বিজেপিকে হুঁশিয়ারি মমতার-বাংলা কারও চোখ রাঙানি সহ্য করবে না

দেশ রাজ্য
শেয়ার করুন

দিল্লির সরকার বড় বড় কথা বলে।এসব বিজেপি নেতা-যাদের কাজ নেই, কম্ম নেই। নেই কাজ তো খই ভাজ।বড় বড় ভাষণ দিচ্ছে।

কেউ কেউ হিংসা করে বিশ্ববাংলাকে সমালোচনা করে।আমি বলি মহামূর্খের দল।

বাংলা নিয়ে গর্ববোধ করব না, যে মাটিতে আমি জন্মাব, যে মায়ের পেটে আমি জন্মালাম সেই মাকে নিয়ে আমি গর্ববোধ করব না!

সে মা-কে আমি প্রণাম জানাব না! সে মা-কে আমি সেলাম জানাব না!

মা-মাটি-মানুষ– মা মানে জন্মভূমি, মাটি আমাদের পিতৃভূমি, মাটি আমাদের মাতৃভূমি, এই বাংলা আমাদের ধর্মভূমি, এই বাংলা আমাদের

সকলের ভূমি।  –মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়

এসপিটি নিউজ, ইন্দপুর, বাঁকুড়াঃ তিনি বাংলার ভরসা। তিনি বাংলার মা। তিনি বাংলার কোটি কোটি মানুষের কাছে আশার আলো। সারা দেশে তো বটেই এখন সারা বিশ্বেও তিনি এক আলোচিত নাম। তিনি বাংলার মা-মাটি-মানুষের সরকার তৃণমূল কংগ্রেসের সরকারের প্রধান মুখ্যুমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। সাম্প্রতিকালে সারা দেশে এমন কোনও মুখ্যমন্ত্রী আছেন কিনা জানা নেই যিনি পরপর টানা তিনদিন তিনটি জেলায় সফর করে শুধু সভাই নয়, প্রশাসনিক বৈঠকও করেছেন।হ্যাঁ, এটাও একটা রেকর্ড। যিনি কেন্দ্রের শত উপেক্ষা সত্ত্বেও যেভাবে বাংলার উন্নয়নের বিজয়রথ ছূটিয়ে চলেছেন সেক্ষেত্রে কেউ যদি তাতে চোনা ফেলার চেষ্টা করে তবে তিনি তা বরদাস্ত করবেন না, এটাই স্বাভাবিক। তাই তো আজ বুধবার বাঁকুড়ার ইন্দপুরের সভামঞ্চ থেকে তিনি বিজেপিকে হুঁশিয়ারি দিয়ে জানিয়ে দেন-বাংলা কারও চোখ রাঙানি সহ্য করবে না। বাংলা তার সাধ্য মতো তার পরিবারকে রক্ষা করে যাবে।

মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, আজকে আমি যখন জঙ্গলমহলে যখন আসি গর্বে বুক ভরে যায়। আমাদের এখানকার ছেলে-মেয়েরা খেলাধুলো থেকে পড়াশুনো করে। আগে এমন দিন ছিল-আমি বাঁকুড়ায় আসলে দেখতাম মানুষের চোখে জল।পুরুলিয়ায় গেলে সেখানকার মানুষের চোখে জল দেখতাম। মেদিনীপুরের ঝাড়্গ্রামে গেলে দেখতাম সেখানে মানুষ ভয়ে ঘর থেকে বেরোত না। আমি এমনও দেখেছি মাওবাদী আতঙ্কে এলাকায় ত্রাসের পরিবেশ তৈরি হয়েছিল। আজ গর্ব করে বলতে পারি এখন কোনও মাওবাদী আতঙ্ক নেই। আজ সমস্ত মানুষ মুক্ত হয়ে গেছে। সাধারণ ভাই-বোনেরা ভাল আছে। এটা কি কম বড় কথা?একটা কেউ রাস্তা দিয়ে হাঁটতে পারত না।তাকে মাওবাদী তকমা দিয়ে ধরিয়ে দেওয়া হত। আমার জঙ্গলমহল ভাল থাকুক। এখানকার ছেলে-মেয়েরা মাথা উঁচু করে দাঁড়াক।জঙ্গলমহল আজকে কত খুশি, কত গর্বিত।আজ আদিবাসী ভাই-বোনদের ট্রেনিং দিচ্ছি।

