দিগ্বিজয় সিং বলে বসলেন-পুলওয়ামা হামলা ‘দুর্ঘটনা’, তাহলে রাজীব গান্ধী হত্যাও কি দুর্ঘটনা ছিল-পাল্টা প্রশ্ন বিজেপি মন্ত্রীর

দেশ বিদেশ
শেয়ার করুন

Published on: মার্চ ৫, ২০১৯ @ ১৬:০৩

এসপিটি নিউজ ডেস্কঃ ইতিমধ্যে আমদের দেশের মধ্যে থাকা পাকিস্তানি দালালরা পুলওয়ামা হামলা থেকে বালাকোটে পাক জঙ্গি ঘাঁটি উড়িয়ে দেওয়া এসব কিছুকেই নাটক বলে প্রশ্ন তুলেছেন। এবার সেই তালিকায় সবাইকে ছাপিয়ে গেলেন কংগ্রেস নেতা দিগ্বিজয় সিং। পাকিস্তান যখন পুলওয়ামা হামলায় জৈশ-ই-মহম্মদের হাত থাকার বিষয় নিয়ে প্রমাণ চেয়েছে ঠিক সেই সময় আমাদের দেশের কংগ্রেস নেতা দিগ্বিজয় সিং পাকিস্তানকেও ছাপিয়ে গিয়ে বলে বসলেন এটি স্রেফ একটা ‘দুর্ঘটনা’। তিনি এই কথা এমন একটা সময় বললেন যখন গোটা দেশে পাকিস্তান বিরোধী হাওয়া জোরদার হয়ে উঠেছে। জঙ্গিদের খতম করা জন্য শহীদদের পরিবারের মা-বোনেরা দেশের জন্য লড়ার শপথ নিচ্ছেন আর তখন এই কংগ্রেসের নেতা পুলওয়ামা হামলাকে ‘দুর্ঘটনা’ বলে পাকিস্তানের হাতকেই আরও শক্ত করলেন।

কংগ্রেস নেতার এমন মন্তব্য ঘিরে মানুষ সরব হয়েছে। বিজেপির কেন্দ্রীয় মন্ত্রী রবিকান্ত প্রসাদ এই কংগ্রেস নেতাকে এক হাত নিয়ে বলেন-“রাজনীতি করতে এসে কি মানুষ এতটাই সাধারণ জ্ঞান হারিয়ে ফেলে যে জওয়ানদের শহীদ হওয়ার বিষয়কে তারা এভাবে তুচ্ছ বর্ণনা করতে পারেন। দিল্লিতে বাটলা হাউসে দিল্লির এক জওয়ান মোহন শর্মা শহীদ হয়েছিলন। দিগ্বিজয় আজমগড় গিয়ে বলেন যে জঙ্গিদের মাথায় গুলি লেগেছে। কংগ্রেসের ১০ বছরের মুখ্যমন্ত্রী যদি এমনভাবে কথা বলে তাহলে কাকে কি বলবেন?

রবিকান্ত প্রসাদ বলেন- “এখানে কি ধরনের ষড়যন্ত্র করা হচ্ছে? যা এখানে করা হচ্ছে তা পাকিস্তানের কাগজে হেডলাইন করা হচ্ছে।” একই সুরে প্রশ্ন তোলেন আর এক মন্ত্রী বিকে সিং। তিনি কংগ্রেস নেতাকে পালটা প্রশ্ন করেন- তাহলে রাজীব গান্ধীর হত্যা কান্ডও কি দুর্ঘটনা?

দিগ্বিজয় সিং এদিন এক ট্যুইট করে লেখেন-“এয়ার স্ট্রাইকে বিদেশি সংবাদ মাধ্যম সন্দেহ প্রকাশ করেছে, যেখানে আমাদের সরকারে্র বিশ্বাসযোগ্যতা নিয়েই প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে।”প্রথমে তিনি বলেছিলেন এই অভিযানের ছবি স্যাটেলাইটে উঠে আসতে আপারে। তা নিয়ে সরকারকে প্রমাণ দেওয়া উচিত। আমেরিকা কিন্তু লাদেনকে হত্যা করার প্রমাণ পেশ করেছিল।”

মঙ্গলবার তিনি লেখেন-“প্রধানমন্ত্রীজি আপনার সরকারের কিছু মন্ত্রী বলছেন ৩০০জন জঙ্গি মারা গেছে। বিজেপি সভাপতি বলছেন ২৫০জন মারা গেছে। যোগী আদিত্যনাথ বলছেন ৪০০জন মারা গেছে এমনকি আপনার মন্ত্রী এ এস আলুয়ালিয়া বলেছেন একজনও মারা যায়নি। দেশ জানতে চাইছে এর মধ্যে মিথ্যা কোনটা?”

