ASEGO: ভ্রমণে এনেছে নয়া উদ্যম, সহায়তা আর বীমা দিয়ে জিতেছে ভ্রমণকারীদের মন, টাফি জানাল সম্মান

Main অর্থ ও বাণিজ্য কোভিড-১৯ দেশ বিদেশ ভ্রমণ রাজ্য
শেয়ার করুন

Published on: মার্চ ১৬, ২০২২ @ ২১:২৭
Reporter: Aniruddha Pal

এসপিটি নিউজ, কলকাতা, ১৬ মার্চ:  ভ্রমণকে এক নয়া উচ্চতায় পৌঁছে দিয়েছে এএসইজিও (অ্যাসিগো)। বিশেষ কোভিড মহামারীর পর ভারতীয় এই কোম্পানি ভ্রমণে নিয়ে এসেছে এক নয়া উদ্যম। সহায়তা আর বীমার মাধ্যমে তারা জিতে নিয়েছে ভ্রমণকারীদের মন। মঙ্গলবার ট্রাভেল এজেন্টস ফেডারেশন অব ইন্ডিয়া বা টাফি’র এজিএম-এ অংশ নিয়ে নিজেদের পরিকল্পনার কথা তুলে ধরেন অ্যাসিগো’র প্রতিষ্ঠাতা ও সিইও দেব কারভাট।অনুষ্ঠানে তাঁকে সম্মানিত করেন টাফি’র চেয়ারম্যান অনিল পাঞ্জাবি।

টাফি’র চেয়ারম্যান অনিল পাঞ্জাবির প্রয়াস

কোভিড মহামারীর পর সারা ভারতে ভ্রমণ ও পর্যটন শিল্পকে আবার নতুন করে এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার প্রচেষ্টা শুরু হয়েছে। সেই প্রচেষ্টায় যুক্ত হয়েছে দেশের সমস্ত ভ্রমণ ও পর্যটন সংস্থা। টাফি’র চেয়ারম্যান অনিল পাঞ্জাবি এই প্রক্রিয়াকে আরও গতিময় করে তুলতে নিজের অ্যাসোসিয়েশনের পক্ষে নানা কর্মকাণ্ড করে চলেছেন।নিয়েছেন প্রয়াস। মঙ্গলবারের এজিএম-এ তিনি সেই প্রক্রিয়াকেই যুক্ত করেছেন। তাদের সেই সভায় অংশ নিয়ে অ্যাসিগো’র কর্ণধার দেব কারভাট তুলে ধরেন ভ্রমণের নতুন রূপের কথা, যা কোভিড পরবর্তী যুগে নিঃসন্দেহে এক মাত্রা যোগ করবে। শুধু ঘুরতে গেলেই এখন আর হবে না পাশাপাশি নিজের সুরক্ষা ও নিরাপদ ভ্রমণের বিষয়টিও যে মাথায় রাখা আবশ্যক হয়ে পড়েছে সেই কথাই কারভাট পরিষ্কার করে দেন। সংবাদ প্রভাকর টাইমস (এসপিটি)-কে দেওয়া একান্ত সাক্ষাৎকারে তিনি জানালেন বিস্তারিত সেইসব কথা।

এএসইজিও-র বিশেষত্ব

এসপিটি’কে একান্ত সাক্ষাৎকারে কোম্পানির কর্ণধার দেব কারভাট বলেন- “আমাদের কোম্পানির বিশেষত্ব হল ট্রাভেল অ্যাসিস্ট্যান্স এবং ট্রাভেল ইন্স্যুরেন্স। যে সমস্ত মানুষ ভারত থেকে বিদেশে ভ্রমণ করে আমরা তাদের সম্পূর্ণ সহায়তা দিয়ে থাকি। এর মধ্যে মেডিক্যাল অ্যাসিস্ট্যান্স, ব্যাগেজ ট্র্যাকিং, ট্রাভেল ইন্স্যুরেন্স আছে। তাদের যে পুরো সুরক্ষিত রাখা হয় তার সবটাই আমাদের দ্বারা করা হয়ে থাকে। এটা সারা বিশ্বজুড়ে করে থাকি। আমাদের এটা পুরো ইন্স্যুরেন্স কোম্পানি নয়। আমরা ইন্স্যুরেন্সের সঙ্গে কাজ করে থাকি। আমাদের বিশেষত্ব যেটা তা হল আমরা প্রোডাক্ট ডেভেলপ করে থাকি। কাজ করে থাকি ইন্স্যুরেন্স কোম্পানির সাথে- যেখানে আমরা ট্রাভেল ইন্স্যুরেন্স প্রোডাক্ট লঞ্চ করে থাকি। আমরা এয়ারলাইন্স-এর সাথে কাজ করি। অনলাইন, অফলাইন ট্রাভেল এজেন্সির সাথে কাজ করি। একই সঙ্গে আমরা কর্পোরেট সাইটের সঙ্গেও কাজ করে থাকি। যে সমস্ত ছাত্র-ছাত্রীরা ভারত থেকে বিদেশে ট্রাভেল করে তাদের সঙ্গেও কাজ করে থাকি। যে কোনও ধরনের ট্রাভেলের সঙ্গেই আমরা কাজ করি। তাদের সহায়তা প্রদান করে থাকি।আমাদের কাজ অন্যান্য ইন্স্যুরেন্স কোম্পানির সাথে আলাদা। আমাদের আলাদা আলাদা প্রোডাক্ট আমরা লঞ্চ করে থাকি।”

