কিছু কিছু ভেটেরিনারিয়ান প্রশাসকের চেয়ারে বসে ভেটেরিনারিয়ানদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিয়ে আনন্দ পান, রিইউনিয়নের মঞ্চেই ক্ষোভ

Main দেশ প্রাণী ও মৎস্য বিজ্ঞান রাজ্য
শেয়ার করুন

Published on: জানু ১৪, ২০২৩ @ ১৯:৩৫
Reporter: Aniruddha Pal

এসপিটি নিউজ, কলকাতা, ১৪ জানুয়ারি: আমাদের কলেজের যে উন্নতি হওয়ার কথা ছিল, ১৩০ বছরের পুরনো কলেজ। কিন্তু সেই কলেজকে আজ আমরা বিশ্বমানে পৌঁছতে পারলাম না। সম্প্রতি বেঙ্গল ভেটেরিনারি কলেজের সুবর্ণজয়ন্তী পুনর্মিলন উৎসবের অনুষ্ঠান মঞ্চে দাঁড়িয়ে রিইউনিয়ইন অর্গানাইজিং কমিটির সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপক ডা. সুনীত কুমার মুখোপাধ্যায় এভাবেই ক্ষোভ উগরে দেন। একই সঙ্গে তিনি বলেন যে ভেটারিনারিয়ানরা যে আন্দোলন করছেন এই রিইউনয়নের মঞ্চ থেকে তাদের সমর্থন করছি।কিছু কিছু ভেটারিনারিয়ান প্রশাসকের চেয়ারে বসে ভেটারিনারিয়ানদের আর ভাই বলে ভাবতে পারেন না।তারা ভেটারিনারিয়ানদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিয়ে বিরাট আনন্দ পান। এই ধরনের কিছু ‘ব্ল্যাকশিপ ‘ সোসাইটিতে থাকে।

‘সেই মা-কে বারবার বাস্তুচ্যুত করা-তাতে আমাদের ভেটারিনারিয়ানদেরই ভূমিকা থাকে’

বেঙ্গল ভেটেরিনারি কলেজের বাস্তুচ্যুত হওয়া নিয়ে কলেজের অধ্যাপক থেকে শুরু করে প্রাণী চিকিৎসকদের ক্ষোভ রয়েছে। এই নিয়ে তারা সরব হয়েছেন। একই সঙ্গে তাদের বিরুদ্ধে বঞ্চনার বিষয়েও তারা আন্দোলন শুরু করেছেন। এসব প্রসঙ্গ উত্থাপন করে সুবর্নজয়ন্তী পুনর্মিলন উৎসব মঞ্চ থেকেই আন্দোলনকারী প্রাণী চিকিৎসকদের সমর্থন জানান রিইউনিয়ন অর্হগানাইজিং কমিটির সাধারণ সম্পাদক ডা. সুনীত কুমার মুখোপাধ্যায়। ক্ষোভ উগরে দিয়ে তিনি বলেন-  আমাদের কলেজের যে উন্নতি হওয়ার কথা ছিল, আমাদের ১৩০ বছরের পুরনো কলেজ, কিন্তু কলেজকে সেই বিশ্বমানের জায়গায় আমরা পৌঁছতে পারলাম না। কারণ, মাঝে মাঝে আমাদের স্থানান্তর হয়। আমাদের বেলগাছিয়ার যে মাটি, সেই বেলগাছিয়াকে আমরা মা বলি – সেই মা-কে বারবার বাস্তুচ্যুত করা, তাকে সরিয়ে দেওয়া হয়- তাতে আমাদের ভেটারিনারিয়ানদেরই ভূমিকা থাকে। সেটা না হলে আজ যে বিশ্বমানে পৌঁছতে পারতাম সেই জায়গায় আমরা পৌঁছতে পারিনি। কিন্তু সেই সমস্ত ঘাটতি নিয়েও আমাদের ছাত্র-ছাত্রীরা টেক্সাস বলুন আলবোমা বলুন ক্যালিফোর্নিয়া বলুন সমস্ত জায়গায় পৌঁছে গেছেন। তারা আমাদের আহ্বানে এবার বিরাটভাবে সাহায্য করেছেন। তারা এখানে হয়তো পৌঁছতে পেরেননি, কিন্তু তারা আর্থিকভাবে সাহয্য করেছেন।

‘ঠিক যেন মসজিদে দোয়ার মতো, মন্দিরে পুজো দেওয়ার মতো’

