সংবাদদাতা-অনিরুদ্ধ পাল
Published on: ডিসে ১৭, ২০১৮ @ ২০:২৮
এসপিটি নিউজ, নৈহাটি, ১৭ ডিসেম্বরঃ কানে মোবাইল ফোন নিয়ে রেললাইন পার হওয়ার সময় একাধিক দুর্ঘটনা ঘটেছে। কিন্তু তারপরও শোধরায়নি কেউ।গত বৃহস্পতিবারও শ্যামনগর স্টেশনে এমন ধরনের দুর্ঘটনায় দু’টি প্রাণ অকালে ঝড়ে যেত। হল না শুধুমাত্র নৈহাটির এক সাহসী যুবকের জন্য।যিনি সেইসময় নিজের প্রাণের মায়া ত্যাগ করে ঝাঁপিয়ে পড়ে দু’টি মেয়েকে মৃত্যুর মুখ থেকে ছিনিয়ে এনে প্রাণে রক্ষা করলেন। কিন্তু নিজেকে শেষ পর্যন্ত অক্ষত রাখতে পারেননি। ট্রেনের ধাক্কায় গুরুতর আহত হয়ে আজ তিনি নিজেই মৃত্যুর সঙ্গে লড়ছেন। দরকার এখন তাঁর বড় চিকিৎসার। চাই ২০ লক্ষ টাকা। সবটাই নির্ভর করছে আমার-আপনার মতো মানুষের উপর।কী ভাবছেন, এমন ধরনের মানুষকে বাঁচানোটা আমাদের কর্তব্য নয় কি?
গত ১৩ ডিসেম্বর বৃহস্পতিবার পশ্চিমবঙ্গের উত্তর ২৪ পরগনা জেলার শ্যামনগর স্টেশনে এই ঘটনাটি ঘটে। নৈহাটির নিউষ্টার ক্লাবের অন্যতম সদস্য জীবন সরকার তখন সেখানে উপস্থিত ছিলেন। তিনি দেখেন দু’টি মেয়ে কানে মোবাইল ফোন নিয়ে রেললাইন পার হচ্ছেন। সেইসময় একটি ট্রেন এসে পড়ে। তিনি কোনও কিছু না ভেবে ঝাঁপিয়ে পড়েন লাইনের উপর। ধাক্কা মেরে সরিয়ে দেন মেয়ে দু’টিকে।সাক্ষাৎ মৃত্যুর মুখ থেকে ছিনিয়ে আনলেও নিজেকে অক্ষত রাখতে পারেননি। ট্রেনের ধাক্কায় ছিটকে পড়ে আশঙ্কাজনক অবস্থায় উদ্ধার করা হয় তাঁকে। এখন কলকাতার এক বেসরকারি হাসপাতালে তাঁর চিকিৎসা চলছে। যে মানুষটি অপরের জীবন বাঁচাতে নিজের জীবন বাজি রাখলেন আজ সেই মানুষটির জীবনই মৃত্যুর মুখে দাঁড়িয়ে। আজকের দিনে এমন মানুষ পাওয়া কঠিন। এখন তাঁর চিকিৎসার জন্য এই মুহূর্তে লাগবে ২০ লক্ষ টাকা। যা তঁর পরিবারের পক্ষে জোগাড় করা সত্যিই কঠিন।
নিউস্টার ক্লাবের সদস্যরা সাধ্য মতো চেষ্টা চালাচ্ছেন। উদ্বেগের সঙ্গে তারা বলছিলেন- “নৈহাটির ৬নং বিজয়নগর অঞ্চলে কেক, বিস্কুটের একটি ছোট দোকান চালায় জীবন। স্বভাবতই তার নিজস্ব সঞ্চয়ও নেই বললেই চলে, জীবনের জামাইবাবু ইতিমধ্যে ৫ লক্ষ টাকার ব্যবস্থা করেছেন, বাকি টাকা খুব তাড়াতাড়ি যোগাড় করতে না পারলে জীবনের মতো একজন সত্যিকারের মানুষকে হয়তো বা আমরা হারাব।”
এক অসাধ্যসাধন করে মৃত্যুর মুখে পড়া এই সাহসী মানুষটিকে বাঁচাতে তৎপর জীবনের বন্ধু-বান্ধব থেকে শুরু করে এলাকার মানুষ। আজ তারা টাকা জোগাড়ের জন্য হন্যে হয়ে সকলের দোরে দোরে ঘুরছে। একটাই উদ্দেশ্য এমন “সমাজবন্ধু” যুবককে যে করেই হোক বাঁচিয়ে তোলা।এজন্য তারা সকলের কাছে এক মানবিক আবেদন রেখেছে-“আসুন সকলে মিলে মিলিতভাবে জীবনের জীবন বাঁচাই। নীচে দেওয়া ব্যাঙ্কের তথ্য অনুযায়ী প্রতেকে নিজেদের সামর্থ্য অনুযায়ী টাকা জমা করে একসঙ্গেঁ সবাই মিলে জীবনকে নতুনভাবে জীবন সংগ্রামে ফিরিয়ে নিয়ে আসি।”
