বৃদ্ধাশ্রমঃ ইলিশ খাইয়ে নতুন বস্ত্র দিয়ে এবারেও অসহায়দের মুখে হাসি ফোটালেন তাদেরই ‘ প্রিয় বন্ধু ‘ সম্রাট

Main এসপিটি এক্সক্লুসিভ দেশ রাজ্য
শেয়ার করুন

মহালয়ার পুণ্য দিনে বারাকপুর বৃদ্ধাশ্রমের ১২৫জন অসহায় বৃদ্ধ-বৃদ্ধাদের মুখে হাসি ফোটাতে এগিয়ে এসেছেন প্রদেশ তৃণমূল যুব কংগ্রেসের সাধারণ সম্পাদক সম্রাট তপাদার।

Published on: সেপ্টে ২৯, ২০১৯ @ ২৩:০৬

এসপিটি নিউজ, বারাকপুর, ২৯ সেপ্টেম্বরঃ  ছোট্টো বেলায় স্বপ্ন দেখে উঠত খোকা কেঁদে/ দু’হাত দিয়ে বুকের কাছে রেখে দিতাম বেঁধে/ দু’হাত আজো খোঁজে ভুলে যায় যে একদম/ আমার ঠিকানা এখন বৃদ্ধাশ্রম।

যথার্থই লিখেছেন নচিকেতা এই লাইনগুলি। যে বাবা-মা একদিন শত যন্ত্রণা বুকে নিয়ে কষ্ট স্বীকার করে নিজের সন্তানকে লেখাপড়া শিখিয়ে বড় করেছেন আজ সেই সন্তানই জীবনে প্রতিষ্ঠিত হয়ে বৃদ্ধ-মা’কে বোঝা মনে করে রেখে দিয়ে চলে যাচ্ছে বৃদ্ধাশ্রমে।সমাজের এই মর্মান্তিক কঠিন ব্যাধি নিয়েই এক অসাধারণ গান লিখেছিলেন নচিকেতা।যা আজ সকলের মুখে মুখে ফেরে।পুজোর ঢাকে যখন কাঠি পড়েছে মা দুর্গার আগমন যখন হয়ে গেছে ঠিক সেই মুহূর্তকে সাক্ষী রেখেই মহালয়ার পুণ্য দিনে বারাকপুর বৃদ্ধাশ্রমের ১২৫জন অসহায় বৃদ্ধ-বৃদ্ধাদের মুখে হাসি ফোটাতে এগিয়ে এসেছেন প্রদেশ তৃণমূল যুব কংগ্রেসের সাধারণ সম্পাদক সম্রাট তপাদার।

প্রতি বারের মতো এবারেও বৃদ্ধ-বৃদ্ধারা পাশে পেয়েছেন সম্রাটকে

নিজে উপস্থিত থেকে তাদের পাশে থেকে রান্না করা ইলিশ মাছ -ভাত খাইয়ে সঙ্গে পুজোর নতুন বস্ত্র তুলে দিয়ে মানবিক মূল্যবোধের ধারাকে বজায় রাখলেন তিনি। আজ যে ধারা হারিয়ে যেতে বসেছে বৃদ্ধাশ্রমের এই অসহায় মানুষগুলি যখন মনে করছে তাদের পাশে কেউ কি এসে দাঁড়াবে? কেউ কি তাদের কথা ভাবে? পুজোর আনন্দ কি তাদের সঙ্গে কেউ ভাগ করে নেবে? ঠিক সেই মুহূর্তে তারা পাশে পেয়েছেন তাদেরই ‘প্রিয় বন্ধু’ সম্রাট তপাদারকে। যিনি পিতা-মাতার মতোই তাদের শ্রদ্ধা করে চলেছেন বছরের পর বছর। যে কোনও উৎসব-পার্বনে। আজ তারা জানেন তাদের সঙ্গে সম্রাট আছে। আর তাই ওঁরা সকলে দু’হাত তুলে সন্তান স্নেহে আশীর্বাদ করেন বারাকপুরের এই সন্তানকে।

মানবিক মূল্যবোধকে এগিয়ে নিয়ে চলেছেন

গতকাল মহালয়ার দিনে দলের সহকর্মীদের নিয়ে পৌঁছে গেছিলেন বারাকপুরের ওই বৃদ্ধাশ্রমে। সেখানে অশীতিপর বৃদ্ধ-বৃদ্ধাদের সঙ্গে সময় কাটিয়েছেন। তাদের কথা শুনেছেন। এক একজন মানুষের জীবনের কাহিনি শুনলে চোখ দিয়ে জল এসে যাবে। তবু তারা তো কারও বাবা কারও মা। সন্তান যে তাদেরই। তাই পুজোর দিনগুলিতে তারা মা দুর্গার কাছে প্রার্থণা করেন- মা, তুমি আমার সন্তানদের ভালো রেখো। সম্রাট বলেন,  “অসহায় ও দুঃস্থ বৃদ্ধাদের মুখে একটু হাসি ফুটিয়ে তুলতে পারার মধ্যে এক অনাবিল আনন্দ আছে।যা পুজোর উৎসবের আনন্দকে আরও সুন্দর করে তোলে।আসলে জীবনের শেষ মুহূর্তে এসে কিরকম করুণ পরিস্থিতির মুখোমুখি হতে হয় তা এই সমস্ত বৃদ্ধাশ্রমগুলিতে না আসলে বোঝা যায় না।”

বড়ই অসহায় আজ বৃদ্ধ বাবা-মায়েরা

সকল বাবা-মায়েরাই চান পুজোর দিনগুলিতে নিজের সন্তান- পরিবার- পরিজনের সঙ্গে সময় কাটাতে।ছেলে-বউমা-নাতি-নাতনি নিয়ে মজায় পুজোর দিনগুলি কাটাতে কে না চায়! কিন্তু সমাজের এক কঠিন ব্যাধি আজ বহু বৃদ্ধ বাবা-মা’কে দূরে সরিয়ে দিয়েছে। নিজের সন্তানই বাবা-মাকে রেখে আসছেন বৃদ্ধাশ্রমে। তাদের জায়গা হয়েছে বৃদ্ধাশ্রমের ছোট্ট ঘর। যেখানে আছে শুধু বুক ফাটা কান্না, মনের ভিতর জমে থাকা যন্ত্রণা আর তীব্র আর্তি। যা দূর করার সাধ্যি বোধ হয় মা দুর্গারও নেই। তখন এই সমস্ত বৃদ্ধ-বৃদ্ধাদের বড়ই অসহায় মনে হয়। তবে এর শেষ কি আদৌ কোনোদিন সম্ভব? এই প্রশ্নের উত্তরের জন্য না জানি আর কতদিন আমাদের অপেক্ষা করে থাকতে হবে। সেজন্যই বোধ হয় নচিকেতার কল্ম দিয়ে বেরিয়ে এসেছে- “আশ্রমের এই ঘরটা ছোট, জায়গা অনেক বেশি/খোকা আমি দুজনেতে থাকবো পাশপাশি। সেই দিনটার স্বপ্ন দেখি ভীষন রকম/ মুখোমুখি আমি খোকা আর বৃদ্ধাশ্রম।”

Published on: সেপ্টে ২৯, ২০১৯ @ ২৩:০৬

 

 

 

 


শেয়ার করুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

61 − = 60