দুই বিপরীত ছবিঃ কোথাও হাতির হানায় মানুষের মৃত্যু, আবার কোথাও মানুষের হাতে নেকড়ে বধ

Main বন্যপ্রাণ রাজ্য
শেয়ার করুন

সংবাদদাতা-বাপ্পা মণ্ডল

Published on: অক্টো ৮, ২০১৮ @ ২১:৩৫

এসপিটি নিউজ, মেদিনীপুর, ৮ অক্টোবরঃ একদিকে হাতি আর একদিকে নেকড়ে দুই বন্যপ্রাণ নিয়ে রীতিমতো দিশেহারা পশ্চিম মেদিনীপুর জেলা বন দফতর। তার উপর দুটি মৃত্যু আবার তাদের চিন্তা বাড়িয়ে দিয়েছে। একদিকে হাতির হানায় আজ সাঁকরাইলে এক ব্যক্তির মৃত্যু হয়েছে। তার আবার পরিচয় জানা যায়নি। পাশাপাশি নয়াগ্রামে আজ যে নেকড়েটি বেশ কয়েকজনকে আক্রমন করেছিল আজ সেই নেকড়েটিকে ক্ষিপ্ত জনতা তাকেই পিটিয়ে হত্যা করেছে। দুটি মৃতদেহ বন দফতর উদ্ধার করেছে।

জানা গেছে, ৩০টি হাতির একটি দল গত কয়েক দিন ধরেই পশ্চিম মেদিনীপুর জেলা জুড়ে তাণ্ডব চালাচ্ছে। প্রথমে শালবনীর গড়মাল অঞ্চলে, তারপর নয়াগ্রামে এবার তারা ঢুকে পড়ল সাঁকরাইল থানা এলাকায়। সোমবার সন্ধ্যায় এলাকার মুড়াকাটি সংলগ্ন খাস জঙ্গল এলাকায় প্রায় ৩০ বছর বয়সি এক যুবককে সামনে পেয়ে হাতির দল শুঁড়ে পেঁচিয়ে তুলে আছাড় মেরে পা দিয়ে পিষে মেরে ফেলে। মৃতের পরিচয় এখনও জানতে পারেনি বন দফতর।

প্রায় ৩০টি হাতি দাঁতাল হাতি সাঁকরাইল থানার ধানঘোরি, মুড়াকাটি, খাসজঙ্গল, বনকাটি এলাকা দাপিয়ে বেড়াচ্ছে। তারা চারটি দলে ভাগ হয়ে বিস্তীর্ণ এলাকাজুড়ে তাণ্ডব শুরু করেছে। এদের দাপাদাপিতে আতঙ্কিত এলাকাবাসী। বন দফতরের যা ভূমিকা তাতে গ্রামবাসীদের উদ্বেগ ক্রমে বেড়েই চলেছে। হাতিগুলিকে কিভাবে অন্যত্র নিয়ে যাওয়া যায় তার কোনও দিশাই খুঁজে পাচ্ছে বন দফতর।

এরই মধ্যে নতুন আতঙ্ক দেখা দেয় এক হিংস্র নেকড়েকে ঘিরে। সোমবার দুপুরের পর আচমকা একটি নেকড়ে ঝাড়গ্রাম জেলার নয়াগ্রাম থানার নিমাইনগর, কাপ্তিভোল, লল্লাম, সিড়িকিটি গ্রামে ঢুকে পড়ে। একের পর এক মানুষকে নেকড়েটি আক্রমণ করতে থাকে। ১৬জন মারাত্মকভাবে জখম হয়। তাদের স্থানীয় হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। এরপর ক্ষিপ্ত গ্রামবাসীরা নেকড়েটিকে তাড়া করে পাঁচকাহানিয়া জঙ্গলের দিকে নিয়ে গিয়ে চারিদিক দিয়ে ঘিরে ফেলে। তারপর তারা নেকড়েটিকে পিটিয়ে হত্যা করে। নেকড়ের মৃতদেহ বন দফতর উদ্ধার করেছে।

এখন প্রশ্ন উঠছে এবছর কি এমন হল যে পশ্চিম মেদিনীপুর, ঝাড়গ্রামের জঙ্গল এলাকায় বাঘ, নেকড়ে চলে আসছে? কোথা থেকে এরা আসছে?বন দফতর মনে করছে পাশে উড়িষ্যার জঙ্গল থেকেই এরা চলে আসছে খাবারের সন্ধানে। তবে কি এমন হল যে এতদিন বাদে খাবারের সন্ধানে এভাবে বন্যপ্রাণ ঢুকে পড়ছে পশ্চিমবঙ্গের জঙ্গলে। তার চেয়েও উদ্বেগের -এখানে এখন পর্যন্ত দুটি বন্যপ্রাণ এলেও তারা কিন্তু কেউ বাঁচতে পারল না। তাদের পিটিয়ে মেরে ফেলা হল। প্রথমে রয়্যাল বেঙ্গল টাইগার তারপর আজ এই নেকড়ে হত্যা। এভাবে চলতে থাকলে কিন্তু তা বন দফতরের ব্যর্থতাকেই সামনে নিয়ে আসবে। আর তা হবে বন্যপ্রাণ বাঁচিয়ে রাখার প্রশ্নেও খুবই তাৎপর্যপূর্ণ প্রশ্ন।

Published on: অক্টো ৮, ২০১৮ @ ২১:৩৫


শেয়ার করুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

2 + 2 =