ফিফা বিশ্বকাপ ২০১৮- ‘ব্লু স্যামুরাই’ কাওয়াসিমার দিকেই তাকিয়ে গোটা জাপান

খেলা বিদেশ
শেয়ার করুন

Published on: জুন ১, ২০১৮ @ ০৯:৪৬

এসপিটি স্পোর্টস ডেস্কঃ এবারের রাশিয়ায় অনুষ্ঠিত বিশ্বকাপে প্রবীন গোলকিপার হিসেবে মাঠে নামতে চলছেন জাপানের ইজি কাওয়াসিমা। ৩৫ বছর বয়সী কাওয়াসিমা এই নিয়ে তিনবার বিশ্বকাপ খেলার রেকর্ড গড়তে চলেছেন। জাপান দলও তাঁর উপর অনেক খানি নির্ভরশীল।তিনি ২০১৮ সালের রাশিয়া বিশ্বকাপকে চূড়ান্ত লক্ষ্য হিসেবে দেখছেন।দক্ষিণ আফ্রিকায় ২০১০ সালের বিশ্বকাপে রাউন্ড সিক্সটিন থেকে যেভাবে তারা ছিটকে গেছিল এবার যাতে সেটা না হয় সেভাবে দলকে এগিয়ে নিয়ে যাওয়াই তাঁর উদ্দেশ্য।

আট বছর আগে কাওয়াসিমা জাপান দলে নির্বাচিত হন।এক্ষেত্রে সিগো নাজারাকির অবদান আছে। বিশ্বকাপে যাওয়ার আগে সেসময় তাঁর পারফরম্যান্স সকলের নজর কেড়েছিল।একজন গোলকিপার হিসেবে অসাধারণ কিছু সেভ করে চমক দেখিয়েছিলেন। এরপর গ্রুপ ম্যাচে নেদারল্যান্ড, ডে্নমার্ক ও ক্যামেরুনের বিরুদ্ধে অসাধরণ গোলকিপিং করে “স্যামুরাই ব্লু” হিসেবে পরিচিতি লাভ করেন।

জাপানের প্রথম সাফল্য আসে বিদেশের মাটিতে নকআউট পর্যায়ের খেলায়। ২০১০ সালের বিশ্বকাপের দ্বিতীয় রাউন্ডের খেলায় প্যারাগুয়ের বিপক্ষে পরাজয় আজও বিব্রত করে তোলে কাওয়াসিমাকে। দক্ষিন আমেরিকার ওই দলের বিরুদ্ধে সেই ম্যাচে ১২০ মিনিট গোল শূন্য রেখে দিয়েছিলেন। টেনে নিয়ে গেছিলেন টাইব্রেকারে। কিন্তু শেষ রক্ষা হয়নি। পেনাল্টি শুটআউটে ৫-৩ গোলে পরাজিত হয়ে মাঠ ছাড়তে হয়েছিল সেবার।

“আমরা ২০১০ সালের ফলাফলে খুব ভেঙে পড়েছিলাম,” ৩৫ বছর বয়সী জাপানিজ গোলকিপার একটি বিশেষ সাক্ষাৎকারে ফিফা ডটকমকে বলেন। “আমরা শেষ আটে পৌঁছানোর খুব কাছে পৌঁছে গেছিলাম। কিন্তু শেষ পর্যন্ত আমরা সুযোগ মিস করলাম। যখন পিছন ফিরে দেখি,  আমি মনে হয়- সেসময়ের কিছু সিদ্ধান্ত খেলার পার্থক্য এবং ফলাফল নির্ধারণ করে দিয়েছিল।”

২০১০ সালের বিশ্বকাপে জাপানের দলটি ধারে ও ভারে অনেক শক্তিশালী ছিল। দলে সেসময় অনেক স্টার খেলোয়াড় ছিল, যার মধ্যে কাওয়াসিমাও অন্যতম। কিন্তু ২০১৪ সালের দলটি এতই দুর্বল ছিল যে তারা গ্রুপ পর্যায়ের খেলাতেই মুখ থুবড়ে পড়েছিল। চার বছর পর আবার তাদের সামনে সুযোগ এসেছে। কাওয়াসিমার এটি তৃতীয় বিশ্বকাপ হতে চলেছে। তিনি মনে করেন, এবার আর তাদের সুযোগ হাতছাড়া হবে না।

“বর্তমান দলে আগের তুলনায় আরও বেশি অভিজ্ঞ খেলোয়াড় আছে,” তিনি বলেন, “আমাদের মধ্যে অনেকেই তৃতীয় বিশ্বকাপে খেলবে।” কাজেই একদিকে যেমন অভিজ্ঞরা আছেন ঠিক তেমনই আবার যুবা খেলোয়াড়রাও আছেন। তরুণ খেলোয়াড়রা সকলেই দ্রুত উন্নতির জন্য প্রস্তুত হয়ে আছে। তাদের মধ্যে বিশ্বাস আছে। তারা জানে একটা বিশ্বকাপ হাতছাড়া হলে তার জ্বালা কতদিন ধরে সইতে হয়। তাই অভিজ্ঞ এবং প্রতিভাধর যুব খেলোয়াড়দের মিশ্রণে আমি নিশ্চিত যে এবার আমরা রাশিয়াতে ইতিহাস তৈরি করতে সক্ষম হব।”

চার বছর আগে ব্রাজিল বিশ্বকাপে কলম্বিয়ার বিরুদ্ধে ৪-১ গোলে পরাজিত হয়েছিল জাপান। সেই জ্বালা এখনও রয়ে গেছে। আবার চার বছর বাদে সেই কলম্বিয়াকে সামনে পাচ্ছে তারা। গ্রুপের প্রথম ম্যাচেই মুখোমুখি হতে চলেছে কলম্বিয়ার। সুযোগও থাকছে পুরনো হারের বদলা নেওয়ার। যদিও কলম্বিয়া বেশ শক্তিশালী দল। তবে কাওয়াসিমা মনে করেন, এবার তারাও অনেক বেশি প্রস্তুতি নিয়ে মাঠে নামতে চলেছেন। গ্রুপে জাপান অন্য যে দুটি দলের বিরুদ্ধে নামবে তারা হল সেনেগাল ও পোল্যান্ড।

“আমি মনে করি এই গ্রুপটি চারটি দলের কাছেই সমানভাবে খোলা এবং প্রতিটি দলেরই সম্ভাবনা রয়েছে। আমাদের গ্রুপের লক্ষ্যগুলি খুব সহজ – পরবর্তী রাউন্ডে কীভাবে উন্নতি করতে হয় তাতে মন দেওয়া। আমরা  ব্রাজিলের শেষ বিশ্বকাপে ভাল করতে পারিনি তাই আমরা আমাদের কাজ নিয়ে আমরা বেশ সচেতন। সময় থেকে প্রেরণা নিয়েছি, ” বলেন কাওয়াসিমা।

“আমি ভাগ্যবান, দীর্ঘ দিন ধরে জাতীয় দলের সঙ্গে যুক্ত আছি। এখন আমি দলের সবচেয়ে অভিজ্ঞ খেলোয়াড়। একজন অভিজ্ঞ হিসাবে, আমি এক ইতিবাচক দল এবং সেরাটা তুলে আনার চেষ্টা করব। ”

Published on: জুন ১, ২০১৮ @ ০৯:৪৬


শেয়ার করুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

+ 48 = 56