
রাজীব স্লোগান তোলেন- ‘চলো পাল্টাই। চুপ চাপ পদ্মে ছাপ।’
Published on: জানু ৩১, ২০২১ @ ১৯:৫৩
এসপিটি নিউজ, হাওড়া, ৩১ জানুয়ারি: আজ হাওড়ার ডুমুরজোলায় নিজের প্রথম বিজেপির জনসভায় দাঁড়িয়ে নাম না করে তৃণমূল কংগ্রেস সরকারকে দুষলেন রাজীব বন্দ্যোপাধ্যায়।এক পরিচ্ছন্ন বক্তৃতা দিতে গিয়ে তিনি বারেবারে মনে করিয়ে দেন প্রপ্রতিহিংসার রাজনীতিতে তিনি বিশ্বাসী নন। তিনি চান মানুষের উন্নয়ন। রাজ্যের বর্তমান সরকার খালি কেন্দ্রের সংগে ঝগড়া করে সংকীর্ণ রাজনীতি করে সব পথ বন্ধ করে রেখেছে। ভোটের মুখে এসে এদের দুয়ার দুয়ারে সরকার পাড়ায় পাড়ায় সমাধান করতে হচ্ছে। স্বাস্থ্যসাথী কার্ড দিয়ে ভাওয়তাবাজি করতে হচ্ছে। এরা ভোড় বোইতরণী পার করার জন্য এরা বাংলাটাকে বিক্রি করে দিচ্ছে। বাংলাকে আমাদের রাজ্যকে বিক্রি হতে দেবেন না। একে আপনারা রুখে দিন। ভারতীয় জনতা পার্টিকে ক্ষমতায় নিয়ে আসুন। বলেন রাজীব বন্দ্যোপাধ্যায়।
‘যত আপনারা অপশব্দ ব্যবহার করবেন তত আশীর্বাদ আমাদের উপর আসবে’
রাজীব বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন- “আজকে অবাক লাগে যখন ওই দলে কেউ যোগ দেয় বলা হয় উন্নয়নের স্বার্থে যোগ দিয়েছে। আর যখন ওই দল ছেড়ে উন্নয়নের স্বার্থে অন্য দলে কেউ চলে যায় তখন তাকে গদ্দার বলে। এটা কোন ধরনের বিচার আজকে সাধারণ মানুষকে বলতে হবে। এক অদ্ভুত পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে। আমি তো অবাক হলাম আমাকে কোনও কোনও সংবাদ মাধ্যম বলল যে দাদা, আজকে আপনাদের বিরুদ্ধে বিভিন্ন অপশব্দ ব্যবহার করছে। বিভিন্ন ভাবে অপপ্রচার চলছে। আমি আজ দায়িত্ব নিয়ে এই মঞ্চ থেকে বলে দিতে চাই সমস্ত রাজনৈতিক দলের নেতা থেকে কর্মী – শুনে নিন, যত আপনারা এই অপশব্দ ব্যবহার করবেন তত আশীর্বাদ আমাদের উপর আসবে। আর ওই যোশ বাড়বে। ত্রত জেদ বাড়বে, সাহস বাড়বে।”
“আজ এখানে সমস্ত নেতা আছে সবার সামনেই বলছি, বিগত দিনেও দেখেছেন কিভাবে অক্লান্ত পরিশ্রম করেছি। মানুষের জন্য কাজ করার চেষ্ঠা করেছি।আজকেও দায়িত্ব নিয়ে বলে গেলাম ভারতীয় জনতা পার্টি যদি আমায় সুযোগ করে দেয় আগামিকাল থেকে ২৯৪টা শুধু বিধানসভাই নয় দরকার হলে পাড়ায় পাড়ায় দরকার হলে বুথে বুথে গ্রামে গ্রামে আমরা যাব। মানুষের কাছে গিয়ে এই বার্তা দেব।” বলেন রাজীব।
এটার লক্ষণ হচ্ছে শেষের শুরু-রাজীব
রাজীব বন্দ্যোপাধ্যায় ফের বলেন- “যখন দেখেছি বিরোধী রাজনৈতিক নেতা-নেত্রীদের উপর আক্রমণ হয়েছে। যখন দেখেছি তাদের গাড়ি ভাঙচুর হয়েছে। একটা রাজনৈতিক সভা করতে গেলে অনুমতি দেওয়া হয় না। মিছিলকে বানচাল করে দেন। এসব কিসের লক্ষণ জানেন তো? এটার লক্ষণ হচ্ছে শেষের শুরু। অর্থাৎ তাদের শেষের শুরু আজ হয়ে গেছে। তারা শেষ জায়গায় পৌঁছে গেছে। মানুষ যখন শেষ জায়গায় পৌঁছে যায় তখন এসমস্ত কর্মকান্ড করে।”
