Chief Editor: ANIRUDDHA PAL
Published on: মার্চ ১৭, ২০২০ @ ২০:১৫
এসপিটি নিউজ নিউজ, ১৭ মার্চ: একটা ঘটনা ঘটেছে। করোনা ভাইরাস নিয়ে গোটা বিশ্বে এখন তোলপাড় শুরু হয়েছে। বাদ নেই আমাদের দেশও। আমাদের সরকার এজন্য যাবতীয় সমস্ত ব্যস্থাই গ্রহণ করেছে। কিন্তু কতিপয় কিছু মানুষের জন্য সরকারের সেই প্রচেষ্টা এখন সমস্যার মুখে এসে দাঁড়িয়েছে। মাস্ক ও অ্যালকোহল ভিত্তিক স্যানিটাইজ জেল-কে সরকার অত্যাবশ্যকীয় পণ্যের তালিকাভুক্ত কপ্রা সত্ত্বেও বাজারে তা মিলছে না গত কয়েকদিন ধরে। কবে পাওয়া যাবে দোকাঙ্গুলি সে বিষয়েও কিছু বলছে না। এই অবস্থায় তাহলে সাধারণ মানুষ কোথা থেকে এই পন্য সংগ্রহ করবে? এই প্রশ্ন কিন্তু এখন উঠতে শুরু করেছে।
সোশ্যাল মিডিয়া ছড়াচ্ছে আতঙ্ক, সংবাদ মাধ্যমেও নেই এই বিষয়ে খবর
ইদানীং সোশ্যাল মিডিয়ায় করোনা ভাইরাস নিয়ে এক শ্রেণির মানুষ নানা ধরনের কৌতুক ভিডিও কিংবা ছবি পোস্ট করছে, যার বেশিরভাগই ভুয়ো। কোনও ভিত্তি নেই। যেভাবে এই ধরনের পোস্ট হাওয়ার মতো ছড়িয়ে পড়ছে তা নিয়ে উদ্বেগের কারণ কিন্তু থেকেই যাচ্ছে। পাশপাশি এই সোশ্যাল মিডিয়াতে একাধিক অবাস্তব অবান্তর এবং ভুয়ো এবং অযৌক্তিক কিছু জালি পোস্ট হয়ে চলেছে এই করোনা ভাইরাস নিয়ে। যা মানুষের ভিতর শুধু আতঙ্কই নয় সুস্থ মানুষকেও অসুস্থ করে তোলার পক্ষে যথেষ্ট। অবিলম্বে এসব পোস্টের বিরুদ্ধে সাইবার ক্রাইম ডিপার্টমেন্টকে যথাযথ ব্যবস্থা নেওয়া প্রয়োজন কিংবা এসব বন্ধ করা দরকার।
বাজারে নেই মাস্ক আর অ্যালকোহল বেস জেল
এরপর তাকানো যেতে পারে সংবাদ মাধ্যমগুলির দিকে। বেশ কিছু সংবাদ মাধ্যম কিন্তু অযথা আতঙ্ক তৈরি করে চলেছে। তারা এমনভাবে সংবাদ পরিবেশন করে চলেছে যা দেকেহে মনে হতেই পারে সব বোধ হয় রসাতলে চলে গেল।ভ্রমণ আর পর্যটন ব্যবসাকে শেষ করে দেওয়ার পক্ষে যা যথেষ্ট। কিন্তু সত্যিই কি আমাদের দেশে এত ভয়াবহ পরিস্থি তৈরি হয়েছে, বলুন তো? এই সব সংবাদ মাধ্যমগুলি কিন্তু সরকার ঘোষিত মাস্ক আর অ্যালকোহল বেস জেল-এর কালোবাজারি নিয়ে একেবারে চুপ করে আছে। একটা সংবাদ পত্র কিন্তু এই বিষয় নিয়ে উচ্চবাচ্চ্য করছে না। এক লাইনও কিন্তু তারা লিখছে না। তাহলে সাধারণ মানুষকে আর কতদিন এভাবে এই অত্যাবশ্যকীয় পণ্যের জন্য হন্যে হয়ে ছুটে বেড়াতে হবে বলতে পারেন?
