টানা বর্ষণে একের এক ধস, দার্জিলিং-সিকিমের সঙ্গে যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন

আবহাওয়া দেশ ভ্রমণ রাজ্য
শেয়ার করুন

সংবাদদাতাকৃষ্ণা দাস

Published on: সেপ্টে ১৫, ২০১৮ @ ২০:০৮

এসপিটি নিউজ, শিলিগুড়ি, ১৫সেপ্টেম্বরঃ গত কয়েক দিন ধরে উত্তরবঙ্গ-সিকিম সহ পাহাড়ি এলাকায় সমানে বৃষ্টি হয়ে চলেছে। সেই সঙ্গে দার্জিলিং, সিকিমে যাওয়ার পথে একাধিক জায়গায় ধস নেমেছে। সমতলের সঙ্গে যোগাযোগ প্রায় বিচ্ছিন্ন বলা চলে। এর মধ্যে প্রশাসনিক সতর্কতা জারি।পাহাড়ি এলাকায় রাজ্য ও জাতীয় সড়কগুলিতে যান চলাচল থমকে গেছে। বিপর্যস্ত জনজীবন। যুদ্ধকালীন পরিস্থিতিতে ধস সরানোর কাজ শুরু করেছে প্রশাসন। কিন্তু সেই বৃষ্টি প্রধান বাঁধা হয়ে দাঁড়িয়েছে।পাশাপাশি উত্তরের নদীগুলিতেও জল বাড়তে শুরু করেছে।পাহাড় ও সমতলের মানুষজনকে সতর্ক করা হয়েছে। ধসপ্রবণ এলাকাগুলিতে এই মুহূর্তে পর্যটকদের যেতে নিষেধ করা হয়েছে।

কোথায় কোথায় ধস

টানা বৃষ্টিতে দার্জিলিং ও সিকিমে যাওয়ার পাহাড়ি পথের একাধিক জায়গায় ধস পড়ে বন্ধ হয়ে গেছে রাজ্য ও জাতীয় সড়ক। যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন।

  • ১০ নম্বর এবং ৩১ নম্বর জাতীয় সড়কের একাধিক জায়গা নেমেছে ধস
  • পশ্চিমবঙ্গ সিকিম লাইফ লাইন ১০ নম্বর জাতীয় সড়কের ২৯মাইল এবং শ্বেতীঝোড়ায় ব্যাপক ধস নামে। শিলিগুড়ির অদূরে পাহাড়ের ওঠার মুখে সেভক কালী বাড়ির কাছেও ধস নেমেছে।
  • ১০নম্বর জাতীয় সড়কে ধস-এর ফলে কালিম্পং,শিলিগুড়ির সড়ক যোগাযোগ একপ্রকার বন্ধ।
  • গুলমার কাছে রেললাইন জলের তলায়।
  • সে, শ্বেতীঝোড়া, পাগলাঝোড়া সহ বিভিন্ন অঞ্চলে প্রচুর জায়গায় নেমেছে ধস।
  • সিকিমেরও বহু এলাকায় লাগাতার ধস নেমেই চলেছে

 যোগাযোগ ব্যবস্থা কোথায় কি অবস্থা

বৃষ্টির ফলে পাহাড়ের নানা জায়গায় যোগাযোগ ব্যবস্থা একেবারেই ভেঙে পড়েছে।যে হারে বৃষ্টি হয়ে চলেছে তার মধ্যে এই কঠিন পরিস্থিতি সামাল দেওয়াই প্রশাসনের কাছে একটা মস্ত বড় চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়িয়েছে।যেহেতু এর সঙ্গে বহু মানুষের জীবন-জীবিকা জড়িয়ে আছে তাই প্রশাসন তার সাধ্য মতো চেষ্টা জারি রেখেছে। জানা গেছে-

