রাজস্থানে বাঙালির সেরা পছন্দের জায়গা জয়শলমীর, তারা তিন প্রজন্মের পর্যটক তৈরি করে দেয়- হিংলাজ দন রত্নু

Main দেশ ভ্রমণ রাজ্য
শেয়ার করুন

Published on: সেপ্টে ২০, ২০২২ @ ১২:৪৪
Reporter:Aniruddha Pal

এসপিটি নিউজ, কলকাতা, ২০ সেপ্টেম্বর: বাঙালিরা স্বভাবতই একটু বেশি ভ্রমণপ্রেমী। ঘুরতে তাদের খুবই ভাল লাগে। বছরে তারা একাধিকবার বেড়াতে যান। দেশের মধ্যে তারা সব চেয়ে বেশি যান রাজস্থান। বাঙালির খুবই ভ্রমণের রাজ্য। সম্প্রতি সংবাদ প্রভাকর টাইমস-কে এক বিশেষ সাক্ষাৎকারে বাঙালির রাজস্থান ভ্রমণ নিয়ে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ কথা বলেছেন কলকাতায় রাজস্থান তথ ও জনসংযোগ বিভাগের সহকারি পরিচালক তথা রাজস্থান পর্যটন বিকাশ নিগমের কলকাতার ভারপ্রাপ্ত আধিকারিক হিংলাজ দন রত্নু। তিনি পরিষ্কার করে বলে দেন যে পর্যটন নিয়ে বাঙালি খুবই সচেতন। তারা তিন প্রজন্মের পর্যটক তৈরি করে দেয়। রাজস্থানে সারা দেশ থেকে যত পর্যটক ভ্রমণ করে তার মধ্যে সব চেয়ে বেশি হল বাঙালিরাই। রাজস্থানে তাদের সবচেয়ে প্রিয় পছন্দের জায়গা হল জয়শলমীর।

দেশের অভ্যন্তরে সবচেয়ে বেশি ভ্রমণকারী হল বাঙালিরাই

হিংলাজ দন রত্নু বাঙালিদের ভ্রমণ মানসিকতা নিয়ে অনেক কথা বলেছেন। ভ্রমণ নিয়ে তাদের সচেতনতার খুব প্রশংসা করেছেন। তিনি বলেছেন- “রাজস্থান আর পশ্চিমবঙ্গের মধ্যে তো খুবই পুরনো সম্পর্ক।দীর্ঘদিন ধরে তারা রাজস্থান ভ্রমণ করে থাকেন। বাঙালি পর্যটকদের নিয়ে আমি একটা কথা সবসময়ই বলে থাকি যে দেশের অভ্যন্তরে সবচেয়ে বেশি ভ্রমণকারী হল বাঙালিরাই।তারা পর্যটকদের সব কিছু পূরণ করে। কেন জানেন? রাজস্থানের খুবই কাছে গুজরাট। গুজরাট থেকে বহু পর্যটক রাজস্থান ঘুরতে আসে। কিন্তু তারা স্রেফ আনন্দ আর ফূর্তি করে চলে যায়। কিন্তু বাংলা অনেক দূরে। জয়শলমীর থেকে বাংলার দূরত্ব অনেক। কিন্তু বাংলা থেকে যখন কোনও পর্যটক ঘুরতে যায় রাজস্থান তখন তারা তা মন দিয়ে দেখে। বাঙালি পর্যটকদের সম্পর্কে আমি আরও একটা গুরুত্বপূর্ণ তথ্য দিয়ে রাখি- তারা সমস্ত কিছুর ছবি তোলে। যেখানে যত মনুমেন্ট আছে তার ছবি তোলে। একই সঙ্গে প্রতিটি মনুমেন্টের সম্পর্কে তারা তথ্য সংগ্রহ করে তা ডায়েরিতে লিখে রাখে। যা তারা তৃতীয় প্রজন্মের কাছে স্থানান্তর করে দেয়। বাঙালিরা তিন প্রজন্মের পর্যটকদের তৈরি করে দেয়। এই প্রবণতা চলতেই থাকবে।এর ফলে প্ররযটনের প্রসার ঘটবে।”