করোনা ভাইরাসের চেয়েও এইসব কারণে দেশে প্রতিদিন এতজন লোক মারা যায়
আমরা করোনা ভাইরাস নয়ে সমানে চেঁচিয়ে চলেছি। আচ্ছে আপনারা জানেন কি, এই করোনা ভাইরাসের চেয়েও এই সব রোগ কিংবা এইসব ঘটনায় আমাদের দেশে প্রতিদিন কত সংখ্যক শিশু কিংবা মানুষের মৃত্যু হচ্ছে!যার মধ্যে আছে ক্যান্সার, অপুষ্টি কিংবা খারাপ চিকিৎসা, যক্ষা, পথ দুর্ঘটনা।
- আমাদের দেশে প্রতিদিন ক্যানসারে 1,300 জনের মৃত্যু হচ্ছে। 2015 সালের 17 মে ইকোনমিক টাইমস-এ প্রকাশিত প্রতিবেদনে এই তথ্য উঠে এসেছে।
- খারাপ চিকিৎসায় আমাদের দেশে প্রতিদিন 4,300জন শিশুর মৃত্যু হচ্ছে। 2018 সালের 10 সেপ্টেম্বর ডেকানহেরাল্ড সংবাদপত্রে প্রকাশিত প্রতিবেদনে এই সূত্র উঠে এসেছে।
- বিজনেস লাইন সংবাদপত্রে 2017 সালের 24 মে প্রকাশিত এক প্রতিবেদন থেকে জানা যায় যে আমাদের দেশে প্রতিদিন যক্ষা রোগে 1,400জনের মৃত্যু হচ্ছে।
- জানেন, আমাদের দেশে প্রতিদিন পথ দুর্ঘটনায় 400 জন মারা যাচ্ছে। 2018 সালের 10 জানুয়ারি ইকোনমিক টাইমস-এ প্রকাশিত প্রতিবেদন থেকে এই তথ্য জানা গেছে।
তাহলে বলুন, এই সব ঘটনা কি আমাদের বাংলা সংবাদ মাধ্যমে উঠে এসেছে? এই বিষয়গুলি নিয়ে কি আমাদের এখানকার কোনও টিভি নিউজ চ্যানেল-এ আলোচনা কিংবা বিতর্ক সভার আয়োজন করা হয়েছে? এই বিষয়গুলি নিয়ে কি সংবাদ মাধ্যম কিংবা সোশ্যাল মিডিয়ায় কেউ কোনও ছবি, তথ্য কিংবা ভিডিও পোস্ট করছে?
ইতিবাচক দিক তুলে ধরার মতো মানসিকতাই নেই
আসলে, কি জানেন তো- ইতিবাচক দিক তুলে ধরার মতো মানসিকতাই আমাদের এখানকার সংবাদ মাধ্যমের নেই।আমরা এখানে একটা জিনিস খুব ভালো পারি, তা হলো- নেতিবাচক সংবাদ পরিবেশন করা। করোনা ভাইরাস নিয়ে এখানে নেতিবাচক সংবাদ সমানে পরিবেশিত হয়ে চলেছে। আপনি সংবাদপত্র খুলুন কিংবা টিভি নিউজ চ্যানেল দেখুন সর্বত্র দেখবেন উপদেশের বন্যা বয়ে চলেছে। যারা এটা নিয়ে ভালো কাজ করছে কিংবা এর বিরুদ্ধে লড়াই করে ঘুরে দাঁড়াতে চাইছে বা চেষ্টা চালাচ্ছে তা নিয়ে কোনও সংবাদ আপনারা কটা সংবাদ দেখেছেন।
করোনা ভাইরাস নিয়ে লড়াই চালাচ্ছে যারা তাদের খবর দেখুন
যারা নেট ঘাটেন তাদের বলবো- আপনারা দয়া করে এখানকার বাংলা সংবাদপত্রের পাশপাশি আমাদের দেশের সর্বভারতীয় ক্ষেত্রের হিন্দি কিংবা ইংরাজি সংবাদপত্র কিংবা আন্তর্জাতিক মানের সংবাদপত্রও দেখুন। দেখবেন করোনা ভাইরাস নিয়ে কত লড়াই চালাচ্ছে কিছু দেশ। এমনকি, আমাদের দেশেও বেশ কিছু জায়গায় ভালো কাজ হচ্ছে। আমাদের পশ্চিমবঙ্গেও হচ্ছে। যে খবর এখানকার সংবাদপত্রগুলিতে আসে না। তাই বলি মাস্ক আর স্যানিটাইজ জেল নিয়ে কালোবাজারির বিরুদ্ধে সকলকে আরও বেশি সচেতন হতে হবে। কেন কিভাবে এগুলি বাজার থেকে উধাও হয়ে গেল, কেন এগুলি বাজারে সহজলভ্য হচ্ছে না তা খুঁজে বার করা এখন বেশি জরুরী। অযথা আতঙ্ক ছড়ানো নয়।
Published on: মার্চ ১৭, ২০২০ @ ২০:১৫