আমরা রাজনৈতিক কু্ৎসায় বিশ্বাসী নই-রাজীব
“আমি আপনাদের একটা কথা বলব, আজকে কোনও কুৎসা নয়। আমি বারবার বলেছি যে আমরা রাজনৈতিক কু্ৎসায় বিশ্বাসী নই। রাজনৈতিক প্রতিহিংসায় বিশ্বাসী নই। আমরা রাজনৈতিক সিস্টেমে বিশ্বাসী। আমরা রাজনৈতি অসহিষ্ণুতায় বিশ্বাসী নই। আমরা রাজনৈতিক সংযম দেখাতে পারি। তাই আমরা মনে করি, আগামিদিনে রাজনৈতিকভাবে এর মোকাবেলা করে অমিতশাহজি যে লক্ষ্য বেধে দিয়েছে সেই লক্ষ্যে আমরা পৌঁছবো।” বলেন বিজেপি নেতা রাজীব বন্দ্যোপাধ্যায়।
স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহের প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন রাজীব
স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহের প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করে রাজীব বলেন- “আমি অত্যন্ত গর্বিত। গতকাল যেভাবে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহজি আমাদের ডেকে পাঠিয়েছিলেন মাননীয় কৈলাস বিজয়বর্গীয় এখানে উপস্থিত আছেন। এখানে উপস্থিত আছেন মুকুলদা। যেভাবে সম্মান দিয়ে তারা নিয়ে গেছেন এবং বাংলার উন্নয়নের স্বার্থে যেভাবে তাদের সাথে কথা বলেছি আমি অত্যন্ত আনন্দিত হয়ে অমিত শাহজির হাত থেকে ভারতীয় জনতা পার্টির পতাকা নিয়ে আমি একজন রাজনৈতিক কর্মী হিসেবে যোগ দিয়েছি। আমি মনে করি, আমি নেতা নই আমি দলের একজন কর্মী হয়ে আগামিদিনে আপনাদের সাথে কাজ করতে চাই।”
অমিত শাহজিকে বলেছি যে আমার একটা লক্ষ্য আছে
“আজকে বেকার যুবক-যুবতীরা বাংলায় কাজ পাচ্ছে না। বাইরে তাদের যেতে হচ্ছে কাজের জন্য। আজকে তাদের কোনও দিশা সরকার দেখাতে পারেনি। আমি তো গতকাল অমিত শাহজিকে বলেছি যে আমার চোখে স্বপ্ন আছে। আমার একটা লক্ষ্য আছে। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি , স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ, সহ এ রাজ্যের সমস্ত বড়বড় নেতাদের সহায়তায় বিজেপি ক্ষমতায় এলে এই হাওড়া জেলায় তার পুরনো গরিমা ফিরিয়ে আনব। নতুন করে শিল্প গড়ে উঠবে।”
“অমিত শাহজি আমায় কথা দিয়েছেন যে এখানে বিজেপি ক্ষমতায় এলে এখানে শিল্প গড়ে তোলা হবে। আইটি ইন্ডাস্ট্রি গড়ে উঠবে। কাজের সুযোগ বাড়বে। যেখানে বেকার যুবক-যুবতীদের কর্মসংস্থানের সুযোগ তৈরি হবে হতাশা দূর হবে।”
কেন্দ্রের সাথে সদ্ভাব রেখে টাকা আদায় করতে পারি না। এটা কার ব্যর্থতা?
রাজীব বলেন- “আমার অবাক লাগে, খালি কেন্দ্রের সঙ্গে ঝগড়াই করে গেলাম। কেন্দ্রের সাথে খালি শত্রুতাই করে গেলাম। বিগত বাম জমানায় দেখেছি শুধু কেন্দ্রের দোহাই দিয়ে কয়েকটা বছর কাটিয়ে দিল। আমরা তো বারবার বলেছি যে কি লাভ হচ্ছে কেন্দ্রের সঙ্গে ঝগড়া করে। আমি মুখে বলি মানুষের স্বার্থে রাজনীতি করি আর কেন্দ্রের সাথে সদ্ভাব রেখে টাকা আদায় করতে পারি না। এটা কার ব্যর্থতা?বর্তমান সরকারকে জবাব দিতে হবে, এটা কার ব্যর্থতা?”
