পুজোর মরশুমের ভ্রমণ কি সম্ভব, কি বলছে TAFI, TAAI-পর্যটন মন্ত্রকের রিপোর্টে ভারতের বর্তমান অবস্থা

Main কোভিড-১৯ দেশ বিদেশ ভ্রমণ রাজ্য
শেয়ার করুন

Published on: জুন ২০, ২০২১ @ ২১:০৩
Reporter: Aniruddha Pal

এসপিটি নিউজ, কলকাতা, ২০ জুন:  কোভিড মহামারীর বিরুদ্ধে লড়ছে গোটা ভারত। এর মধ্যে দেশের ভ্রমণ ও পর্যটন ক্ষেত্র ফের আশায় বুক বাঁধতে শুরু করেছে। ইতিমধ্যে দেশের বিভিন্ন প্রান্তে পর্যটন কেন্দ্রগুলি পর্যটকদের জন্য খুলে দেওয়ার ভাবনা-চিন্তা শুরু হয়ে গিয়েছে। কয়েকটি জায়গায় খুলেও দেওয়া হয়েছে। তবে ট্রাভেল এজেন্টদের একাধিক সংগঠন কিন্তু এই ব্যাপারে সাবধানতাকেই প্রাধান্য দিয়েছে। তাদের একটাই কথা- নতুন করে যাতে সংক্রমণের আধিক্য না ছড়ায় সেদিকে সাধারণ মানুষকেও আরও বেশি সচেতন হতে হবে।

TAFI-র চেয়ারম্যান অনিল পাঞ্জাবি আশাবাদী

ট্রাভেল এজেন্টস ফেডারেশন অব ইন্ডিয়া বা টাফি’র পূর্বাঞ্চলের চেয়ারম্যান অনিল পাঞ্জাবি দেশে ভ্রমণ ও পর্যটনের ক্ষেত্র নতুন করে তার দায়িত্ব পালনের জন্য প্রস্তুত আছে বলে মনে করেন। তিনি বলেন- “করোনার দ্বিতীয় ঢেউ-এর প্রকোপ অনেকটা সামলে নিলেয়েছে ঠিক তবে এখনই আত্মতুষ্টির কোনও জায়গা নেই। আমাদের সব দিক থেকে সতর্ক থাকতে হবে। একটু ঢিলেঢালা ভাব দেখালেই কিন্তু ফের সংক্রমণ বাড়তে থাকবে। আমাদের রাজ্য পর্যটন নিয়ে সবসময় তৎপর। যেভাবে রাজ্য সরকার কাজ করছে তাতে পুজোর আগে রাজ্যের ভ্রমণের ক্ষেত্রগুলি খুলে যাবে বলে মনে করা যেতেই পারে। তবে তার আগে ভ্যাকসিনেশনের শতকরা হার বাড়াতে হবে। আমরা চাই যে পর্যটনের ক্ষেত্রগুলি ধীরে ধীরে আনলক করা হোক। একই সঙ্গে সংক্রমণ রোধে সাধারণ মানুষের সচেতনতা জরুরী।”