  • সমতল থেকে মঙ্গন, চুংথান, গ্যাংটক যাওয়ার বহু জায়গাতেই ধসের কারণে আটকে রয়েছে প্রচুর যানবাহন। আটকে পড়েছে বহু পর্যটকও
  • রাজ্য ও জাতীয় সড়ক মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্তচলাচলের অনুপযুক্ত হয়ে পড়েছে।
  • শিলিগুড়ির সঙ্গে কালিম্পং ও সিকিমের যোগাযোগ কার্যত বিচ্ছিন্ন হয়ে রয়েছে।
  • বিকল্প পথ দিয়ে এখন কালিম্পংয়ে গাড়ি চলাচল করানো হচ্ছে।

আবহাওয়া দফতর কি বলছে

এই পরিস্থিতিতে সকলেই এখন আবহাওয়া দফতরের দিকে মুখ চেয়ে বসে আছে। সিকিম মৌসম ভবন ও বাংলার আবহাওয়া দফতর যা শোনাচ্ছে তাতে কিন্তু উদ্বেগ কমার কোনও লক্ষণ দেখা যাচ্ছে না। তারা বলছে, পাহাড় সহ উত্তরবঙ্গের সমতলে কোথাও হালকা, কোথাও আবার ভারি বর্ষনের সম্ভবনা এখনও রয়েছে। গত কয়েক দিনের লাগাতর বৃষ্টির ফলেই পাহাড়ের পাথুরে মাটিতে জায়গায় জায়গায় ধস নেমেছে। তবে এখনও যেভাবে বৃষ্টি হয়ে চলেছে, তাতে কিন্তু পাহাড়ের ওই পথে ফের ধস নামার আশঙ্কা রয়ে গেছে।

কি বলছে প্রশাসনিক কর্তারা

পরিস্থিতি এতই ভয়াবহ তার বিরুদ্ধে কাজ করে চলেছে প্রশাসন। এ প্রসঙ্গে জাতীয় সড়ক কর্তৃপক্ষ ও পাহাড়ের প্রশসনিক আধিকারিকরা জানিয়েছেন-

  • যে পরিমাণ বৃষ্টি হচ্ছে, আর তার ফলে যে ধস নেমেছে তা সরাতে সময় লাগবে।
  • তবে যান চলাচল স্বাভাবিক করতে তারা যুদ্ধকালীন পরিস্থিতে কাজ শুরু করে দিয়েছে। সেই মতো চলছে ধস সরানোর কাজও।
  • আপতত যতটা সম্ভব একমুখী করে রাস্তা খোলা হয়েছে।
  • পাহাড়ি পথে ধসপ্রবণ এলাকায় নতুন করে গার্ডওয়ালে দিতে হবে। তার জন্য সময় লাগবে
  • এই সময়ে একমুখী রাস্তা দিয়ে ট্রাফিক চলাচল নিয়ন্ত্রণ করা হবে

উত্তরের নদীগুলির কি অবস্থা

ভোর রাতে জল অনেকটাই বেড়ে যায় শিলিগুড়ি, জলপাইগুড়ির ওপর দিয়ে বয়ে যাওয়া নদী গুলির। সকাল নাগাদ বেশ কিছু জায়গায় নদীগুলিতে বিপদসীমার উপর দিয়ে জল বইতে থাকে। ফুলবাড়ি মহানন্দা ব্যারেজ শেষ পর্যন্ত সবগুলো গেট খুলে দিতে হয়। এছাড়াও তিস্তা, তোর্সা সহ  তরাই ও ডুয়ার্সেরও অন্যান্য ছোট বড়ো নদী গুলিতেও জল বেড়েছে।সেচ দফতরের মহানন্দা ডিভিশন-এর আধিকারিকরাও খোঁজখবর নিতে শুরু করেছেন। আপাতত মহানন্দা নদীতে চলছে নজরদারি। জারি রয়েছে সর্তকতাও।

Published on: সেপ্টে ১৫, ২০১৮ @ ২০:০৮

 

 


শেয়ার করুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

− 5 = 2