উইং কম্যান্ডার অভিনন্দন ভর্তমানকে মুক্তি দেওয়ার পর পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী ইমরান খানকে শুভেচ্ছা জানিয়ে দিগ্বিজয় সিং বলেছিলেন- এই কাজ করে তিনি দেখিয়ে দিলেন তিনি খুব ভাল প্রতিবেশি। এখন ওনাকে হাফিজ সঈদ এবং মাসুদ আজহারকে আমাদের হাতে তুলে দিয়ে বীরত্ব দেখাতে হবে। মোদি কন্যাকুমারীতে বলেছিলেন- ২০০৮ সালে ২৬/১১ মুম্বই হামলার পর বায়ুসেনা পাকিস্তানে সার্জিক্যাল স্ট্রাইক করতে চেয়েছিল কিন্তু সেসময় ইউপিএ সরকার অনুমতি দেয়নি।’ এই বিবৃতিকে সামনে নিয়ে এসে দিগ্বিজয় সিং বলেন-“ম্যায়নে মোদি জ্যায়সা ঝুঠা ব্যক্তি নহী দেখা।”

পুলওয়ামা হামলার ১৩ দিনের মাথায় ভারতীয় বায়ুসেনার মিরাজ-২০০০ যুদ্ধবিমান বালাকোট, মুজফফরপুর, চকোটিতে জৈশ-ই-মহম্মদের ক্যাম্প ধ্বংস করে দেয়। সংবাদ মাধ্যমের রিপোর্ট অনুসারে এই হামলায় ২০০জন জঙ্গির মৃত্যু হয়। এরপর দিন পাকিস্তান যুদ্ধবিমান ভারতীয় সীমায় ঢুকে পড়ে। পালটা হানায় মিগ-২১ পাকিস্তানের এফ-২১ কে ধ্বংস করে দেয়। পাকিস্তান ভারতীয় বায়সুসেনার পাইলট অভিনন্দনকে বন্দি করে।

সূত্রের খবর অনুসারে, জৈশের ক্যাম্পে হামলা চালানোর আগের মুহূর্তে সেখানে ২৮০টিরও বেশি মোবাইল ফোন সচল ছিল।এই তথ্য যোগায় ন্যাশনাল টেকনিক্যাল রিসার্চ অর্গানাইজেশন। তারা এই তথ্য দিয়েছিল সেনাকে। এই বিষয়ে নিরাপত্তা সংস্থাও কিন্তু সহমত পোষন করেছিল। এই তথ্য অনুসারে মনে করা হচ্ছে যে সেই সময় ক্যাম্পে ২৮০ জনেরও বেশি মানুষ হাজির ছিলেন।

সংবাদ মাধ্যমের রিপোর্টে এক আধিকারিক জানিয়েছেন যে “ইন্টেলিজেন্স ইজেন্সির কাছে সিন্থেটিক অ্যাপারচার র‍্যাডার (SAR) এর ছবি ছিল।সেখানে দেখা গেছে যে ৪টি বিল্ডিংকে নিশানা বানানো হয়েছিল। মিরাজ-২০০০ যুদ্ধবিমান পাঁচ এস-২০০০ প্রিসিশ-গাইডেড ম্যনুশন (PGM) ছোঁড়ে।” পিজিএম এক স্মার্ট বোম যা খোদ শত্রুপক্ষের নিশানায় ছোঁড়া যায়। ভারত এই পিজিএম ইজরায়েল থেকে নিয়েছে।

Published on: মার্চ ৫, ২০১৯ @ ১৬:০৩


শেয়ার করুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

27 − 18 =