মাত্র ২৩ বছরেই নিজেদের জাত চিনিয়েছে এই কোম্পানি

মাত্র ২৩ বছরেই নিজেদের জাত চিনিয়েছে অ্যাসিগো। সেকথা উল্লেখ করে দেব কারভাট বলেন- “আমাদের কোম্পানির বয়স ২৩ বছর। আমরা খুব ভালো সাড়া পেয়েছি এখনও পর্যন্ত। আমরা এই কোম্পানিকে ভারতের ২০টি জায়গায় প্রেজেন্ট করেছি। আমাদের দলে ৪৫০ জন আছে। আমরা ১৫ হাজার ট্রাভেল এজেন্সির সঙ্গে কাজ করছি সারা ভারতে। সব মিলিয়ে যে ৫০ শতাংশ আন্তর্জাতিক ভ্রমণ করে তাদের ট্রাভেল অ্যাসিস্ট্যান্স ও ইন্স্যুরেন্স আমরা বানিয়ে থাকি।”

মেডিক্যাল সহায়তা প্রদান

“যে সমস্ত মানুষ আমাদের প্রোডাক্ট নিয়ে যায় তাদের মধ্যে ৯৫ শতাংশ মানুষ ক্লেইম করে না। কিন্তু তাদের কিছু কিছু সমস্যা হয়ে থাকে। যেমন ধরুন- তাদের কারও শরীর খারাপ হল সেক্ষেত্রে আমাদের যে মেডিক্যাল ডাক্তার আছে অনলাইনে সে তার সঙ্গে কথা বলে তাকে সাহায্য করে। আমেরিকায় কারও ওষুধ চাই তার জন্য প্রেসক্রিপশনের প্রয়োজন, আমরা সেক্ষেত্রে ব্যবস্থা করে তার কাছে সেই ওষুধ পৌঁছে দেওয়ার ব্যবস্থা করে থাকি। আবার কারও ডক্টর-অন-কল চাই। আমরা তারও ব্যবস্থা করে থাকি। আবার জরুরী পরিষেবা হিসেবে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার দরকার হলে সেক্ষেত্রে তাকে সেখান থেকে নিয়ে যাওয়ার সব ব্যবস্থা আমরা করে থাকি। এতে কি হয়, বেশিরভাগ মানুষকে পলিসির উপর ক্লেইম করার কোনও প্রয়োজন যেন না হয়। কিন্তু তার যদি ডাক্তারের সঙ্গে কথা বলার দরকার লাগে তারও সহায়তা দিয়ে থাকি।” যোগ করেন কারভাট।

ক্লেইম না করেও মিলতে পারে সহায়তা

“দ্বিতীয়ত, যারা ট্রাভেল করে তাদেরও আমরা সাহায্য করি। ধরুন কেউ যদি লন্ডনে আছে তার ভারতীয় খাবার পছন্দ, কারও আবার বাঙালি খাবার পছন্দ- সেক্ষেত্রে আমাদের তারা যদি কল করে তাহলে আমরা তাদের বলি যে আপনি যেখানে আছেন সেখানে খুব কাছে যে ভারতীয় কিংবা বাঙালি রেস্টুরেন্ট আছে তার খোঁজ দেওয়ার পাশাপাশি আমরা তাদের টেবিল বুক করার জন্য সহায়তা করি। এটা হল কনসিয়াস অ্যাসিস্ট্যান্স। তাই ৯৫ শতাংশ লোক যে ক্লেইম করেন না তা সত্ত্বেও পয়সা দিয়ে থাকে তারাও আমাদের কাছ থেকে এই সমস্ত সুবিধা পেতে পারেন।”

