প্রসাধনী উন্নয়ন নয় চাই গঠনমূলক উন্নয়ন- শিলিগুড়ি বসে রাজনীতির সুরে অশোকের কটাক্ষ

রাজ্য
শেয়ার করুন

সংবাদদাতা-কৃষ্ণা দাস

 Published on: সেপ্টে ৫, ২০১৮ @ ২০:৪৩

এসপিটি নিউজ, শিলিগুড়ি, ৫ সেপ্টেম্বরঃ কথায় বলে কারও পৌষ মাস তো কারও সর্বনাশ। মাঝেরহাট সেতু ভেঙে পড়া নিয়ে নাকাল হচ্ছে প্রশাসন। দুর্ঘটনায় নিহত-আহতদের পরিবার চোখের জল ভাসিতে দিচ্ছেন। কিভাবে এই বিপদ থেকে উদ্ধার হবে তা এখনও কারও জানা নেই। মুখ্যমন্ত্রী এইসময় সকলের কাছে সাহায্য প্রার্থণা চেয়েছেন। এমনকী সিপিএম বিধায়ক নেতা সুজন চক্রব্ররতী গতকাল দুর্ঘটনাস্থল ঘুরে এই নিয়ে রাজনীতি না করার অনুরোধ জানিয়েছিলেন। কিন্তু হায়! এ যে বাংলা। এখানে কিছু হলেই একে অপরের দোষ ত্রুটি ধরতে উঠেপড়ে লেগে যায়। যেমনটা শুরু হয়ে গেল আজ থেকে। একদিকে শিলিগুড়ি বসে সিপিএম নেতা প্রাক্তন মন্ত্রী বর্তমান শিলিগুড়ির মেয়র অশোক ভট্টাচার্যের কটাক্ষ-” শুধু নীল-সাদা রঙ করলেই উন্নয়ন হয় না। উন্নয়ন করতে হলে প্রসাধনী উন্নয়ন না করে গঠনমুলক উন্নয়ন করা জরুরী।”

মঙ্গলবার সন্ধ্যায় কলকাতার মাঝেরহাট সেতুটি ভেঙে পড়ে। সরকারি হিসেবে নিহত দুই ও আহত প্রায় ৫০। ভেঙে পড়া সেতু দেখতে গিয়ে বাম নেতা সুজন চক্রবর্তী এমন বিপর্যয়ের সময় কাউকে রাজনীতি না করার অনুরোধ করলেও, শিলিগুড়ির বুকে বসে খোদ নিজেদের দলেরই একসময়কার পুর ও নগোরোন্নয়ন মন্ত্রী অশোক ভট্টাচার্য এক প্রকার রাজনীতিই করলেন। বুধবার তিনি রাজ্য সরকারের কাজের সমালোচনা করে বলেন, উন্নয়নের নামে শুধু সৌন্দর্যায়নের দিকেই বেশি গুরুত্ব দেওয়া হচ্ছে। সেইসঙ্গে রাজ্য সরকারকে কটাক্ষ করে তিনি বলেন, শুধু নীল-সাদা রঙ করলেই উন্নয়ন হয় না। উন্নয়ন করতে হলে প্রসাধনী উন্নয়ন না করে গঠনমুলক উন্নয়ন করা জরুরী।সরকার নীল-সাদা রঙ করাতে যতটা তৎপর, তার বিন্দুমাত্র তৎপর নন উন্নয়নের দিকে। তাঁর মতে, “হাসপাতালে ডাক্তার নেই অথচ সেই শূন্যস্থান পূরণ না করে হাসপাতালের গেট তৈরি করা হচ্ছে। এছাড়া স্কুলে শিক্ষক নেই অথচ নীল-সাদা রঙ করা হচ্ছে। তার মতে এগুলি প্রসাধনী উন্নয়ন। রাজ্য সরকার প্রসাধনী উন্নয়নের দিকেই বেশি করে নজর দিচ্ছে। তাই একেরপর এক ব্রিজ ভেঙে পড়ছে।”

সেতু সংরক্ষরণের উপরও তিনি রাজ্য সরকারকে পরামর্শ দিয়ে বলেন, “একটা সেতু সংরক্ষণের জন্য চারটি বিষয়ের দিকে গুরুত্ব দিতে হয়। একটি হল, গার্ডার, তারপর ফাউন্ডেশন, পিলার ও ডেক। জল হল পিচের সবচেয়ে বড় শত্রু তাই ড্রেনেজ স্পাউট করা খুব জরুরী। এর ফলে ব্রিজে জল জমে লোহাগুলিতে রাশ জমে না। হাওড়া ব্রিজের মতো যে সব ব্রিজের আয়ু ১০০ বছরের বেশি সেগুলো ঠিকমতো দেখাশোনা করার জন্য তার ১০০ বছরেও কোনও ক্ষতি হয়নি। অথচ ৫০ বছরের আগেই পোস্তা ব্রিজ ও মাঝেরহাটের মতো ব্রিজগুলো ভেঙে পড়ছে।

তিনি বাম আমলের কথা স্মরণ করিয়ে দিয়ে বলেন, “আমরা নিয়মিত ব্রিজগুলি তাদারকি করতাম তাই আমাদের সময় কোনও ব্রিজ ভেঙে পড়ার মতো ঘটনা ঘটেনি৷ সরকারের উচিত কোয়ালিটির সাথে কোনোরকম আপোস না করা।” একই সঙ্গে তাঁর অভিযোগ, “শাসক দলের লোকজন কোনও কাজ করতে গেলে তারাই নিকৃষ্ট মানের কাঁচামাল সরবরাহ করে অধিক মুনাফা কামায়। আর তাদের কাছ থেকে বেশি দামে নিকৃষ্ট কাঁচামাল নিতে বাধ্য হয় নির্মান সংস্থা। সে কারণেই কাজের মান কমে গিয়েছে।”

এই ঘটনায় দোষীদের কড়া শাস্তির দাবি জানিয়ে অশোক ভট্টাচার্য বলেন, তৃতীয় কোন তদন্তকারি সংস্থাকে দিয়ে উচ্চ মানের তদন্ত করে যারা অবহেলার সাথে জড়িত তাদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দিয়ে পারলে পরবর্তীতে এ ধরনের অবহেলা আর কেউ করার সাহস পাবে না।”

Published on: সেপ্টে ৫, ২০১৮ @ ২০:৪৩

 


শেয়ার করুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

24 + = 28