কি ভেবেছে, আমরা মরে গেছি ! আমি এখনও চিফ মিনিস্টার – নাম না করে শুভেন্দুর বিরুদ্ধে তোপ মমতার

Main রাজ্য
শেয়ার করুন

Published on: মার্চ ২৯, ২০২১ @ ১৮:৩১

এসপিটি নিউজ, নন্দীগ্রাম, ২৯ মার্চঃ দ্বিতীয় দফার ভোটের দিন যত এগিয়ে আসছে ততই বাড়ছে নির্বাচনী উত্তাপ। আর তার বেশিরভাগটাই পূর্ব মেদিনীপুরের নন্দীগ্রাম বিধানসভা কেন্দ্রজুড়ে। আজ নন্দীগ্রামের বয়াল-২ এলাকায় তৃণমূলের নির্বাচনী সভায় শুরুতেই মেজাজ হারান মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। গতকাল একটি সভাস্থল থেকে ফেরার পর সেখানে তৃণমূলের পার্টি অফিস ভেঙে ফেলা নিয়ে বিজেপির বিরুদ্ধে ক্ষোভ উগরে দেন। নাম না করে বিজেপি প্রার্থী শুভেন্দু অধিকারীর বিরুদ্ধে একের পর এক তোপ দাগেন মমতা। উত্তেজিত হয়ে বলে ওঠেন- ‘কি ভাবে আমরা মরে গেছি! আমি এখনও চিফ মিনিস্টার হয়ে বসে আছি।’

বয়াল-২ এর সভায় মমতা বললেন-আমি খুব দুখী

বয়াল-২ এলাকায় নির্বাচনী সভায় বক্তব্য রাখার সময় শুরুতেই উত্তেজিত হয়ে পড়েন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তিনি বলেন- “আমি খুব দুখী, কারণ আমার পিছনে যে ভাইটা বসে আছে তার হাত ভাঙা। আমার পায়েও যেমন চোট পা ভাঙা। তেমনি দেখুন, ওর হাতটা ভেঙে দিয়েছে। আমার আরও একটি ভাই তারও হাতটা ভেঙে দিয়েছে। আর একজন ভাই রবি মান্না মৃত্যুর সঙ্গে লড়াই করছে। এত গুন্ডামি কেন?”

নন্দীগ্রামের মানুষের কাছে কি জানতে চান মমতা

এরপর মমতা ফের প্রশ্ন তোলেন- “আমি নন্দীগ্রামের মানুষের কাছে জানতে চাই- নন্দীগ্রামের মানুষ তো গুন্ডামিকে কোনওদিন প্রশ্রয় দেননি। যদি নাই দিয়ে থাকেন নন্দীগ্রামের আন্দোলনে লড়াইটা করে থাকেন- এই যে মিরজাফর, গদ্দার আপনাদের পর্যন্ত ভয় দেখিয়েছে। কাল আমি যেখানে মিটিং করে এসেছি সেখানে রাতে গুন্ডামি করতে গেছে। আমার পার্টি অফিস ভেঙে দিয়ে এসছে। কদিন আগে আমতাবাদে করেছে। কিছুক্ষণ আগে আরও কয়েকটা জায়গায় করেছে।”

“কি ভাবে আমরা মরে গেছি? কি শাসন দেখাচ্ছে। আমি এখনও চিফ মিনিস্টার হয়ে বসে আছি। তোমার এত বড় সাহস যে আমি মিটিং করে যাওয়ার পর তুমি তোমাদের গুন্ডাদের দিয়ে বিরুলিয়ায় আমার পার্টি অফিস ভেঙেছো?” নাম না করে শুভেন্দুর বিরুদ্ধে তোপ দাগা শুরু করেন মমতা।

এফআইআর করার পর কেন অ্যারেস্ট করেননি?জানতে চান মমতা

এরপর মমতার রাগ গিয়ে পড়ে পুলিশের উপর। উত্তেজিত হয়ে সামনে দাঁড়িয়ে থাকা পুলিশকে উদ্দেশ্য করে বলে ওঠেন- “আর পুলিশকে বলিহারি, যারা এখানে কাজ করছে, এই ছেলেটাকে মেরেছে আপনারা সামনে দেখতে পাচ্ছেন না। পাচ্ছেন না দেখতে ওর হাতটা ভেঙে দিয়েছে।পাচ্ছেন না দেখতে ওর কোমরে মেরেছে। রবি মান্না পিজি হাসপাতালে মৃত্যুর সঙ্গে লড়াই করছে। এফআইআর করার পর কেন অ্যারেস্ট করেননি? কেন অ্যারেস্ট করেননি আমি জানতে চাই। অন্যায় যে করুক সে যেই হোক কিসের জন্য এত প্রোটেকশ? কি ভেবেছেন আপনারা? যে আমরা শান্তিপূর্ণভাবে সহ্য করে যাচ্ছি বলে যা ইচ্ছা হবে নন্দীগ্রামে। যা ইচ্ছে হবে কাঁথিতে। যা ইচ্ছা হবে ভগবানপুরে। যা ইচ্ছা তাই হবে এগরাতে।”

