ @ ২৩:৩৬


শেয়ার করুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

80 − = 79