ভারতে এক বছরে বিদেশি পর্যটক আগমন চার গুন বৃদ্ধি পেয়েছে, ২০২১ সালের তুলনায় ২০২২-এ সংখ্যাটা কত জানেন

Main দেশ বিদেশ ভ্রমণ
শেয়ার করুন

Published on: এপ্রি ৭, ২০২৩ @ ২০:৫৩

এসপিটি নিউজ ব্যুরো: কোভিড মহামারীর পর সারা বিশ্বজুড়েই ভ্রমণের হিসাব-নিকেশ চলছে। কতটা বেড়েছে বিদেশি পর্যটকের আগমন, সংখ্যাটা প্রাক-মহামারীর চেয়ে কতটা ভাল, তা নিয়ে শুরু হয়েছে হিসেব-নিকেশ। সেই মতো ভারত এই ক্ষেত্রে পিছিয়ে নেই। ভারত প্রাক-মহামারী কালে ২০১৯ সালে বিদেশি পর্যটক আগমন হয়েছিল ১০.৯৩ মিলিয়ন। কোভিড মহামারীর পর পর্যটন শিল্পে পুনরুজ্জীবনের ভাল লক্ষণ লক্ষ্য করা গেছে। প্রেস ইনফরমেশন ব্যুরো এই বিষয়ে ইমিগ্রেশন ব্যুরো থেকে পাওয়া এক তথ্য তুলে ধরে জানিয়েছে, ভারত ২০২২ সালে ৬.১৯ মিলিয়ন বিদেশি পর্যটক আগমন পেয়েছে যা ২০২১ সালে একই সময় সংখ্যাটা ছিল ১.৫২ মিলিয়ন।

পর্যটনমন্ত্রক ইতিমধ্যে বিদেশি পর্যটকদের সুবিধার জন্য কিছু উদ্যোগ নিয়েছে। যার মধ্যে উল্লেখযোগ্য হল- একটি টোল ফ্রি নম্বরের মাধ্যমে ১২টি ভাষা যার মধ্যে ১০টি আন্তর্জাতিক ভাষায় সহায়তা প্রদান করেছে। টোল ফ্রি নম্বরটি হল- ১৮০০১১১৩৬৩ বা একটি সংক্ষিপ্ত কোড ১৩৬৩। এখানে ফোন করলে দেশি ও বিদেশি পর্যটকরা ভারতে ভ্রমণ সংক্রান্ত তথ্যের পরিপ্রেক্ষিতে সহায়তা পাবে এবং ভারত ভ্রমণের সময় দুর্দশাগ্রস্ত পর্যটকদের উপযুক্ত নির্দেশনা দেওয়া হবে।

ইতিমধ্যে পর্যটককে আরও উন্নত করে তুলতে একাধিক ব্যবস্থা নিয়েছে। এর মধ্যে রয়েছে স্বদেশ দর্শন, প্রসাদ এবং একাধিক সহায়তা প্রকল্প। এইসব প্রকল্পের অধীনে একটি সমৃদ্ধ পর্যটন পরদানের জন্য দেশে পর্যটন সম্পর্কিত অবকাঠামো এবং সুনিধাগুলির বিকাশের জন্য রাজ্য সরকার বা কেন্দ্রীয় অঞ্চলগুলি কিংবা কেন্দ্রীয় সংস্থাগুলিকে কেন্দ্রীয় আর্থিক সহায়তা প্রদান করে।

২০২১ ও ২০২২ সালে ভারত পর্যটনের মাধ্যমে বৈদেশিক মুদ্রা আয় করেছে। সেখানেও আয়ের পরিমাণ বেড়েছে। ২০২১ সালে আয়ের পরিমাণ ৬৫,০৭০ কোটি টাকা। ২০২২ সালে তা দাঁড়িয়েছে ১,৩৪,৫৪৩ কোটি টাকা, যদিও এটি অস্থায়ী অনুমান।

আগামিদিনে ভারতে বিদেশি পর্যটকের সংখ্যা বাড়ানোর লক্ষ্যে সরকার আরও কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ গ্রহণ করেছে। গতকাল রাজ্যসভায় উত্তর-পূর্বাঞ্চলের সংস্কৃতি, পর্যটন ও উন্নয়ন মন্ত্রী জি কিষাণ রেড্ডি এই বিষয়ে সবিস্তারে উত্তর দিয়েছেন। তিনি বলেছেন যে পর্যটন মন্ত্রণালয় দেশের পর্যটন খাতকে উতসাহিত করতে এবং বিদেশি পর্যটকদের আগমন বাড়ানোর জন্য বেশ কয়েকটি উদ্যোগ নিয়েছে। সেই বিশয়ে তিনি বিস্তারিত বলেন।

