দেশের জন্য এশিয়ান গেমসে একবার জাতীয় সংগীত বাজাতে পেরে গর্বিত, সে এক মহান অনুভূতি-বললেন সোমা বিশ্বাস

Main এসপিটি এক্সক্লুসিভ খেলা দেশ রাজ্য
শেয়ার করুন

সংবাদদাতা– অনিরুদ্ধ পাল

Published on: ডিসে ৫, ২০১৮ @ ২২:৪৪

এসপিটি নিউজ, বিধাননগর, ৫ ডিসেম্বরঃ এখনকার ছেলে-মেয়েরা মোবাইলে গেল খেলে। শারীরিক দৌড়-ঝাঁপ করে না। খেলাধুলোর দিকে তাদের বেশি করে যুক্ত করতে হবে। তবেই খেলাধুলোর প্রতি তাদের আগ্রহ বাড়বে। বুধবার বিধাননগরে এক অনুষ্ঠানের প্রধান অতিথি হয়ে এসে এভাবেই উদ্বেগ প্রকাশ করেন প্রাক্তন জাতীয় অ্যাথলিট সোমা বিশ্বাস। একই সঙ্গে তিনি মনে করেন অলিম্পিক্স এশিয়ান গেমসের মতো আনর্জাতিক খেলাধুলোর আসরেই যুবশক্তির দক্ষতা ধরা পড়ে। সেখানে জয়ী হলেই দেশের জাতীয় সংগীত বাজানো হয়। একবার আমার সেই সৌভাগ্য হয়েছিল বলেন সোমা। দেশের জন্য একবার জাতীয় সংগীত বাজাতে পেরে আমি গর্বিত। সে এক মহান অনুভূতি। বলেন সোমা।

বুধবার বিধাননগরের বৈশাখী আবাসনের খেলার মাঠে স্মার্ট ভ্যালু কোম্পানির পথ নিরাপত্তা সচেতনতার “মানব হেলমেট” গড়ার অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে আমন্ত্রিত হয়েছিলেন। সেখানে তিনি দেশে খেলাধুলোর প্রসারের বিষয়ে দু’চার কথা বলেন। সেখানে তাঁর গলায় একদিকে যেমন শোনা গেল উদ্বেগের সুর তেমনই আশার কথা বলার পাশাপাশি পুরনো স্মৃতিচারনাও করলেন।

সোমা বলেন-“আমি যেহেতু ক্রীড়া জগতের মানুষ আমি বলতে পারি- বেঁচে থাকার জন্য মানুষের আয় করার যে চাহিদা ভালো স্বাস্থ্যর একটা চাহিদা যেমন থাকে ঠিক তেমনি ভাল খেলাধুলো করার একটা চাহিদাও আছে। সুস্থ থাকার জন্য খেলাধুলোটা খুব খুব দরকার।খুবই গুরুত্বপূর্ণ। আপনারাই পারেন সেটা করতে। আমি এখানে দাঁড়িয়ে কথা দিচ্ছি-আপনারা কোনও সময়ে স্পোর্টস অ্যাকটিভিটির উপর যদি কাজ করতে চান, তাহলে আমি সোমা বিশ্বাস ‘সোমা স্কুল অব স্পোর্টস’-এর অর্গানাইজার হিসেবে আপনাদের সঙ্গে আছি।”

“আমি জানি গ্রামের ছেলে-মেয়েরা কি সুযোগ পায়- সে শিক্ষা হোক, স্বাস্থ্য হোক কিংবা ক্রীড়ায়। আমি নিজে চেষ্টা করি যে খেলাধুলোটা আমাকে আজ এই জায়গায় নিয়ে এসেছে আমি তাকে কিছু ফেরত দেওয়ার চেষ্টা করি। আমার কাছে এটা দায়িত্ব আপনাদের মতো অর্গানাইজেশনকে বোঝানোর যে খেলাধুলোটাও সমাজের জন্য ভীষনভাবে প্রয়োজন।” এক নিঃশ্বাসে কথাগুলি বলেন এশিয়ান গেমসের রিলে রেসে সোনাজয়ী এই প্রাক্তন জাতীয় অ্যাথলিট।

এরপরই সোমা পুরনো স্মৃতিচারনা করে বলেন-” আজকের দিনে একজন ক্রীড়াবিদ হিসেবে যখন আমরা অলিম্পিক্স করতে যাই- আমার মনে আছে আমি ২০০০ এবং ২০০৪ সালে অলিম্পিকে গেছিলাম। তখন আমার মনে হয়েছে আমরা এক ব্যাটল ফিল্ডে যাচ্ছি। ভারতের হয়ে লড়তে যাচ্ছি। আজকের দিনে তো আর বিশ্ব যুদ্ধ কেউ আশা করি না কিন্তু একটা ঠান্ডা যুদ্ধ অবশ্যই আছে। কোন দেশ কতটা শক্তিশালী যুবশক্তিতে আমরা কতটা এগিয়ে সেটা কিন্তু অলিম্পিক্সের মেডেলের উপর নির্ভর করে। আমি জানি না আপনারা আমার সঙ্গে একমত হবেন কিনা -এটা আমার অনুভূতি যখন ন্যাশনাল অ্যানথিম হয় সেই অনুভূতিটা কিন্তু বলে বোঝানো যাবে না- আমার গায়ে কাঁটা দিচ্ছে। আমার সৌভাগ্য হয়েছে দেশের জন্য একবার বাজাতে পেরেছি। ২০০২ সালের এশিয়ান গেমসে ৪ বাই ৪ রিলেতে সোনা নেওয়ার জন্য। এটা একটা মহান অনুভূতি। এটা বলে বোঝানো যায় না।”

“একজন ক্রীড়াবিদ হিসেবে আমিও চাই দেশে খেলাধুলোর প্রসার হোক। মানুষ আরও বেশি করে যুক্ত হোক।” একথা বলার পাশাপাশি দেশের বর্তমান প্রজন্মের অত্যধিক মোবাইল প্রীতি নিয়েও উদ্বেগ প্রকাশ করে তিনি বলেন- “মোবাইলের ভাল দিক যেমন আছে খারাপ দিকও আছে। সেই দিকটার থেকে তারা বেরিয়ে আসুক। এখনকার ছেলে-মেয়েরা মোবাইলে গেম খেলে। কিন্তু শারীরিক দৌড়ঝাঁপ কমে গেছে। আপনারা পারেন। প্লিজ প্লিজ যদি চেষ্টা করেন তাহলে হয়তো খেলাধুলোকে আরও বেশি করে জনপ্রিয় করে তোলা সম্ভব হবে।”

Published on: ডিসে ৫, ২০১৮ @ ২২:৪৪

 

 

 


শেয়ার করুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

45 + = 49