শ্যামাপ্রসাদ মুখোপাধ্যায় রক্ষা করেছেন পশ্চিমবাংলাকে, তিনিই হলেন স্রষ্টা- নবদ্বীপে বললেন ড. অনির্বান গাঙ্গুলি

দেশ রাজ্য
শেয়ার করুন

“শ্যামাপ্রসাদ মুখোপাধ্যায় পশ্চিমবাংলার স্রষ্টা এক অর্থে।পশ্চিম বাংলা সৃষ্টি করে গিয়েছিলেন বাঁচিয়ে গিয়েছিলেন বলেই আমরা বাঙালি মাথা উঁচু করে বসবাস করতে পারছি। এই আধ্যাত্মিক বিশাল ঐতিহ্য সংরক্ষিত থাকলো পশ্চিম বাংলা আছে বলে।”

সংবাদদাতা- অনিরুদ্ধ পাল

Published on: জুলা ৭, ২০১৯ @ ১৫:২৫

এসপিটি নিউজ, নবদ্বীপ, ৭জুলাই:  আজ যদি পশ্চিমবাংলা না হত, সম্পূর্ণ বাংলা যদি পাকিস্তানে চলে যেত খুব পরিষ্কারভাবে আমি বলছি এই ঐতিহ্য কোথায় যেত? চৈতন্য মহাপ্রভুর পুন্যভূমি তাহলে কি হত?আমরাই বা কোথায় থাকতাম? নবদ্বীপে দাঁড়িয়ে এই প্রশ্নগুলি তোলেন ড. শ্যামাপ্রসাদ মুখার্জি রিসার্চ ফাউন্ডেশনের ডিরেক্টর ড. অনির্বান গাঙ্গুলি। একই সঙ্গে তিনি বলেন- “শ্যামাপ্রসাদ মুখোপাধ্যায়ই হলেন পশ্চিমবঙ্গের স্রষ্টা। তিনিই পাকিস্তানের হাত থেকে পশ্চিমবঙ্গকে রক্ষা করেছেন বলেই আজ আমরা মাথা উঁচু করে বাস করতে পারছি।”

নবদ্বীপে শ্যামাপ্রসাদের জন্মদিন উদযাপন

গতকাল ৬ই জুলাই শনিবার নবদ্বীপে ড. শ্যামাপ্রসাদ মুখার্জি রিসার্চ ফাউন্ডেশন ও শ্যামাপ্রসাদ মুখার্জি স্মৃতি রক্ষা কমিটির যৌথ উদ্যোগে শ্যামাপ্রসাদের ১১৮তম জন্মবার্ষিকী উদযাপিত হয়। যেখানে উপস্থিত ছিলেন রাজ্যসভার সাংসদ ড. স্বপন দাশগুপ্ত, বিজেপির সর্বভারতীয় যুগ্ম সম্পাদক শিবকুমারজী, রানাঘাট লোকসভা কেন্দ্রের সাংসদ জগন্নাথ সরকার এবং ফাউন্ডেশনের ডিরেক্টর ড. অনির্বান গাঙ্গুলি। ছিলেন রাজ্যের সংখ্যালঘু মোর্চার সভাপতি অরুণ হালদার প্রমুখ।

কেন বাছা হল নবদ্বীপকে-ব্যাখ্যা দিলেন ড. অনির্বান গাঙ্গুলি

অনুষ্ঠানের শুরুতে উদ্বোধক বক্তা ড. অনির্বান গাঙ্গুলি শ্যামাপ্রসাদের জন্মদিন পালনের কেন্দ্র হিসেবে নবদ্বীপকে বেছে নেওয়ার কারণ ব্যাখ্যা করেন। তিনি বলেন-“আমাকে একটা প্রশ্ন করা হয়েছিল যে আমরা নবদ্বীপে কেন শ্যামাপ্রসাদ মুখোপাধ্যায়ের জন্মদিন পালন করছি? নবদ্বীপকে কেন বেছে নিয়েছি? আমার মনে হয়ে এর উত্তর দেওয়া উচিত। এটার মধ্যে একটি বিশেষ তাৎপর্যপূর্ণ কথা আছে। নবদ্বীপ শ্রীচৈতন্যের ভূমি এবং বাংলার ঐতিহ্য, বাংলার নবজাগরণের সূচনা এবং ভারতবর্ষে বাংলার যে অবদান ভারতবর্ষের আধ্যাত্মিক বিকাশে নবদ্বীপ হল তার প্রাণকেন্দ্র।আজকে আমরা কথা বলছি বাংলার পুনর্জাগরণের। সেইজন্য চৈতন্য মহাপ্রভুর এই পুন্যভূমিতেই যদি আমরা শ্যামাপ্রসাদ মুখোপাধ্যায়ের জীবন এবং তাঁর অবদানকে যোগ করে দি এবং তাঁর যে পশ্চিমবাংলার প্রতি আদর্শ ছিল- আমার মনে হয় ‘নবদ্বীপ কেন’ সেই প্রশ্নের উত্তর আমরা পাচ্ছি।”