অ্যাসিগো’র মূল লক্ষ্য

ট্রাভেল এজেন্টস ফেডারেশন অব ইন্ডিয়ার সঙ্গে অ্যাসিগো’র সম্পর্ক দীর্ঘদিনের। সেকথা উল্লেখ করে দেব কারভাট বলেন – “আমাদের টাফি’র সাথে অনেক দিনের সম্পর্ক।আমরা কমবেশি ১৫ বছর ধরে কাজ করছি তাদের সঙ্গে। টাফি’র যে প্যান ইন্ডিয়া চ্যাপ্টার আছে তাদের সাথেও আমরা কাজ করছি। একই সঙ্গে আমরা কাজ করছি সমস্ত লোকাল চ্যাপ্টার-এর সঙ্গেও। আমাদের লক্ষ্য একই- যে ট্রাভেল এজেন্সির সঙ্গে কাজ করছি তাদের কিভাবে আরও সহায়তা দিতে পারি যাতে তারা ক্লায়েন্টকে ভাল প্রোডাক্ট দিতে পারে। এজন্য আমরা তাদের ট্রেনিং দিয়ে সাহায্য করতে পারি। এটাই আমাদের প্রধান উদ্দেশ্য। যাতে কাস্টমাররা ভাল প্রোডাক্ট পেতে পারে, তারা সুরক্ষিত থাকতে পারে।”

কোভিড মহামারীর পর যে ছবি উঠে এসেছে

“কোভিড মহামারীর পর আমরা দেখেছি যে ফেব্রুয়ারি মাসে ছোট পলিসি অর্থাৎ লো-মেডিক্যাল পলিসি নিতেন যা কিনা ন্যূনতম ৫০ হাজার ডলারের আছে তারা এখন ২ লক্ষ ৫০ হাজারের পলিসি নিতে শুরু করেছেন। তারা এখন সকলেই বেটার প্ল্যান নেওয়ার চিন্তা শুরু করেছে। আগে লোক ভাবত যে পলিসি নিতে হবে ভিসার জন্য এখন তারাই পলিসি নিচ্ছে নিজের সুরক্ষার জন্য। তারা দেখছে যে এতে কোভিড কভার হবে। আবার কোনও কারণে টিকিট বাতিল হল সেই পয়সাও পেয়ে যাব। আমি যদি কোয়ারেন্টাইনে থাকি তারও পয়সা পেয়ে যাব। এসমস্ত প্রশ্ন মানুষ এখন জানতে চাইছে। তারা যে কোনও ক্ষেত্রেই অতিরিক্ত মূল্য দিতে তৈরি হয়ে আছে। যা আমরা আগে দেখিনি। যে কাস্টমারের টিকিট সাইজ তা কম বেশি ৫০ শতাংশ বেড়ে গিয়েছে।” বলছিলেন অ্যাসিগো’র কর্ণধার দেব কারভাট।

ট্রাভেলের অনেক সহায়তা মিলবে

এসপিটি-কে দেব কারভাট বলেন- “এক কথায় ট্রাভেলের অনেক সহায়তা মিলবে। খুব ভাল ট্রাভেল হবে। আমাদের যে বুকিং দেখা যাচ্ছে সেখানে বহু কাস্টমার আছে যারা দুই বছর ধরে কোনও ট্রাভেল করেনি, আমরা ভারতেই দেখেছি গত এক বছরে বহু মানুষ দেশের ভিতরেই ট্রাভেল করছে। এখন বহু মানুষ ভারতের বাইরেও ট্রাভেল শুরু করতে চলেছে। ভারত সরকার যে আগামী ২৭ মার্চ থেকে ইন্টারন্যাশনাল ফ্লাইট চালু করছে তাতে ফ্লাইটের খরচ কম হবে। এবং ফ্লাইটের যে সংখ্যা তাও বেড়ে যাবে। তাতে মানুষের ট্রাভেল করতে সুবিধা হবে।”

ট্রাভেল এজেন্সির সঙ্গে গাঁটছড়া

“একজন ট্রাভেলার তো ট্রাভেল এজেন্সির কাছে যায় তার কাছে টিকিটের পয়সা দেয়। আমাদের ইন্স্যুরেন্সের পয়সা দেয় এবং ওই ট্রাভেল এজেন্সিকে আমারা সহায়তা দিয়ে থাকি। ট্রাভেল এজেন্সির সঙ্গে আমাদের গাঁটছড়া থাকে।” বলেন দেব কারভাট।

Published on: মার্চ ১৬, ২০২২ @ ২১:২৭


শেয়ার করুন