আমার সঙ্গে লাগলে আমি আগুনের মতো হয়ে ঝরি-মমতা

উত্তেজিত হয়ে মমতা বলে চলেন-“দিন শেষ হয়ে গেছে মনে রাখবে। আমি খেলা খেলি ভদ্রভাবে। কিন্তু আমার সঙ্গে কেউ লাগতে এসো না। আমার সঙ্গে লাগলে আমি আগুনের মতো হয়ে ঝরি। আর আমাকে আঘাত করলে আমি সিংহের মতো ঝাঁপিয়ে পড়ি। অনেক সহ্য করেছি। নন্দীগ্রামে পুলিশ সেদিন ঢুকতো না তোমার(শুভেন্দু’র নাম না করে) পারমিশন ছাড়া। কে নব কুমার সামন্ত সিপিএমের হার্মাদ আজ সে বিজেপির নেতা। আর এই মিরজাফর তাদের নেতা। বড় বড় বড় কথা বলছে- আমি বাইরের মেয়ে। আমি বাংলার মুখ্যমন্ত্রী আমি বাইরের মেয়ে। আর তুই বেটা কাঁথির ছেলে কি করে বেড়াস তুই কবে নন্দীগ্রামের ভূমিপুত্র হলি? তোর তো এটা ভূমিও নয় জমিও নয় তুই তো দালালি করে গেছিস।তুই তো সিপিএম, বিজেপির সঙ্গে দালালি করে গেছিস্”

এরপর মমতা এক নিঃশ্বাসে বলতে থাকেন-“তোকে ইরিগেশন মিনিস্টার করেছি, তোকে ট্রান্সপোর্ট মিনিস্টার করেছি, তোকে এনভায়রনমেন্ট মিনিস্টার করেছি।হলদিয়া ডেভেলপমেন্ট বোর্ডের চেয়ারম্যান করেছি তোর বাবাকে। তোকে দিঘার ডেভেলপমেন্ট কর্পোরেশন বোর্ডের চেয়ারম্যান করেছি। কাঁথি ব্যাঙ্কের চেয়রম্যান করেছি। তোর ভাই তমলুক মিউনিসিপালিটির চেয়ারম্যান। আর বড় বড় কথা!    ”

সময় তুই আমার পা জখম করেছিস-তোপ মমতার

“কি নেই, ব্যাঙ্ক থেকে শুরু করে পেট্রল পাম্প থেকে শুরু করে কি নেই। আর গুন কি কি আছে আমি বলবো না। আমার মুখে এ কথা শোভা পায় না। ইলেকশনের সময় তুই আমার পা জখম করেছিস। তোমার নির্দেশ ছাড়া এ জিনিস হতে পারে না। কোনও নন্দীগ্রামের লোক করেনি। বহিরাগত গুন্ডাদের দিয়ে করেছ তুমি। আর করে তুমি এই ছেলেগুলোকে মারছো। এরা নন্দীগ্রামের ছেলে নয় এরা বহিরাগত? একটা ভোট লুটে দেখা তারপর কি অবস্থা হয় দেখো তুমি।”

আপনারা কি ভয়ে পিছিয়ে যাচ্ছেন-জানতে চান মমতা

আর নন্দীগ্রামের মানুষকে জিজ্ঞাসা করি- আপনারা কি ভয়ে পিছিয়ে যাচ্ছেন? আমি তো নন্দীগ্রামের মানুষের কাছে এটা আশা করি না। আমি জানি নন্দীগ্রাম জ্বলে ওঠে। আমি শান্তিতে ভোট চাই, আমি গণতান্ত্রিকভাবে ভোট চাই। এরা ভোট বন্ধ করার জন্য দাঙ্গা করতে চায়। কেউ কোনও গন্ডগোলে পা দেবেন না। বাইরে থেকে গুন্ডা নিয়ে এলে মা-বোনেদের ডেকে আনবেন। মা-বোনেরা হাতা-খুন্তি নিয়ে তাড়া করবেন।

Published on: মার্চ ২৯, ২০২১ @ ১৮:৩১


শেয়ার করুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

+ 31 = 32