TAAI-এর পূর্বাঞ্চলের চেয়ারম্যান মানব সোনি জানালেন ভ্যাকসিনেশনের কথা

তবে দেশে ভ্রমণ ও পর্যটনের ক্ষেত্রগুলি আশার আলো দেখলেও একটা উদ্বেগের কথা জানালেন ট্রাভেল এজেন্টস অ্যাসোসিয়েশন অব ইন্ডিয়া বা টাই -এর ইস্টার্ন রিজিওনের চেয়ারম্যান মানব সোনি। তিনি বলেন- ” গত বেশ কিছুদিন ধরে সংক্রমণের হার কমতে দেখা গেলেও আবার নতুন করে তা বাড়ছে। কারণ, এখনও সকলে করোনা ভ্যাকসিন নেয়নি। এরই মধ্যে অনেক জায়গায় ধীরে ধীরে আনলক করা হয়েছে। সেটারও প্রয়োজন আছে। অর্থনৈতিক দিকটাও সমানভাবে প্রয়োজন। তবে পর্যটনের ক্ষেত্রগুলিতে ইতিমধ্যে বহু জায়গায় খুলে দেওয়া হয়েছে কিংবা খোলার কথা ভাবা হচ্ছে। তার আগে ভ্যাকসিনেশনে জরুরী। মনে রাখতে হবে, এখনও কিন্তু বহু মানুষ ভ্যাকসিন নিচ্ছে না। এর ফলে অনেক ভ্যাকসিন নষ্ট হয়ে যাচ্ছে। কাজেই আমাদের দেশের যা জনসংখ্যা তার নীরিখে সেভাবে ভ্যাকসিনেশন না হওয়ায় সংক্রমণের ভয় কিন্তু থেকেই যাচ্ছে। তাই সকলকে ভ্যাকসিন নিতেই হবে। এসব দিক খেয়াল রেখে যদি পর্যটন ক্ষেত্রগুলি খোলার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয় তাহলে সকলে সুরক্ষিত থাকবেন এবং ভ্রমণ ও পর্যটনের আনন্দ পর্যটক কিংবা ভ্রমণপ্রেমীরা উপভোগ করতে পারবেন।”

ডব্লিউটিটিসি’র তথ্য

  • ওয়ার্ল্ড ট্রাভেল এন্ড ট্যুরিজম কর্পোরেশন বা ডব্লিউটিটিসির অর্থনৈতিক প্রভাব ২০১৯ প্রতিবেদনে ভারতের ভ্রমণ ও পর্যটন জিডিপি’র অবদান ৪.৯% বেড়েছে, যা চীন এবং ফিলিপাইনের পরে তৃতীয় সর্বোচ্চ। প্রতিবেদনে আরও উল্লেখ করা হয়েছে যে ২০১৪-২০১৯ সালের মধ্যে ভারতে তৈরি করা কাজের সংখ্যা (৬.৩৬ মিলিয়ন), চীন (৫.৪৭ মিলিয়ন) এবং ফিলিপাইনের (২.৩৩ মিলিয়ন) পরে সবচেয়ে শক্তিশালী বৃদ্ধি পেয়েছে।
  • ২০১৯-এর সময় ভারতে বিদেশি পর্যটক আগমনকারীদের (ফরেন ট্যুরিস্ট অ্যারাইভাল) দাঁড়ায় ১০.৯৯ মিলিয়ন, যা শতকরা হারে ৩.২০%। ২০১৯-এর সময়, পর্যটন ক্ষেত্র থেকে আসা ফিগুলি ৪.৮%  বেড়েছে এবং ১,৯৪,৮৮১ কোটি (মার্কিন বিলিয়ন ডলার ২৯.৯৬)। ২০১৮ সালে, ই-টুরিস্ট ভিসার মাধ্যমে আগতদের সংখ্যার হার ২৩.৬% থেকে বৃদ্ধি পেয়ে ২.৯ মিলিয়নে দাঁড়িয়েছে।

পর্যটন মন্ত্রকের রিপোর্ট কি বলছে

ভারতের পর্যটন মন্ত্রক থেকে প্রকাশিত অ্যানুয়াল রিপোর্ট-২০২০তে উল্লেখ করা হয়েছে ভারতের পর্যটন বিষয়ক কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ তথ্য। সেখানে ২০১৭ সালে ভারতে আগত বিদেশি পর্যটকদের সংখ্যা ছিল ৫১ লক্ষ ৫১ হাজার ৩০৬জন। ২০১৯ সালে তা বেড়ে দাঁড়িয়েছিল ৫২ লক্ষ ৯৬ হাজার ০২৫ জন। আর কোভিড মহামারীর ফলে তা ২০২০ সালে নেমে আসে একেবারে নীচে- ২৪ লক্ষ ৬২ হাজার ২৪৪জন। এপ্রিল মাস থেকে আন্তর্জাতিক উড়ান সহ বিদেশিদের আগমনে কড়া নিয়ম চালু হওয়ায় এই পরিস্থিতি দাঁড়িয়েছে।

Published on: জুন ২০, ২০২১ @ ২১:০৩


শেয়ার করুন