‘ উইথ শুভেন্দু ‘ আর ‘ উইদাউট শুভেন্দু ‘ কী হয় এবার প্রমাণ হয়ে যাবে-নন্দীগ্রামের সভায় মমতাকে চ্যালেঞ্জ শুভেন্দুর

Main দেশ রাজ্য
শেয়ার করুন

Published on: মার্চ ২৯, ২০২১ @ ২৩:২৬

এসপিটি নিউজ, নন্দীগ্রাম, ২৯ মার্চ:  নন্দীগ্রামে একদিকে যখন তৃণমূল প্রার্থী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বিজেপি প্রার্থী শুভেন্দু অধিকারীর বিরুদ্ধে একের পর এক তোপ দেগেছেন ঠিক তখন একই দিনে অপর সভা থেকে পাল্টা বিজেপি প্রার্থী একইভাবে তৃণমূল প্রার্থীর বিরুদ্ধে তোপ দেগেছেন। একই সঙ্গে তৃণমূল প্রার্থীর নাম না করে বিজেপি প্রার্থী এক প্রকার চ্যালেঞ্জ ছুঁড়ে দিয়ে বলেছেন- “উইথ শুভেন্দু আর উইদাউট শুভেন্দু কী হয় তা এবার প্রমাণ হয়ে যাবে নন্দীগ্রামে।”

‘নন্দী মা বইটাতে যা লিখেছেন এখন তার উলটো কথা বলছেন’

তৃণমূল প্রার্থী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নাম না করে চ্যালেঞ্জের সুরে বিজেপি প্রার্থী শুভেন্দু অধিকারী বলেন- “একুশটা বছর তৃণমূলে তাঁর সঙ্গে ছিলাম। আরে কোনওদিন জিততে পারতেন না। মুখ্যমন্ত্রী হতে পারতেন না। এবার প্রমাণ হয়ে যাবে উইথ শুভেন্দু কী হয় আর উইদাউট শুভেন্দু কী হয়। আপনি ২০০৯ সালে বলেছিলেন- হয় এবার না হয় নেভার। আর ১১ সালে আপনি মুখ্যমন্ত্রী হয়েছিলেন নন্দীগ্রামের জন্য। আপনার নন্দী মা বইটাতে যা লিখেছেন এখন তার উলটো কথা বলছেন।”

শুভেন্দু বলেন- আমরা তিনটে জিনিসের উপর লড়ছি

শুভেন্দু বলেন- “আমরা তিনটে জিনিসের উপর লড়ছি- একটি হল, গত ১০ বছরে মাননীয়ার ব্যর্থতা, প্রতিশ্রুতি ভঙ্গ।দুই, ভারতীয় জনতা পার্টির ইস্তাহার ও সোনার বাংলা তৈরি করার কর্মসূচি। তিন হল- তোষণের রাজনীতি।”

  • এরপর শুভেন্দুর তোপ- “আপনারা বলুন তো, একটা সরকারের কাজ ইমামদের ভাতা দেওয়া আর সেই সম্প্রদায়কে তোষন করা। সরকারের কাজ কি শুধু মেলা আর খেলা করা? একদিকে মোদিজি বলছেন- আত্মনির্ভর ভারত। আর একদিকে মাননীয়া বলছেন নির্ভরশীল বাংলা।”
  • “আপনি মাননীয়া ২০১১ সালে ক্ষমতায় আসার আগে বলেছিলেন- ক্ষমতায় এলে শিল্পের জোয়ার বইয়ে দেবেন। একটা শিল্পের নাম বলুন তো। আপনি বলেছিলেন বেকারদের চাকরি হবে। আপনি বলুন তো- ১০ বছর কত চাকরি দিলেন? চাকরি দেওয়া তো দূরের কথা, আপনাদের যুবক-যূবতীদের স্বপ্ন ভঙ্গ করেছে। সাড়ে পাঁচ লক্ষ পদ অবলুপ্ত করেছে মাননীয়ার সরকার। আপনি কি করেছেন? আপনি পাড়ায় পাড়ায় চায়ের দোকানে পাউচে মদ বিক্রির ব্যবস্থা করেছেন। ৩০ হাজার চুক্তিভিত্তিক চাকরি দিয়েছেন। সেইসব চাকরিতে বেতন এতই কম যে তাতে না চলে সংসার আর না কোন ভালো মেয়ে পাওয়া যায় বিয়ে দেওয়ার জন্য।তাই পশ্চিমবাংলায় পরিবর্তনের ঝড় বইছে। “
  • আমাকে বিশ্বাস করেন তো আপনারা? প্রথম দফায় ৩০-এ জিরো। বলছে শুভেন্দু মেরুকরণ করছে। হ্যাঁ, করছি। আমি মেরুকরণ করছি না, আমি আপনার তোষণের বিরোধিতা করছি। আপনাকে কে অধিকার দিয়েছে ভগবান নারায়নকে বিষ্ণু মাতা বলার। কে বলেছে আপনাকে সরস্বতী পুজোর ভুল মন্ত্র বলতে? আপনি হিন্দুদের এত অপমান করছেন কেন? আপনি নন্দীগ্রামে এসে মা চন্ডীর পিন্ডি চটকে দিয়ে গেছেন। ভাত খেয়ে পায়ে চটি পড়ে কেউ চন্ডীপাঠ করে? আপনি কিন্তু কলমাটা ঠিক পড়েছেন। আচ্ছে কোন মুখ্যমন্ত্রী ঈদের দিন হিজাব পড়ে নামাজ পড়তে যায়? নাম কি? তাহলে আপনি বলুন, তোষণ কে করছে।
‘এসব নাটকবাজি বন্ধ করে এবার হাঁটাহাটি করুন’- শুভেন্দু

