বাংলাদেশের ক্রীড়াঙ্গনকে মাদকমুক্ত, সন্ত্রাসমুক্ত ও দুর্নীতিমুক্ত করতে দৃঢ়প্রতিজ্ঞ যুব ও ক্রীড়া প্রতিমন্ত্রী জাহিদ আহসান রাসেল

বাংলাদেশ বিদেশ
শেয়ার করুন

সংবাদদাতা- ইবতিসাম রহমান

Published on: জানু ১৪, ২০১৯ @ ২৩:২৫

এসপিটি নিউজ, ঢাকা, ১৪ জানুয়ারি : যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রনালয়ের দায়িত্ব নিয়েই ক্রীড়াঙ্গনকে নতুন মাত্রায় পৌঁছে দেয়ার ইচ্ছা প্রকাশ করেছেন জাহিদ আহসান রাসেল এমপি। মন্ত্রণালয়টিকে পরিণত করতে চান একটি আদর্শ মন্ত্রণালয়ে। শূন্যের কোটায় আনতে চান দুর্ণীতি। এ জন্য দুর্নীতির বিরুদ্ধে ‘জিরো টলারেন্স’ ঘোষণা করেছেন তিনি। বিষয়টি চ্যলেঞ্জিং মনে করলেও সেই চ্যালেঞ্জটিকেই সাহসের সাথে মোকাবেলা করতে চান প্রতিমন্ত্রী।তিনি বলেন- ‘বাংলাদেশের ক্রীড়াঙ্গন হবে মাদকমুক্ত, সন্ত্রাসমুক্ত ও দুর্নীতিমুক্ত।’

তার এই আত্মবিশ্বাসের মুলে রয়েছে মন্ত্রণালয়ের সঙ্গে দীর্ঘ ১০ বছরের সংশ্লিষ্ঠতা। আগের দুই সরকারের আমলে এই মন্ত্রণালয়েরই সংসদীয় স্থায়ী কমিটির চেয়ারম্যানের দায়িত্ব পালন করেছেন গাজীপুর ২ আসন থেকে আওয়ামী লীগের মনোনয়ন পেয়ে নির্বাচিত তিনবারের এই সংসদ সদস্য।

বাংলাদেশ সংবাদ সংস্থা বাসস’কে দেওয়া একান্ত সাক্ষাৎকারে যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রণালয়ের নবনিযুক্ত এই প্রতিমন্ত্রী বলেন, আমি দীর্ঘ ১০ বছর ক্রীড়া মন্ত্রণালয়ের সঙ্গে জড়িত ছিলাম। আমার পিতা আহসান উল্লাহ মাস্টার একজন জনপ্রিয় নেতা ছিলেন। তাই আমার প্রতি সবার প্রত্যাশার চাপটা বেশি। তবে এতে আমি ভীত নই। এটিকে চ্যালেঞ্জ হিসেবে নিয়ে এর মোকাবেলা করতে চাই। এই চ্যালেঞ্জ মোকাবেলা করার সক্ষমতা আমার রয়েছে।’

রাসেল বলেন, ‘ফেডারেশনগুলোকে যাতে অর্থের অভাবে ধুকতে না হয় সে চেষ্টা করব। তবে দেশের ক্রীড়াঙ্গনের উন্নয়নের জন্য কেবলমাত্র সরকারী অর্থের উপর নির্ভর করলে চলবে না। বিভিন্ন পৃষ্ঠপোষকদের সহায়তার প্রয়োজন রয়েছে। সরকারি বরাদ্দে র পাশাপাশি যাতে বেসরকারি উদ্যোক্তাদের সম্পৃক্ত করা যায় সে জন্য ফেডারেশনগুলোর সঙ্গে আমি নিজেও উদ্যোগ নেব। আমাদের খেলোয়াড়রাই বিদেশের মাটিতে বাংলাদেশের দূত হিসেবে কাজ করে। তাই তারা আন্তর্জাতিক পরিমন্ডলে সফল হলে বাংলাদেশের ভাবমূর্তিও উজ্জ্বল হবে। এটি একটি দেশের জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ বিষয়।

গত দশ বছরে খেলাধুলা অনেক এগিয়েছে। আর আগামী এক বছরে আমার পরিকল্পনা হচ্ছে যেসব ইভেন্টে আন্তর্জাতিক পদক অর্জন সম্ভব সেগুলো বাছাই করে স্বল্প ও দীর্ঘ মেয়াদে প্রশিক্ষণের উদ্যোগ নেওয়া। প্রশিক্ষণের কোনো বিকল্প নেই। একজন ক্রীড়াবিদ প্রতিভা নিয়ে আসুক না কেন, প্রশিক্ষণ না পেলে ঝরে যাবে।’

