১৬টি কুকুর ছানাকে ‘হত্যা’-ময়না তদন্তে উঠে এল চাঞ্চল্যকর তথ্য, জামিন অযোগ্য ধারায় মামলা রুজু

দেশ প্রাণী ও মৎস্য বিজ্ঞান বিদেশ রাজ্য
শেয়ার করুন

Published on: জানু ১৪, ২০১৯ @ ১০:০৮

এসপিটি নিউজ, কলকাতা, ১৪ জানুয়ারিঃ এমনটা হয়তো বহু জায়গাতেই হয়ে চলেছে। তবে ভিডিও ও ছবি আমাদের হাতে আসায় আমরা এই খবর আপনাদের সামনে তুলে ধরছি। অনেকেই হয়তো নাক সিটকোবেন- আমরা বলব- হ্যাঁ, আপনারা নাক সিটকোন, অস্বস্তি বোধ করুন। এছাড়া আপনারা আর কি পারেন! ওই কাজটাই খুব ভাল পারেন। তবু এটা সত্যি। এই শিশুগুলি কুকুর ছানা হওয়াটাই সবচেয়ে বেশি অপরাধ হয়ে গেছিল। তাই এভাবেই ওদের ‘হত্যা’ করে চিরতরে সরিয়ে দেওয়া হল। আর সেটা হল এমন একটি জায়গায় যাদের কাছ থেকে এমনটা আশা করাই যায় না। ঘটনাটি ঘটেছে কলকাতার অতি পরিচিত হাসপাতালের নার্সিং হস্টেলের চত্বরে। খুব জানতে ইচ্ছে করছে- একজন মা হয়ে আপনারা এভাবে কোনও শিশুকে পিটিয়ে হত্যা করতে পারলেন? কুকুর ছানাগুলি আপনাদের হয়তো খুব বিরক্ত করেছিল কিন্তু তাই বলে এভাবে মেরে ফেলতে হবে? কোনও জবাব আছে কি আপনাদের কাছে?

এই ঘটনার পর অবশ্য কলকাতা পুলিশ খুব সক্রিয় ভূমিকা নিয়েছে। কুকুর ছানাগুলির মৃতদেহ ময়না তদন্তে পাঠানো হয়। সেখানে উঠে আসে চাঞ্চল্য কর তথ্য। যেখানে বলা হয়েছে- কুকুর ছানাগুলির বিষ ক্রিয়ায় মৃত্যু হয়নি। তাদের শরীরে আঘাত করা হয়েছে। তাদের লিভার ফেটে গেছে। দুটি কুকুর ছানার আঘাত এতই ভয়াবহ ছিল যে তাদের মাথার খুলি পর্যন্ত ফেটে গেছে। নাক-মুখ দিয়ে প্রচন্ড পরিমাণ রক্ত বেরিয়েছে। ভিডিয়াটি দেখার পর চুপ করে বসে থাকতে পারেনি পুলিশ। তারা সেই নার্সিং হস্টেলের অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে জামিন অযোগ্য ধারায় মামলা রুজু করেছে।

এই খবরটি যিনি পাঠিয়েছেন নিজের নাম প্রকাশ করতে চাননি। তাঁর ক্ষোভ বলুন অভিযোগ বলুন সমস্তটাই ওই সারমেয় শিশু ঘাতক মানুষগুলির প্রতি উগরে দিয়েছেন।এক রাশ ক্ষভ উগরে তিনি জানালেন-” ১৬টা বাচ্চা;তবে পার্থক্যটা এটুকুই বাচ্চাগুলো কুকুরের, মানুষের নয়; মানুষ হলে হয়তো এতক্ষন পুলিশ কনভয়কে এসে বিক্ষোভ থামাতে হতো,কিন্তু কুকুর যে,কি যায় আসে ,এই আজ আছে তো কাল নেই ,বাড়িতে রাখা যাবে না,নোংরা করে দেবে ঘরটা,সেই জন্য রাস্তাতেই তাদের আশ্রয়;আজ বেঁচে আছে তো কাল গাড়ির তলায়;তাই তাদের বাচ্চা মারা গেলে কার কি যায় আসে!! তাই না ?”

চোখের সামনে এভাবে এই প্রাণী শিশুগুলিকে হত্যা করতে দেখে তাঁর মন খুব নাড়া দিয়ে গেছে। ভিতর থেকে বেরিয়ে আসা মনের খেদ প্রকাশ করেছেন এভাবেই-” তাই ১৬ টা বাচ্চাকে নৃশংস ভাবে মেরে যাকে বলে কুপিয়ে খুন করা,সেভাবে মেরে বিষ খাওয়ার খাইয়ে প্যাকেটে পুরে ফেলে দিয়ে আসা গেলো ডাস্টবিনে; মিডিয়া কভারেজ প্রায় নেই; রাস্তায় মিছিল -হাস্যকর দাবি;শুধু আছে বলতে ডাস্টবিনে পরে থাকা ছোট্ট কুকুরগুলোর দেহ আর দুপুর ৩ টে থেকে বাচ্চার মা গুলোর কান্না; যেখানে বাচ্চাগুলোকে পিটিয়ে মারা হলো এখনো মা কিন্তু ওখানেই বসে; শুধু তার চোখের জল মুছিয়ে দেওয়ার মতো কেউ নেই;পাশে আছি বলার মতো কেউ নেই;কেউ নেই যে বলবে এই অন্যায়ের সঠিক বিচার চাই;সত্যিই কেউ নেই; নতুন দাঁত বেরোলে আমাদের ছোট্ট বাচ্চাগুলো যেমন সবকিছু কামরাতে চাই,এই ছানাগুলোর দোষও ছিলো তাই;কিন্তু ওই বাচ্চার কামরে কারো কিছু হয়েছে বলে জানা নেই; কিন্তু ওই যে ছানাগুলো কুকুরের তাই বকাঝকা না করে তাদের শাস্তি হয়ে দাঁড়ালো সরাসরি মৃত্যুর; প্লাস্টিকের প্যাকেট এ মুড়ে ফেলে দেওয়া হলো তাদের;ফেললো কারা ? যাদের নাকি মানুষের সেবা করা কাজ-সেই নার্সরা!”

তাঁর খেদ- “যারা কুকুরের ছোট্টছানাগুলোর এমন হাল করতে পারে জানি না তারা বড় হয়ে কি মানুষ সেবা করবে; ধিক্কার জানাই ঐ হাসপাতালের নার্সিং হস্টেলের-এর এই মানসিকতায়;জানি না তারা আদৌও শাস্তি পাবে কি না,;তারা হয়তো এখন আরাম করে রুটি/ভাত খেয়ে চলেছে,কিন্তু ঐ মায়ের কান্নার আওয়াজটা এখনো ভেসে আসছে।।”

দেওয়া হল ভিডিওটা। দেখে নিন। তারপর আপনারাই বলুন মানুষ এত নির্মম হতে পারে ?

https://youtu.be/bSBVWO5tDSc

Published on: জানু ১৪, ২০১৯ @ ১০:০৮


শেয়ার করুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

48 − = 38