শ্যামাপ্রসাদের জন্য পশ্চিমবঙ্গবাসী আজ এই সুবিধা পাচ্ছে

ড. অনির্বান গাঙ্গুলি রীতিমতো জোর গলায় বলেন- “শ্যামাপ্রসাদ মুখোপাধ্যায় পশ্চিমবাংলার স্রষ্টা এক অর্থে। এই পশ্চিমবাংলাকে তিনি এক অর্থে সৃষ্টি করে গিয়েছিলেন যাতে এই যে ঐতিহ্য এই যে ইতিহাসকে একটি ভূখণ্ডে সংরক্ষিত করা যেতে পারে।”

এরপরই তিনি প্রশ্ন তোলেন- ” আজ যদি পশ্চিমবাংলা না হত, সম্পূর্ণ বাংলা যদি পাকিস্তানে চলে যেত খুব পরিষ্কারভাবে আমি বলছি এই ঐতিহ্য তখন কোথায় যেত? চৈতন্য মহাপ্রভুর পুন্যভূমি তাহলে কি হত?আমরাই বা কোথায় থাকতাম? সেইজন্য শ্যামাপ্রসাদ মুখোপাধ্যায়ের জন্মদিনে আমাদের এই দু’তিনিটে কথা মনে রাখা উচিত। উনি পশ্চিম বাংলার স্রষ্টা। পশ্চিম বাংলা সৃষ্টি করে গিয়েছিলেন বাঁচিয়ে গিয়েছিলেন বলেই আমরা বাঙালি মাথা উঁচু করে বসবাস করতে পারছি। এই আধ্যাত্মিক বিশাল ঐতিহ্য সংরক্ষিত থাকলো পশ্চিম বাংলা আছে বলে। এবং আজ পশ্চিম বাংলা আছে বলেই আমরা নতুন করে পশ্চিম বাংলায় নবজাগরণ এবং পশ্চিম বাংলার ভবিষ্যৎ এবং ভারতে পশ্চিম বাংলার কি অবদান হতে পারে সেই নিয়েও আমরা চিন্তা-ভাবনা করতে পারছি।”

চৈতন্যের আদর্শ এবং শ্যামাপ্রসাদের অবদানকে মেলালেন

“আজ শ্যামাপ্রসাদের জন্মদিন। ওনার অবদানের কথা মনে রেখে আমাদের একথাও মানতে হবে আগামিদিনে পশ্চিম বাংলার ভবিষ্যৎ কি? আমরা কিরকম পশ্চিম বাংলা গড়ে তুলতে চাই? চৈতন্য মহাপ্রভুর আদর্শ এবং শ্যামাপ্রসাদ মুখোপাধ্যায়ের অবদান একে বাদ দিয়ে কিন্তু সোনার বাংলার স্বপ্ন বাস্তবায়িত হতে পারে না। বাংলার ঐতিহ্যকে বাদ দিয়ে কোনও নবজাগরণের সূচনা হতে পারে না। অনেক মর্মর মূর্তিতে মালা দেওয়া হয়। নতুন করে সেই মর্মর মূর্তিও স্থাপন করা হচ্ছে। আজকাল আবার ছবিতেও মাল্যদান করা হয়।” বলেন অনির্বান।

বাংলার আধ্যাত্মিক পটভূমিকে স্মরণ

বাংলার তথা ভারতের গভীর আধ্যাত্মিক পটভূমিকে স্মরণ করে অনির্বান গাঙ্গুলি বলেন-“আমরা যেন বাংলায় দাঁড়িয়ে কৃত্তিবাসকে ভুলে না যাই। রামায়নকে ভুলে না যাই। যারা ৪০ বছর বিদেশে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে থেকে অর্থনীতির বুকনি দিয়ে গেছে বা থিওরি দিয়ে গেছে তারা আমাদেরকে কৃত্তিবাস রামায়নের কথা ভুলিয়ে দেবে বা জয় শ্রীরাম নাম বলা যাবে না- এটা কিন্তু আমাদের মেনে নেওয়ার কোনও কারণ নেই। যারা ৪০ বছর আগে এই দেশ ছেড়ে চলে গেছে তাদের আজ দেশের প্রতি কি দায়বদ্ধতা আছে প্রশ্নটা আমাদের এখন করা উচিত। আমাদের শ্যামাপ্রসাদের পথে এবং বাংলার নবজাগরণ এই আদর্শ সামনে রেখে এবং বাংলার যে গভীর আধ্যাত্মিক ঐতিহ্য একে আমাদের সামনে রেখে কিন্তু এগিয়ে যেতে হবে।”

Published on: জুলা ৭, ২০১৯ @ ১৫:২৫


শেয়ার করুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

2 + 6 =