“আপনি এখন নন্দীগ্রামের আন্দোলনের গল্প শেখাচ্ছেন। পুলিশ ঢুকল না তার গ্লপ শোনাচ্ছেন। আপনার এত মিথ্যা কথা কেন?আপনি বলছেন সিপিএম আমার মাথা ভেঙেছে বিজেপি আমার পা ভেঙেছে। আপনি এক্স-রে প্লেটটা দেখতে চাই। পা-টা কেমন ভেঙেছে।আপনি কেন ব্যান্ডেজ বেঁধে ভোটের জন্য ঘুরে বেড়াচ্ছেন। আপনার ঠ্যাং দেখতে চাই না। আমরা দু’হাতে দুটো রিপোর্ট কার্ড চাই।আপনি আপনাকে বলবো- ক্রেপ ব্যান্ডেজটা এবার খুলুন। অনেক হয়েছে। অনেকদিন হয়ে গেল পা মচকালে এতদিন ক্রেপ ব্যান্ডেজ থাকে না। এসব নাটকবাজি বন্ধ করে এবার হাঁটাহাটি করুন। আপনি নিজে ২৫ কিলোমিটার হাঁটেন। হেঁটে হেঁটে ভোট চান না তাহলে দেখতে পাবেন রাস্তাগুলো কেমন আছে।” বলেন শুভেন্দু।

পাড়ায় পাড়ায় একটা করে সুফিয়ান তৈরি হয়েছে-শুভেন্দু

তৃণমূল প্রার্থীর নাম না করে শুভেন্দুর তোপ- “এই বেগমকে ভোট দেবেন? গলার কন্ঠী, লক্ষ্মীর পাঁচালি, মাথার টিকা আর ধুতি পরা বন্ধ হয়ে যাবে। পাড়ায় পাড়ায় একটা করে সুফিয়ান তৈরি হয়েছে। আমরা বলছি কাশ্মীর থেকে কন্যাকুমারী দেশ হামারি দেশ হামারি। ড. শ্যামাপ্রসাদ মুখোপাধ্যায় আত্মবলিদান করলেন- বললেন, এক দেশ দো নিশান নেহি চলেগি। আর আপনি কি বলছেন চারটে রাজধানী লাগবে, একটা দিল্লির রাজধানীতে হবে না।”

‘বাকি ৭৩ শতাংশ আপনার অলক্ষ্যে এক হয়ে গেছে এটা আপনি বুঝতে পারেননি’

এখানে না থেমে শুভেন্দু ফের বলতে থাকেন- “আর আলম খান নানুরে তৃণমূল কংগ্রেসের বড় নেতা- বলছে, আমরা চাইলে চারটে পাকিস্তান করতে পারি। তা এখন শুভেন্দুর কথা ভালো লাগছে না। ২৭ শতাংশের কাছে আপনি গেছেন। আর বাকি ৭৩ শতাংশ আপনার অলক্ষ্যে এক হয়ে গেছে এটা আপনি বুঝতে পারেননি।” এরপর উপস্থিত জনতার উদ্দেশ্যে প্রশ্ন করেন- যারা জয় শ্রীরাম বলেন তারা আমাকে ভোট দেবেন তো, যারা হরে কৃষ্ণ বলেন তারা আমাকে ভোট দবেন তো?

টাইগার হিল থেকে দিঘা ৪০টি প্রাসাদ তৈরি করেছে এই লেডি হিটলার, তোপ শুভেন্দুর

ফের মমতার বিরুদ্ধে তোপ দেগে শুভেন্দু বলেন- “৪০ লক্ষ্য টাকা হেলিকপ্টারের ভাড়ার টকা সেটা রাজ্য সরকার দিচ্ছে মাননীয়ার জন্য। টাইগার হিল থেকে দিঘা পর্যন্ত ৪০টি প্রাসাদ তৈরি করে রেখেছে এই লেডি হিটলার। ইনি গোটা পশ্চিমবঙ্গকে ল্যাম্পপোস্ট বানিয়েছে। পশ্চিমবঙ্গটা রসাতলে চলে যাবে। দার্জিলিং সুইজারল্যান্ড হয়নি। কলকাতা লন্ডন হয়নি। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় যদি ফিরতে পারে পশ্চিমবঙ্গটা বাংলাদেশ হবে। উনি বাংলার মেয়ে নন। আসলে উনি বাংলাদেশের অনুপ্রবেশকারীদের ফুপু আর রোহিঙ্গাদের খালা।আর স্লোগানগুলো তো সব বাংলাদেশ থেকে ধার করা। ‘মা-মাটি-মানুষ’ কে বলেছিল বলুন তো? বেগম খালেদা জিয়া। ‘জয় বাংলা’ কে বলেছিল? মুজিবুর রহমান। ‘খেলা হবে’ কে বলেছে? নারায়নগঞ্জের শামিম ওসমান।”

পশ্চিমবঙ্গে নারীর নিরাপত্তা আছে, বলুন তো

“আজ ৬৬ বছরের এক বৃদ্ধা সে বলে বেড়াচ্ছে বাংলার মেয়ে। ৬৫ বছরের মহিলাকে আমরা মেয়ে বলি না- আমরা মাসি বলি, পিসি বলি, কাকি বলি। ৬৬ বছরের মহিলাকে আপনি মেয়ে বলে স্বঘোষিত করেছেন। আর নিমতায় বৃদ্ধাকে মেরে মাথা ফাটিয়ে দিয়েছিল। আজ সে মারা গেছে। পশ্চিমবঙ্গে নারীর নিরাপত্তা আছে, বলুন তো!

Published on: মার্চ ২৯, ২০২১ @ ২৩:২৬


শেয়ার করুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

53 − = 47