এক নিঃশ্বাসে মুখ্যমন্ত্রী বলতে থাকেন-তারা ফুটবল খেলতে পারে, তারা ধামসা বাজাতে পারে- কেউ হিংসা করে বলে শুধু ধামসা-মাদল দেওয়া হচ্ছে। সত্যিই কি তাই?ধামসামাদল তো দেওয়া হচ্ছে, আগে তো তা দেওয়া হত না। একটা মানুষের পেটের ভাত পেলে আর কিছু লাগে না। আমি জঙ্গলমহলের আদিবাসী ভাই-বোনদের ২ টাকা কিলো চাল দিয়েছি। শুধু তাই নয়, আজকে বাংলায় ১০ কোটি লোকের মধ্যে ৮ কোটি লোক মাত্র ২ টাকা কিলো চাল-ডাল-গম পায়। বন্যা হলে যাদের জমি নষ্ট হয়ে যায় তাদের প্রত্যেককে টাকা দেওয়া হয়। আগে কাউকে দেওয়া হত না।দিল্লির সরকার বড় বড় কথা বলে।এসব বিজেপি নেতা-যাদের কাজ নেই, কম্ম নেই। নেই কাজ তো খই ভাজ।বড় বড় ভাষণ দিচ্ছে। বলে দিল্লিতে পড়ে আছ, গুজরাটে কোনো শ্রমিক আদিবাসী ফাংশান দেখতে যায় তাকে পিটিয়ে হত্যা কর।বাংলা তাকে আদর করে। বাংলা তাকে ভালবাসে।

মমতা আরো বলেন-৩ লক্ষ বাড়ি তৈরি করে দিয়েছি। আমার কন্যাশ্রী ৪২ লক্ষ জন পায়। আগে স্কুল-কলেজের মেয়েরা পেত, এখন বিশ্ববিদ্যালয়েও করে দিয়েছি।তারাও মনে রাখবেন আর্টস পড়লে ২ হাজার আকা, সায়েন্স পড়লে আড়াই হাজার টাকা দেওয়া হবে।মিড-ডে-মিল-কেন্দ্রীয় সরকার বলছে তারা দিতে পারবে না। আমি বলেছি-আমার যা টুকু সাধ্য তার মধ্যেই করব। বিজেপিকে উদ্দেশ্য করে মমতা বলেন-কিন্তু তোমাদের চোখ রাঙানি সহ্য করব না।বাংলা কারো চোখ রাঙানি সহ্য করবে না। বাংলাকে ভাতে মেরে কোনও লাভ নেই। বাংলার ঘরে ঘরে ভাত তৈরি হয়। আমরা ধান তৈরি করি। বাংলা ধান ফলায়। এটা মাথায় রাখতে হবে। আগে বাজনার চেয়ে খাজনার দাম বেশি ছিল। আমরা কৃষি জমি থেকে সব খাজনা মুকুব করে দিয়েছি।সিভিক ভলেন্টিয়াররা সাড়ে তিন হাজার টাকা পেত এখন সাড়ে হাঁচ হাজার টাকা পায়। সংখ্যালঘু ভাই-বোনদের ১ কোটি ৭১ লক্ষ জনকে স্কলারশিপ দিচ্ছি। সারা ভারতে যা প্রথম। আমার বাংলায় ৬.৫ শতাংশ ভাই-বোনরা বাস করে, তাদের বাদ দিয়ে আমি কি করে চলব? তাদের নিয়েই আমাদের চলতে হবে। আমরা মানুষ এটা আমাদের পরিচয়।মা কি কখনো একটা ছেলে-মেয়েকে খেতে দেয়? অন্য ছেলে-মেয়েকে খেতে দেবে না, এটা কি কখনো হয়?ফর্সা-কালো সব ছেলে-মেয়েকেই মা খেতে দেয়।সাদা-কালো বলে কাঊকে ভাগ করা যায় না রে!তাই মনে রাখবেন, যারা ভাগাভাগি করে তারা দেশকে ভালবাসে না। তারা রাজ্যকে ভালবাসে না। যারা ভাগাভাগি করে না তারাই আসল মানুষ। একদিন জঙ্গলমহলের ভাই-বোনরা বিশ্ববাংলা জয় করবে, বলেন মমতা।

তিনি বলেন, কেউ কেউ হিংসা করে বিশ্ববাংলাকে সমালোচনা করে।আমি বলি মহামূর্খের দল। বাংলা নিয়ে গর্ববোধ করব না, যে মাটিতে আমি জন্মাব, যে মায়ের পেটে আমি জন্মালাম সেই মাকে নিয়ে আমি গর্ববোধ করব না!সে মা-কে আমি প্রণাম জানাব না! সে মা-কে আমি সেলাম জানাব না!মা-মাটি-মানুষ, মা মানে জন্মভূমি, মাটি আমাদের পিতৃভূমি, মাটি আমাদের মাতৃভূমি, এই বাংলা আমাদের ধর্মভূমি, এই বাংলা আমাদের সকলের ভূমি।তাই ধন-ধান্যে পুষ্পে ভরা, আমাদের এই বসুন্ধরা…।উল্টোপাল্টা কাউকে দেখলেই পুলিশে খবর দেবেন। পুলিশ কিছু না করলে ১০০ নম্বরে ডায়াল করবেন।তেমন হলে আমাকে জানাবেন। আমার বাড়িতে একটা কমপ্লেন বক্স আছে।তাছাড়া রাস্তা দিয়ে গেলে আমাকে জানাবেন। আমি একবার নয় বারে বারে জেলায় আসি। আগের ৩৪ বছরের মতো নয়, যারা জেলাকে ঠিক মত চিনতই না।


শেয়ার করুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

+ 40 = 47