
যে কর্মী নিজেকে কর্মী হিসেবে অহঙ্কার করতে ভালবাসে আমি সেই কর্মীকে হান্ড্রেডে হান্ড্রেড দি।
আমি এখনও মনে করি আমাদের দলীয় কর্মীরা তৃণমূল কংগ্রেসের সম্পদ।
ভাল হয়েছে গদ্দাররা দল থেকে বেরিয়ে গেছে।তৃণমূল কংগ্রেস দলটা বেচে গেছে।
Published on: ফেব্রু ২, ২০১৮ @ ২০:২৫
এসপিটি নিউজ, উলুবেড়িয়া, ২ ফেব্রুয়ারিঃ নিজেকে আজও তিনি একজন কর্মী বলে মানেন।আমি নেতা-অহঙ্কার করবার জায়গা নেই।আমি কর্মী-এটা আমার অহঙ্কার।যে কর্মী নিজেকে কর্মী হিসেবে অহঙ্কার করতে ভালবাসে আমি সেই কর্মীকে হান্ড্রেডে হান্ড্রেড দি।এভাবেই হাওড়ার ডুমুরজলায় দলের য্যব সমাবেশে দাঁড়িয়ে কর্মীদের উদবুদ্ধ করেন দলনেত্রী মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।তাঁর কথায়-তৃণমূল কংগ্রেস এমনই একটা রাজনৈতিক দল যারা মানুষের কথা বলে, মানুষের জন্য কাজ করে।মানুষকে বাদ দিয়ে তৃণমূল কংগ্রেস তৈরি হয়নি।আর মানুষকে বাদ দিয়ে তৃণমূল কংগ্রেস চলে না।আমাদের একমাত্র সম্পদ মা-মাটি-মানুষ।আমাদের একমাত্র সম্পদ-আমাদের মানুষ এবং দলীয় সহকর্মীরা।তিনি জোরের সঙ্গে এদিন জানিয়ে দেন-আমাদের একমাত্র আদর্শ আমরা জনগণের পক্ষে। জনগণের পক্ষে থাকাই হল আমাদের একমাত্র আদর্শ।
উপ-নির্বাচনে দলের জয়ের জন্য সাধারণ মানুষকেই কৃতিত্ব দেওয়ার পাশাপাশি কর্মীদের প্রশংসা করতে ভোলেননি।তিনি বলেন, এটা এত সহজ নয় উলুবেড়িয়া উপ-নির্বাচনে ৪ লক্ষ ৭০ হাজারের বেশি ভোটে জিতেছি।নোয়াপাড়ার বাই-ইলেকশনে ৬৩ হাজার ভোটে জিতেছি।তার আগে সবং-এর বাই-ইলেকশন হয়ে গেল।৬৪ হাজার ভোটে আমরা জিতেছি।সব কৃতিত্ব মানুষের।আর ঐ ভোট-টাকে সংগ্রহ করবার জন্য আমাদের কর্মীরা যারা নেতা নয় কর্মী, যারা এলাকায় এলাকায় ঘাম ঝরিয়ে রোদে-ঝড়ে-জলে ভিজে কাজ করে তারা।তাদের দিকটা মনে রাখতে হবে।
মমতা বলেন, একটা এমএলএ, একটাই এমপি হতে পারে, একটাই কাউন্সিলর হতে পারে, একটাই পুরসভা হতে পারে,একটাই পঞ্চায়েত সমিতি হতে পারে, একটাই জেলা পরিষদ হতে পারে, একটাই ব্লক প্রেসিডেন্ট হতে পারে, একটাই জেলা প্রেসিডেন্ট হতে পারে। কিন্তু মনে রাখবেন, তাকে কিন্তু সবার জন্য কাজটা করতে হয়।তার উপর নির্ভর করে দল চলে।
তাই সেই নেতাদেরকেও গুরুত্ব দিয়ে দলনেত্রী বলতে থাকেন, আমি চা্ এক একটা ব্লক প্রেসিডেন্ট দলের এক একটা স্তম্ভ তৈরি হোক।আমি চাই, আমার এক একটা ছাত্র-যুব নেতা বা নেতৃবৃন্দ তারা এক-একটা স্তম্ভ তৈরি হোক।আমি নেতা-অহঙ্কার করবার জায়গা নেই।আমি কর্মী-এটা আমার অহঙ্কার। যে কর্মী নিজেকে কর্মী হিসেবে অহঙ্কার করতে ভালবাসে আমি সেই কর্মীকে হান্ড্রেডে হান্ড্রেড দি।আর যে নিজেকে কর্মী হিসেবে গ্রহণ করে না মনে রাখবেন নেতৃত্ব তৈরি করতে হয়।
