শ্রীগীতা জয়ন্তী উৎসবঃ আজ বিশ্বের সর্ব্বৃহৎ শ্রীমদ্ভাগবদগীতা সমাবর্তন অনুষ্ঠান পালিত হল মায়াপুর ইসকনে

Main দেশ ধর্ম ভ্রমণ রাজ্য
শেয়ার করুন

Published on: ডিসে ১৪, ২০২১ @ ২৩:৪৯
Reporter: Aniruddha Pal

এসপিটি নিউজ, মায়াপুর, ১৪ ডিসেম্বর: আজ মায়াপুর ইসকনে মহাসমারোহে শ্রীগীতা জয়ন্তী উৎসব পালিত হল। দেশ-বিদেশের ৩ হাজারেরও বেশি ভক্ত একসঙ্গে এই উৎসবে অংশ নিয়েছেন। ৫ হাজার বছর পূর্বে আজকের তিথিতে কুরুক্ষেত্রের রণাঙ্গনে শ্রীকৃষ্ণ অর্জুনকে গীতার বানী দান করেছিলেন।সেই উপলক্ষ্যে এই তিথির দিনটিকে প্রতি বছর শ্রীগীতা জয়ন্তী উৎসব হিসেবে পালন করা হয়ে থাকে।

আজ মায়াপুর ইসকনে

আজ মায়াপুর ইসকনে এই উপলক্ষ্যে এক যজ্ঞানুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়েছিল। একই দিনে এদিন শ্রীমদ্ভাগবদগীতার ১৮টি অধ্যায় পাঠ করা হয়। যেখানে অংশ নিয়েছিলেন শ্রীগীতা স্টাডি কোর্সের সঙ্গে যুক্ত মানুষজন। সংখ্যাটা তিন হাজারের অধিক হবে। এত বড় শ্রীগীতাজয়ন্তী উৎসব সারা বিশ্বে বিরল, যেখানে একই সঙ্গে বসে শ্রীগীতা পাঠ করেছেন এত হাজার হাজার মানুষ। চার থেকে পাঁচ ঘণ্টা টানা বসে স্রীগীতা পাঠ সত্যিই অতুলনীয়।

মায়াপুর ইসকনের জনসংযোগ আধিকারিক রসিক গৌরাঙ্গ দাস বলেন- আজকের তিথিতে পাঁচ হাজার বছর আগে ভগবান শ্রীকৃষ্ণ কুরুক্ষেত্রের রণাঙ্গনে অর্জুনকে শ্রীগীতার বানী দান করেছিলেন, যা থেকে তিনি জীবনের সঠিক দিশা খুঁজে পেয়েছিলেন।

ভগবদগীতা আসলে কি?

ভগবদগীতা আসলে কি? শ্রীমদ্ভাগবদগীতা যথাযথ’তে উল্লেখ করা হয়েছে- ভগবদ গীতার উদ্দেশ্য হচ্ছে অজ্ঞানতার অন্ধকারে আচ্ছন্ন এই জড় জগতের বন্ধন থেকে মানুষকে উদ্ধার করা।প্রতিটি মানুষই নানাভাবে দুঃখকষ্ট পাচ্ছে, যেমন কুরুক্ষেত্রের যুদ্ধের সময় এক মহা সমস্যার সম্মুখীন হয়েছিলেন। অর্জুন ভগবানের কাছে আত্মসমর্পন করলেন এবং তার ফলে তখন ভগবান তাঁকে গীতার তত্ত্বজ্ঞান দান করে মোহমুক্ত করলেন।

ভগবদগীতার পাঁচটি মূল তত্ত্ব

ভগবদগীতার বিষয়বস্তুতে আমরা পাঁচটি মূল তত্ত্ব উপলব্ধি করতে পারি। সর্বপ্রথমে ভগবানের স্বরূপ বর্ণনা করা হয়েছে এবং তাঁর পরিপ্রেক্ষিতে জীবের স্বরূপ ব্যাখ্যা করা হয়েছে। ঈশ্বর আছেন এবং তিনই সব কিছুর নিয়ন্ত্রণ করছেন, আর জীব প্রতিনিয়তই তাঁর দ্বারা নিয়ন্ত্রিত হচ্ছে। জীব সর্বদাই, বিশেষ করে বদ্ধ অবস্থায় সর্বতোভাবে নিয়ন্ত্রিত। তাই ভগবদগীতায় পরম নিয়ন্তা ঈশ্বর ও সর্বদা নিয়ন্ত্রিত জীবের বিষয়বস্তু নিয়ে আলোচিত হয়েছে। তা ছাড়া প্রকৃতি, কাল ও কর্ম নিয়েও আলোচনা হয়েছে। তাই ভগবদগীতায় বলা হয়েছে- ঈশ্বর, জীব, প্রকৃতি ও কাল হচ্ছে নিত্য কিন্তু কর্ম হচ্ছে অনিত্য।

গীতা সম্পর্কে বিশ্বখ্যাতদের বক্তব্য

বিশ্বে বহু বিখ্যাত মানুষ ভগবদগীতার প্রতি তাদের আনুগত্য প্রকাশ করেছেন। জাতির জনক মহাত্মা গান্ধী বলেছেন-“যখন সন্দেহ আমাকে ঘিরে ধরে, হতাশা সম্মুখে উপস্থিত হয় আর আমি দূরান্তে কোন আশার আলোক দেখতে পাই না, তখন ভগবদগীতা আশ্রয় করে শান্তি পাওয়ার মতো কোন শ্লোক খুঁজে পাই। সঙ্গে-সঙ্গে আমি অত্যন্ত-দুঃখের মধ্যে হাসতে আরম্ভ করি। যাঁরা গীতার ওপর ধ্যান করবেন, তাঁরা প্রতিদিন পরম আনন্দ ও নব নব আওর্থ পাবেন।”

রালফ ওয়াল্ডো এমার্সন লিখেছেন-“আমি ভগবদগীতার কাছে একটি চমৎকার দিনের জন্য ঋণী। এই গ্রন্থটি এই প্রথম পেলাম; একটি সাম্রাজ্য যেন আমাদের কাছে ব্যক্ত করছে, কোন কিছুই ক্ষুদ্র বা মূল্যহীণ নয়। কিন্তু বৃহৎ, অচঞ্চল সঙ্গতিপূর্ণ এক প্রাচীন বুদ্ধির কণ্ঠস্বর, যা অন্য যুগে ও আবহাওয়ায় ভাবিত হয়েছিল এবং সেই প্রশ্নের বিন্যাসে ঘটিয়েছিল, যা আমাদের উপর ব্যবহৃত হয়।”

Published on: ডিসে ১৪, ২০২১ @ ২৩:৪৯


শেয়ার করুন