  • দেশের সমৃদ্ধ ঐতিহ্য ও সংস্কৃতি সম্পর্কে নাগরিকদের মধ্যে সচেতনতা সৃষ্টি এবং দেশের অভ্যন্তরে ভ্রমণে নাগরিকদের উৎসাহিত করার লক্ষ্যে দেখো আপনা দেশ উদ্যোগ চালু করা হয়েছে।
  • ‘পরিষেবা প্রদানকারীদের জন্য সক্ষমতা বৃদ্ধি’ (সিবিএসপি) স্কিমের অধীনে কর্মসূচী পরিচালনা করা এবং উন্নত পরিষেবার মান প্রদানের জন্য জনশক্তিকে প্রশিক্ষিত করা এবং আপগ্রেড করা।
  • ইনক্রেডিবল ইন্ডিয়া ট্যুরিস্ট ফ্যাসিলিটেটর সার্টিফিকেশন প্রোগ্রাম চালু করেছে, একটি ডিজিটাল উদ্যোগ যার লক্ষ্য হল একটি অনলাইন শিক্ষার প্ল্যাটফর্ম তৈরি করা যার উদ্দেশ্য পর্যটকদের সমর্থন করার জন্য সারাদেশে প্রশিক্ষিত পেশাদার ট্যুরিস্ট ফ্যাসিলিটেটরদের একটি পুল তৈরি করা।
  • ২৪X৭ টোল ফ্রি মাল্টি-লিঙ্গুয়াল ট্যুরিস্ট হেল্পলাইন।
  • ১৬৬টি দেশের নাগরিকদের ৫টি উপ-শ্রেণির জন্য ই-ভিসার সুবিধা প্রদান করা হচ্ছে যেমন ই-ট্যুরিস্ট ভিসা, ই-বিজনেস ভিসা, ই-মেডিকেল ভিসা, ই-মেডিকেল অ্যাটেনডেন্ট ভিসা এবং ই-কনফারেন্স ভিসা।
  • ই-ভিসা আরও উদারীকরণ করা হয়েছে এবং ভিসা ফি উল্লেখযোগ্যভাবে হ্রাস করা হয়েছে।
  • দেশে অ্যাডভেঞ্চার ট্যুরিজমকে উত্সাহিত করতে পর্বতারোহণ বা ট্রেকিংয়ের জন্য নতুন পর্বতশৃঙ্গ খোলা হয়েছে।
  • রাত প্রতি ১,০০১ থেকে৭,৫০০ টাকা শুল্ক সহ হোটেল কক্ষে জিএসটি কমিয়ে ১২%; ৭,৫০১ থেকে ১৮% এর উপরে যারা পর্যটন গন্তব্য হিসাবে ভারতের প্রতিযোগিতা বাড়াতে আগ্রহী।
  • পর্যটন মন্ত্রকের সুপারিশে, আরসিইএস ইউডিএআন প্রকল্পের অধীনে বেসামরিক বিমান চলাচল মন্ত্রক কর্তৃক চিহ্নিত বিমান সংস্থাগুলিকে ৫৯টি পর্যটন রুট প্রদান করা হয়েছে, যার জন্য পর্যটন মন্ত্রক ভিজিএফ (ভায়াবিলিটি গ্যাপ ফান্ডিং) আকারে আর্থিক সহায়তা প্রসারিত করেছে। এর মধ্যে ৫১টি রুট এখন পর্যন্ত চালু করা হয়েছে।
  • দর্শনার্থীদের আগমন বাড়ানোর জন্য, পর্যটন মন্ত্রক, ভারত সরকার ঘোষণা করেছে “অ্যামেজিং ইন্ডিয়া! ভিজিট ইন্ডিয়া ইয়ার ২০২৩”।
  • সারা দেশে ৫৫টি গন্তব্যে জি২০ সভা অনুষ্ঠিত হচ্ছে। জি২০0 বৈঠকের জন্য এই শহরগুলির অবকাঠামো বর্ধিত এবং আপগ্রেড করা হচ্ছে।

Published on: এপ্রি ৭, ২০২৩ @ ২০:৫৩


শেয়ার করুন