ঝুলছে দেহ, সুইসাইডাল নোটে লেখা-মৃত্যুর জন্য দায়ী পারচেজ ম্যানেজার

রাজ্য
শেয়ার করুন

সংবাদদাতা- সত্যজিৎ বন্দ্যোপাধ্যায়

Published on: ফেব্রু ২২, ২০১৮ @ ০১:০৯

এসপিটি নিউজ, বারুইপুর, ২১ ফেব্রুয়ারিঃ একে দেনা বলা যায় কিনা তা বিচার করার দায়িত্ব আমাদের নয়। কিন্তু তিনি যে মানসিক অবসাদে ভুগছিলেন তা কিন্তু মৃত্যুর ধরন দেখে পুলিশ অনুমান করেছে।  মৃতদেহের পাশ থেকে উদ্ধার হয়েছে দু’পাতার একটি সুইসাইডাল নোট। যেখানে নির্দিষ্ট করে একজনের নাম উল্লেখ করা হয়েছে। বলা হয়েছে, তিনি ওই ব্যক্তির কাছ থেকে কাজের দরুন ছয় লক্ষ্য টাকা পেতেন। কিন্তু সেই টাকা নিয়ে খুব ঘুরছিলেন। এমনকি টাকা না দিয়ে তিনি অপমান করতেও ছাড়েননি। টাকা না পেয়ে বাজারে তার অনেক দেনা পড়ে গেছিল। তার জন্যই এই পথ তিনি বেছে নিতে বাধ্য হয়েছেন।

মৃতের নাম দিলীপ রাউত (৪৭)। ঘটনাটি ঘটে সোনারপুরের গোপাল নগর এলাকায় মঙ্গলবার সন্ধ্যায়। প্রতিবেশীরা ঘর বন্ধ দেখে খোঁজাখুজি  করলে দেখে রান্নাঘরে ঝুলন্ত দেহ। সোনারপুর থানার পুলিশকে খবর দেওয়া হয় মঙ্গলবার সন্ধ্যায়। দেহের পাশ থেকে উদ্ধার হয়েছে ডায়েরির দুই পাতার সুইসাইডাল নোট। যাতে মৃত্যুর কারণ হিসাবে কলকাতার রুবি বেসরকারি হাসপাতালের ডেভেলপমেন্টের দায়িত্বে থাকা পারচেস ম্যানেজার এন এন বসাকের নাম রয়েছে। লেখা হয়েছে আত্মহত্যার জন্য এই পারচেস  ম্যানেজার দায়ী। এই ঘটনাকে কেন্দ্র করে এলাকায় চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে। সোনারপুর থানার পুলিশ দেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তে পাঠিয়েছে ।

পুলিশ এই ঘটনায়  আত্মহত্যায় প্ররোচনা দেওয়ার মামলা রুজু করে ঘটনার তদন্ত শুরু করেছে। উদ্ধার হওয়া সুইসাইড নোট হ্যান্ড রাইট বিশেষজ্ঞের কাছে পাঠিয়েছে তদন্তের স্বার্থে। ঘটনা প্রসঙ্গে পুলিশ জানিয়েছে, সোনারপুরের গোপালনগরের বাসিন্দা দিলীপ রাউত দীর্ঘদিন ধরে  ঠিকাদারির কাজ করতেন।

মুলত শ্রমিক দিয়ে বাড়ি অফিস সহ বিভিন্ন বিল্ডিং এর রঙ আর ফার্ণিচার তৈরির কন্ট্রাক্ট নিতেন। প্রায় আড়াই বছর আগে কলকাতার রুবি ষ্টেট জেনারেল বেসরকারি হাসপাতালেও ঠিকায় কাজ করছিলেন দিলীপবাবু।

তার পরিবারের অভিযোগ, দুই বছর ধরে তার কাজে সমস্যা হচ্ছিল।  হাসপাতালের কাছে প্রায় সাড়ে  ৬ লক্ষ টাকা পাওনা ছিল তার। কিন্তু দিনের পর দিন পারচেজ ম্যানেজার এন এন বসাক তার টাকা না দিয়ে ঘোরাচ্ছিলেন ।

এমনকি সাদা কাগজে কাজ না করতে লিখে দেওয়ার জন্য চাপ দেওয়া হচ্ছিল। শ্রমিকরা খারাপ ব্যবহার করতে থাকে তার সাথে। শ্রমিকরাও তাদের  টাকার জন্য চাপ দিচ্ছিলেন দিলীপবাবুকে।  বাজারে প্রচুর দেনা হয়ে গিয়েছিল তার। বারে বারে বসাকবাবুর সাথে বসতে চাইলেও তিনি অপমান জনক ব্যবহার করে বসতে চাননি।

দেনার জন্য সংসার চালাতে হিমশিম খাচ্ছিলেন তিনি।  এর জন্য মানসিক অবসাদে অসুস্থ হয়ে পড়ছিলেন দিলীপবাবু । তার জেরেই আত্মহত্যা করেছেন তিনি। দেহের পাশ থেকে পাওয়া সুইসাইড নোট-এ  দিলীপবাবুর লেখা, টাকার জন্য তার স্ত্রী আর মেয়েকে রুবি হাসপাতালের পারচেজ  ম্যানেজার বসাকের কাছে পাঠিয়েছিলেন মঙ্গলবার বিকালে। কিন্তু তিনি বসতে চাননি।

মঙ্গলবার তার স্ত্রী আর বিবাহিত মেয়ে বাড়ি না থাকার সুযোগ নিয়ে ফাঁকা বাড়ির রান্না ঘরে  তিনি আত্মহত্যা করেন বলে জানিয়েছেন বাসিন্দারা। পরিবারের পক্ষ থেকে পারচেজ ম্যানেজার এন এন বসাকের শাস্তির দাবি করা হয়েছে।

Published on: ফেব্রু ২২, ২০১৮ @ ০১:০৯


শেয়ার করুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

+ 60 = 65