নেতাজির উদ্ধৃতি টেনে তিনি বলেন, নেতাজি সুভাষ চন্দ্র বোস বলেছিলেন-নেতা কখনও গাছ থেকে পড়ে না।নেতা কাজের মধ্যে দিয়ে তৈরি হয়।নেতা লবি করে বলতে হয় না, তৃণমূল কংগ্রেসের কে এমএলএ হবে, কে এমপি হবে কে পঞ্চায়েতে দাঁড়াবে এগুলি বাছতে হয় না, তৃণমূল কংগ্রেস একমাত্র রাজনৈতিক দল যে টাকা দিয়ে টিকিট বিক্রি করে না আর যে বাছাই করে না। অন্য দলে এসব গুন আছে। আমি এখনও মনে করি আমাদের দলীয় কর্মীরা আমাদের সম্পদ।সেই দলটাকে কেমন করে তৈরি করতে হবে, সেই দলটাকে চোখের মণির মতো করে পাহারা দিতে হবে।সেই দলটাকে মানুষের কাজ করার মতো উপযুক্ত করে গড়ে তুলতে হবে।সেই দলটাকে উন্নততর রাজনৈতিক দল হিসেবে গড়ে তুলতে হবে।যে দলটা তাদের কর্মীরা তাদের চরিত্র গঠনের মধ্য দিয়ে মানুষের পাশে দাঁড়াবে।
ব্যক্তিগতভাবে নয় সমস্টিগতভাবে কাজ করার পক্ষে কথা বলে মমতার পরামর্শ, মনে রাখবেন-“আমি নিজে কি পেলাম, এটা তুচ্ছ ব্যাপার।আমি নিজে কতটা করতে পারলাম, এটা বৃহৎ ব্যাপার।এটা মাথায় রাখতে হবে।আরে নিজের জন্য কতটুকু চাই-একটু খাদ্য, একটু বস্ত্র, একটু বাসস্থান।নাকি জীবন চালাবার যা দরকার।তার বেশি লাগে না।একটা জীবনে মানুষ মণি-মুক্ত খেতে পারে না, জহরতও খেতে পারে না।আমরা তো দুটো ভাত খাই বা রুটি খাই।সে ভালোই খাবার খান আর খারাপই খাবার খান।তাতে বেশি খরচ লাগে না।সুতরাং লোভ আসবে কেন?লোভ সংবরন করা রাজনীতির একটা বড় হাতিয়ার। আর আমি সেইসব কর্মীদের প্রাণ দিয়ে ভালোবাসি যারা লোভ সংবরন করে দেখাতে পারে যে আমরা দলের জন্য সব কিছু করতে পারে।কিন্তু নিজের জন্য দলকে বিক্রি করে না। ভাল হয়েছে গদ্দাররা দল থেকে বেরিয়ে গেছে।তৃণমূল কংগ্রেস দলটা বেচে গেছে।
কর্মীদের উদ্দেশ্যে নেত্রী মমতা বলেন, তৃণমূল কংগ্রেস বিশ্বাস করে একতা। তৃণমূল কংগ্রেস বিশ্বাস করে সম্প্রীতি।তৃণমূল কংগ্রেস বিশ্বাস করে উন্নয়ন। তৃণমূল কংগ্রেস বিশ্বাস করে বিশ্বাসযোগ্যতা।তৃণমূল কংগ্রেস বিশ্বাস করে সভ্যতা।তৃণমূল কংগ্রেস বিশ্বাস করে শিক্ষা-দীক্ষা।তৃণমূল কংগ্রেস বিশ্বাস করে সুস্থ-সংস্কৃতি, তৃণমূল কংরেস বিশ্বস করে প্রকৃত গণতন্ত্র।তৃণমূল কংগ্রেস বিশ্বাস করে সুস্থ সভ্যতা।তৃণমূল কংগ্রেস বিশ্বাস করে মানবিকতা।তৃণমূল কংগ্রেস বিশ্বাস করে মানুষের মতো চলবার অধিকার।তৃণমূল কংগ্রেস এমন কিছু করে না বা করবে না যা মানুষের পক্ষে থাকে না।আমাদের আদর্শ জগণের পক্ষে। জনগণের পক্ষে মানে গণতন্ত্রের পক্ষে।
Published on: ফেব্রু ২, ২০১৮ @ ২০:২৫