ফেডারেশনগুলোর সঙ্গে জাতীয় ক্রীড়াপরিষদের(এনএসসি) কর্মকর্তাদের দূরত্ব ঘোচানোর বিষয়ে প্রতিমন্ত্রী বলেন, ‘আমি কাজ করার ক্ষেত্রে মন্ত্রণালয়, এনএসসি, ফেডারেশন সবার পরামর্শ নেব। সব দূরত্ব ঘুচিয়ে সবাইকে নিয়ে কাজ করব। গত তিন বার সংসদ সদস্য ছিলাম। আমার বিরুদ্ধে একটি কলমও লেখার সুযোগ পায়নি কেউ। আমি সেভাবেই চলার চেষ্টা করেছি।’ ফেডারেশনের নানা অনিয়ম ও সংগঠকদের মধ্যে সম্পর্কের টানপোড়েনের প্রভাব মাঠের খেলায় যাতে না পড়ে সে জন্য সব ফেডারেশন কর্মকর্তাদের সঙ্গে অচিরেই বৈঠকের বসার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন উল্লেখ করে রাসেল বলেন, ‘সবার মতামতের ভিত্তিতেই আমি ক্রীড়াঙ্গনের ভবিষ্যৎ কর্মপরিকল্পনা সাজাতে চাই। ক্রীড়াঙ্গনে গণতান্ত্রিক ধারাও বজায় থাকবে।’

বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের নির্বাচনী ইশতেহারের ৩.৫ অনুচ্ছেদে উল্লেখিত, ‘দুর্নীতির বিরুদ্ধে জিরো টলারেন্স নীতি গ্রহণ’ এর প্রসঙ্গ টেনে ক্রীড়া প্রতিমন্ত্রী বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা নির্বাচনের আগে যে ইশতেহার ঘোষণা করেছেন তা বাস্তবায়ন করতে হবে। প্রধানমন্ত্রী ইশতেহারে দুর্নীতির বিরুদ্ধে জিরো টলারেন্স ঘোষণা করেছেন। আমি নিজে অনিয়ম-দুর্নীতি করবো না, কাউকে করতেও দেবো না। ক্রীড়াঙ্গন হবে মাদকমুক্ত, সন্ত্রাসমুক্ত ও দুর্নীতিমুক্ত।’ তিনি বলেন, ‘তৃণমুল প্রতিভা অন্বেষনের বিষয়েও জোর দেয়া হবে। তবে সেটি হবে নতুন আঙ্গিকে। খুঁজে পাওয়া প্রতিভাবান খেলোয়াড়দের জন্য দীর্ঘ মেয়াদি প্রশিক্ষনের উদ্যোগ নেওয়া হবে। সম্ভাবনা রয়েছে এমন আশ্বাস নিয়ে বসে থাকলে হবে না। ক্রীড়াবিদদের উন্নয়নের জন্য দেশে বিদেশে অবশ্যই উন্নত প্রশিক্ষনের উদ্যোগ নিতে হবে। সারা বছর ক্রীড়াবিদরা খেলাধুলার মধ্যে থাকলে এমনিতেই তাদের দক্ষতা বেড়ে যাবে। তাই আমার লক্ষ্য থাকবে বছর জুড়ে যেন ক্রীড়াবিদরা খেলাধুলার মধ্যে থাকতে পারে।

প্রতিমন্ত্রী বলেন, ‘বড় কোন টুর্নামেন্টের আগেই শুধু অনুশীলনের ব্যবস্থা না করে বছর জুড়ে তা সচল রাখতে হবে। সময়মত অলিম্পিক ও ফেডারেশনগুলো যাতে প্রশিক্ষনের অর্থ পায় সে বিষয়টি নিশ্চিত করা হবে।’ তবে অল্প বাজেটে দেশের ক্রীড়াঙ্গনের জন্য একটা উন্নত প্লাটফর্ম তৈরি করা কঠিন বলে মনে করেন ক্রীড়া প্রতিমন্ত্রী। যে কারণে ক্রীড়াখাতে বাজেট বৃদ্ধিতে এরই মধ্যে প্রধানমন্ত্রী ও অর্থমন্ত্রীর সঙ্গে কথা হয়েছে উল্লেখ করে প্রতিমন্ত্রী আরো বলেন,‘ প্রধানমন্ত্রী ক্রীড়ামোদী, ক্রীড়া বান্ধব সরকার গঠনের মাধ্যমে যার প্রমাণ তিনি দিয়ে চলেছেন। অর্থমন্ত্রীও ক্রীড়ার সঙ্গে দীর্ঘ সময় ধরে সংশ্লিষ্ট থাকার কারণে বিষয়টি নিয়ে যথেষ্ট আগ্রহী। আমার সঙ্গে আলোচনাকালে ক্রীড়াঙ্গনের উন্নয়ন কাজে সহযোগিতার আশ্বাস দিয়েছেন।’ শুধু নীতি নির্ধারক হিসেবে নন, খেলার উন্নয়নে বাস্তব সম্মত পদক্ষেপ নিতে চান জাহিদ আহসান। সে জন্য যা কিছু করণীয় তার সবই করতে চান তিনি।

Published on: জানু ১৪, ২০১৯ @ ২৩:২৫

 


শেয়ার করুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

2 + 4 =