সংবাদদাতা-বাপ্পা মণ্ডল ছবি-রামপ্রসাদ সাউ
Published on: জানু ২৫, ২০১৮ @ ২২:০৭
এসপিটি নিউজ, শালবনী, ২৫ জানুয়ারিঃ তখন তিনি ছিলেন দেশের রেলমন্ত্রী। এখন তিনি বাংলার মুখ্যমন্ত্রী। সেদিনও তিনি দীর্ঘদিন ধরে অবহেলিত, উপেক্ষিত থাকা জঙ্গলমহলের মানুষের উন্নয়নের কথা ভেবেছিলেন। যেমনটা আজও তিনি একইভাবে ভেবে চলছেন।মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় যখন সেই পিছিয়ে থাকা অনুন্নয়নের অন্ধকারে ডুবে থাকা জঙ্গলমহল্কে এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার চেষ্টা চালাচ্ছেন ঠিক তখন তাঁর সেই চেষ্টাকে ভণ্ডুল করার আর এক চেষ্টা শুরু হয়েছে। তারই ছবি ফুটে উঠল রেল কতৃপক্ষের জঙ্গলমহলের ভাদুতলা হল্ট স্টেশন বন্ধ করে দেওয়ার ঘটনার মধ্যে দিয়ে।তারা সেখানে এদিন এক বিজ্ঞপ্তি জারি করে জানিয়ে দিয়েছে কম যাত্রী হওয়ার কারণে আগামী ১ ফেব্রুয়ারি থেকে জঙ্গলমহলের এই হল্ট স্টেশনটিকে বন্ধ করে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। এই খবর ছড়িয়ে পড়ার পরই এলাকার বাসিন্দাদের মধ্যে ক্ষোভের আগুন ছড়িয়ে পড়ে। তৃণমূল যুব কংগ্রেস এই সিদ্ধান্তের প্রতিবাদ জানিয়ে এলাকায় প্রতিবাদ মিছিল বের করে।ভাদুতলা হল্ট স্টেশনে পোড়ানো হয় প্রধান্মন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর কুশপুতুলও। তাদের দাবি, অবিলম্বে এই সিদ্ধান্ত প্রত্যাহার না করলে চরম আন্দোলনের পথে নামতে বাধ্য হবে।
খড়্গপুর-আদ্রা ডিভিশনের মেদিনীপুর ও গোদাপিয়াশালের মাঝে অবস্থিত জঙ্গলমহল ভাদুতলা হল্ট স্টেশনটি। এটি পশ্চিম মেদিনীপুর জেলার শালবনী ব্লকের মধ্যে অবস্থিত।এদিন ডিভিশনের সিনিয়র কমার্শিয়াল ম্যানেজার এক বিজ্ঞপ্তি জারি করে জানিয়েছেন, কম যাত্রী হওয়ার কারণে জঙ্গলমহল ভাদুতলা স্টেশনটি আগামী ১ ফেব্রুয়ারি থেকে বন্ধ করে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।বর্তমানে দক্ষিণ পূর্ব রেলের আদ্রা ডিভিশনের মানচিত্রেও রয়েছে ভাদুতলার নাম।
রেলের এমন সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে প্রতিবাদে সরব হয়ে পথে নেমেছে এলাকার বাসিন্দারা। নেতৃত্বে তৃণমূল যুব কংগ্রেস। কারণ,এই তৃণমূল যুব কংগ্রেসের দীর্ঘদিনের দাবি ছিল জঙ্গলমহলের এই প্রত্যন্ত ভাদুতলায় একটি রেল স্টেশন হোক।তৃণমূল যুব কংগ্রেসের জেলা সভাপতি রমাপ্রসাদ গিরি বলেন, ২০০৯ সালে ভাদুতলা এলাকার বাসিন্দাদের সম্মান জানিয়ে ভারতের তৎকালীন রেলমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ভাদুতলা জঙ্গলমহল রেল স্টেশনটি চালু করেছিলেন।কিন্তু তার পর থেকে এই স্টেশনের উন্নয়নের ব্যাপারে কোনও উদ্যোগ নেয়নি রেল কতৃপক্ষ। সারা দিনে মাত্র দুটি ট্রেন এখানে দাঁড়ায়।এই স্টেশনের উপর স্থানীয় ভাদুতলা, কর্ণগড়, কড়াদানা, পাথর কুমকুমি সহ মোট ২০টি গ্রামের মানুষ নির্ভরশীল। এই হল্ট স্টেশনে এসে ট্রেন ধরে তারা বিভিন্ন জায়গায় যাতায়াত করে থাকে। এখন সেই স্টেশনটিকে বিজ্ঞপ্তি জারি করে বন্ধ করে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিল রেল।
রমাপ্রসাদ গিরি সাফ জানিয়ে দেন, ভাদুতলা জঙ্গলমহল হল্ট স্টেশনটি কোনওভাবেই বন্ধ করা চলবে না। রেল কতৃপক্ষকে তাদের এই হঠকারী সিদ্ধান্ত প্রত্যাহার করতে হবে। রেল মানুষের স্বার্থে সাম্প্রতিককালে একটা ভালো সিদ্ধান্ত নিতে পারেনি, আমাদের মুখ্যমন্ত্রী তৎকালীন রেলমন্ত্রী মমতা বন্ধ্যোপাধ্যায় যেখানে জঙ্গলমহলবাসীর উন্নয়নের কথা ভেবে এই রেল স্টেশনটি চালু করেছিলেন সেখানে কেন্দ্রের নরেন্দ্র মোদীর সরকার জঙ্গলমহলবাসীর সামনে জটিল পরিস্থিতি তৈরি করে দিল। মুখ্যমন্ত্রীর উন্নয়নের চেষ্টায় আঘাত হানল। আমরা এসব বরদাস্ত করব না। মা-মাটি-মানুষের সরকার সবসময় মানুষের পাশে আছে।মানুষের অসুবিধা সৃষ্টি করার চেষ্টা হলে সেই অসুবিধা কিভাবে দূর করতে হয় তা ভলমতোই জানা তৃণমূল কংগ্রেসের, জানান জেলা তৃণমূল কংগ্রেস সভাপতি রমাপ্রসাদ গিরি। তাঁর হুঁশিয়ারি, রেল যদি এই সিদ্ধান্ত প্রত্যাহার না করে তাহলে তারা চরম আন্দোলনের মোকাবিলা করার প্রস্তুতি নিক।
রমাপ্রসাদ গিরির নেতৃত্বে এদিনের প্রতিবাদ মিছিলে ছিলেন জেলা তৃণমূল কংগ্রেসের সাধারণ সম্পাদক সন্দীপ সিংহ, শালবনীর গৌতম বেরা প্রমুখ।
Published on: জানু ২৫, ২০১৮ @ ২২:০৭