সত্যকথা বলতে কি, রিইউনিয়নের আহ্বান এমন জায়গায় যাচ্ছে যেমন অনেকেই মারা গেছেন কিন্তু তাদের বাড়ির বউমারা বলছেন, না আমার শ্বশুর মশাই ওখানে ছিলেন আপনাদের রিইউনয়নে আমাদের দান গ্রহণ করুন। ঠিক যেন মসজিদে দোয়ার মতো, মন্দিরে পুজো দেওয়ার মতো। অভূতপূর্ব একটা আবেগ, অনুপ্রেরণা। আমাদের সমস্ত ভেটারিয়ানদের বাড়ির মধ্যেও রয়ে গেছে। সেটা সত্যিই আমরা এবার অনুভব করলাম।যোগ করেন বিশিষ্ট প্রাণী চিকিৎসক ডা. মুখোপাধ্যায়।

রিইউনয়নের মানে কি?

মনের ভিতর জমে থাকা ক্ষোভ উগরে দিয়ে উৎসবের মঞ্চে দাঁড়িয়ে ডা. সুনীত কুমার মুখোপাধ্যায় বলে চলেন- “আমরা বলছি – হিংসা নয় দ্বন্দ্ব নয়, ফুল ফোটাও গন্ধরাজ। আমরা যেটা বলছি- রিইউনয়নের মানে কি? আমাদের ভেটারিনারিয়ানদের মধ্যে আরও বেশি সৌহার্দ্য, আরও বেশি মিলন আশা করছি যাতে আমাদের মধ্যে পেশাদারি ঐক্যটা বাড়ে। এবং আমরা পেশাকে অনেক বেশি এগিয়ে নিয়ে যেতে পারি। আমাদের বিজ্ঞানকে অনেক জায়গায় পৌঁছে দিতে পারি।”

এই রিইউনয়নের মঞ্চ থেকে তাদের সমর্থন করছি

এই প্রসঙ্গ টেনে তিনি বলে চলেন- কিন্তু অনেক জায়গায় যেমন আইভিআরআই সেখানে ভেটারিনারিয়ানদের এনবিপি বন্ধ করে দেওয়ার চেষ্টা চলছে। আমাদের যে অধিকার সেটাকে বঞ্চিত করার চেষ্টা চলছে। আমরা এটাকে সমর্থন করি যে এনপিপি-কে রাখতেই হবে। এবং ভেটারিনারিয়ানরা যে আন্দোলন করছেন, এই রিইউনয়নের মঞ্চ থেকে তাদের সমর্থন করছি।”

এই ধরনের কিছু ‘ব্ল্যাকশিপ ‘ সোসাইটিতে থাকে, তাদের নিন্দা করা উচিত

এখানেই না থেমে ফের বলতে থাকেন- “আরও কিছু কিছু ভেটারিনারিয়ানরা আমাদের বলেছেন এখানে না সর্বত্রই আমরা দেখতে পাই কিছু কিছু ভেটারিনারিয়ান প্রশাসকের চেয়ারে বসে কিন্তু আর ভেটারিনারিয়ানদের ভাই বলে ভাবতে পারেন না। তারা ভাবে আমি চিরকাল এই চেয়ারে বসে থাকবো। আমি এই অত্যাচার চালিয়ে যাবো। কিন্তু এটা ঠিক না। আজ প্রশাসকদের উচিত ভেটারিনারিয়ানদের ভ্রাতৃভাবে বন্ধন করা। এবং তাদের নিয়ে ভাবা। কিন্তু কিছু কিছু ভেটারিনারিয়ান আছে আমাদের সত্যিই তাদের নিন্দা করার মতো অবস্থায় পৌঁছেছে। তারা কিন্তু ভেটারিনারিয়ানদের সেই চোখে দেখেন না। তারা ভেটারিনারিয়ানদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিয়ে বিরাট আনন্দ পান। এই ধরনের কিছু ‘ব্ল্যাকশিপ ‘ সোসাইটিতে থাকে। তাদের নিন্দা করা উচিত।”

কেন তারা দু’দিনের জন্য চেয়ারে বসে নিজেকে বিচ্ছিন্ন করবেন

তারাও তো একদিন এই রি-ইউনিয়নের মঞ্চে আসবেন। তারাও এই মহামিলনের মঞ্চে উপস্থিত হবেন। এ কথা বলে ডা. মুখোপাধ্যায় প্রশ্ন তোলেন- কেন তারা দু’দিনের জন্য চেয়ারে বসে নিজেকে বিচ্ছিন্ন করবেন সকলের কাছ থেকে। এইজন্য আমরা মনে করি, এই রিইউনিয়ন সত্যিকারের সার্থক মহামিলন হোক। এবং সব সময়ের জন্য মহামিলন হোক।

Published on: জানু ১৪, ২০২৩ @ ১৯:৩৫


শেয়ার করুন