আমি খুব সম্মানের সঙ্গে বাঙালি পর্যটকদের অ্যাটেন্ড করি-রত্নু

বাঙালি পর্যটকরা অত্যন্ত সচেতন। তারা জানে সঠিকভাবে ভ্রমণ করতে হলে কি কি করতে হয়। এই প্রসঙ্গ টেনে রাজস্থানের পর্যটন আধিকারিক হিংলাজ দন রত্নু বলেন- “বাঙালি পর্যটকরা ইতিহাস, সাহিত্য, জিওগ্রাফি, আর্ট, কালচার নিয়ে চর্চা করে। তাদের আমি খুব সম্মানের সঙ্গে অ্যাটেন্ড করি। আমরা পর্যটনের সঙ্গে নিয়মিত যোগাযোগ রেখে চলি।এমন অনেক ট্রাভেল এজেন্ট আছে যারা আমাদের সমর্থন করে। আবার কিছু এজেন্ট আছে যাদের সঙ্গে রাজস্থান পর্যটন বিকাশ নিগমের সঙ্গে কোনও সম্পর্ক নেই। তারা অভিযোগ করে যে এখানে আমরা কোনও ব্যবসা পাই না। আমি তাদের বলতে চাই যে আপনারা বিজনেস নিয়ে আসুন, এখান থেকে লাভ তুলে নিন। তারা চায় যে আরটিডিসি-র বুকিং তাদের দিকে দেওয়া হোক। আমরা সেটা কোনওভাবেই করতে পারি না। আমি বলতে চাই যে এখান থেকে বেশিরভাগ যে সমস্ত পর্যটক যায় তারা সকলেই রাজস্থান পর্যটক বিকাশ নিগমের হোটেলেই ওঠে। আমাদের রিসর্টে ওঠে। আমাদের পরিবহনের সুযোগ নিক। এবং অবশ্যই আমাদের সঙ্গেই থাকুন।”

‘রাজস্থান সর্বশ্রেষ্ঠ

এখান থেকে যত পর্যটক রাজস্থান ঘুরতে যায় তাদের সঙ্গে প্রথম দিন থেকে ফেরার দিন পর্যন্ত ফোনে যোগাযোগ রেখে চলেন হিংলাজ দন রত্নু।

সেই প্রসঙ্গ উঠতেই তিনি বলেন- “আমার সঙ্গে পর্যটকদের এত গভীর সম্পর্ক গড়ে ওঠে যে তারা বিশ্বাস করে যে আমি তাদের সঙ্গেই আছি। তারা যখন রওনা হয় কলকাতা থেকে সেই দিন থেকে আমি তাদের সঙ্গে ফোনে সম্পর্ক রেখে চলি। তারা জয়শলমীরে বেড়াতে যায় তাদের বর্ডার দেখানোর প্রয়াস করি। কারণ, সেখানে বিএসএফ-এর যে অফিসার আছে তিনি আমার বন্ধু। তার সৌজন্যে বাঙালি পর্যটকদের বর্ডার দেখাই। এবার সেই পর্যটক যখন এখানে ফিরে আসে তিনি তখন অন্যদের বলে যে আমরা জয়শলমীরে গিয়ে বর্ডার দেখে এসেছি। এতে আমাদের সম্পর্ক আরও মজবুত হয়। এজন্য সব কৃতিত্ব আমাদের যশস্বী মুখ্যমন্ত্রী অশোক গেহলট, পর্যটন মন্ত্রী বিশভেন্দর সিং, রাজস্থান পর্যটন বিকাশ নিগমের চেয়ারম্যান ধর্মেন্দ্র সিং রাঠোর , রাজস্থান পর্যটন বিকাশ নগমের ম্যানেজিং ডাইরেক্টর ভি পি সিং, একজিকিউটিভ ডাইরেক্টর অশোক যোগী, একজিকিউটিভ ডাইরেক্টর (ফিনান্স) হুলাস রে পানোয়ার সকলে এমনকি আমাদের হোটেলের জেনারেল ম্যানেজারদের যোগদান অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। দিন রাত এক করে সকলেই পর্যটনের প্রসারে লেগে আছে। আমার আশা, আবারও খুব শীঘ্রই পুরনো জায়গায় ফিরে যাব। রাজস্থান সর্বশ্রেষ্ঠ।”

রাজস্থানে বাঙালির পছন্দের জায়গাগুলি

বাংলা থেকে সারা বছরই রাজস্থান ভ্রমণ করেন বহু বাঙালি। তারা অনেক জায়গায় ভ্রমণ করেন। কিন্তু রাজস্থানে তারা সবচেয়ে বেশি কোন জায়গাকে বেশি পছন্দ করেন? এই প্রশ্ন রাখা হয়েছিল। জবাবে হিংলাজ দন রত্নু বলেন- “বাংলা থেকে রাজস্থানে ঘুরতে যাওয়া পর্যটকদের সবেচেয়ে বেশি পছন্দের জায়গা হল জয়শলমীর।সোনার কেল্লা। প্রবাদপ্রতিম চলচ্চিত্র পরিচালক সত্যজিৎ রায় এমন একটা ফিল্ম বানিয়েছেন যেখানে মানুষের মধ্যে রাজস্থান সম্পর্কে খুব গভীর দাগ কেটেছে। এরপর পছন্দের জায়গা হল যোধপুর, উদয়পুর, মাউন্ট আবু, সোভাই মাধোপুর, বিকানীর, জয়পুর, রণথম্বোর, ভরতপুর। এই জায়গাগুলি বরাবর তারা ভ্রমণ করে থাকে।বাঙালিদের ভ্রমণের স্বাদ একটু আলাদা। তারা সবসময় ভিন্ন কিছু পছন্দ করে। রণথম্বোরে টাইগার সাফারিতে যায়। ভরতপুরে বার্ড সেঞ্চুরি, জয়শলমীরে ক্যামেল সাফারি করতে পারেন, মরুভূমিতে রাজস্থানী লোকনৃত্য দেখতে পারেন।”

Published on: সেপ্টে ২০, ২০২২ @ ১২:৪৪


শেয়ার করুন