ডবল ইঞ্জিন সরকার এই রাজ্যকে দিশা দেখাতে পারবে
“আমি বলি, মানুষের স্বার্থে রাজনীতি করি আর এই সঙ্কীর্ণ রাজনীতির উর্দ্ধে আমি উঠতে পারলাম না। আমি কাল অমিত শাহজিকে বলেছি যে কেন্দ্রের সঙ্গে যদি রাজ্যের সুসম্পর্ক না থাকে তাহলে কোনওদিনই একটা রাজ্যের ভালো হয় না। আমরা চাই কেন্দ্র ও রাজ্যে একই সরকার। ডবল ইঞ্জিন সরকার এই রাজ্যকে দিশা দেখাতে পারবে। আমি কাল বলে এসেছি যে বিজেপিকে যদি মানুষ আশীর্বাদ করে তাহলে এত টাকা দেনা যে করেছে তা মুকুব করে আগামিদিনে বাংলার উন্নয়নের জন্য্য স্পেশাল অর্থনৈতিক প্যাকেজ চাই। তিনি আমাকে আশ্বাস দিয়েছেন।” বলেন রাজীব বন্দ্যোপাধ্যায়।
“আমি আনন্দিত, অমিত শাহজি আমায় বলেছেন যে তিনি বাংলায় ক্যাম্প করে পড়ে থাকবেন। কারণ বাংলার মানুষের মুক্তি চাই। কাজ চাই। উন্নয়ন চাই। আমি সংখ্যালঘু ভাইদের বলবো- বলুন তো, এই সরকার আপনাদের জন্য কি করেছে। শুধুমাত্র বিজেপির জুজু দেখিয়ে আপনাদের ভোটের কাজে ব্যবহার করে গেছে।”
এটা প্রমাণ হয়ে গেছে যে সরকার দুয়ারে দুয়ারে যায়নি-রাজীব
রাজীব এবার তৃণমূলের নাম না করে রাজ্যের শাসক দলের বিরুদ্ধে তোপ দাগেন। বলেন- “আজ ভোটের সময় দুয়ারে দুয়ারে সরকার করতে হচ্ছে। অর্থাৎ এটা প্রমাণ হয়ে গেছে যে সরকার দুয়ারে দুয়ারে যায়নি। ভোটের মুখে পাড়ায় পাড়ায় সমাধান নিয়ে আসতে হচ্ছে। আমরা কথা দিচ্ছেই, ভারতীয় জনতা পার্টি এমন সরকার গঠন করবে যে ভোটের সময় দুয়ারে দুয়ারে সরকার পাড়ায় পাড়ায় সমাধান করতে হবে না। ভারতীয় জনতা পার্টি ক্ষমতা এলে প্রথম দিন থেকে দুয়ার দুয়ারে মানুষের কাছে পৌঁছবে।”
স্বাস্থ্যসাথী কার্ড নিয়ে রাজ্যের সরকারকে দুষলেন রাজীব বন্দ্যোপাধ্যায়
স্বাস্থ্যসাথী কার্ড নিয়ে রাজ্যের সরকারকে দুষলেন রাজীব বন্দ্যোপাধ্যায়। তিনি বলেন- “স্বাস্থ্যসাথী কার্ড দিচ্ছে। ভোটের মুখে এসে। কত টাকা করে – পাঁচ লাখ। যদি এক কোটি লোককে দেয় কত টাকা হবে? পাঁচ লাখ কোটি। সরকারের মোট বাজেট কত? এসবই হচ্ছে ভাওতাবাজি । ভোটের জন্য করছে।আমি আপনাদের অনুরোধ করছি এই স্বাস্থ্যসাথী কার্ড নিয়ে সবাই হাসপাতালে নার্সিংহোমে চলে যান। দেখবেন কোনও কাজে লাগবে না। শুধু স্বাস্থ্যসাথীর কার্ড করে দিলাম হয়ে গেলো! আমার হাসপাতালে পরিকাঠামো নেই। আমার নার্সিংহোমে বেড নেই।ডাক্তার নেই। আর মানুষকে ভোটের জন্য ভাওতা দেবার জন্য হাতে করে একটা কার্ড দিয়ে দিলাম স্বাস্থ্যসাথীর কার্ড। নার্সিংহোমগুলি বলছে স্বাস্থ্যসাথীর কার্ডে চিকিৎসা করা যায় না।, এদের সেই বাজেটই নেই। শুধু ভোট বৈতরণী পার করার জন্য বাংলাটাকে বিক্রি করে দিচ্ছে। দয়া করে বাংলা বাঁচান। দয়া করে রাজ্য বাঁচান।”
এরা তো বলেই দিয়েছে আমরা ৯৯ শতাংশ কাজ করেই দিয়েছি
শেষে রাজীব প্রশ্ন তোলেন- “এই সরকারকে ভোটটা দেবেন কেন? এরা তো বলেই দিয়েছে আমরা ৯৯ শতাংশ কাজ করেই দিয়েছি।তা যারা করে দিয়েছে তাদের ভোট দিয়ে কি লাভ? বরং আমাদের দিন আমরা কাজ করব।”
অমিত সাহজি কথা দিয়েছেন আর ধমকে চমকে ভোট হবে না। আমরাও জানি ভোট কিভাবে করাতে হয়। আমরাও সেভাবে রাজনৈতিক কর্মী হয়ে উঠেছি। আগামিদিনে ১০০ শতাংশ নিরাপত্তা আপনাদের দেওয়া হবে।এ কথা বলে রাজীব স্লোগান তোলেন- ‘চলো পাল্টাই। চুপ চাপ পদ্মে ছাপ।’
Published on: জানু ৩১, ২০২১ @ ১৯:৫৩