সংগ্রাম প্রভাকর টাইমস এই আবেদন সকলের কাছে পৌঁছে দিতে বদ্ধপরিকর।আমরা মনে করি- আজকের দিনে জীবনের মতো যুবকের খুব প্রয়োজন। এমন মানুষকে সমাজের সত্যি দরকার। আজকের দিনে মানুষ যখন নিজের ছাড়া কিছুই বোঝে না নিজেকে ছাড়া ভাবতেই পারে না তখন এই জীবনের মতো যুবকরাই কিন্তু সমাজকে শেখায়। জীবনের মতো যুবকদের কাছ থেকে এখনও অনেক কিছু শেখার আছে। একজন খেলোয়াড় যেভাবে দেশের সম্মানের জন্য লড়াই করে একজন সেনা যখন সীমান্তে দাঁড়িয়ে দেশ রক্ষায় প্রাণ দেয় ঠিক সেরকম ভাবেই এই জীবনের মতো যুবকরাও কিন্তু কোনও না কোনও ভাবে সমাজের উপকার করে থাকে তা সে নিজের জীবন বাজি রেখে কিংবা নিজের সর্বস্ব দিয়ে। তাহলে কি এই ধরনের “সমাজবন্ধু”দের এভাবে হারিয়ে যেতে দেওয়া যায়? আপনারাই বলুন?
একবার শুধু ভাবুন পাড়ায় সামান্য এক কেক-বিস্কুটের দোকান দেওয়া এক যুবক নিজের কথা একবারও ভাবলেনই না। তাঁর কিছু হয়ে গেলে কি ভাবে চলবে তাঁর পরিবার তা তিনি চিন্তাই করলেন না। কারণ, তাঁর চোখের সামনে তখন দুটি মেয়ের জীবনই বড় হয়ে উঠেছে। তাই ছূটে আসা ট্রেনের সামনে গিয়ে ঝুঁকি নিয়ে মেয়ে দু’টিকে বাঁচালেন। সেখানে তো আরও অনেক মানুষ ছিলেন সবাই কিন্তু দেখেও পাশ কাটিয়ে চলে গেছেন। জীবন কিন্তু তা করেনি। হতে পারে তিনি এক ছোট্ট দোকানদার। কিন্তু জীবন বাজি রেখে যে অসাধ্যসাধন করে দেখিয়েছেন তাতে আসলে নৈহাটির এই সাধরণ যুবক প্রকৃত মানুষের মতো কাজ করে নীরবে এক অসাধারণ মানুষ হয়ে গেছেন।
সংবাদ প্রভাকর টাইমস মনে করে- গোটা নৈহাটির মানুষের এই যুবকের কাজের জন্য গর্ব করা উচিত। আর সেই সঙ্গে তাঁর লড়াইয়ে পাশে থেকে পূর্ণ সহযোগিতা করা উচিত। গোটা নৈহাটির মানুষের প্রতিজ্ঞা করা উচিত- যে করেই হোক জীবনকে সুস্থ ভাবে বাড়ি ফিরিয়া আনা।এজন্য সবাই মিলে তাঁর চিকিৎসার খরচ যত তাড়াতাড়ি সম্ভব জোগাড় করা।
যারা সাহায্য করতে আগ্রহী তারা এদের সঙ্গে যোগাযোগ করতে পারেন-
- মানস মিত্র 8240048674
- মলয় চক্রবর্তী 9748899156
- শিবু সাহা 9836712517
BANK DETAILS NAME-6NO BIJOYNAGAR NEW STAR CLUB BANK NAME- AXIS BANK LTD. BRANCH- NAIHATI. A/C NO. 912010060075119. IFS CODE- UTIB0001031
Published on: ডিসে ১৭, ২০১৮ @ ২০:২৮